এক। যা বলার, সরাসরি বলবেন প্লিজ। এত ঘোরানোপ্যাঁচানো কথা বলার কিংবা বোঝার সময় নেই; সত্যিই নেই। দরকার হলে বলুন, “সুশান্ত, তুই একটা হারামজাদা।” আমি কিছুই মনে করবো না। এর ব্যত্যয় হলে একটাসময়ে আপনার প্রতি আমার শ্রদ্ধাবোধ একেবারেই চলে যাবে এবং আমি ধরে নেবো, আপনি একটা ভীতুর ডিম, যে সরাসরি কথা বলতে পারে না। আমি সাহসী মানুষ পছন্দ করি।
দুই। সাহস থাকলে আমার বুকে ছুরি চালাতে আসুন, পিঠে নয়। পিঠে হাত রাখলে যদি আপনার পেছনের মেরুদণ্ডটা এখনও অনুভব করতে পারেন, যদি পুরুষমানুষ হন, আমার চোখের সামনে আসুন, পশ্চাৎদেশে নয়। পশ্চাৎদেশে ঘোরাঘুরি করে শুয়োররা।
তিন। ভণ্ডামি করার ইচ্ছে থাকলে দয়া করে আমার ধারেকাছেও ঘেঁষবেন না। আমি শয়তানকেও সহ্য করতে পারি কিন্তু ভণ্ডকে কিছুতেই নয়। অন্য কোথাও যান। আপনার টাইপের পাবলিক খুঁজে পেতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। আমি পৃথিবীতে সবচাইতে বেশি ঘৃণা করি হিপোক্রিটদেরকে।
চার। পরিচয়ের সময় কোনও ভুল তথ্য দেবেন না। আপনি যা, তা-ই বলবেন। আপনার সাথে আমার পরিচয় হতেই হবে এমন তো নয়। সত্যকে ভালোবাসার এবং মিথ্যাকে ঘৃণা করার—-এ দুই শক্তিই আমার অসীম! একটা কথা সোজাসাপটা বলে দিই: আপনার ছবি না দেখালে এবং আংশিক/ ভুল/ ইনিয়েবিনিয়ে পরিচয় দিলে আমি কারওর সাথেই গল্প করার বিন্দুমাত্রও আগ্রহবোধ করি না। মানুষের সাথে মানুষের পরিচয় আনন্দের বিষয়, তবে অপরিহার্য কোনও কিছু নয়।
পাঁচ। ‘শাসন করা তারেই সাজে সোহাগ করে যে’ আমি এই নীতিতে বিশ্বাসী। আমার ঠিক কাজের প্রশংসা করে না, কিন্তু ভুল কাজের নিন্দা করে, এমন পরমহিতৈষী আমার দরকার নাই। ব্যক্তিগত আক্রমণকারীকে আমার ওয়ালে স্বাগতম। এতে আমার অসুস্থ মানসিকতার মানুষ চিনতে সুবিধা হয়। বলতে পারেন, ‘নিন্দুকেরে বাসি আমি সবার চেয়ে ভালো’ ……… সরি বস! আমার অ্যাত্তো ভালোবাসাবাসির টাইম নাই। অন্যকোনও প্রেমময় ভালোবাসাময় ওয়ালে গিয়ে আপনার ভালোবাসা প্রদর্শন করুন। শুধু গঠনমূলক সমালোচনা করার যোগ্যতা থাকলে দয়া করে আমার ওয়ালে আসবেন। আমি তো কাউকেই দাওয়াত দিয়ে কিংবা পুলিশ পাঠিয়ে আমার ওয়ালে আনি না। প্রয়োজনে আমাকে ব্লক কিংবা আনফ্রেন্ড কিংবা আনফলো করে দিন।
ছয়। আমার চাকরি কিংবা আমার ব্যক্তিগত রুচি নিয়ে একটাও বাজে কথা বললে, আপনি যে শাহানশাহ-ই হন না কেন, আপনাকে সাথে সাথে ব্লক করে দেবো। আমার চাকরি আমার কাছে অনেক বড়। আমি খুবই নার্সিসিস্ট প্রকৃতির লোক এবং আমি নিজেকেই সবচাইতে বেশি ভালোবাসি। আমাকে তদারকি করার আপনি কে? কারওর ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে আমি বিন্দুমাত্রও আগ্রহবোধ করি না এবং আমি চাই, আমার ব্যক্তিগত বিষয় নিয়েও কেউই কোন আগ্রহবোধ না করুক। আপনি এমন কে যে আমার ব্যক্তিগত জীবনে আপনার অযাচিত আগ্রহ কিংবা আজাইরা হস্তক্ষেপ আমি চুপচাপ মেনে নেবো? কিছু ব্যক্তিকে আমি এই অধিকার দিয়েছি। আগে নিশ্চিত হয়ে নিন, আপনি সেই কিছু ব্যক্তির মধ্যে পড়েন কি না। আপনি যখন কারওর গীবত করেন তখন দুটো ব্যাপার মাথায় রাখবেন। এক। আমার চেহারা অসুন্দর বললেই কি আপনার চেহারার সৌন্দর্য একটু বেড়ে যায়? দুই। হয়তোবা আপনার সম্পর্কে বলার মতো অতি জঘন্য বিষয় আছে কিন্তু সেসব কথা বলে বেড়ানোর মানসিকতাসম্পন্ন আপনার মতন ছোটলোকের অভাব আছে।
ওপরের কঠিন-কঠিন কথাগুলো কাউকে আহত করার জন্য লিখিনি। বরং, আমার এবং আপনার কারণে যাতে ভবিষ্যতে আপনি, আমি কিংবা অন্যকেউ আহত না হয়, সেইজন্যই লিখেছি। আমি কোকিল-ময়না নই যে, যে কাউকেই দেখলে সাথে সাথে সুরেলা কণ্ঠে গাইতে শুরু করবো। ভণ্ডদের প্রতি আমি অতিদুর্মুখ। তাই দয়া করে দূরে থাকুন। আমাকে আমার মতো থাকতে দিন, আপনি আপনার মতো থাকুন। Live & let live.
আপনাদের এবং আপনাদের পরিবারের জন্য শুভকামনা রইলো। ভালো থাকবেন।
1 comment
দাদা, আপনার জীবনবোধ নিঃসন্দেহে খুবই ভালো….
আপনার প্রতি আমার ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, ভক্তি দিন দিন বেড়েই চলছে।তাই এই কমেন্ট না লিখে পারলাম না।
সত্যিকার মুসলিম হিসেবে আমাকে প্রথমত অবশ্যই বিশ্বাস করতে হয় এবং করি “সবকিছুর ( যা দেখা যায় বা যায় না, এই পর্যন্ত যা আবিষ্কার হয়েছে বা হয় নাই, যা আমাদের জ্ঞানে ধরে বা ধরে না, যা আমরা কল্পনা করতে পারি বা কল্পনারও বাইরে) সৃষ্টিকর্তা একমাত্র আল্লাহ এবং মোহাম্মাদ (সাঃ) আল্লাহর প্রেরিত সর্বশেষ বার্তাবাহক।”
এটা বিশ্বাস করার সাথে সাথে আরও অনেক বিশ্বাস করতে হয়।এমনি আরেকটা বিশ্বাস কুরআনে স্পষ্ট করে বলা আছে ” ইসলাম ছাড়া চিরস্থায়ী পরকালে আর কোনো কিছু গ্রহন করা হবেনা এবং কেউ কোনদিন জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, জাহান্নাম তার জন্য চিরস্থায়ী। দুনিয়াতে ভালো কাজের প্রতিদান সে ক্ষণস্থায়ী দুনিয়াতেই পেয়ে যাবে, চিরস্থায়ী আখিরাতের জান্নাত সে পাবেনা শুধুমাত্র বিশ্বাস না থাকার কারণে।”
এখন কথা হচ্ছে আমি যদি কাউকে পছন্দ করি তখন ভালো মানুষ হিসেবে আমার দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত হয় যে, তাকে এমনভাবে বিনয়ের সাথে অনুরোধ করা যাতে সে এটা বুঝে।অথবা না বুঝলে তো আর আমার কিছুই করার থাকল না, শুধু দুনিয়াতে যখন এটা মনে পড়বে তখন মনে মনে কষ্ট পাব আর আফসোস লাগবে।
ইসলামের প্রতি আমার দৃঢ় বিশ্বাস আর আপনার প্রতি আমার ভালোবাসা, ভক্তি, শ্রদ্ধা আমাকে এই মেসেজ লিখতে বাধ্য করেছে।
আর আমার অনুরোধেই আপনি তা মেনে নেবেন আমি তা আশা করি না।কারণ আপনি একজন জ্ঞানী ব্যাক্তি। মানুষ জন্ম থেকে যে বিশ্বাস নিয়ে জন্মায় তা খুবই শক্তিশালী। কিন্তু সত্যিকার মানুষ হিসেবে আমাদের অনেক বিশ্বাসই জলাঞ্জলি দিতে হয় প্রমাণ পেয়ে বা নিজেই প্রমাণ খু^জে পেয়ে।আর আমি যে বিশ্বাসের পরিবর্তন এর কথা বলছি সেটাতো আরো বেশী দৃঢ়।
তাই আমি আপনাকে অনুরোধ করব নিরপেক্ষভাবে যাচাই করতে। আশা করি আপনি বুঝতে পারবেন। এরপর আপনার নিরপেক্ষ মন যা বলে তাই করেন।
হয়তোবা আমার মনের আফসোস দূর হবে বা হবে না।
——২০ বছর বয়সী আপনার স্নেহের ছোটভাই,
রাকিব