একুশ বছর

একদিন একুশ বছর ধরে তোমার আমার দেখা হবে না। তোমার আমার মাঝখানটায় সদম্ভে মাথা উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে একুশ বছরের দূরত্ব।


এই একুশ বছরে পালটে যাবে অনেক কিছু।


তোমার ঘরে ফুটবে আরও দু-একটা মানবপুষ্প। তোমার সীমানা-অতিক্রম-করা ভুঁড়িটা আরও দু-এক ইঞ্চি চর্বির উৎপাদনে উন্নত হবে। কপালে চামড়ার ভাঁজগুলো আরও কয়েক দফায় বৃদ্ধি পাবে। সংকীর্ণ আয়তনের কপালটা অধিকার করে বসবে টাক নামের এক উদোম জমিন।


একদিন তোমার আমার মাঝেও দাউ দাউ করে জ্বলবে একুশ বছরের আগুন।


তুমি ভুলে যাবার অভিনয় করে করেও, কখনও কখনও, গভীর রাত হলেই বাথরুমে গিয়ে ঠোঁট কামড়ে কেঁদে উঠবে। ভীষণ ব্যস্ততার ভিড়েও কার কথা যেন ছ্যাঁৎ ছ্যাঁৎ করে তোমার বুকে এসে বিঁধবে। ডাক্তার জানাবে, তোমার প্রেসার বেড়েছে, ডায়াবেটিস হয়েছে, উচ্চরক্তচাপ জেঁকে বসেছে। সাথে আছে গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা। অপারেশনের নামে তোমার বুক কেটে কুটে দেখা হবে। তন্ন তন্ন করে খুঁজেও সেখানে কেউই কিছুই দেখতে পাবে না। কেউ জানতেই পারবে না যে, ওইখানে, ওই বুকটাতে, একুশটি বছর ধরে আমার নিরবচ্ছিন্ন অশরীরী বসবাস তোমার অন্তরটা ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাচ্ছে ক্রমাগতই।


একুশ বছর পরেও কেউই দেখতে পাবে না কিছুই। কেউই না, একদমই কেউ না...।