আমার উত্তমকুমারকে

 
প্রিয়তমেষু, আমার উত্তমকুমার,
কেমন আছ তুমি?
অনেক দিন আমাদের দেখা হয় না।
আমাদের দুজনের বিকেলগুলি আজ...
শুধুই আমার, কিংবা শুধুই তোমার।
কিংবা আমাদের কারও নয়।
সব বিকেলই তো আর ব্যক্তিগত হয় না...!


টেবিলে এককোনায় খয়েরি খামগুলি পড়ে আছে। অব্যবহৃত। দুবছর হলো।
ওদের দিকে তাকাই আর ভাবি, ওরা দোকানেও তো থাকতে পারত,
এখানে এসেই-বা কী লাভ হলো ওদের?


আমার শুধু একটা চিঠিই তোমার ঠিকানায় পৌঁছেছে।
অনেক চিঠি রয়ে গেছে খামে ঢোকার প্রতীক্ষায়।
আজ ওদের কোনও গন্তব্য নেই।
পৃথিবীতে অনেক চিঠিই এমন ঠিকানাবিহীন, অকেজো।


তোমাকে এখন আর লিখতেও ইচ্ছে করে না।
দিন বাড়লে দূরত্ব ক্রমশ গাঢ় হয়।
হতে হতে, রাস্তাটাও একসময় বিবর্ণ হয়ে যায়।


অবশ্য, যে পরিচয়ের শুরুটাই হয়েছিল বর্ণহীনভাবে,
সেখানে রঙের আশা করা যায়ও না!
এই আশাটাও তাই একধরনের পাপের মতো।
আশা আমি করিওনি, তবু আমি পাপী...
অন্তত নিজের কাছে।


ভুলে-যাওয়া যায় না জেনেও,
ভুলে-থাকাই একমাত্র পথ, এটা মাঝে মাঝে মেনে নিই।
বাঁচতে চাইলে কতকিছুই তো মেনে নিতে হয়!


তুমি কি জানো, আমাদের দেখা হয়েছিল...
দ্বিতীয়বার, দৈবক্রমে!
তোমার একটু দূরে আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম।
আমার দিকে কিংবা আমার দাঁড়িয়ে-থাকার জায়গার দিকে...
তুমি তাকাতেই, আমি ভয় পেয়ে পালিয়ে এসেছিলাম সেখান থেকে।


হয়তো তুমি আমায় দেখতেই পাওনি,
কিংবা দেখলেও চিনতেই পারোনি।
কী হই আমি...তোমার চেনার মতো?
সেদিন আমাদের দেখা হয়নি, সেদিন আমার দেখা হয়েছিল...


আগে অনেক কিছু বলতে ইচ্ছে করত তোমাকে।
তোমার তো তা-ও করেনি কখনও...!
এখন বুঝতে পারি, সব ভাবনাকে মুক্ত করে দিতে নেই।


পৃথিবীর নতুন অসুখ আবার নতুন করে উৎকণ্ঠা জাগিয়ে দিল।
তোমার জন্য ভয় হয় অনেক!


অন্তত, অবহেলাটা করার জন্য হলেও...
ভালো থেকো...সুস্থ থেকো।
...নিজের একটু খেয়াল রেখো।