কবিতা, কবিকে

 
: তুমি আমার একটাই কবি!
একটা কবিতা দেবে? একেবারে সদ্যোজাত, খুব টাটকা…দেবে?
অ্যাই শুনছ, কবি? একটা কবিতা দাও না!
…মায়ায় ভরা, ভালোবাসায় মোড়া?
: তুমি কী গো, বলো তো? আহা, কত সুন্দর তোমার শব্দবুনন, কত নিখুঁত - সরল চাওয়া…
: তুমি বরাবরই বাড়িয়ে বলো, এখন বুঝি! যাক, পড়েছ তা হলে, আমি ওতেই খুশি!
বাড়িয়ে এত…বলছ কেন? আমি তোমার দূরের বুঝি? ভালো কথা, কবিতাটা কখন দেবে?
: আরে, লিখব, বাবা! এত অধীর কেন? তোমার হাতে, সময়টা কি পালায় নাকি?
: সত্যিই তুমি দারুণ লিখো! একটা কবিতাই তো…শুধু আমার জন্য…দাও না লিখে!
: এ কী বিপদ! এখন কী যে করি! ভূরি ভূরি শব্দ মাথায়…তোমায় ভাবি, আর শব্দ ভুলি!
: হয়েছে, এবার থামো। কাগজ কলম নাও তো হাতে! লিখতে বসো! লেখা আসবে ঠিকই…
: আহা বাবা, লিখছি, দাঁড়াও! এমন বকছ কেন? এবার সামনে এসে চুলটা খোলো…এদিক তাকাও…
: হ্যাঁ, এলাম, জনাব!…চুল খুললাম…এখন বলো, লিখবে শুধুই? না কি আঁকবেও সাথে? কাছে ডাকলে কেন?
: কী যে বলো! এত কাছে এলেই যখন, শুধুই এঁকে - লিখে হারাব সুযোগ? ছোঁব না তোমায়?
লেখা হয়ে যাবে, আঁকা হয়ে যাবে…তবু যে আগুন জ্বালালে তুমি, তা নিভবে কীসে? বোঝো না কেন?
: কী বলছ এসব? লিখতে তো জানি…কাগজ লাগে, কলম লাগে…ওখানে আবার আগুন কীসের?
: বুঝেছ কচু! লিখতে গেলে সবই লাগে! তোমাকে লাগে, আগুন লাগে, এমনকি…আমাকেও লাগে!
: সে কী কবি! তাই বুঝি তুমি রাতেই লেখো? আর রাত ফুরোলেই পালিয়ে বেড়াও? রহস্যটা কী?
: জানো না সে-ও? শুনে নাও তবে…রাত নামলেই জন্ম নামে, মৃত্যু সরে, জীবন নাচে! রাতের কায়ায় সবই যে দামি!
: তা-ই যদি হয়, তবে জেনে রেখো, কবি,…নিশিকবিতা দিনের বেলায় ফুরোয় যদি, সে কবিতায়, আমি নেই গো, আছে শুধুই আমার ছায়া!