কাপুরুষ

আমার ভালোবাসার মানুষটির কথা আমি গর্বের সাথেই বলতে চাই।
সব মিলিয়েই সে ভালোমানুষ, শান্তশিষ্ট আর নিঃসন্দেহে একজন সুপুরুষ!
তবে শুধুই গর্বে নয়, লজ্জায় দুভাগ হয়ে যাওয়া মাটিতে লুকিয়ে এবেলা এ-ও বলে যাই,
ওসবের সাথে সাথে সে মস্ত বড়ো একটা কাপুরুষ!


প্রেমটা তার কাছে মৌসুমি ফলের মতন---
একেক কালে যেমনি আসে একেকটা ফল,
তেমনি তারও, হুট করেই প্রেম আসে, আর হুট করে যায়ও চলে!
আমি তো মানুষ, অন্তর্যামী তো নই, তার মনে প্রেমটা কখন যে আসে, আর কখনই-বা বদলায় হাওয়া,
ওসবের কিছুই আমি খুব চেষ্টা করেও ঠিক বুঝতে পারি না!


যে মানুষ সকালেই আবেগে গদগদ হয়ে, আমায় রজনিগন্ধা পাঠায় পুরো একতোড়া,
সেই একই মানুষ, বিকেলবেলায় গাম্ভীর্যপূর্ণ যত কথা পাড়ে,
আর সেসবের বিশ্লেষণে স্বউদ্ভাবিত বাস্তবতার পক্ষ নিয়ে একপৃথিবী যুক্তি খাটায়!


ঘুরতে গিয়ে সন্ধে নামলে ফেরার পথে, অনভ্যেসে, যখন অন্ধকারে রাস্তা চলি, ভয় এসে যায়!
তখন সে ওসব কিছুর পরোয়া না-করে হাত ছেড়ে দেয়, বেশ অপরিচিতের ভানটা ধরে---
লোকে আমাদের যদি দেখে ফেলে, আর কিছু কয়!


আমায় যখন সে আদর দিত, স্নেহে মাখত,
ভাবতাম তখন, লোকে কেন প্রেমকে এত কঠিন বলে? এ সোজাই তো বেশ!
তবে দিনের শেষে, আমি ঠিকই চুপ মেরে যাই!
প্রেমিকপুরুষ যদি হয় কাপুরুষ, কী যে ভীষণ যন্ত্রণা হয়, সে আমি কী করে যে কাকে বোঝাই!


অনেক বুঝে, অনেক ভেবে সিদ্ধান্তটা নিয়েই নিলাম!
কত মায়া দিয়ে আর যত্ন করে তাকে ভালোবাসলাম!
বুক ছিঁড়ে যায়, কান্নার বাঁধ ভেঙে যায়,
তবুও এই রাত্রিবেলায়, দিনের বেলার সিদ্ধান্তটা হচ্ছে নিতেই!


আমার যত অশ্রুকণা, দুচোখ বেয়ে, গাল গড়িয়ে, আমার গলার লকেটেই নাহয় শুকিয়ে থাকুক!
বুকে পাথর বেঁধে মানুষটাকে ছুটি...দিয়েই দিলাম!
সে পালিয়েই যাক! আহা, কাপুরুষ এক প্রেমিক আমার!
তার পাপপুণ্য সে একাই রাখুক…বুকপকেটে…সেলাই করে!