আজ আমি ভীষণ খুশি!
কে যেন এসে মনের ঘরেতে বলে গেছে হেসে,
“ভাল আছ?”
যেন একজোড়া উষ্ণ অধর পাঁজরের কাছে ফিসফিস করে...
ঝড়ো হাওয়ায় কাঁপা কোনও শাখার মতন
সারাটি বুকে কী কম্পন!
আমি যেন এক আমুদে চড়ুই,
উড়ে চলে যাই ওই দিগন্তে, যেখানটাতে তোমার বসত।
দুলবে ডানা, নাচবে ঠোঁট, মুখে বলবো--
আমায় ছুঁয়ে প্রাপ্য খুশির ভাগটুকু নাও বুঝে,
এই বুক হতে, ঠোঁটের কাঁপন হতে,
এই পাঁজরের দুর্গ হতে।
বৃষ্টি নামলে ছাদে যেয়ো, বাড়িয়ে দুহাত বৃষ্টি নিয়ো আপন মনে,
হাত দুটিকে ডানা করে রেখো ছড়িয়ে দুপাশ, পাখি হয়ে থেকো বাদলাদিনে।
আমি বৃষ্টি হয়ে তোমায় ছোঁবো,
হয়তো আর কখনও হবে না দেখা,
এই একটা জীবনে যাবেই কেটে, রইবে জেগে সতৃষ্ণ সাধ...
ভাবব তোমায় জাতিস্মরের মত,
হয়তোবা রাখব তোমায় বিস্মরণের পাতায়।
কখনওবা ধ্রুবতারার জ্যোতির মত ক্ষয়ে আসব কাছে।
বুকের মাঝের চিলেকোঠায় যে নরম ব্যথা ওঠে,
সে ব্যথাতে উঠবে বেজে তোমার স্মৃতির সুর।
কিছু ব্যথা কিছু কাঁদাক, তবু...
নিঃস্ব-করা নিঃসঙ্গতা শুধু নয়।
আমার যতো অপূর্ণতা,
পূর্ণ হোক তোমারই ব্যথায়,
আমার ভালোবাসা খানখান হয়ে ছড়ুক বিরহে তোমার হিয়ায়,
সব ভেঙেচুরে হোক চিলেকোঠা জনশূন্য এ জনান্তিকে।
তবু কখনও পড়ে যদি মনে
ভুলে কোনও এক অকূল শ্রাবণে
চলে এসো। চলে এসো তুমি শক্ত বাধার দেয়াল পেরিয়ে
আমার শ্যামল ভরা-দিগন্তে,
তোমায় দুহাত ভরে বর্ষা দেবো--নিয়ে নিয়ো।
আমি বর্ষা জমাই, চোখকে পোড়াই,
তবু হৃদয়ে তোমার রোদকে নামাই।
যা অনন্তকাল ধরে জমে আছে আমার এ পোড়া চোখে--সে
জলাধারের জল--জলকেলিতে মত্ত বেলিফুলের সমস্ত ঘ্রাণ শুষে নিয়ে, আমারই মতোন--তার প্রতীক্ষায়...
সে আসুক...এই প্রার্থনা।
নিশ্চুপ রাতের নীরবতা, জলের আদুরে শব্দ ছাপিয়ে দুই অস্তিত্বের স্বস্তিতে অস্থির, অস্ফুট স্বরে ভাসুক...
নিজেকে বোঝাই--
কারও জন্য
নিজের ভেতরেথাকা
কিংবা,
নিজের জন্যই
কারও হৃদয়েথাকা
তীব্র অনুভূতির
দৃশ্যমান রূপের খোঁজ--
হতে হয় না।
অকারণ অস্থিরতায় সকারণ কষ্ট--জীবনের মানেটা এমন সরল নয় গো!
প্রকৃতির চোখে চোখ রেখে দেখো--
নিজে অদৃশ্য, তবু সমস্তকে নিজের দেহে ধারণ করেই
অনিল অনন্য!
বলছি না, তোমাকেই চাই।
বলছি, তোমার যুগল ঠোঁটের অধিকারটুকু চাই,
আমায় এক ছায়াপথ চুম্বনে দাও ভরে!
এক জীবন্ত পুতুল আমার চাই,
যার হাত ধরে পেরুবো ক্লান্ত বিকেল,
কিংবা সেই মহাক্ষণ—
যখন আমার মনের উঠোনজুড়ে নামবে
রৌদ্র আশ্বিনমাসের, খেলবে জোছনা কোনও ফাগুনে।
না, তোমাকেই চাইছি না।
আমৃত্যু তোমার বুকের জমিনে করবো চাষ--
সে অধিকারটুকু চাইছি।
দেবে কি, বলো?
তোমার সাদা শার্টের বোতাম লাগাব, লিপস্টিকের দাগে রাঙাব,
জাপটে ধরে বলবো তোমায়--
এই পাগলি তোমায় ভালোবাসে দারুণ বেশি, মনে রেখো,
এমন করে বাসবে না কেউ আর কখনও।
একটু শোনো, এই দেখো না, চোখের ভেতর, বুকের ভেতর--শুধুই তুমি,
তোমায় ভীষণ ভালোবাসি, প্রবল মায়ায় তোমায় বাঁধি, আর যা কর, ভুল বুঝো না ভুলেও কখনও।
কী এক নিবিড় বেদনাতে...
দৃষ্টি তোমার আমায় ছোঁয়।
গভীর নিখাদ আকুতি লুকিয়ে চোখের কোণে, তুমি কথা কও,
সে আমি জানি।
গাঢ় ভালোবাসায় আমায় ওড়াও কিংবা পোড়াও--খোলা দিগন্তে,
বুঝি সবই।
পাঁজরের রক্তে গড়ো অমরাবতী,
ধরেই নিয়েছ, তোমার যতো ত্যাগ, তোমার যতো প্রেম,
করেছে তিলেতিলে আমায় পূর্ণ--
আকুল বরষা যেমনি ভরে যমুনার হেম!
উছলে-পড়া ঢেউকে কেবল জোয়ার ভাবো,
সে জোয়ারে যাও নাতো ভেসে, ডুবে-ডুবে শুধু হিসেব কষ!
হাসিতে আমায় পাবে না খুঁজে,
বুঝতে আমায় আমার চোখের জলটা খোঁজো।
তোমার বিরহ কাঁদায় আমায়,
ডোবায় ক্রমশ জীবন-সাঁঝে।
এত ভাল হও, এত ব্যথা সও,
কখনও তো তা চাইনি আমি!
অব্যক্ত তোমার বাসনা যতো,
না হোক কথা, জমুক ততো।
বহুদূর হতে ঘ্রাণটা তোমার
এ ঠোঁট দুটো মাতাল করুক,
তৃষ্ণা জাগুক তীব্র ব্যাকুল!
বেখেয়ালি তুমিও নাহয় হতে খানিক,
এমন শুদ্ধ থেকে লাভ কী, বলো?
নষ্ট মুহূর্তে নষ্ট নাহয় হয়েই যেতাম কষ্ট বেচে!
আমি ভালোবাসি তোমার ‘তুমি’কে,
তোমাকে তবু নয়।
চলে যেয়ো না, থাকো কিছুকাল,
বুকের বিশাল সীমানা ছুঁয়ে,
তোমার দীর্ঘশ্বাসে
বাতায়ন কাঁপুক আমার দেহের,
তোমার ছোঁয়ায় গভীর চুলে ঝড় উঠে যাক,
বিষণ্ণ প্রেম প্রসন্ন হোক,
ঘিরুক আমায় আজ যতো রঙ।
জন্মেছি আমি শত জন্মে--তোমায় পেতে--জেনেছি এটুক,
তোমায় টেনে বহু বহুবার জড়িয়েছি বুকে শত মমতায়!
কী বলে একে? ভেবেছ কখনও?
এ ঐশ্বর্য আর যা-ই হোক, মোটা দাগে-মাপা ভালোবাসা নয়।
লোকে যেমনি করে ‘ভালোবাসি’ বলে,
পথে-মাঠে-ঘাটে খেলো ভালোবাসার যজ্ঞ চলে,
সে ভালোবাসা সস্তা ভীষণ, দেখছি কতো!
পার্ক রেস্তোরাঁ পেরিয়ে দেখি, গাছের ফাঁকে,
ভালোবাসা সেথা আদিম প্রেমের অধরে মাতে,
মধু মৌমাছির মত্ততা বসে--সে হাটে বলো, ভালোবাসা কই?
আমায় তোমার গল্পে রেখো না, জীবনে রেখো,
তোমার বুকের গভীরে দেখো, তোমায় খুঁজে পাবে সেখানে,
তোমার তুমি’টা যেখানে বাঁচে, এই আমি’কে সেখানে পাবে।