আহুতি

 মানুষকে টেনে শ্রেণীতে এনে অসহায় করে ছেড়ে দেয় যে সভ্যতা--
আমি, আমি সে নগ্ন সভ্যতার যোনিতে জন্মনেয়া এক জীবন্ত পুত্তলিকা!
আমি জন্মান্ধ, বাকহীন এক সরল প্রতিমা...
 
আমি বাঁধন ভেঙে ওর দুটি হাত আপন মুঠোয় জড়িয়েছিলেম এক ভাদ্রের দুপুরে।
আকাশের মিঠে রোদ্দুর,
চারিদিকের কেমন এক শুভ্রতা--
আমাদের হেসে বলেছিল, এসো!
সে আহ্বানে সত্য ছিল, প্রেম ছিল।
আমার চুলে মেঘের ঘ্রাণ নিয়েছিল ও,
সেখানে ছিল না কোনও পাপ, কিংবা গ্লানি।
 
ওকে চিনলেন নাতো?
ও কোনও নেকড়ে, হিংস্র কুকুর, কিংবা বিষাক্ত কীট নয়।
ও একটা মানুষ ছিল।
ও আমার প্রেমিক ছিল।
ও গির্জায় যেত, আমি মন্দিরে।
কখনও বুঝিনিতো আমি--
ওদের ঈশ্বর, আমাদের ঈশ্বর--এক নয়, দুই।
সে তফাৎ ভুলতে গিয়ে ভুলেছি সে মাপ,
যে মাপে সৃষ্ট নগণ্য ঈশ্বর--কী বীভৎসভাবেই!
আর বিস্ময়ে মেনেছি--
সভ্য মানুষই স্রষ্টার স্রষ্টা!
 
সেই থেকে আমি ঘর ছেড়েছি,
পর করেছি বোধের জগত।
বিশ্বাস করো, বন্ধু আমার,
সেদিন থেকে যাযাবর আমি--
যেদিন দেখি, তুমি ওই গলিতে মাংস খোঁজো,
বেয়াড়া ও দুই অধর দিয়ে শুধাও কত দর!