কিংবা, একটি সবুজ খামের গল্প/দুই

খুব বেশিদিন নয়, এই ধরুন ছমাস! কিন্তু আমার কাছে মনে হয়, এটাই অনন্তকাল। ভাল কথা, আপনি আমাকে কবে খেয়াল করলেন? আমি আপনার বিশাআআআল ফ্রেন্ডলিস্টের এক কোণায় ভয়ে গুটিসুটি মেরে লুকিয়ে ছিলাম। আমাকে তো পাওয়ার কথা নয় আপনার!

আমি তোমাকে পোক করেছিলাম। মনে নেই? নাও থাকতে পারে। সুন্দরীদের অনেকেই পোক করে পকপক করার জন্য। তুমি তো অনেক সুন্দর দেখতে, বুঝতে হবে।

আচ্ছা! তাই নাকি? আপনি তো দারুণ ফ্লার্ট করতে পারেন! আপনার কমপক্ষে এক ডজন গার্লফ্রেন্ড থাকার কথা ছিল! যেকোনও মেয়েই আপনার কথা শুনলে খুশিতে অজ্ঞান হয়ে যাবে!

Tell me something I didn’t know……….I repeat!

আপনার আরও বেশি-বেশি হাসিখুশি হওয়া উচিত।

এ আবার কীরকম কথা? আমি দেখতে বাজে, তাই?

কীরকম মানে, আমার মতো হাসিখুশি। আপনার চেহারা বাজে, আমি এটা মিন করে কিছু বলিনি।

তো?

আপনাকে ছবিতে অনেক গম্ভীর দেখায়। কিন্তু, আপনি সম্ভবত ওরকম নন। আচ্ছা, আপনাদের সমস্যাটা কী? সব সফল মানুষগুলিই একই রকমের, মানে নার্ড?

মানে? কাকে বললে এই কথা? আমাকে? কেন?

যা বলার বলে ফেলেছি। বুঝলে বুঝবেন, না বুঝলে নাই।

You sound rude! কী হয়েছে? আমি কী করলাম আবার?

কিছুই করেননি! বেশি-বেশি ভাল-ভাল রেজাল্ট করে বসে আছেন আপনারা! কী দরকার, ভাই? আমরা তো কিছুই করতে পারছি না। অতো কিছু করতেও চাই না। অথচ আমাদেরকেও আপনাদের স্ট্যান্ডার্ডে চলতে বাধ্য করা হচ্ছে। কেন আপনারা বেঞ্চমার্ক হবেন আমাদের জীবনের? কোন অধিকারে? I just hate all the বেশি মেধাবী people!

এতো রেগে যাওয়ার কী আছে? বাসায় মুড়ি আছে?

ফ্রিজে স্প্রাইটও আছে। মুড়ি ভিজিয়ে খেয়ে ফেলব? আপনি অসহ্য! আপনারা জাস্ট অসহ্য! I don’t wanna feel low for you! আম্মুউউউউউ………..

ওকে আমার সাথে পকপক করছ কেন? যাও ভাগো! বাই!

এহহহ্……ঢং! ভাগলেই যদি বেঁচে যেতাম, তাহলে তো সে কবেই পালিয়ে যেতাম! নিজেকে লুকিয়ে ফেলতাম! আসলে ওটা ঘৃণা নয়, আমি আপনাদেরকে ঈর্ষা করি, প্রচণ্ডভাবে ঈর্ষা করি। মনে-মনে আপনাদেরকে গুলি করে মেরে ফেলি প্রায়ই! আচ্ছা সত্যি করে বলুন তো, আপনারা কী খান? কিংবা, আপনাদের মাথার ভেতরে কী আছে? আমি আপনাদের সবাইকে ধরে আপনাদের মাথার খুলিগুলি সব ভেঙে ফেলব। উফফফ্…….!! পুরাই বিরক্তিকর!

কোনও এক জিনিয়াসের সাথে প্রেম কর, সব বুঝে যাবে। চাইলে আমার সাথেও করতে পার। আই ডোন্ট মাইন্ড!

সাহস থাকলে এই কথাটা ফেসবুকে পাবলিকলি বলেন তো দেখি! ‘পারফিউম’ মুভিটার কথা মনে আছে না? ওরকম হাজার-হাজার মেয়ে আপনার গায়ের উপর এসে হুমড়ি খেয়ে পড়বে। তখন সামলাতে পারবেন তো?

এক কাজ কর তাহলে। আমাকে ট্যাগ করে তুমিই একটা পোস্ট দিয়ে দাও। আমি disown করব না।

আমার কিন্তু মাথার কয়েকটা তার ছেঁড়া আছে। আমি সত্যি-সত্যি দিয়ে দেবো।

ওকে দাও।

বলুন, কী লিখতে হবে! যা লিখতে বলবেন, তা-ই লিখে দেবো হুবহু!

যা ইচ্ছা, লিখ।

আমি তো আর মেধাবী না আপনার মতো। আপনিই লিখবেন।

ওওওওওওও…………..

এতোগুলি ও দিয়ে কী বোঝালেন?

তোমার করোটি।

আবারও সেই টিনএজার অ্যাটিটিউড্!

হ্যাঁ। কোনও সমস্যা?

এতো খুশি কেন? কী হয়েছে?

আমাদের পাশের বাসার কালো বেড়ালের তিনটা শাদা বাচ্চা হয়েছে!

উফ্! বলুন না!

এই যে তোমার সাথে ডেটিং করছি, আমি তাই মহাখুশি!

আমরা ডেটিং করছি?

নাতো!

তাহলে বললেন কেন?

বলতে ইচ্ছে করল, তাই বললাম। এখন ঘ্যানরঘ্যান বন্ধ কর।

একশবার বন্ধ করব না! বন্ধ না করলে কী করবেন?

ওকে কান্নাকাটি চালিয়ে যাও! Happy Crying!

আমি কান্নাকাটি করলাম কোথায়?

আমি কী জানি?

তাহলে বললেন কেন যে, আমি কাঁদছি?

কাঁদছ, তাই বললাম, কাঁদছ। এটাও বুঝনি? আজব!

আগে বলেন, আমি কাঁদছি কেন?

তুমি কাঁদছ কেন, সেটা আমি কী জানি?

আমি কান্না করি নাই। হ্যাপি?

কান্না করনি? শিওর?

জ্বি স্যার! আমি কান্না করিনি।

কেন করনি? একটু কর না! একটু কান্না করলে কী হয়?

আপনি বেশি জ্বালান! কান্না করলেও প্রবলেম, না করলেও প্রবলেম! কই যাই?

ঘুমিয়ে যাও! গুড নাইট!

আপনি ঘুমান। বিরক্ত হচ্ছেন, রাইট? আগেই বলেছিলাম, আমি বাচাল প্রকৃতির!

তুমি বাচাল নও, কিছুটা বিরক্তিকর।

ওকে ওকে। তা আপনিই মজার কিছু বলুন না, শুনি একটু!

আমি তো যা কিছুই বলেছি, সবকিছুই ইন্টারেস্টিং!

ও রিয়েলি? ইন্টারেস্টিং ইউ! ঠিক আছে, এবার একটু ঝেড়ে কাশুন। আপনার কাছে কী কী ইন্টারেস্টিং মনে হয়?

তা তো জানি না!

ওহ্! ঝামেলা হয়ে গেল! এখন?

সেটাই!

বুঝতে পারছি, আপনি আসলেই বোরড্ ফিল করছেন। আমি তাহলে কী নিয়ে কথা বলি? আমি নিজেই কনফিউজড! আমার কি এখন buy বলা উচিত?

Buy?

কী আর করব? আপনি কথা বলছেন না। আমি কি একা-একা ভূতের সাথে গল্প করব নাকি?

সেটা ঠিক আছে। কিন্তু, buy? Or, bye?

সরি, রিয়েলি সরি! অটোসাজেশন অব্‌ ডাম্ব স্মার্টফোন! ওরকম করে বলতে হয়? আমি বিব্রতবোধ করছি। সরি সরি!

এভাবে সরি বললে তো হবে না! এতো বড় অপরাধ করেছ! বামপায়ের উপর দাঁড়িয়ে কানে ধরে সরি বলতে হবে। দাঁড়াও! কানে ধরো!

আপনি ধরেন গিয়ে যান! উফফ্! এই ছেলে! এতক্ষণ অফিসে কী? বাসায় যেতে হবে না?

যাব নাতো! বাসায় গিয়ে কী হবে?

অঅঅঅঅ……নিইইইই………কেএএএএত্…………..!! আচ্ছা, আপনাকে কেউ এরকম করে ডাকে না? আমি ডাকব, কেমন? আপনাকে কি কেউ অন্যকোনও নামে ডাকে? মানে, কোনও পেটনেইম?

……………………………………………………………..

এতো ভালোবাসেন যাকে, তাকে বললেই পারেন! এতো লম্বা স্ট্যাটাস! কেউ যদি আমার জন্য লিখত! কাশ!

পড়ে দেখ তো কেমন হল? ফিডব্যাক দাও।

পড়েই তো বললাম! অনেকবেশিই টাচিং!

পুরোটা পড় আগে! এরপর জানাও। কোন-কোন অংশটা ভাল হয়নি, সেটাও বল।

ওকে, বলছি স্যার! শুরুতে নিজেকে বেশি-বেশি বকা দেয়া হয়ে গেছে। তপু নিজেকে ওরকম বাজে-বাজে দিক দিয়ে জাজ করবে কেন? ওর তো ভাল-ভাল দিকও আছে।

ওকে কেয়ারফুলি নোটেড। দেন? আর কোথায়-কোথায় দুর্বলতা আছে লেখাটার?

ওটাকে আমি দুর্বলতা বলছি না, ওটা আসলে তপুর অতি সত্যকথন হয়ে গেছে। অতোটা না হলেও চলত মনে হয়। দেখুন, আপনি আমাকে আপনার লেখার দুর্বলতা দেখিয়ে দিতে বলেছেন। এটা বলাটাই তো বেশি-বেশি হয়ে গেছে! জনাব, আমি আপনার লেখাটা পুরোটাই পড়েছি। খুবই সুন্দর ঝরঝরে লেখা, একবসায় গিলে খেয়ে ফেলা যায়। আমি দুইবার খেয়েছি, সময় লেগেছে দেড় ঘণ্টা। আমি আপনার লেখার দুর্বলতা খুঁজে-খুঁজে বের করার ধৃষ্টতা দেখানোর কথা ভাবতেও পারি না। আপনি কি কিছু মনে করছেন আমার কথায়?

বেশি পকপক কম করতে পারো না? তোমার অবজারভেশন সত্যিই ভাল। সবাই তো আর পড়তে পারে না, কিন্তু ওদের মধ্যেও কেউ-কেউ পড়ে ফেলে। ওরকম কারও কাছ থেকে লেখা নিয়ে শোনার তো কোনও মানেই হয় না। তুমি নিশ্চয়ই ওরকম স্রেফ ‘পড়তে সক্ষম’দের দলে পড় না! তাই না? তোমার মতামতের গুরুত্ব আছে আমার কাছে।

I feel honoured, Sir! আচ্ছা, আপনি নিজে কি সেই তপু? তা যদি না হয়, তবে আপনি শাদা, না কালো, এটা নিয়ে অন্যের একটা কথাকে নিয়ে আপনি গল্প টেনে নিয়ে গেলেন কেন? নিজেকে স্পষ্ট করে মেলে ধরার দায়টা একটু বেশি-বেশি মনে হচ্ছে! আপনার পাঠককে এই ব্যাপারটাই সন্দেহে ডোবাচ্ছে।

শোনো, ফেসবুক লেখকদের সবকিছু বিশ্বাস করতে নেই। লেখকরা অনেককিছুই স্রেফ বেশি লাইক পেতেও লেখে। অন্যদের কথা জানি না, অন্তত আমি নিজে তা-ই করি। সবাই ভাল বলে, তাই আরও ভালকিছু লেখার ইচ্ছে থেকেই লিখি। এই তো! লাইকটাইক না পেলে সে কবেই ফেসবুকে পোস্টকরা ছেড়ে দিতাম! ভাল কথা, তুমি আমার ওই দীর্ঘ ডিসক্লেইমারটা পড়নি?

হ্যাঁ, পড়েছি তো! বিশাল কৈফিয়ত-সাহিত্য রচনা করে বসে আছেন। দুনিয়ার কবি-সাহিত্যিক-আর্টিস্টদের এনে জড়ো করে ফেলেছেন। পারেনও আপনি! যান যান! ওসব ঢংটং বন্ধ করে এইবার একটা বিয়ে করেন! Make her the luckiest girl on earth! আমাদেরকেও বাঁচান! অন্যদের জন্য আর কত লিখবেন? এইবার নিজের জীবনের গল্প লিখেন। দেখবেন, ভাল লাগছে।

তোমাদেরকে বাঁচাব মানে?

এখন বুঝবেন না, বড় হলে বুঝবেন, এখনও ছোট মানুষ। মজায় আছেন তো, তাই বুঝতে চাইছেন না।

আমি মজায় আছি, না?

আছেনই তো! আচ্ছা, আপনি মাঝেমাঝে আমার মেসেজের রিপ্লাই করেন না কেন? আমার রাগ লাগে!

ফোনে? নাকি ফেসবুকে?

দুটোতেই! আপনি খুব খারাপ। আমি হাঁ করে বসে থাকি কখন আপনার মেসেজের ভাইব্রেশনটা হবে, সে আশায়। এটা কি ঠিক, আপনিই বলুন! আচ্ছা, রিপ্লাই করেন না, সেটা ঠিক আছে। পড়েন তো আমার মেসেজগুলি? নাকি, সেটাও না?

আহা পড়ব না কেন? পড়ি পড়ি! প্রায়ই ফোনের সামনে থাকি না, তাই রিপ্লাই দিতে পারি না সাথেসাথে। পরবর্তীতে খেয়াল করলে রিপ্লাই দিতে ইচ্ছে করে না। আলসেমিও লাগে, আবার এটাও মাথায় কাজ করে, তুমি কী ভাববে, কী না কী পাল্টা রিপ্লাই দিয়ে বসবে এতক্ষণ পর রিপ্লাই দেয়ার জন্য! ওরকম আরকি!

আরেকটা অনুরোধ। ইনবক্সের রিপ্লাইয়ে ‘হুঁ’টা বাদ দেয়া যায় না, প্লিজ? ওটা দেখলেই মনে হয়, আমি আপনাকে বিরক্ত করছি।

তাহলে কী বলব?

অ্যাট লিস্ট ‘হ্যাঁ’ বলতে পারেন, চাইলে সাথে প্রেমময় কিছু লিখেও দিতে পারেন।

শুভরাত্রি।

Okay, it was abrupt! এরকম করছেন কেন আমার সাথে? আপনার কি ধারণা পৃথিবীর সব মেয়েই আপনার প্রেমে পড়ে বসে আছে? এমন রুড না হলেও হয়, তাই না? আপনি আমার সাথে কথা বলতে চান না, এটা অন্যভাবে বললেও তো পারেন!

কে বলল তোমাকে? আমার কি ঘুম আসতে পারে না?

ওকে যান ঘুমান! ঘুম এভাবে হুট করে চলে আসে না। আমি বাচ্চামেয়ে না। আমি সব বুঝি।

বকা দিচ্ছ কেন? আমি কী করেছি? বকা দিলে কান্না করে দিব একদম!

You were rude!!

আম্মুউউউউউউউ………………

হুম। আম্মুকে ডেকে কোনও লাভ নেই। আম্মু এসে কী করবে?

লাভ নেই কেন?

আমাকে কেউ ঝাড়ি দিলে আমিও তাকে এমনিতেই ঝাড়ি মারি। আম্মু কিছুই করতে পারবে না। হুহ্!

আর আমাকে কেউ এভাবে ঝাড়ি দিলে আমি কান্না করে দিই। যাই, বিছানায় যাই, কান্না করি গিয়ে। কেঁদে যদি হয় সুখ………..

ভেরি গুড! যান যান, কান্না করেন গিয়ে, যান! ঘুমান! কুম্ভকর্ণ একটা! ব্যাড নাইট! ভেরি ভেরি ব্যাড নাইট!!

এমন করছ কেন? আদর করে গুড নাইট বল। নাহলে কিছুতেই ঘুমাতে যাব না!

Nope! Why আদর? আপনি কি বাচ্চা মেয়ে যে টেডিবিয়ার দিয়ে ঘুম পাড়াতে হয়? ঘুম আসলে সোজা ঘুমাতে যাবেন। সিম্পল! নো আদরটাদর!

করবে না? ওকে ফাইন! ঘুমাতে যাচ্ছি। শুভরাত্রি! ভাল থেকো।

আমি কিন্তু এখনও রেগে আছি। ওকে বাই! আপনাকে অশুভরাত্রি! আপনার রুমটা রাতে বাদুর আর চামচিকা এসে ভরে যাক! ওরা আপনাকে ভয় দেখাক, ইচ্ছেমত খামচাক।

দুইতিন দিন পরের রাতে।

রেগে আছো এখনও?

আছি তো! তো, কী হবে রেগে থাকলে?

তোমার মাথা, তোমার নাক, তোমার চুল, তোমার কান, তোমার গাল, তোমার চিবুক হবে।

উটকো মানুষ একটা! আমার এইগুলি আবার কী দোষ করল?

দোষ করেনি। আমার ইচ্ছে, আমি এইগুলিকে ছুঁয়ে দেখব।

আজব!

কী আজব?

কী না, কে। আপনি আজব!

সত্যি কথা।

হ্যাঁ, সেটাই।

হুঁ।

হুঁ বলতে নিষেধ করেছি না? হুঁ বললে নাকের উপর ঘুষি মেরে দিব একদম!

হুঁ।

Again হুঁ?

হুঁ।

আপনি এইখানে কী করেন? যান ঘুমান গিয়ে! এখন আর আপনার ঘুম আসে না?

না, আসে না। তুমি আমার চোখের ঘুম কাইড়্যা নিসো!

খালি খালি আমার সাথে ঝগড়া করেন। আপনার আর কোনও কাজ নাই?

এটাই আমার কাজ! কোনও সমস্যা?

আপনি একটা ঘোড়ার ডিম, আপনি একটা তেলাপোকা, আপনি একটা যাচ্ছেতাই!

এইসবই আগে জানা ছিল। নতুন কিছু? আচ্ছা, আমি যাই। ঘুম ঘুউম ঘুউউম…………….

ওকে যান, ঘুমান গিয়ে যান! স্লিপি হেড একটা!

তুমিও ঘুমিয়ে পড়, কেমন? খুব লক্ষ্মী মেয়ে! শুভরাত্রি।

আমি লক্ষ্মী? বাহ্! ভাল ভাল! মানুষ চিনলেন! যাই হোক, আপনি ঘুমান। ক্লান্ত হয়ে আছেন তো!

পচা মেয়ে একটা! খালি বকা দেয় আমাকে!

আমি বকি নাতো! আপনাকে বকার আমি কে? কী করেন, গণ্ডারমানুষ?

ইউটিউবে গান শুনি।

কী গান?

ভাল গান!

উফ! জ্বালাবেন না একদম! সামনে থাকলে চুল টেনেছিঁড়ে, নাকে খামচি দিয়ে একাকার করে ফেলতাম! আপনার ভাগ্য ভাল! বলেন না, কী গান শোনেন!

নজরুলগীতি, হারানো হিয়ার নিকুঞ্জ।

কার কণ্ঠে?

আশার। অসাধারণ লাগছে!

‘আমার আপনার চেয়ে আপন যে জন’ শুনুন, কৌশিকীর কণ্ঠে। ভাল লাগবে।

আহা! কৌশিকী! আমার কৌশিকী!

মানে?

আমার গার্লফ্রেন্ড। তুমি জানো না?

খুউব, না? কৌশিকীর আর খেয়েদেয়ে কাজ নেই আরকি!

সত্যি বলছি! আমাদের বিয়েটাও প্রায় ঠিক হয়ে আছে; ফিফটি পার্সেন্ট। আমার দিক থেকে আমি রাজি, কৌশিকী ‘হ্যাঁ’ বলে দিলেই হয়। ব্যস্!

আপনার মুখে কিছুই আটকায় না দেখছি!

ভালোবাসার কথা আটকে রেখে লাভ কী, বল? সারাটা জীবনই তো ভালোবাসাকে আটকে-আটকেই কাটিয়ে দিলাম। কী এমন লাভ হল ওতে, বলো? এখন আর আগের মতন নেই আমি। তার চেয়ে বলে ফেলি, ভালোবাসি! কী করতে পারবে ও? ‘যাও ভাগো!’ বেশি হলে এইটুকুই তো বলতে পারবে, না? আমার ভালোবাসাটা তো আর কমিয়ে দিতে পারবে না! আমি ভালোবাসতে শিখলাম, ও শিখল না। এই তো! যার হৃদয়ে ভালোবাসা আছে, সে তো কখনওই রিক্ত নয়। আমি ভালোবেসে নাহয় পূর্ণ হয়েই থাকব! হোক সেটা পূর্ণতার ব্যর্থ অহংকার! তবুও! কী এসে যায়? ভাল কথা, কৌশিকীর কণ্ঠে ‘কী কখন বলে বাঁশি’ শুনে দেখ। গানটা আমি যতবারই শুনি, ততবারই মাথা কিছুসময়ের জন্য আর কাজ করে না, গানের সুরেই পুরোপুরি ডুবে যায়।

আপনি ‘নেই’ হয়ে গেছেন। গনকেইস! সিরিয়াসলিই গনকেইস!! ঘুমাবেন কখন? আপনার এই মুহূর্তেই আপনার ভেতরের ‘আপনি’টাকে আরও মজবুত করার জন্য কাউকে দরকার! ঠাট্টা করছি না, সত্যি-সত্যি! আচ্ছা, আপনি আমার সাথে সেদিন ওরকম করলেন কেন?

কীরকম? যা করেছি, বেশ করেছি! তুমি পচা না শুধু, মহাপচা! তোমার চাইতে সুচিত্রা সেন অনেক ভাল, আমায় গান শোনাচ্ছে।

তাই নাকি? ভাল তো! কী গান?

কে তুমি আমারে ডাকো……….আহা! সে কী চাহনিতে তাকিয়ে আছে! মনে হচ্ছে, যেন শুধু আমার জন্যই গাইছে! আহা আহা!

শুনুন মশাই, আপনার জন্য সুচিত্রা না, কড়া মেয়ে লাগবে! আপনাকে সুচিত্রা সেনরা ঠিক করতে পারবে না। ওরা শুধু গান শুনিয়েই যাবে।

ভয় দেখিয়ো না, বুঝলে, আমাকে ভয় দেখিয়ো না! কড়া মেয়েকে আমি নিজেই নিজের মতো করে শুধরে নেবো আমার সমস্ত ভালোবাসা আর আদর দিয়ে। হুহ্‌!

অ্যাত্তো সোজা না! সময় আসুক, দেখা যাবে! আপনি কোনও গার্লফ্রেন্ড পান না, এটা বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করে না। হয়তো আপনিই পাত্তা দেন না।

একটু ভুল হল। আমাকেও অনেকেই পাত্তা দেয়নি। যাদেরকে চেয়েছি, তারা দূরে-দূরে থেকেছে, আমিও আর কাছে ডাকিনি; লজ্জায়, দ্বিধায়, ভয়ে, সংকোচে। আর ইগো প্রবলেম তো ছিলই!

পুরো মিথ্যে কথা একটা! যেকোনও মেয়েই ‘পটে যাবে’ আপনার কথায়! আগেই কাউকে মন দিয়ে বসে আছে, এমন অনেকেই ভীষণ আফসোসে পড়ে যাবে। আর আপনি বলছেন কিনা……….

না না, সত্যিই ভুল ভাবছ! আসলেই পাত্তা পাইনি।

তাই, না? ঠিক মানুষটির কাছে গিয়ে মনের কথাটি বলে ফেলুন তো, দেখি কী হয়!

শোনো, ওই কাজ আমাকে দিয়ে হবে না। হয়ওনি কখনও। সারাজীবনই লাজুকভাবে কাটিয়ে দিলাম। ২৮ বছর বয়স পর্যন্ত কোনও মেয়ের সাথেই ভালভাবে কথা পর্যন্ত বলিনি। ভাবখানা এমন ছিল যেন, আমি ওদেরকে পাত্তাই দিই না! আসলে, ওদেরকে মনে-মনে ভয় পেতাম! কেউ কাছে আসতে চাইলে দূরে ঠেলে দিয়েছি, এমনও নয়; নিজ দায়িত্বে নিজেই দৌড়ে পালিয়ে গেছি! মেঘেমেঘে অনেক বেলা হয়ে গেছে।

আমি একটা বুদ্ধি দিই?

দাও।

বিয়ে করে ফেলুন ঝটপট! আগে করলেও যা, পরে করলেও তা! বসে থেকে কী লাভ?

মেয়েরা সবচাইতে ভাল বুদ্ধি যেটা মাথায় আনতে পারে, সেটা হল বিয়ে। আমি আগেই অনুমান করেছিলাম, তুমিও এটাই বলবে। ভেরি স্টেরিওটিপিক্যাল!

হ্যাঁ, আমি এমনই! কোনও সমস্যা?

হ্যাঁ, অনেক অনেক সমস্যা!

কী সমস্যা, বলেন!

তোমাকে ধরে মাইর দিতে ইচ্ছে করছে, এটাই সমস্যা!

আগেই বলেছি আপনাকে, আমি ভয় পাই না। দিয়ে দিন। ইচ্ছে চেপে রেখে লাভ নেই।

আমি আসি, ঘুমাব। সকালে উঠতে হবে। আমাকে তো আর ডেকে দেয়ার কেউ নেই।

আমাকে ডেকে দিলেও আমি উঠি না। কে হায় ঘুমভেঙে অফিসে ছুটতে ভালোবাসে! আহা ঘুম, কী শান্তির ঘুম!

যেতে হবে। কিন্তু তোমাকে ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করছে না যে! (এটা বানিয়ে বলা না, একদম সত্যি সত্যি!) আচ্ছা, আসি। ঘুমাই। টা টা।

আমি কাছে ছিলাম তাহলে? হুম!!

হুঁ।

আবার হুঁ? নিষেধ করেছি না?

হুঁ!

সিরিয়াসলি?

হুঁ।

আপনাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না। আপনি হুঁ থেকে এখনও বের হতেই পারলেন না! ওকে, থাকুন আপনার প্রিয় হুঁ’কে নিয়ে।

তোমাকে সুন্দর দেখাচ্ছে।

আমাকে আবার দেখলেন কই?

ওই যে একটা ফেস পাঠালে না!

Such a flirt!

ঠিকই বলেছ। আমি ওরকমই! আচ্ছা, এবার সত্যি-সত্যিই আসি, কেমন? ঘুমিয়ে পড়তে হবে।

সত্যি সত্যি গুডবাই বলে দিচ্ছেন? রাগ করে না তো?

একটুও না!

সত্যি?

হ্যাঁ, সত্যি। শুভরাত্রি।

আপনাকেও। সুইট ড্রিমস!

আরেক দিনেরটা।

হ্যালো বিজি বি!

হাই মাই সুইট বি! শুভ সকাল!

আমি আপনার সুইট বি? যাই হোক, শুভ সকাল। খেয়েছেন?

হ্যাঁ। তুমি?

এখনও খাইনি, খাব।

সকাল সকালই প্রেম করা শুরু করে দিলেন?

হ্যাঁ। দ্য সুনার, দ্য বেটার! জানো না?

এতো তাড়া কীসের, শুনি? আমি আছি তো!

আহা! তাড়া নয় গো, প্রিয়া! আমার যে দিবসরজনীই প্রেম লাগে। এটাও বোঝো না?

আপনি একটা পাগল! নাকি, এমনিতেই পাগলের মতো করছেন?

এমনিতে করছি না, আমি পাগলই!

আছেন তো মজায়!

হ্যাঁ গো সুন্দরী! আমি মজায়ই থাকি! মরে যাবো তো দুম করে! এর আগে ফাঁকিটাকি মেরে যতটা বেঁচে নেয়া যায় আরকি! মৃত্যুর আগে অন্তত একটু করে হলেও না বাঁচলে কি চলে?

বাহ্ বাহ্! জীবনের কী দার্শনিক পাঠ!

হ্যাঁ, আমার জীবনদর্শন। হয়তো বা ভীষণ বাজে, সবচাইতে বাজে, কিন্তু আমি থোড়াই কেয়ার করি। আমি যে এই দর্শনেই বাঁচি; এটা নিয়ে বাঁচি, এটার জন্য বাঁচি, আমাকে নিয়ে এটা বাঁচে। আমার কাছে আমার দর্শনটাই সবচাইতে আদরের। এই তো!

আপনার দর্শন কোনটা?

তোমার মস্তকটা!

আবার শুরু করে দিলেন?

হুঁ।

You’re just impossible!

Tell me something I didn’t know!

জানতাম, এটাই বলবেন!

……………………………………..

হ্যালো! আছেন আপনি?

ইয়াপ বেবি!

আচ্ছা, আপনি আমাকে বেবি ডাকেন কেন? সেদিন ফোনের টেক্সটেও লিখেছেন।

তো? কী ডাকব তবে? ডার্লিং?

দেখবেন, আপনি একদিন বিপদে পড়ে যাবেন। মেয়েদেরকে এরকম র্যা নডমলি বেবি, ডার্লিং ডাকবেন না।

যাকে ডাকলে বিপদে পড়ে যাবো, তাকে ডাকব নাকি? আমি শুধু তোমাকেই ডাকি গো, সুন্দরী! শুধু তোমার জন্যে, ওই অরণ্যে পলাশ হয়েছে লাল…….

My goodness!!! Flirting is going on beyond limit!

ফ্লার্টিং পেলে কোথায়? সতীনাথের গানের লাইন আওড়াচ্ছিলাম।

আপনাকে ধরে…………

জানি জানি গো, মোর শূন্য ওষ্ঠ দেবে ভরে………….

জগন্ময় ‘ওষ্ঠ’ বলেছিলেন, না?

বলেননি, সেটা কি আমার দোষ, হানি? বলতেই তো পারতেন, না? উনি না বলে ভুল করেছেন, আমি শুধরে দিলাম। আমার এই অবদানের কথা গানের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে অমলিন হয়ে যুগের পর যুগ!

চুপ থাকেন আপনি!

উম্মমাআআআহহহহ……..!!

ছিল একটা সময়, যখন আমি এসবে ভুলে যেতাম। মাঝেমাঝে এইজন্যই টিনএজের দিনগুলির কথা ভাবলেই আমার রাগ ওঠে! I just hate my teenage!

হাহাহাহাহা………. একটা কথাই বলব, Don’t waste your precious time hating. NEVER!

আমি তো আর কাউকে ঘৃণা করছি না। আমি জাস্ট আমার সে সময়ের বয়সটাকে ঘৃণা করছি। আমি তখন জানতাম না, কিছু ছেলে থাকে, যারা ফ্লার্ট করার জন্মগত প্রতিভাসম্পন্ন। ওরা যা-ই বলে, সবকিছুকেই রূপকথার মতন লাগে, বিশ্বাস করে ফেলতে ইচ্ছে করে! মনে হতে থাকে, ওদের কথার মতন করে জীবনটাকে কাটিয়ে দিই! টিনএজ কেটে যাওয়ার পর বুঝলাম, কারও কথা শুনেই কোনও লাভ নেই, নিজের কথা শুনতে হয়।

ম্যাডাম, অনেক এগিয়ে আছেন আপনি আমার চাইতে। আমি আমার হৃদয়ের কথা মত বাঁচতে শুরু করেছি খুব বেশিদিন হয়নি। এখন ভাল আছি। আগে কী যে একটা ছিলাম! সবাই আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করতো। আমি তো কেয়ার করতাম না। ভাবতাম, ওটাই জীবন! এখন বুঝি, জীবন থেকে পালিয়ে বেড়ানো জীবন নয়। পুরো পৃথিবীর কাছ থেকে নিজেকে লুকিয়ে রাখলেও নিজের কাছ থেকে কীভাবে নিজেকে লুকিয়ে ফেলা সম্ভব?

আচ্ছা, আপনি বদলে গেলেন কীভাবে? মানে, কার দ্বারা, কীসের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আপনি নিজেকে এতোটা বদলে ফেললেন?

মনে নেই।

কে আপনাকে বদলে দিল, সেটাই মনে নেই? এ কীকরে হয়?

কেউ করেনি, আমি নিজে-নিজে হয়েছি। সময়ই সবকিছু করে দিয়েছে। মানুষ সময়ের দাবিতেই চলে।

আপনি নিজে-নিজেই বদলে গেলেন? এতোটা? আর বদলে গিয়েই এত্তোবড় ফ্লার্ট হয়ে গেলেন? কীভাবে সম্ভব?

Yap baby! I am a flirt! Happy now?

রেগে যাচ্ছেন কেন? আচ্ছা, আপনি আর কী কী পারেন?

চুপ থাক তুমি! আমি ফ্লার্ট নই। আমি যা বলার, সরাসরিই বলি, মিথ্যে বলি না, ভণ্ডামি করি না, জীবনে কখনওই কারোর ক্ষতি করিনি, কারও ইমোশন নিয়েও খেলি না। তুমি ফ্লার্টিংয়ের কী বোঝো? যারা ফ্লার্ট, তারা ওই কাজগুলির সবকটাই করে। খোঁজ নিয়ে দেখো গিয়ে! অবশ্য, মেয়েরা ওরকম ফ্লার্টই চায়! যা-ই হোক, তোমার সাথে আর কথা বলতে আগ্রহী নই আমি। একটা ফালতু ফ্লার্টের সাথে চ্যাটিং করতে হবে না। সরি ফর এভ্রিথিং! বাই ফরএভার! ভাল থেকো।

আসলে আপনি আমার কথাকে ভুলভাবে বুঝেছেন। আপনার জীবনে একজন প্রকৃত নারী প্রয়োজন। আপনার ভালর জন্যই বলছি এতো কথা। ‘Shy boy’ has become a ‘Fly boy’! ইন্টারেস্টিং না? আপনাকে আপনার মতো করে বুঝবে, এমন কাউকে না পেলে তো আপনার মনের যত ওয়ান্ডারফুল কেমিস্ট্রি, সেগুলি আরও বেশি ওয়ান্ডারফুল হয়ে উঠবে কীভাবে?

…………………………………………….

কী মশাই? চুপ কেন?

আমি বাই বলে দিয়েছি। বাই মানে, বিদায়।

আচ্ছা, সে কথা! কিন্তু আমি তো বাই বলিনি, তাই না? তাই আমি কথা বলেই যাবো। আপনি শুনলে শুনুন, না শুনলেও আমার কিছু করার নেই। আই অ্যাম নট সরি!

না, কিছুই বলতে হবে না। আমি একটা ফ্লার্ট, নিজেই তো বললে! আমার সাথে গল্প না করে অন্য একটা ভাল ছেলে খুঁজে নাও। You are a good girl. Good Girls Go to Heaven, Bad Girls Go Everywhere. শুনেছ না গানটা? আমার গুড গার্ল দরকার নেই। I need a bad girl. বাই।

ও আচ্ছা! তাই? ঠিক আছে, বাই। Stay happy!

Stay happier Ms Good Girl!

Don’t worry. You’ll get lots of bad girls!

Why that ‘will’? Are you sure, I’ve not already?

কী জানি?

না জানলে মুড়ি খাও!

আমি কী খাবো, কী খাবো না, let me decide that! OK Mr?

OK.

আপনি সত্যিই অদ্ভুত! যা-ই হোক, আপনি যেমন আরকি!

হ্যাঁ, সেটাই! পোষায় কি না দেখো! না পোষালে রাস্তা মাপতে পারো!

মানে, কী বলবো আর! পুরাই ইমোশনাল অত্যাচার!

I’m emotional like Hell!! I’m an emotional fool, they say. I don’t care. No regrets, just living! This is my way of life!

I’m not saying you’re a fool!

তোমার ব্যাপার! আমি বলছি, আমি একটা ইমোশনাল ফুল!

বি লজিক্যাল! ওকে? মাত্র দুদিনেই আমার জন্য এতো ইমোশন কীভাবে করে সৃষ্টি হল? I’m curious! Let me know. Please!

তুমি এখানে তোমার জন্য ইমোশন দেখলে কোথায়? আশ্চর্য! কী ভাবো নিজেকে?

আচ্ছা! তাই বুঝি? কিন্তু তাইতো দেখছি! I don’t remember giving any indication! তাহলে কীভাবে কী হল?

Neither do I. তোমাকে আমার ইমোশনের সাথে জড়াতেই হবে, নাহলে আমি মরেই যাবো, ওরকম চিজ আমি অন্তত না!

এইতো একটু আগেই তো বললেন, ইমোশন, গুড গার্ল, ব্যাড গার্ল, ব্লা ব্লা ব্লা!!! And all those stuffs! কী? বলেননি?

হুঁ।

আপনার এই প্রাণের চেয়ে প্রিয় হুঁ’টাকে কি একটু ইলাবোরেট করে বলা যায় না, স্যার?

হুঁ, যায়।

গেলে করুন। প্লিজ!

জ্বি।

কই? ব্যাখ্যা করুন! ভেঙে বলুন!

জ্বি না।

কেন?

……………………………..

আপনি আছেন ওখানে? হ্যালো স্যার…………

হুঁ।

আমার প্রশ্নের উত্তর কই?

আমি ব্যাখ্যা করতে পারি না। এটাই উত্তর।

কেন?

জানি না।

প্ল্যাটনিক বলে?

কোনটা?

যেসব কিছুর ব্যাখ্যা হয় না, সেসব কিছু?

কে জানে! অতো বুদ্ধিসুদ্ধি তো মাথায় রাখি না।

আচ্ছা! এইবার আসলেই একটু বেশি-বেশি হয়ে গেল!

না, কথা, I really mean it!

এরপর আমার আর কিছুই বলার নেই। সত্যিই নেই।

হুঁ।

হুঁ?

হুঁ! জ্বি! ইয়াপ!

ফাইন্যালি!

হুঁ।

আমি বাজি ধরে বলতে পারি, আপনাকে এই দুনিয়ার কোনও মেয়েই কোনোদিনও পাল্টাতে পারবে না! কেউ পারলে আমি আমার সব চুল কেটে ফেলব! উফফ!

হুঁ। ঠিক!

I thought we would keep chatting. Instead, nobody’s talking!

Only I’m………..Yes, I’m a nobody!! ঠিকই বলেছ!

আমি ওটা বলেছি, না? আপনি একটা……….আমি কী করেছি, হুহ্? You’re the silent one! I broke the silence first!! আর You are a nobody?? Please!!! Every one pines for you!

………………………………………………………………………………..

কিছুই বলবেন না, এই তো?

এই বোকা! ভাত খেয়ে কথা বলি?

মাই গড! আইস মেল্টেড! ফাইনালি! ওকে ওকে!!

ভাত খেয়েছ?

না।

মাছ খেয়েছ?

না।

ডাল খেয়েছ?

না।

সবজি খেয়েছ?

না।

পানি খেয়েছ?

না।

পেয়ারা খাচ্ছি। খাবে?

না।

কী খাবে?

কিছু না।

শিওর?

হুম্‌।

ওকে।

আমার………আমার………….কী বলব! আমার নিজেকে পুরোপুরিই একটা স্টুপিড মনে হচ্ছে! জীবনে এই প্রথমবারের মতো সব কাজই স্টুপিডের মতো করে যাচ্ছি! এবং, এটা নিয়ে আমার কোনও মাথাব্যথাই নেই। আমি বুঝতে পারছি, আমি যা করছি, তা ঠিক নয়, কিন্তু সেখান থেকে বেরিয়ে আসতেও পারছি না! নিজেকে পুরোই একটা বেহায়া মনে হচ্ছে!

কেন? কী হয়েছে? আমাকে সবকিছু খুলে বল। অ্যানিথিং রং?

Leave it! Please!! বিশ্বাস করুন, আমি একদমই এরকম না! আমি নিজেই বিশ্বাস করতে পারছি না, আমি এরকম করছি!

কীরকম করছ? আমাকে বল। দেখি, তোমার জন্য কী করা যায়!

উঁহু! কিছুতেই না! কিছুতেই না!!

আহা! বল না! এমন কর কেন?

বলবই না! আমার মনে হয় না, ওটা বলাটা ঠিক হবে।

আরে ব্যাপার না! বলে ফেলো! বলে ফেললে নিজেকে হাল্কা লাগবে। বলেই দেখো না! বলো বলো…………..

আমি জানি, আমি একটা গাধা! আমি কারোরই মনের কথা বুঝতে পারি না। কখনওই না!

বুঝলাম না। কী হয়েছে?

আচ্ছা, সত্যি করে বলুনতো, আপনি কি নিজের কাছে ক্লিয়ার, কেন আপনি আমার সাথে চ্যাটিং করছেন?

হ্যাঁ, ক্লিয়ার। কারণ, তোমাকে আমার ভাল লাগে। এখন তোমার কারণটা বল।

আমারও ভাল লাগে।

কতটুকু ভাল লাগে? কীরকম ভাল লাগে? কেন ভাল লাগে? ঠিক ঠিক বল।

বলে কী হবে? আজকে সকালেই তো আপনি টেক্সটে লিখলেন, আমার সাথে আপনার মতো কেউ স্রেফ টাইমপাস করা ছাড়া আর কোনও কারণেই কথা বলবে না। কী, লিখেননি?

আহারে! আমার সুইট বি’টা আমার সাথে রাগ করেছে! আমি বুঝে গেছি!

হ্যাঁ, উত্তেজনায় আমার সমস্ত শরীর কাঁপছে। আপনার না বোঝার কিছু দেখি না।

সোহাগ করে রাগ ভাঙাব?

সমস্যা হল, আপনি ওটা পারবেন না।

সমস্যা……..??

হ্যাঁ, সমস্যা।

কেন?

কারণ, আমি কখনওই আপনার হতে পারব না! কখনওই না!!

তোমার ওরকম হতে ইচ্ছে হয়?

না, হয় না।

মন থেকে বলছ?

কিছু-কিছু জিনিস থাকে, যা আমাদের ইচ্ছের অতীত।

আমি অতোটা ভাবতে পারি না, কষ্ট হয়।

আপনাকে পাওয়ার স্বপ্ন যেকোনও মেয়েই দেখবে। এটাই স্বাভাবিক।

ধুর্! আমি এটা মনে করি না।

আপনার মনে করা না-করায় কিছু এসে যায় না। আমি ওটা মনে করি, বিশ্বাস করি। এই বিশ্বাসই আমাকে প্রতিনিয়ত কষ্ট দিচ্ছে। আমি আপনাকে হারিয়ে ফেলতে চাই। আমি নিজেকে খুঁজে পেতে চাই। আপনি আমার মধ্যে থেকে গেলে আমি কখনওই এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারব না। আমি চাই, আপনি খুব শিগগিরই অন্য কারও হয়ে যান। সত্যি বলছি, মন থেকেই চাই।

তার মানে, তুমি চাও না যে আমি আর কোনোদিনই তোমাকে নক করি? ঠিক আছে, তবে তা-ই হোক।

আসলে তাও নয়। আমি প্রতিটি মুহূর্তেই এমন একজনের কথা ভেবে-ভেবে কষ্ট পাচ্ছি, যাকে আমি কোনোদিনই পাব না।

কথা………………

হুম্‌।

কিছু না।

দেখুন, আপনি নিজে কখনওই আমার মতো করে ভাবেননি। ভেবেছেন, বলুন?

হ্যাঁ, ভেবেছি। তবে তোমার মতো ওরকম তীব্রভাবে না।

আমি জানি। That’s why I was feeling really stupid!

I never care for girls …………(I am sorry if I sound rude)………but I did it for you. এটা আমার কাছে অনেক কিছু।

আমি এটা কখনওই জানতাম না।

কোনটা?

আপনি যে আর কোনও মেয়েকেই কেয়ার করেন না, এটা।

তোমার তো জানার কথাও না।

জানলেও আমি কী করতে পারতাম?

……………………………………………………

Sorry! I just sounded melodramatic!

না না, আমি সরি, আমাকে একটু যেতে হয়েছিল।

ঠিক আছে, সমস্যা নেই।

এখন বল। আমি শুনছি…………

আসলে আপনার প্রকাশভঙ্গিটা অনেকবেশিই ভাল। ওটাই সবাইকে আপনার কাছে টেনে নিয়ে আসে চুম্বকের মতো। হয়তো এটা আপনি নিজেও জানেন না।

হাহাহাহা……….ওরকম করে ভাবিনি কখনও।

হুম্‌।

আচ্ছা, তুমি ‘ভাল’ কই পেলে? আমি তো তোমার সাথে সারাক্ষণই দুষ্টুমি করি, উল্টাপাল্টা কথা বলে বলে তোমাকে ক্ষ্যাপাই।

আমি চ্যাটিংয়ের কথা বলছি না, আপনার লেখার ভাষার কথা বলছি, আপনার মুখের ভাষার কথা বলছি। আসলে আমার কেমন জানি লাগছে এই সব বলতে। নিজেকে বোকা-বোকা লাগছে। কী সব যে বকে যাচ্ছি! আমি সরি। আমি যা-ই কিছু বলেছি, প্লিজ সবকিছুই ভুলে যান। আপনার মাথা থেকে কথার সবটুকু স্মৃতি বের করে দিন। আমাকে ভুল বুঝবেন না দয়া করে। আমি জীবনেও কখনওই কারও সাথে আঠার মতো লেগে থাকি না। আমি সত্যিই ওরকম মেয়ে না। আবারও বলছি, আমি রিয়েলি সরি। আমি স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি। স্বপ্নের ঘোরে আপনাকে এলোমেলো সব কথা বলে ফেলেছি। আপনি নিশ্চয়ই এরমধ্যেই মনে-মনে অনেকবার ভেবেছেন, “দেখো দেখো! পিচ্চি মেয়ের ঢং দেখো!”

শুধু এইটুকুই বলব, আমি যা যা ভাবছি বলে তুমি ভাবছ, আমি তার কিছুই ভাবছি না। হয়তো বা, তুমি যেরকম করে সবকিছু নিয়ে ভাবছ, আমিও ঠিক সেরকম করেই সবকিছু নিয়ে ভাবছি। কে বলতে পারে!!!

আমি আর কিছুই ভাবতে পারছি না! আমি বোধহয় পাগল হয়ে যাব!