উড়ে চলো স্বপ্নসংকলন

 
ধরো, এমন একটা পৃথিবী হলো, যেখানে তুমি আর আমি, আর কেউ নেই।
আলাদা একটা পৃথিবী। আমাদের দুজনের পৃথিবী।


সেই পৃথিবীর ঠিক মাঝ-বরাবর আমাদের একটা কুঁড়েঘর থাকত।
সূর্যগলা সোনারোদ্দুর হতো আমাদের সে ঘরটার সন্ধেবাতি!


রাত নামলে তুমি লটকে-থাকা চাঁদকে ছুঁয়ে
টুপুস করে আলতো ছোঁয়ায় এই কপালের মাঝখানটায় এঁকে দিতে টিপ!
ভাবতে পারো, কেমন হতো?


আকাশভরা নক্ষত্র আর তারকা যত---ছোট বড়ো মাঝারি দেহের…
ওরা সবাই যদি হয়েই যেত আমার শাড়ির আঁচলে-বোনা কারুকার্য…
সত্যি বলো, কেমন হতো?


কাঞ্চনজঙ্ঘার চুড়োটা যদি হতোই আমার নাকছাবিটা,
সমুদ্রের সবটুকু জল হয়েই যেত তোমার আমার পদ্মপুকুর,
সেই পুকুরঘাটে দুজন বসে পান চিবোতাম, আর
একইসাথে বুড়ো হতাম! ভেবে দেখো,
কতটা ভাগ্যি হলে মানুষ পায় অতটা এইজন্মেই!


অরণ্যের সব সবুজ নিয়ে সাজঘরটা সাজিয়ে দিতাম,
কিছু পাহাড়টিলা রেখেই দিতাম উঠোনের সাঁঝবাতিতে,
আর সন্ধে হলেই বুড়ো বুড়ি খোশগল্পে মেতে উঠতাম!
আমার গল্পগুলি ফুরোতই না কয়েক যুগেও…
বলো না, অমন হলে কেমন হতো?


তুমি রোজ সকালে একআকাশের রংধনুটা ছিনিয়ে এনে
আমার রাঙাসিঁথিতে সিঁদুর দিতে,
আমার ইচ্ছে হলেই
সেখান থেকে লালরংটি নিয়ে তোমার গালে লেপটে দিতাম!


এমনি করে, হাসিতে গানে ঘুরত বছর কয়েক কোটি!
একদিন হঠাৎ করেই, কিছু ছানাপোনায় ঘর ভরত!
আমাদের ভাঙাঘরে চাঁদের আলোয় মুঠোয় মুঠোয় সুখ ঝরত!


আমাদের সন্তান হতো অগনিত…ওদের হাতে
সেই পৃথিবীর সমস্ত দায় বুঝিয়ে দিয়ে,
আমরা দুজন ফিরে খুঁজতাম এই পৃথিবী!


অমন একটা পৃথিবী হলে ভালোই হতো!
কিছুটা সময় দুঃখ ভুলে ভালো থাকতাম,
সেই পৃথিবীর সমস্ত সুখ বুকে রেখে
এই পৃথিবীই একটুখানি গুছিয়ে নিতাম!