এক নায়কের গল্প

২০০৬। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা চলছে।

: এই ছেলে, তুমি এখানে আসছ কেন?

: ম্যাডাম, আমি তো কিছু করি নাই। আমি তো একজাম দিচ্ছি।

: না না, সেটা না। তুমি জানো না, আমাদের এখানে ২টা প্রতিবন্ধী কোটা আছে? এই বছর কেউ তো অ্যাপ্লাই-ই করে নাই। তুমি তো অ্যাপ্লাই করলেই সরাসরি ভাইভা ফেস করতে পারতা।

: আমি জানি, ম্যাডাম। কিন্তু আমি মনে করি না যে আমার কোনো সমস্যা আছে। আমার ফাইট করার অ্যাবিলিটি আছে। তাই আমি কোটায় অ্যাপ্লাই করি নাই।

এই গল্পটা যার, ওর বয়স যখন চার, তখন একটা দুর্ঘটনায় ওর শরীর ঝলসে যায়। ঘটনাটা বলি। গভীর রাত। সিলেটের প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটা গ্রামের বাড়ি। ও ঘুমিয়ে ছিল ওর দিদিমার পাশে। সাথে আরও দুই ভাই-বোন। পাশের আঁতুড়ঘরে ৯ দিন বয়েসি সবার ছোটো ভাইটির সাথে মা ঘুমোচ্ছেন। বাবা প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক। চাকরিসূত্রে অন্য একটা উপজেলায় ওর আরেক বোনকে নিয়ে থাকেন। বোনটি ওখানে স্কুলে পড়ে। প্রতিদিনের মতো দিদিমা ৩ ভাইবোনকে নিয়ে রাতে বাইরে যেতে উঠলেন। বাকি ২ জন উঠল। ওকেও ডাকলেন। কেন জানি সেদিন ঘুম জড়ানো চোখে ও বলল, “যাব না।” বিছানার পাশে একটা নিচু তেপায়ার ওপর কেরোসিনের কুপি জ্বলছে। অশীতিপর দিদিমা চোখে দেখেন না অতোটা। খাট থেকে নামার সময়ে মশারির নিচের অংশটা গিয়ে পড়লো বাতির ওপর। দিদিমা খেয়াল না করে দরোজা ভেজিয়ে দিয়ে বাইরে গেলেন। মশারিতে আগুন লেগে কিছুক্ষণের মধ্যে দাউদাউ করে সারা ঘরের চারপাশে আগুন ছড়িয়ে পড়ল। আগুনের লেলিহান শিখা যেন ঘরের ছাদ ফুঁড়ে বেরুতে চায়! প্রচণ্ড তপ্ত ধোঁয়ায় মুহূর্তের মধ্যে চারিদিক ভরে গুমোট হয়ে গেল। দিদিমা সেদিন ভুল করে আঁতুড়ঘরের দরোজাটা, যেটার ২ দিকেই ছিটকিনি ছিল, ওটার ওই রুমের বাইরের দিকের ছিটকিনিটা আটকে দিয়েছিলেন। আগুন লাগার পর মা তার অসুস্থ দুর্বল শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে দরোজায় আঘাতের পর আঘাত করেও উচ্চস্বরে বিলাপ করা ছাড়া কিছুই করতে পারলেন না। কাঁচা ঘুমভাঙা ৪ বছরের ভয়ার্ত শিশুটি সেইদিন ভয়ে কাঁদতে পর্যন্ত ভুলে গিয়েছিল। ওর গায়ে সরাসরি আগুন লাগেনি, কিন্তু সেই ছোট্টো ঘরটিতে আগুনের গনগনে উত্তাপ ওর ছোট্টো হাতমুখ ঝলসে দিল। এরপর ভুল চিকিৎসায় কিংবা ঠিক চিকিৎসার অভাবে, ওর হাতের আঙুলগুলো চিরতরের জন্যে বেঁকে গেল। ২ হাতেরই একপাশের কোনায় সবক’টা আঙুল চিরতরে সরে গেল; আমাদের হাতের আঙুল যে জায়গায় থাকে, সে জায়গায় ওর হাতের একটা আঙুলও নেই, হাতের পাশে কেমন যেন কোনোরকমে ঝুলে রইল। (আমি জানি না, এটাকে কী বলে; রগের টান খাওয়া বলে বোধ হয়। আমার ডাক্তার বন্ধুরা ভাল বলতে পারবেন।)

সেই শিশুটা শত প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে লিখতে শিখল আবার নতুন করে। ঝুলে থাকা অচল আঙুলগুলো কলমের সাহচর্যে আস্তেআস্তে সচল হল। নিষ্ঠুর পৃথিবীর বাঁকা চোখের চাহনি কুৎসিত ব্যঙ্গ তুচ্ছতাচ্ছিল্য উপহাস সহ্য করে করে সেও একদিন বড় হল। ও সেই দিন প্রবল আত্মসম্মানবোধ থেকে আইন অনুষদের ভর্তি পরীক্ষায় আর দশটা ছেলেমেয়ের মতোই কোনো ধরনের বাড়তি সুবিধা না নিয়েই পরীক্ষা দেয়। ইংরেজিতে একটু দুর্বল ছিল বলে ও চান্স পায়নি। অথচ কোটায় অ্যাপ্লাই করে খুব সহজেই ও ভার্সিটিতে ল পড়তে পারত। ছোটোবেলা থেকে ও নিজের কাছে কখনোই হারেনি, সেইদিনও না।

ওর খুব ইচ্ছে ছিল ডাক্তার হবে; বার্ন কেসের ভিক্টিমদের প্রোপার ট্রিটমেন্ট দেবে। কিন্তু ও মেডিকেলে চান্স পায়নি। ভর্তি পরীক্ষায় বায়োলজিতে ফেল করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ইউনিটে চান্স পায়নি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কেমিস্ট্রিতে চান্স পেয়েছিল, কিন্তু বাসা থেকে অতো দূরে ওকে পড়তে পাঠায়নি। সেই সদ্য এইচএসসি পাস-করা কিশোরের জেদ ছিল, জীবন থাকতে ও কখনোই কোটা সুবিধা নিয়ে কোথাও অ্যাপ্লাই করবে না। বাম্বেল বি’র গল্পটা জানেন তো? বাম্বেল বি’র যে শারীরিক গঠন, তাতে ওর উড়তে পারার কথা না। জীববিজ্ঞান কিংবা পদার্থবিজ্ঞানের কোনো সূত্র দিয়েই ওর উড়তে পারার রহস্য বের করা যায় না। কিন্তু বাম্বেল বি দিব্যি ওড়ে। এক বিজ্ঞানী এই ব্যাপারটার একটা চমৎকার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “বাম্বেল বি’র যে উড়তে পারার কথা না, এটা বাম্বেল বি নিজেই জানে না। জানলে ও কখনোই উড়তে পারত না।” আমার গল্পের নায়কও ওরকম। ও নিজে কখনোই মনে করত না, ও অসুস্থ। প্রয়োজনে ভেঙে যাবে, তবুও বাঁকবে না; এতোটাই দৃঢ় ছিল ওর মনোবল। পরে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ও পরীক্ষা দেয়। ওর কাছে মনে হয়েছিল, সাস্ট বাংলাদেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়, কারণ ওই সময়ে ওখানে কোনো কোটা সুবিধা ছিল না। সবাইকেই ফাইট করে চান্স পেতে হত। সাস্টে ও ৩টা ডিপার্টমেন্টে চান্স পেল। ভর্তি হল ইকোনোমিক্সে। কেন? ওর সাথে তো আর কেউ অতোটা মিশতে চাইত না। সবাই কেমন যেন এড়িয়ে এড়িয়ে চলত। ওর সাথে শুধু যে ২ জন বন্ধু মিশত, ওকে ভালোবাসত, অন্তত একটু সময় দিত, ওরা ভর্তি হয়েছিল ইকোনোমিক্সে; তাই সেও ওখানে ভর্তি হল, কেউ না কেউ অন্তত সাথে থাক, পাশে থাক, যে তাকে করুণা করবে না, একটু হাসিমুখে কথা বলবে, যেভাবে করে কাস্ট অ্যাওয়ে মুভিতে টম হ্যাঙ্কস জনমানবশূন্য নীলাভ দ্বীপের অসহায় নিঃসঙ্গতা সহ্য করতে না পেরে নিজের হাত রক্তাক্ত করে হাতের ছাপ একটা বলের ওপর দিয়ে সেটা নাম দিয়েছিল উইলসন আর ওটার সাথেই কথা বলত। কথা বলতেও তো কাউকে লাগে! যাকে কেউই ভালোবাসে না, সে এই পৃথিবীতে কীভাবে বাঁচে? পড়াশোনা করা তো অনেক দূরের কথা!

শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হওয়ায় ওর সবচেয়ে বড় যে সুবিধেটা হয়েছিল, সেটা হল এই, একেবারে সাধারণ লোকজন ওকে খুব কাছের মানুষ ভাবত, ওর সাথে সবকিছু শেয়ার করত, ওদের সুখদুঃখের কথা বলত। ওর সবার সাথে মেশার সুযোগ হয়েছিল অন্য অনেকের চাইতে অনেক বেশি। এভাবে করে করে সে নিজের চারপাশের জগতটাকে অনেক ভালভাবে বুঝতে শিখে গিয়েছিল। সংসারে যাকে কেউই চায় না, যার থাকা না-থাকায় কারও কিছু এসে যায় না, সে বড় সৌভাগ্যবান; জীবনটাকে জানার, বোঝার সুযোগ তার সবচাইতে বেশি। বেঁচে থাকাটাই যাদের কাছে বোনাস, তাদের হারানোর কিছুই থাকে না; প্রত্যাশা কম, তাই প্রাপ্তি অনেক বেশি; শীর্ষেন্দুর সাঁতারু ও জলকন্যা’র জলকন্যাটির মতো।

একদিন ডাক্তারের চেম্বারের ওয়েটিং-রুমে। পাশেই বসেছে কিছু মেডিকেল রিপ্রেজেন্টিটিভ।

: আপনার এই অবস্থা কেনো ভাই? আপনার তো জীবন শেষ!

: শেষ কোথায় ভাই? বেঁচে আছি তো!

: এতো কষ্ট করে বেঁচে থাকা আর না-থাকা তো সেইম! জীবনে তো আর কিছুই রইল না।

: ভাই, আপনার কাছে জীবনে কিছু থাকা মানে কী?

: এই, ভালো একটা জব, সুন্দর একটা মেয়েকে বিয়ে করা, আনন্দ-ফুর্তি। এ-ই আর কী!

: কিন্তু ভাই, আমার কাছে তো তা নয়। সবার কাছে কি জীবনের মানে এক? আমার কাছে জীবন মানে একটা ইনফিনিটি। ইনফিনিটি মানে বোঝেন তো? অসীম। এর সাথে একটা ১ যোগ করে নেন, কিংবা বিয়োগ করেন। কী এসে যায়? কোনো পরিবর্তন হবে, বলেন? হবে না। যেমন ছিল তেমন-ই থেকে যাবে। আমার হাতের আঙুলগুলো তো আছে অন্তত, অনেকের তো তাও নেই। ওরাও তো বাঁচে, না? ওরা কীভাবে বাঁচে? কারও জীবনের অর্থ ঠিক করে দেয়ার আপনি কে?

: সরি ভাই, আমি কখনো এভাবে করে ভাবিনি। কিছু মনে করবেন না।

: আরে না ভাই! কী যে বলেন! আমি এই সব শুনতে অভ্যস্ত। আমাকে নিয়ে আপনি যা-ই কিছু বলেন, আমার ওতে কিচ্ছু হবে না। কারণ, আমি জানি আমি কী। আপনি তো তেমন কিছুই বলেননি, আরো বড় কিছু বললেও আমি হজম করতে পারতাম। কিন্তু আপনার কাছে আমার আর্নেস্ট রিকোয়েস্ট, আমার মতো অন্য কাউকে কখনো এভাবে করে বলেবেন না। এভাবে বললে সবাই তো আর নিতে পারবে না। তীব্র কটু কথা এনজয় করার মতো শক্তি সবার থাকে না। কাউকে ভেঙে দিয়ে আপনার কী লাভ?

ও যখন ভার্সিটিতে পড়ত, তখন ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। সুস্থ রাজনীতির চর্চা করত। সাস্টের অভ্যন্তরীণ কিছু ঘটনায় ওর ছবি কিছু জাতীয় দৈনিকের প্রথম পাতায়ও এসেছিল। ওর ভাবনায়, “যদি রাজনীতি ঠিকভাবে করা যায়, তাহলে অনেক কিছুই শেখা যায়। জীবনকে চেনা যায়। নিজেকে চেনা সহজ হয়।” ……… ফোর্থ ইয়ারের শেষের দিকে। এরপর হঠাৎ সে একদিন ভেবে দেখল, এই রাজনীতিতে বিভিন্ন সিনিয়র পদ পাওয়ার লোভে অনেকেই আদু ভাই হয়ে বছরের পর বছর ভার্সিটিতে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকে। এই জীবন জীবন নয়। মিলান কুন্দেরার মতো সেও ভাবল, জীবন এখানে নয়; জীবন অন্য কোথাও!

অনার্স শেষ হল। বিসিএস-এর সার্কুলার এলো। বাসায় বাবা-মা-ভাইবোন আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধবদের চাপে অনুরোধে প্রচণ্ড অনিচ্ছা সত্ত্বেও ও বিসিএস-এ প্রাধিকার কোটায় আবেদন করল। এরপর থেকে কেমন যেন এক ধরনের প্রবল অপরাধবোধ আর অনুশোচনাবোধ জন্ম নিলো ওর মধ্যে। ও অনেকটা নাওয়াখাওয়া ছেড়ে দিয়ে চেষ্টা করা শুরু করল। ও বিশ্বাস করত, স্রষ্টার কাছে মন থেকে ভাল কিছু চাইলে, আর সেটা পাওয়ার জন্যে মনপ্রাণ দিয়ে চেষ্টা করলে তিনি কখনোই খালিহাতে ফেরান না। ও খুব করে চাইছিল, প্রাধিকার কোটায় ফরেন কিংবা অ্যাডমিন ক্যাডার হওয়ার চাইতে বরং ওর মেধা কোটায় শিক্ষা ক্যাডারে হোক। ও চাকরি করবে। হুমায়ূন আহমেদের ‘সৌরভ’ গল্পের আজহার খাঁর মতো একটা সাদামাটা সুখী জীবন কাটাবে। আফসোসের চাইতে দারিদ্র্যও ঢের ভাল। এরপর ও সিদ্ধান্ত নিল, ভুল যখন হয়েই গেছে, এবার কোটায় চাকরি পেলে সে জয়েন করবে না, পরের বার আবার পরীক্ষা দেবে। কখনোই তো কারও কাছ থেকে সুবিধা কিংবা আনুকূল্য নিয়ে সে জীবনের ২৫ টা বছর কাটায়নি, তবে পরের ৩৪ বছর এই আনুকূল্যের আত্মদংশন নিয়ে কীভাবে সে চাকরি করবে? ও পরীক্ষা দিল। রেজাল্ট বের হল। মেধায়ই চাকরি পেল; অ্যাডমিন ক্যাডারে। স্রষ্টা সবাইকেই তার প্রাপ্য সম্মান দেন। পৃথিবী আরও একবার তা দেখল।

যে মানুষটাকে দেখে-দেখে সে প্রথম বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন বুনেছিল, উনি ছিলেন ওর একই গ্রামের, পাশের বাড়ির; বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের একজন সদস্য। সদা হাসিখুশি অমায়িক সে মানুষটি দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে চাকরিতে জয়েন করার ১ বছরের মাথায় ইন্তেকাল করেন। উনার লাশ থাইল্যান্ড থেকে আনা হল। পরেরদিন তাঁর নামাজে জানাজা হওয়ার কথা সকাল ১১ টায়। অনুপ্রেরণার নায়ককে শেষ বারের মতো দেখতে ও সিলেটে যায়। ভোর ৫ টায় ঘুম থেকে উঠে গোসল সেরে রওয়ানা হয়ে সুরমা নদী পার হয়ে মোটরসাইকেলে চেপে যখন সে জানাজাস্থলে পোঁছায়, তখন লাশ মাত্র কবরে শোয়ানো হয়েছে। মৃত্যুর পরের ধর্মীয় রীতিনীতি ও অতোটা ভালোভাবে জানত না। কবরের পাশের একজনকে বলল, “ভাই, আমি উনার মুখ দেখব। আমি অনেক দূর থেকে শুধু এই জন্যই এসেছি। আমি উনাকে শেষবারের মতো একবার দেখতে চাই।” লাশের মুখের কাপড় সরানো হল। ওর স্বপ্ন দেখানোর মানুষটি ঘুমিয়ে পড়েছে। স্বপ্ন আজ চিরতরে স্বপ্ন হয়ে গেছে। হয়তো ওর মনে বাজছিল আর কে নারায়ণের সেই অমোঘ কথাটিঃ What is the use of the lamp when all its oil is gone? চোখের জলে ভেজা কবরের মাটি হাজার বছরের পুরনো অভ্যস্ততায় আরো একবার ভিজল শুধু; আর কিছু নয়।

ওর কিছু কথাকে কিছুটা আমার নিজের মতো করে বদলে দিয়ে এই লেখাটার ইতি টানছি। “দাদা, আপনি তো ৫-১১। আপনি চাইলে হয়তো বড়োজোর ৬ হতে পারবেন। আমি এখন যতোটা আছি, তার চাইতে না হয় আরো একটু ফর্সা হতে পারব। আপনি চাইলে আপনার সম্পদ হয়তো আরো একটু বাড়াতে পারবেন। এর বেশি কিছু কিছুতেই না। আপনি কখনোই পুরো পৃথিবীর মালিক হতে পারবেন না। আপনি পৃথিবীর সবচেয়ে সুদর্শন পুরুষ হতে পারবেন না। কারণ, এ সবকিছুই আপেক্ষিক। স্রষ্টা এর সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। শুধু আপনার একটা ঐশ্বর্যকেই আপনি আপনার ইচ্ছে মতো বাড়াতে-কমাতে পারবেন। সেটা হল আপনার মন। আপনার মনকে আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। একটু ভাবুন, আপনি কী করলে আপনার বন্ধুরা আপনাকে আরো বেশি ভালোবাসবে, আশেপাশের লোকজন আরো বেশি সম্মান করবে, আপনার বাবা-মা আত্মীয়স্বজন আপনাকে নিয়ে গর্ব করবে, আপনার অর্জন আপনি সবাইকে গর্বভরে বলতে পারবেন এবং এর সব কিছুই হবে এমনভাবে যা আপনি নিজে ভালোবাসবেন। এক কথায়, দিনের শেষে সবাই আপনাকে ভাল বলবে, আপনার জন্যে শুভকামনা করবে, আপনাকে নিয়ে একটুখানি হলেও ভাববে। এটাই হল অনুপ্রেরণা। এটার জন্যে জীবনবাজি রেখে ছোটা যায়। নিজের ডিসিশনের প্রতি সিনসিয়ার থেকে স্বপ্নের পথ ধরে হাঁটা যায়। আমাদের এই আবেগ দিয়েই আমরা আমাদের মনটাকে আমাদের সুবিধে মতো কাজ করিয়ে নিতে পারি।”

পুনশ্চ। আরেকটা তথ্য দেই। পুরো সাস্টে সুন্দর হাতের লেখার জন্যে সবাই চিনত, এরকম ২-১ জনের মধ্যে ও ছিল ১ জন।