কুয়াশার খাম খুলে/দুই

দেহে ঠাণ্ডা, মনে গরম,

পুড়িয়ে মারে—শীতটা চরম!

এইডা কী লিখসেন? পইড়াই তো আমার গরম লাগা শুরু করসে! সাথে কেমন জানি শরমশরমও লাগতেসে। আমি এক লাইন অ্যাড করি—ডাগাসের নাই লজ্জাশরম! ধুউরর্‌ এইডা কিসু হইলো! আপনি মিয়া শয়তান আছেন!

হেলুউউউউউ মিস্টার অ্যারোগেন্ট!

আচ্ছা, আপনাকে ‘ডাগাস’ নামে ডাকি? এই শব্দের কোনও মানে নাই। এইটা আমি আপনাকে ডাকার জন্য বানাইসি। শুনেন, সামনে বিসিএস প্রিলি তো! ওইটা দিতে হবে, মানে, দিব। তো, একটু পড়াশোনাও তো করা উচিত, নাকি? এই পড়ায় হবে না, না? এত কমকম পড়ায় হয় না। আমি জানি। পোলাপান পড়েপড়ে মাথা নষ্ট করে ফেলতেসে। আমি সবই জানি। তাও মনে ক্ষীণ আশা, যদি অল্প পড়ায় পার পেয়ে যাই! মন বড়ই ফাঁকিবাজ চিজ, বোঝেনই তো! কিন্তু আমার টেবিলটাই তো গুছাতে পারলাম না! আর হইসে বই ধরা! এই বুইড়া বয়সে মন বসে না পড়ার টেবিলে!!! আচ্ছা, আমার মত যাদের পড়তে একটুও ইচ্ছা করে না বা যাদের কিছুই মনে থাকে না বা যারা খুব অলস, তাদের জন্যে একটা ফাটাফাটি নোট বানান তো দেখি! আমার ৭দিন পড়াও যা, ৭মাস পড়াও তা। আমার কিছুই মনে থাকে না! আচ্ছা দেখি, শুরু করি পরশু থেকে। আমি একটা সস্তা কোচিং-এ ভর্তি হইসি, যাতে বাসা থেকে বের হতে পারি। একদিনও, মানে সত্যিকারের ‘একদিন’-এর জন্যও ওখানে যাই নাই। শুধুশুধু টাকাটা নষ্ট করলাম! হুদাই!

ডাগাস, আমি চাকরি পেলে তো চিটাগাং যাব, আপনাকে আমার জন্য কিছুই করতে হবে না, শুধু জানাবেন যে আপনার কোচিংটা কোথায় ছিল। আমি দেখতে যাব, আর আপনার দোকানটাও দেখে আসব। আমার খুব দেখতে ইচ্ছা করে! কত কিছুই ইচ্ছা করে! এই মুহূর্তে কী যেন একটা জিনিস করতে ইচ্ছা করতেসে আপনার সাথে! ইচ্ছা করতেসে যে, চাঁদের গাড়ির ছাদে আপনার সাথে চড়ি! চড়াইয়েন তো একদিন! আমি ভাড়া দিবুনি। আর ব্যাগে করে দুইটা চশমা নিয়ে যাব। আচ্ছা? না থাক, আপনার ঠাণ্ডাফাণ্ডা লেগে যেতে পারে! তখন আপনার আম্মুআব্বু আপনাকে এছিঃ গাড়িতে না চড়ানোর জন্য আমাকে বকা দিবেনি। আমি বকা খুব ভয় পাই! কে জানে তখন আবার আপনার নাক দিয়েও দেখা গেল ঝরঝরররর………ইল্লিল্লিল! উহঁহুঁ আপনি খুবি পুতপুতা তো! ছিঃইইই………থাক বাবা! আমি একাই যাব! আচ্ছা, টাটা। আর জ্বালাব না। সত্যি। বাড়িতে ফিরব কবে, তারই ঠিক নাই, আর চট্টগ্রাম তো বহুত দূর! হুহ্‌, বেঁচে গেলেন!

আচ্ছা, আমি এই দিয়ে তিনবার ঢাকা যাচ্ছি একা, আর আব্বা, মা, মামা এরা প্রতিবারের মত আমাকে সাবধান করসে কী বলে শুনেন, আমি যেন অপরিচিত কারও সাথে কথা না বলি, কেউ কিছু খেতে দিলে যেন না খাই, বাসের নাম্বার যেন মোবাইলে সেভ করে নেই, যাতে ব্রেকের পর ভুল বাসে উঠে না পড়ি, আরও কত কী যে বলসে! বোঝেন অবস্থা!

দ্য ডাগাস, এইটা কিন্তু অনেক বড় লেখা! পড়ার দরকার নাই। মন খারাপ হবে। আপনার তো শুধু প্রশংসা পেয়ে অভ্যাস, আমার ভ্যাচরভ্যাচর পড়ার দরকার নাই। তাও দেই! কী করব? লিখে ফেলি যে! আমি আপনার মত অত ভাল আর সোজা(?) মানুষ নারে, ভাই। আমি কথা না শুনায়ে থাকতে পারলাম না। আর যদি পড়েই ফেলেন তো দয়া করে সিরিয়াসলি কিছু নিবেন না। আর নিলে নিবেন। আপনার ইচ্ছা! রেগেমেগে লিখতেসি! রেগে গেসি আর হেরেও গেসি! কোনও সমস্যা নাই। আমার রেগেমেগে হারতে মজাই লাগে। তবে হ্যাঁ, খুব একটা রেগেটেগে লিখি নাই। রাগটা কীভাবে জানি হাসিতে কনভার্টেড হয়ে গেল! বুঝতেই পারি নাই! আমার সাথে এমনই হয়! স্রষ্টা আমাকে ভালোবাসে নাতো! আর লিখব না, যান। বিরক্তও করব না। তো, ভাল আছেন, জানি। আচ্ছা, আরও ভাল থাকবেন। ভাল। পীর সাহেবরা ভালই থাকে। বিদায়!

মুনাফিকককক!!! আপনি না! আমি! আমাকেই বললাম। আপনি তো চরম ভালা! আচ্ছা, What goes around comes around. Every man is paid back in his own coin. এই আংরেজি পুটুসপাটুসের বাংলা মানেটা একটু সময় করে বুঝায়ে দিয়েন তো, ডাগাস! ডাগাসের আরেকটা মানে বের করলাম, দ্য জ্ঞানের সাগর! খিকখিক! আচ্ছা, ওসব বাদ! এবার সিরিয়াস কথায় আসি। আপনি একটা খারাপ ছেলে। আর একটা মুনাফিক। হুম, সাহস করে বলেই ফেললাম। কী আছে জ্যাবনে? কী করতে পারবেন আপনি? এহহ্‌ আসছে আমার দুই টেকার লায়ক রে!

আমি একটা সিদ্ধান্ত নিসি, আমি আপনাকে নিয়ে কাশ্মীরে যাচ্ছি না। চাকরি পাব, টাকা জমাব, একাই যাব। আমার আপনার মত ঢং নাই। আমার কাউকে লাগে না। না আমার জামা কাপড়ের প্রতি আগ্রহ আছে, না মোবাইলের প্রতি, না আপনার মত পিলেন আর শীতকালের এছিঃ বাছে চড়ার অভ্যাস, না কোনও ইশপিশাল ব্র্যান্ডের জিনিসের প্রতি দুর্বলতা। আর ইচমার্ট চেইন রেস্টুরেন্টের ওয়েটারদের ঢং করে কথাবলা দেখলেই তো গায়ে জ্বর চলে আসে! খাবার আর খাব কী! (কেউ খাওয়ালেও না! বুচ্চো চান্দু?) আমার প্রিয় হচ্ছে রাস্তার ধূলালাগা খাবার। আর পচা পানি। আমি আপনাদের মত ভদ্দরনোক না যে রাস্তায় খেলে একটু পরপর বাথরুমে দৌড়াব আর আম্মু, আম্মু, পেটব্যথা, পেটব্যথা বলে ঘোড়ার মত চিঁচিঁ করব। আর না আছে ফেসবুকের নেশা! তাইলে আমার আর খরচ কোথায়, বলেন? আমার বেতনের সব টাকা থেকেই যাবে। কোচিংফোচিং করানো লাগে না, ব্যবসাও করানো লাগে না। যা বেতন পাব, তাতেই আমি আপনার চেয়ে ম্যালা বড়লোক। হুহ্‌! ভারত যাব, নেপাল যাব, মিশর যাব, ফ্রান্স যাব, ইটালি যাব, রাশিয়া যাব, ব্রাজিল যাব, মেক্সিকো যাব, স্পেন যাব, বেলজিয়াম যাব, নরওয়ে যাব, সাউথ আফ্রিকাতেও যাব! অত লিখতে পারতেসি না, যেসব লিখসি, আর যেসব লিখি নাই, সব জায়গায় যাব। একাই! আর আপনার মত ঢং করেকরে ছবি তুলব আর সবগুলা ছবিতে আপনাকে ট্যাগ করব। ইয়েএএএএএ………(এই যে লাস্টে যা লিখসি, এটাও কিন্তু একটা ঢং, ইচ্ছা করে লিখসি, আমি জীবনেও এইরকম করে কথা বলি না।)

আচ্ছা, আমি এখানে যাব, সেখানে যাব বললাম ক্যান? ভাবখানা এমন করলাম যেন আপনি আমাকে কোথাও নিয়ে যাবেন কথা দিসিলেন, আর সেটা রাখেন নাই! আজব! আমি একটা পুরাই আজিব! আসলে আমি কোন প্রসঙ্গে যে এইসব বলতেসিলাম, সেটাই ভুলে গেসি! আমি আসলে ভুলে গেসি কেন এগুলা লিখসি। কারণ আমি খেতে গেসিলাম। তারপর আড্ডা দিলাম, ফিরে এসে লিখতেসি, কিন্তু ওইসব কথা ক্যান লিখলাম, মনে পড়তেসে না। কিন্তু কিছু একটা তো মাথায় ছিলই! কী যে লিখতে চাচ্ছিলাম! ধুরো!!! যা-ই হোক, ভাল থাকবেন।

আর আপনি আগের দিনের লাইয়কের মত কীসব ছবি দিসেন? এর চেয়ে আমার পছন্দকরা ছবিগুলা কত ম্যানলি ছিল! (পাদের ম্যান একখান! শানায়া বাবুর দুএকটা ছোটখাট অনুরোধ রাখলেই যার পুরুষত্ব চলে যায়, সে একটা পাদের পুরুষ! আপ্নে একটা………(বেশি বিশ্রী কথা মাথায় চলে আসছে, তাই আর লিখলাম না, আপনি নিজে বুঝে নেন। যত বেশি বিশ্রী কথা মাথায় এনে বুঝবেন, বোঝাটা তত বেশি ঠিক হবে।)) তবে এই লাল্টু ছবিগুলাতে ঠিক খারাপ লাগতেসে না, কিন্তু কোথায় জানি কী একটা সমস্যা আছে, ধরতে পারতেসি না। কেমন জানি! ম্যান্দাম্যান্দা লাগতেসে আপনাকে। অবশ্য আপনি ম্যান্দাই! ম্যান্দা মানে আবার মন্দ ভাইবেন না! ম্যান্দা মানে ভ্যাবলা! খিকখিকখিক………সরি! আর না জ্বালাই। আচ্ছা, ফার্স্টবয় মানেই যে হ্যাবলা, এটা তো একটা বাচ্চাও জানেরে, ভাই! এইটা বুঝার জন্য ছবি দেখাও লাগে না! আচ্ছা, তাও সরি। মাই ডিয়ার স্রষ্টাগোওওও! মরলাম! আচ্ছা, আমি যদি এখন হাসতে-হাসতে দম আটকায়ে মরি, তার জন্য কে দায়ি হবে? আপনি, না আমি? হাসির চোটে লিখতেই পারতেসিলাম না। সরি। আমি কী করবো? আচ্ছা, আর বিরক্ত করব না। আচ্ছা আমি আপনাকে আর বিরক্ত করব না, এমন কি কোনওই রাস্তা নাই? আমাকে সেইরকম কিছু গালি জোর করে হলেও দেন তো, ভাই! চিল্লায়ে দেন! আপনি তো গালিতে ডক্টরেট! দেখি তাতে যদি কোনও কাজ দেয়! আমার আচরণে আমি নিজেই নিজের উপর মহা বিরক্ত। আর………হচ্ছেটা কী? উমমমম……আপনি নিজেকে যতটা খারাপ ভাবেনননন, আপনি আসলে অতটাআআআ মানে ঠিক অতটা খারাপও নাআআআআ। বুচ্ছেন? নাকি আরও বুঝাতে হবে? একটু পাগলা আছেন, তবে উমমমম………তবেএএএ……একটু আরকি তালেও ঠিক থাকেন………খিকখিকখিক! আচ্ছা, সরি! সরি বলতে-বলতে মুখ দিয়ে ফেনা উঠে গ্যালো রেএএএএ!! আচ্ছা, সাপে কামড়ালে নাকি মুখ দিয়ে ফেনা বের হয়? ইল্লিক্কক্কক্কক্খক!! স্রষ্টাগো, আমারে সাপ যেন না কামড়ায়, স্রষ্টাআআআহ্‌! ওর চেয়ে ডাগাসকে আরও কয়েকবার (হাজার?) সরি বলে ফ্যালাবোনে, ইটাও আমার জন্যে কম বড় শাস্তি নয়! খিকখিকখিক!

আচ্ছা, আমি না কী কী জানি লিখব ভাবসিলাম, কিচ্ছু মনে পড়ে না। ধুউর! তবে সেগুলা অবশ্যই ভাল কিছু ছিল না, মানে অবশ্যই সেই কথাগুলা আপনাকে খোঁচানোর জন্যই ছিল! উফফ!! স্রষ্টা আপনাকে বেশি ভালোবাসে! আমাকে ভুলায়ে দিয়ে আপনাকে বাঁচায়ে দিল! আপ্নের জইন্য হিংসাআআআআ! স্রষ্টা, ক্যান তুমি মুনাফিককে ভালোবাসো? কারণ সে পুং? শুধু পুং বলেই স্রষ্টা আপনাকে ভালোবাসে, আপনার আর কোনও যোগ্যতাই নাই স্রষ্টার ভালোবাসা পাবার। যে শানায়াকে মিথ্যা ভোলায়, শানায়াকে কষ্ট দেয়, শানায়ার সাথে মুনাফিকি করে, স্রষ্টা তাকে ভালোবাসে কীভাবে? আচ্ছা, মুনাফিক ছেলিভ্রেঠি ডাগাস, এসব কিন্তু এমনি বললাম, আর ইয়ে মানে আপনাকে……এহম, এহম………মাফ করে দিলাম। স্রষ্টার আর পরিবারের আর বন্ধুদের আর ইশতিরিলিঙ্গের আর সাধারণ মানুষের ভালোবাসা তো পাবেনই, সেই সাথে এলিয়েনদেরটাও পাবেন, আর জ্বিনপরি তো আছেই। বলেন আমীইইইন। কী আছে ঘ্যাভনেএএএএ? একটু নাহয় মুনাফিকি ভুলেই গেলাম, আর একটু নাহয় মাফ করেই দিলাম, আর একটু নাহয় ভাল কিছুই চাইলাম, আপনার ভালতে আমার তো আর ক্ষতি হচ্ছে না! কী আছে জ্যাবনে? আচ্ছা, বাব্বাই! হ্যাপি ফ্লার্টিং! ভাল থাকবেন আর খারাপ রাখবেন। আইচ্ছা?

তবে ব্যাপার হল, স্রষ্টা আপনাকে ভালোবেসে ভুল করেছে। স্রষ্টার রুচি খারাপ। স্রষ্টা! তোমার রুচি এমন ক্যান? এই রে! চিটাগাং-এর পোলার সামনে এ কী বলে ফেললাম! চিটাগাং! চিটাগাং—আমার সবচেয়ে ফিরিও জায়গা; তাই বলে শহরটা না, ওটা বিচ্ছিরি! আমার ফিরিও হচ্ছে চিটাগাং হিলট্র্যাকস এরিয়া পুরাটা। আচ্ছা, বিভাগটা বললে তো সব চলে আসে। বিভাগটাই প্রিয়। কিন্তু মানুষগুলা না। আমাকে মাইর দিয়েন না আবার! স্রষ্টার সাথে আমার আলাদা সম্পর্ক, আপ্নেরা বড় মানুষজন, আপ্নেরা বুঝবেন না। মায়ের কসম খেয়ে বলতেসি, আমি সাচ্চা স্রষ্টার ভক্ত। কীভাবে যে বোঝাই? আচ্ছা, চট্টগ্রামের মানুষগুলা বেশিবেশি লবণ খায়! এ কারণে সবার চোখের নিচে ফোলা। আপনারও ফোলা আছে, আমি দেখসি। আপনার ক্রিয়েটিনিন চেক করবেন তো। আমারও চোখের নিচে ফোলা, তাও আবার সবসময় না, সকালে খুব বেশি ফোলা থাকে। তো বড় ফুপাকে বললাম। সে বলল, কিডনি পরীক্ষা করাতে হবে, কী কীসব পরীক্ষা করায়ে দেখল যে সব ঠিক আছে। কিন্তু……কিন্তুউউউউ ফুপাকে কীভাবে বোঝাই যে আমার কিডনিফিডনি সব নষ্ট হয়ে যাক, সেটা তো আমার প্রব না, প্রব্লেম এই যে, আমি দেখতে বুডঢি হয়ে যাচ্ছি! আমি ন্যাচারাল থাকার পক্ষে, চুলকাটা বাদে পার্লারের কোনও সুবিধা ইচ্ছা করে নিই না, কিন্তু মনে হচ্ছে, এই অহংকারটাও আর বেশিদিন করতে পারব না। এখন মনে হচ্ছে আমাকেও ভুরুটুরু চাঁছতে হবে, আমারও ফেসিয়ালটেসিয়াল করা লাগবে! হায়! সুন্দরী বোন আর বান্ধবীদের ওদের রূপচর্চার জন্য টিটকারি মারতাম! আর মারতে পারব না! জ্বালাতে পারব না! গর্ব করে কিছু বলতেও পারব না! আচ্ছা শোনেন, আপনি কাউকে বলবেন না কিন্তু আমার আসল বয়স কত! কেমন? তাইলে আমার আর বিয়েই হবে না। আপনি বোধহয় এক বছর আগে স্কুলে ভর্তি হইসিলেন, কারণ আমার সব ক্লাসমেটই তো আমার বয়েসি, সেই হিসাবে আপনি আমার আড়াই বছরের বড় হবার কথা। আর শোনেন, আমার যা বয়স, তার চেয়ে ৩ বছর মাইনাস করবেন, কারণ আমি তিন বছর প্রায় কোমায় ছিলাম বলা চলে, তো ওই তিন বছর মাইনাস করে হিসাব করতে হবে। (কেন ছিলাম? সে আরেক ইতিহাস! আরেক দিন হবে!) আচ্ছা, আপনি কিন্তু আবার আমার বাপ-মাকে ভুল বুঝবেন না, ওরা অন্যান্য বাপ-মার মত চাইলে জোর করে অনেক কিছুই করতে পারে! কিন্তু করবে না আশা করি! একটাই ঝামেলা করে—একা কোথাও যেতে দেয় না। ভয় পায়! আমি নাকি গাধা! কোনও মানে হয়, বলেন তো? গাধা হওয়ারও তো একটা লিমিট থাকে। আমি কি লিমিটছাড়া গাধা?

আমার জীবন শুধু একটা শুয়োরই নষ্ট করসে! ঐ শুয়োরটা কত বড় শুয়োর, তার একটা উদাহরণ দেই? অন্যের বদনাম করতে আমার খুব ভাল লাগে! আমি মেয়েমানুষ তো, তাই! একবার আমার মেজমামা আমাকে পরবি দিল ১০-১২ হাজার টাকার মতন, মামা সিঙ্গেল তো, আমাদেরকে প্রায়প্রায় বড়বড় অংকের পরবি দেয়। আর আমি শুধু রিক্সায় চড়েচড়ে আর অটোর চারটা সিট রিজার্ভ করে ঘুরে বেড়ায়ে সব শেষ করে ফেলি! তারপর দুইদিন পর ফকির হই, আর সব জায়গায় হেঁটেহেঁটে যেতে হয়! চা খাবার টাকাও হাতে থাকে না! বাসায় চাইতেও পারি না, কিন্তু ধরা পড়ে যাই! তারপর কী করলাম, হিসাব চাইলে কিছুই হিসাব দিতে পারি না আর গালি খাই। আমার ৫০০ টাকাও যে কয়দিন যায়, ৫০০০ টাকাও সে কয়দিন, ১০,০০০ টাকাও সে কয়দিন। মানে যেকোনও উপায়েই হোক, আমাকে ফকির হয়ে থাকতেই হবে মাসের অর্ধেক। (যারা কোনও খরচটরচ করে না, খালি টাকা জমায় আর জমায়, ওরা ওই টাকা দিয়ে কী করবে? অবশ্য, আমি যেইভাবে খরচ করে ফেলি, সেইটা গাধামি ছাড়া আর কিছু না।) যা-ই হোক, তো একবার ভুসভুস করে টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে দেখে আমি একটা মোবাইল কিনলাম। আমার আসল আগ্রহ ছিল গান শোনা, ফোনের বাকি কোনও সুবিধাই আমার কাজে আসে না। তো সেই শুয়োর আমার কমদামি শখের ফোনটা কেড়ে নিল! আগের ফোনটাও নিসিল, যেটা থেকে আমার সব আত্মীয়ের নাম্বার আমাকে না জানায়ে কালেক্ট করে রাখসিল, আমাকে ব্ল্যাকমেইল করতে ফোন কিন্তু আবার ফেরত দিসিল। এটা দেয় নাই। কত ছোটলোক, চিন্তা করেন! আমার হাসি পায়! আচ্ছা, ভাল কথা, অথচ ফোনটা সে দিয়ে দিল ওর বোনকে! ক্যান? ওর বোন ভাল ছাত্রী, ঢাকায় ডাক্তারি পড়ে আর তার বান্ধবীদের সামনে চায়না ফোন বের করতে নাকি তার লজ্জা করে! আর কেড়েনেওয়া ফোন ব্যবহার করতে ও একটুও লজ্জা পেল না! এমন বেহায়া মেয়ে কয় পিস পাবেন, বলেন? ফোনটা খুব যে একটা দামি কিছু, তা না, কিন্তু কথা সেটা না, কথা অন্য কিছু! আমি আর কী করব! এসবে আমার কোনও ক্ষতি হয় না! যার জীবন নিয়েই টানাটানি, তার আবার ফোন! এটা হল তার সবচেয়ে কম খারাপ কাজের উদাহরণ!

মানুষ যে কত ছোটলোক আর কত যে খারাপ আর জঘন্য হতে পারে, গল্প শুনলেও বিশ্বাস করবেন না। সব বাসায় বলে, প্রেম করবা না, আর আমার বাসায় বলত যে, যাকেই পছন্দ কর, করো, সমস্যা নাই, তবে বুঝেশুনে। আমার বাসার চাহিদা একটাই ছিল, ছেলের পরিবার যেন শিক্ষিত হয়। হায়রে কপাল! মানুষ যে নিজের বাপ-মার পেশাও মিথ্যা বলে বেড়ায়, আমার ধারণাই ছিল না! এমন ফান্দে পড়সিলাম। উফফ্‌! কী যে দিন যেত আমার! মুখবন্ধ করে তিন বছর পার করসি, বান্ধবীদেরও এড়ায়ে চলতাম, স্রষ্টার কাছে কত্ত বলতাম, এত লোককে মারো, আর ওই শুয়োরকে ক্যান মারো না! আমি কত্ত খারাপ, না? অন্যের মরার দু’আ করি! কী করতাম? অবশ্য, আমার নিজেরও দোষ ছিল! বুদ্ধি কম ছিল তো, যে যা বলত, তা-ই বিশ্বাস করতাম। অত কথা বলা যাবে না, তাইলে আবার আমার আব্বু-আম্মু মাইন্ড খাবে! আমি অবশ্য কথা লুকানোর বান্দা না। ওয়েট করতেসি। অনেককেই, যেমন বান্ধবীদের বলসি। যে শোনে, সে ভয় পায়! আপনাকে বলব না। চিন্তা নাই। হাজার হলেও………আপনি তো ছেলেই! নাকি? আমি চাই না আপনি আমাকে নিয়ে খারাপ কিছু ভেবে থাকবেন বা আমাকে ঘিন্যা করবেন। আমি একটু-একটু নিজেকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করতেসি। ডাগাস, আপনাকে বেশি বিরক্ত করা হয়ে যাচ্ছে, না?

আচ্ছা, আপনি কি আত্মহত্যা করসিলেন? আমার কেন মনে হয়—করসিলেন? আমার না পুরাতন কথা মনে পড়ে না, আমার অতি দার্দেদিল কিছু ক্লাসমেট আছে, আমার জন্যে হঠাৎ-হঠাৎ যাদের দরদ উথলায় উঠে! ওরা দরদ দেখাতে গিয়ে শুধু মনে করায়ে দেয়! অথচ হাজারবার বলা হইসে যে ওই চ্যাপ্টার বন্ধ! কি করব বলেন তো! অসহ্য। দরদের কথা শুনলেও বমি আসে। আমার আর এখানে থাকতেই ইচ্ছা করে না। আমার ডিপার্টমেন্টের এক-একটা মেয়ে এক-একটা কুত্তি। আপনি ভাবছেন, আমি কত খারাপ, হিংসা করে মেয়েদের গালি দেই। তাই না? সরি স্যার, আপনাকে কষ্ট দিলাম, তবে আমার ডিপার্টমেন্টের কয়েকটা মেয়ে কিন্তু সত্যিই খাঁটি কুত্তি। আমি তো জানি। তাতে আমার সমস্যা নাই, সমস্যা যে ওরা নিজের দিকে না তাকায়ে আমার দিকে তাকায়। আর ছেলেরা কেমন, জানি না। ছোটবেলার পাড়ার বন্ধু বাদেও আমার পরিচিত অনেক ছেলেই আছে, তবে কোনও বন্ধু নাই। যদিও আমি ছেলেমেয়ে সবার সাথেই সুন্দর করে কথা বলি, এমনকি কারও নাম না জেনেও আমি ওর সাথে কথা চালায়ে যেতে পারি, কিন্তু কেন জানি আমার কোনও বন্ধু হয় না! তবে এখন আমি অনেক ইচমার্ট হচ্ছি! তাতে কী? আমার সব ফিউচার কলিগ যারা সৌভাগ্যক্রমে সবাই আমার ভাইয়্যু হচ্ছে, তারা সবাই বাটকু! একজন হয়তো আমার সমান হতেও পারে, আবার দেখতেও ভাল, তো ওর আবার মাথায় চুল খুব কম! শুনসি, মাথায় চুলকম পাবলিক নাকি জ্ঞানী হয়। তো কী হইসে? আমি কি ওর জ্ঞান ধুয়ে পানি খাব? নাকি চান্দি ধুয়ে শরবত খাব? তার চাইতে বড় কথা, আমি অনেক টাকলুকে দেখসি পুরাই ছাগলমার্কা! ও যদি ওইরকম কোনও পিস হয়, তখন? ধ্যত! আর দুখের বিষয়, আমার সাথে কেউ কথা বলে না! সবাই আমার আব্বার সাথে কথা বলে!! আংকেল! আংকেল! প্যাংগ! প্যাংগ!! প্যাংগ!!!……………অধিদপ্তর-মধিদপ্তর মন্ত্রণালয়-ফন্ত্রণালয় খিসিংমিসিং করে কী কী হিগ্রিমিগ্রি বলে, মাথায় কিসুই ঢুকে না! আমি চরম খ্যাত আছি! আমি যে কীভাবে চাকরি করব স্রষ্টাই মালুম!

জানেন, সবাই ভাবে, আমি কত্ত যে নরমসরম, কত্ত যে ভালমানুষ, কিন্তু মনেমনে আমি অনেক খারাপ, অনেক নিষ্ঠুর, মনেমনে আমি তো খুনও করে ফেলি! বেশ কিছুদিন আগে আমাকে ফোন করে ওই শুয়োরটা মিনমিন করে কেন্দেকেন্দে বলসে, স্রষ্টা ওর কাছ থেকে সব কিছু কেন কেড়ে নিচ্ছে! কেন ওকে এত কষ্ট দিচ্ছে! ওই যে, Why me? Why me? টাইপ প্যানপ্যানানি ভ্যানভ্যানানি। অবশ্য এসব নাটকও হতে পারে। কে দেখতে গেসে? আমার ওর সাথে কথা বলা নিষেধ কিন্তু! বাসায় জানলে খুব বকবে। আর এমনিও শুয়োরের কষ্টের গল্প শোনার আগ্রহ নাই, কেউ সুখে থাকল না দুখে, আমার তাতে কিছুই এসে যায় না, আমার কাউকে ঘিন্যা করারও টাইম নাই। কিন্তু ওকে একটুও অপমান করলাম না, আবার বেশি কথাও বললাম না। আপনার নোট থেকে পাওয়া দুএকটা ভাল কথা এদিকসেদিক করে শুনায়ে দিলাম। আর বললাম, স্রষ্টার কাছে লোভীর মত চাওয়া বন্ধ করলে স্রষ্টা এমনিই সব দিবে। আমি সবাইকে এই বুদ্ধিটাই দিই যে স্রষ্টার কাছে চাও কম, বাপ! লোভীদের স্রষ্টা পছন্দ করে না। সবাই কষ্ট করে সুখী হতে চায়, আর আমি এতই সুখী যে কষ্ট করেও মন খারাপ করতে পারি না। কেউ বকলেও না। আমার লজ্জা এতই কম! বকা এই কান দিয়ে ঢুকে অন্য কান দিয়ে বের হয়ে যায়! কারও উপর রাগ হয় না। খালি হাসি আসে! হাসার জন্য খালি বকা খাই! আমি যদি বলি আমার কোনও দুঃখ নাই, কেউ বিশ্বাস করে না, বলে যে, স্রষ্টা কাউকে নাকি শতভাগ সুখী করে না! সত্যি? কই, আমাকে তো করসে! সবাই ভাবে, নিশ্চয়ই আমি কষ্ট লুকাই। আরে বাবা! আমার যদি কোনও চাহিদাই না থাকে, তাইলে অভাবও তো থাকবে না, তাই না? আর যদি কোনও অভাবই না থাকে, তাইলে আমি দুঃখটা করব কী নিয়ে? এখন অবশ্য ছোট্ট একটা অভাব আছে যা আমাকে একটুসখানি দুঃখে রাখসে, সেটা হইলো গিয়ে, আপনাকে দাড়িরাখা অবস্থায় একবার না দেখতে পাওয়া!! একবার একটু দাড়ি রাখেন না, ভাই! কী হয়? মেয়েরা সব পালায়ে যাবে? খ্যায়াক খ্যায়াক খ্যায়াক! দেখসেন! আমার হাসির শব্দ কুত্ত বিশশিরি! ‘খ্যায়াক’………এইভাবে কেউ হাসে, বলেন! হ্যাঁ, এক দৈত্যরা হাসে। হাসুকগা! আমার তো ওইরকমভাবে হাসতে শান্তিশান্তি লাগতেসে। আমি কী করব? খ্যাঅ্যাঅ্যাঅ্যায়াআআআআকক্ক! বুচ্চি, এ কারণে কেউ আমাকে পছন্দ করে না। দেখি, হিহি করে হাসা প্র্যাকটিস করতে হবে! কিন্তু মনে থাকে না যে! যা-ই হোক, দাড়ি দেখে মেয়েরা যখন পালায়ে যাবে, তখন আবার কেটে ফেলবেন! আবার সবাই সুরসুর করে চলে আসবে! আমিও আর জ্বালাব না। আর এখন যেহেতু আমার ফেসবুক বন্ধ, সেহেতু আপনার পচা ভ্যাদ্রামার্কা কভার ফটো আমাকে দেখতে হচ্ছে না, তাই দুক্কটা একটুএকটু করে নিউট্রালাইজড হচ্ছে! আমি আপনাকে যত বিরক্ত করি, তার চেয়ে অনেক বেশি আমার বান্ধবী, ভাই-বোন আর মা-বাবাকে করি। আপনি আমার আগের জন্মের যমজ খালাত ভাই না হয়ে এই জন্মের হলে আপনার তো ইন্নালিল্লাহ্‌ হয়ে যেত!

একটা কথা বলতে ভুলে গেসি, আমি আপনার জন্য একটা ছবি তুলসি, ওইটা আপনাকে না দিয়ে ফেসবুককে দিয়ে দিব। দয়া করে ভেবে বসবেন না যে, উরি বাবা, গ্রন্থিককে শানায়া খান কত মিস করে রে! হাহ্‌! স্বপ্ন দেখেন! আর হছে যে………মিস এমনিই করি, ওইসব প্রেমফ্রেম কিছু না। (রেগে আছি তো! ভ্যাসভ্যাস করে সব সত্যি বের হয়ে যাচ্ছে!) সেটা কথা না, কথা হচ্ছে, ফাজলামো করে ছবি তুলসি, প্রোফাইল পিক দিব, তাই। মানে দুষ্টমি আরকি! আবার নাও দিতে পারি। ঠিক নাই। আমার কিছুই ঠিক নাই। আমার বোন বলছে যে, শানায়া, ঝাণ্ডু বামের বিজ্ঞাপন করে ছবি দে! (ও জানে নাতো এটা গিফট করলে আর এসব দিলে আরেকজনের ভাব সাত নম্বর আকাশে উঠে যাবে!) এই নামে যে সবার কী প্রবলেম, বুঝি না। কত্ত সুন্দর নাম! যারা আমার ফ্রেন্ড না, তারাও দেখি কমপ্লেইন করে! কারও কথায় নাম চেঞ্জ করি না, তাই কত আবার অভিমানও করে! চাকরি পেলে চেঞ্জ করব বলে একটু থামায়ে রাখসি! যা-ই হোক, শানায়া নামের আইডির জন্য আমরা দুই বোন একসাথে অনেক মজা করে অনেক সেলফি তুলসি! উপ্পুস! আবার আপনার সাথে সুন্দর করে কথা বলা শুরু করে দিলাম! ধ্যাত্তরিক্কা! আমি আসলে মানুষই না! লজ্জা বলে যদি কিছু থাকত আমার! আচ্ছা যা-ই হোক, রাজশাহী যেয়ে একবার কিন্তু ফোন করব। আমি করব না, শানায়া করবে। না ধরলে নাই। এত ভাবের অত্যাচারে বেঁচে থাকা মানে স্রেফ আধমরা হয়ে বেঁচে থাকা আর আধমরা হয়ে বাঁচতে শেখানো শিখা। হাহাহহা………বাণীখানা কেমন হইসে ডাজ্ঞজ্ঞাসসসস? আপনাকে লিখি, আপনি পড়েন কি না জানি না, কিন্তু লিখতে গিয়ে ভাবি আপনার অবস্থা, আর অমনিই চরম বিনোদন চিবায়ে খেয়ে ফেলি! আর আমি নিজের প্রেমে এতই দিওয়ানা যে আপনি পড়লেন (‘প্রেমে’ না, ‘লেখা’) কি না সেটা ভাবারও টাইম নাই। হাহ্‌!

আর………আর কী? কিসু রাখসেন বলার মত? কথা বলতেই ইচ্ছা করতেসে না আপনার সাথে! যান! আচ্ছা, উপ্পুস মানে কী? শুনেন, উপ্পুস মানে হচ্ছে, আপনাদের, মানে ইচমার্টদের ভাষায় উপ্স! বুচ্ছেন?? ইচমেরাট ছেলেবেটি!

আর একটা কথা। এক্কেবারে শেষ! আর না, সত্যি আর না। সত্যিই শেষ! একটা কথা আপনাকে বলতে চাই, কিন্তু আমার বান্ধবীরা কসম দিয়ে আমাকে আটকায়ে রাখসে! আমি আপনার প্রশংসা করলেও ওরা ধরেই রাখসে আপনি খারাপই হবেন। আমি আপনার ভক্ত, এটা যে-ই ওদের বলসি, তাতেই তো আমাকে গাইলটাইল দিয়ে একাকার। ওদের কথা শুনসি, তার বিনিময়ে আমি অবশ্য ওদের কাছ থেকে একটা ওয়াদা নিসি যে ওরা যেন আপনার নাম দিয়ে কখনও কিছু সার্চটার্চ না করে। একে তো আপনার ছেমরি ভক্তদের অত্যাচারে আপনার ওয়ালে যাওয়া কষ্ট, কমেন্ট পড়া তো বাদ দিসিই, তার উপর যদি…………মানে আমার বান্ধবীরা যে শয়তান! সুন্দরী শয়তানদের কোনও বিশ্বাস নাই! ওরা যদি আপনার নোটগুলা পড়েটড়ে আমার সাথে বিট্রে করে তো………তো………তো আর কী? আমার কিছুই করার নাই!! এমনিতেও করার নাই, অমনিতেও করার নাই। আমি একখান নখদন্তহীন প্রাণী। আমার আকাইম্যা ক্ষমতা বিশাল—এই যে দেখেন না, খালি চিল্লাইতেই পারি, আর কিসু না! কোনও কিছুতেই তো কিছু করার নাই! তাও। এমনি-এমনি। ছোটবেলায় খেলাতে যেমন আমাকে সবাই দুধভাত করে রাখত, তাও যেমন মহা আনন্দে খেলতাম, তেমন আরকি! আচ্ছা, আসি।

দ্য গ্রন্থিক, আমি আপনাকে অনেককিছুই জানালাম। এটা ঢংপত্র তো না-ই, না হইসে প্রেমপত্র, না সিরিয়াস কিছু, না ফাজলামো। আমার আবেগ কম আর আবেগ দিয়ে লেখার ক্ষমতাও আমার নাই। আবেগ কপচালে আমার হাসি পেয়ে যায়। আমি কী করব? কী যে লিখলাম, নিজেই জানি না। সত্যি কথাই লিখসি, কিন্তু কী যে লিখসি আর কী যে বুঝাইতে চাইসি, আমি তার কিছুই জানি না। যা মনে আসছে তাই লিখসি। এতগুলা কথা, কিন্তু এগুলা পড়েও লাভ নাই, আবার না পড়লেও কিছুই না। আসলে ভাবলাম, সব কিছুই তো বলি, ল্যালঠামুও তো কম করলাম না আপনার সাথে, তো ওইটুকু কথা আর বাদ রেখে কী হবে? যা আছে মনে, সব বলে ফেলি। কিন্তু বলাটা সুন্দর হয় নাই, সে চেষ্টাও করি নাই। এত অগোছালো আর এত সামঞ্জস্যহীন কথা আমি বাদে আর কেউ আপনাকে বলে না। কিছুই করার নাই। কে জানে কোনদিন না কোনদিন কলার খোসায় পিছলায়ে হার্ট অ্যাট্যাক হয়! আচ্ছা, গরীব মানুষ হার্ট অ্যাটাক করে না? নাকি ওদের হৃদয়ে হার্টই নাই? যা যা ছিল, সবই বলে ফেললাম। কী আছে জীবনে! আর এসব কথা তো আপনি অন্য মেয়েদের কাছে গল্প করবেন, যে এই মেয়ে ক্রাশ খাইসে, হ্যান্ত্যান হ্যান্ত্যান হ্যান্ত্যান………(যেরকম করে আমাকে অন্যদের কথা বলসেন)! তো বলেন গা, যান! বইল্যা শান্তি পান! কী আর করা! এইসব বলেটলে যদি আপনার একটু দাম বাড়ে আরকি! এমনিতে তো আপনার তেমন কুনুই দামটাম নাই, যদিও আপনি এমন ভাব নেন যেন আপনি দামের ডিব্বা! একটা অনুরোধ যে, আমার কথা আর যাকেই বলেন না কেন, আমাকে চিনে এমন কাউকে বলবেন না। আপ্নের পিলিচ লাগে, বদ্দা! আর বললেও তো কিছু করার নাই, তাই না? আচ্ছা, যাকে খুশি বলেনগা, যান। ব্যাটা মাইনষ্যের এত ভাব ভাল্লাগে না।

আমি যা লিখসি পাগলের মতন আবোল-তাবোল, সেগুলাকে কথা হিসেবেই পড়বেন, লেখা না। আমি লিখতে পারি না। আর সুন্দর করে ওই পাদমার্কা উপমাটুপমা দিয়ে আমি কিছু বলতেও পারি না। মনেও থাকে না আর থাকলেও ভাল লাগে না। সাহিত্যফাহিত্য আমার জিনিস না। আমার সব স্বাভাবিক আর আসল জিনিস পছন্দ, এমনকি সেইগুলা খারাপ হলেও নো প্রব। সব কিছুই ন্যাচারাল হতে হবে। পাবলিক হাগু আসলে বলে, বড় বাথরুম পাইসে! ক্যানরে ভাই? তোমার কথামতন তোমারে যদি কেউ বড় আয়তনের একখান বাথরুমে নিয়া ছাইড়া দেয় যেইখানে খালি হিস্যু করার ব্যবস্থা আছে, তখন কি তুমি ওই হিস্যু করার জায়গায় বড় কামডা সারবা? আর যদি সেই বাথরুমে খালি গোসল করার ব্যবস্থাই থাকে, তাইলে?? তেরা কেয়া হোগা, কালিয়া? আজব জনগণ! আমি যা বলার, একেবারে সরাসরিই বলি। অতো কাহিনি করে বলার টাইম নাই আমার! এ কারণে অনেক সময় আমার ইচমার্ট বোন বা ছেলেপেলেদের কাছে আমি হয়ে যাই ডাউনমার্কেট বা পাগলি বা খ্যাত বা ঠিকমত কথা বলতে না-পারা এক মেয়ে। অবশ্য আমার নিজেরও অনেক ঘাটতি আছে, সেগুলা বাদ দিলে আমার এই ভোলাভালা ‘আমি’কেই পছন্দ। আর হচ্ছে যে, কারও জন্য চেঞ্জ হতেও পারব না। আমি যেমন, তেমনই। আমি যা, তা-ই! (খায়েশ হইলে পড়েন, ‘যা-তা’! কুনুই প্রবলেম নাই।) পোষাইলে ওয়েলকাম, না পোষাইলে গুডবাই! খ্যালা শ্যাষ! আমার যা ইচ্ছা হইসে, তা-ই লিখসি, মানে বলসি। মন চাইলে পড়বেন, মন না চাইলে পইড়েন না। অ্যাজ সিম্পল অ্যাজ দ্যাট! চেষ্টা করলে নকল করে, ইশটাইল করে ঢং করে কথা বলা যাবে, কিন্তু নিজেকে চোরচোর লাগবে, ভাই! নিজেকে হারায়ে ফেলার চাইতে পেইন আর কোনওকিছুতেই নাই। কী করব, বলেন না! আমি খ্যাত তো খ্যাত-ই ভাল আমার জন্য। মিথ্যামিথ্যা ইশমার্ট হতে পারব না। আমি ছোটবেলা থেকেই মিথ্যা কম বলি আর বললেও খুঁতখুঁত করে মনের মধ্যে। আমি মিথ্যা বললে আপনি আমার চোখ আর বলার ধরন দেখেই ধরে ফেলতে পারবেন। মিথ্যা আমি বলি যে না, তা অবশ্য না, কিন্তু কেউ যদি সেটা বিশ্বাস করে বসে তো ভীষণ অপরাধবোধে ভুগি। সবসময় ফাজলামো করেই মিথ্যা বলি, সে মিথ্যা কখনওই ক্ষতিকর মিথ্যা না। তা বাদে যদি প্রয়োজনে মিথ্যা বলিওবা, মানে বলতে তো হয় মাঝেমধ্যে, তখন পরবর্তীতে যার সাথে মিথ্যা বলসি তার কিংবা অন্য কারও কাছে সেটা স্বীকার করে একটু শান্তি পাই। মানে, আমার সব সত্যি কেউ না কেউ জানেই!

আপনাকে যা বলসি, তা হয়তো অনেক ফালতু ভ্যাকরভ্যাকর, কিন্তু কিছুই মিথ্যা বলি নাই। ‘হয়তো’ মানে যদি মনে হয় আমাকে বয়কট করবেন, তাহলে সরাসরি জানায়ে দিবেন। আর পাগলের প্রলাপ বা বকবকানি যদি পড়ার ধৈর্য বা সময় যদি সত্যি হয়েও যায় তো একটা অনুরোধ যে একেবারেই সব পড়বেন না, কারণ এত কথা একেবারে শোনা সম্ভব না, বিরক্ত হয়ে যাবেন, ভাই, তাই দিনে একটা বা দুইটা পৃষ্ঠা করে পড়বেন। আমি বানানটানান দেখতে পারলাম না, কারণ আমার নিজের অত ধৈর্য নাই, তাও একটু দেখসি আর দেখার পর ভাবলাম, এটা কী একখান ঘোড়ার আণ্ডা হইসে! কোনও মানেই তো দাঁড়ায় না এইসব বাখোয়াজ বাৎচিতের! ভাল ভাল। যা হইসে, হইসে। নতুন করে আর কিছু লেখা সম্ভব না। আমি এখন রাজশাহীতে, আর আগের কথাগুলা লিখসিলাম ঢাকায় বসে। সারারাত আর সারাদিন জেগে। আবারও বলতেসি, লেখা হিসেবে নিবেন না এইগুলা, কথা হিসেবে নিবেন, মন চাইলে বড়জোর প্রলাপ, এর বেশি কোনওকিছুই না। আর যা কিছুই হোক, আমি কখনওই আপনার খারাপ চাইব না, এটাতে সন্দেহ নাই। অনুরোধ আছে, দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে চুল-গুনে-দাও টাইপ কিছু বলবেন না। আরেকটা কথা, আমি সুন্দর না, আজকাল বাসায় থেকেথেকে কীভাবে জানি, মানে একটুএকটু ফর্সাফর্সা হয়ে যাচ্ছি। নিজেকে আয়নায় দেখলে নিজেরই হাসি পায়! আসলে আমি শ্যামলা, আর আমি গোসলও করি না, চুলও আঁচড়াই না। আপনি আসবেন, তাই কষ্ট করে এসব করতে হইসিল। ভাল হইসে, আমার জন্য কেউ নাই, আমার কাউকে দরকারও নাই। আমি এ-ই রকমই। স্রষ্টার ভালোবাসা পেলেই হবে। আর কিছু লাগে না আমার। কথা বললে তো বলতেই থাকব, বলতেই থাকব। পাগল কি আর থামানো যায়, বলেন! তাই কষ্ট করে অফ গেলাম। টাটা। আর আমি খারাপ, সেটা ঠিক আছে, তাই বলে নিজের সম্পর্কে অনেকগুলা সত্যি বললাম বলে, খারাপ ভাববেন না। আমি যে খারাপ, এটা আপনাকে আমি বলে না দিলে আপনি তা জানতেন কেমন করে? অ্যাক্টিং তো করাই যায়, বস্‌! কত চরম খারাপ লোককেই তো দেখি ফেরেশতা সেজে ঘুরে বেড়ায়—ওদের কেউ কখনও ধরতেই পারে না!

২০১৪ আমার প্রিয় সাল। এই বছরেই আমি আবার আমার আগের ফর্মে ফিরে আসছি, ফুল ভলিউমে গান ছেড়ে দিয়ে লাফালাফি করতে পারতেসি, পুরনো বান্ধবীদের এতদিনের জমানো রাগ ভাঙায়ে ওদের সাথে আবার আগের মত ধুমসে আড্ডা দিচ্ছি। জিয়া পার্কে যেয়ে বিভিন্ন রাইডে উঠেউঠে আন্দাজি গলা ফাটিয়ে হাহাহাহা করে সবাই মিলে চেঁচাচ্ছি। ওটার নাম অক্টোপাস। আপনি উঠলে মাথা ঘুরায়ে বমি করে দিবেন, কিন্তু আমরা পরপর চারবার উঠসি! ২০১৪-র কাছে সারাজীবন ঋণী থাকব, কারণ একটা ভয়ংকর রাক্ষসের হাত থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি পাইসি, আরও আছে। মেজমামার কাছ থেকে বিশাল অংকের একটা টাকা গিফট পাইসি, তার মধ্যে একটা হার্ডডিস্ক বাদে বলার মত কিছুই কিনি নাই, কিন্তু সব টাকা শেষ! আমার মত পাবলিক ঘরেঘরে থাকলে ব্যাংকিং ব্যবসায় লালবাত্তি জ্বলতে বেশি টাইম লাগত না। আমার কাহিনি কেউ যদি জানে তো আমাকে শ্যাষ করে দিবে! ফুপু-কাকাদের কাছ থেকে অ্যাত্তগুলা জামা গিফট পাইসি, আমার বোনের বাবু হবে, এই খবর পাইসি, আর ২০১৪ সবচেয়ে প্রিয় হবে, কারণ, আমি চাকরি পাইসি, স্যাররা বিসিএস থেকে ননক্যাডারের নিয়োগের ব্যাপারটা ঠিকমত বুঝে না, তাই রাজশাহী ভার্সিটি থেকে আমি একাই ক্যাডার হইসি মনে করে কিছু না বুঝেই আমাকে স্যাররা না জানি কী ভাল স্টুডেন্ট ভেবেটেবে অনেক পিয়ারমোহাব্বত দেখাইসে! দেখলাম, ভালই তো লাগতেসে! ওরা জানে না, জানার আর দরকারও নাই। ক্যাডার নন-ক্যাডার কী আবার? চাকরি একটা পাইসি, এই না কত! আমাকে সবাই জামাইআদর করতেসে, করুক! আই ডোন্ট মাইন্ড! আর আরেকটা কারণে ওই সালটা প্রিয় হইসে, সেইটা বলা যাবে না। আমি কিন্তু কারও ভাবের ভয়টয় পাচ্ছি না, কিন্তু কোথায় জানি কী একটা জানি কেমন জানি লাগতেসে!

আমি আপনাকে অনেক জ্বালাইসি, না? আর অনেক সরিটরিও বলসি, কিন্তু সত্যিটা এই যে, সরি তো ফিল করিই নাই, উল্টা মনেমনে হিহিহাহাহেহে করে হাসছি। আপনি একটু বলদও আছেন মনে হয়! আচ্ছা, আজকে আমি বেশি বকবক করব না। খুব কম কথা বলব আর যা বলব, সত্যি বলব। সেটা হচ্ছে……আমার কী জানি হইসে! আমি সবসময় আপনার কথা ভাবি! মানে সবসময়ই ভাবি আরকি……আপনি দয়া করে ভয় পাবেন না, আমি দেখতে ভয়ংকর হলেও আচরণে অতটা ভয়ংকর না। তো যেটা বলতেসিলাম, আসলে মুখে ঠিক মতন বলতে পারতেসি না, তাই লিখতেও পারতেসি না। আচ্ছা, আপনাকে তো আপনার কত জনাই এইসব সিলিসিলি কথাবার্তা বলে, তাই না? তাইলে আমি বললে আর সমস্যা কী? এক কাজ করেন, মনে করেন, আমি কোনও মেয়ে না, হুমম্‌? ভাবেন, আমি একটা এমনি কিছু। তাহলে আপনার পড়তেও অস্বস্তি হবে না, আর আমার লিখতেও অস্বস্তি হবে না। পড়া হয়ে গেলে আবার মেয়ে ভাববেন। ঠিক আছে? প্লিজ অনেস্ট থাকবেন আর ঠকাবেন না। ঠিক আছে?

আমি আপনাকে খুব বিশ্বাস করসি আর বকবক করে খুব শান্তি পাচ্ছি। আপনি যদি কিছু নাও পড়েন, সেটাও আমি ধরে নিচ্ছি যে পড়লেন না আর তাতে কিন্তু আমার ক্ষতি হবে না, কিন্তু আমি ধরেই নিচ্ছি যে আপনি যদি কোনও কাজ না পেয়ে সব লেখা পড়েও ফেলেন তবুও আমাকে নিয়ে আপনি অন্তত হাসবেন না। জানি না কেন এই আস্থাটা আসতেসে। ব্যাপারটা এইখান পর্যন্ত থাকলেই ঠিক থাকত, মানে এতদিন তো তা-ই ভাবতাম! কিন্তু ভাবতে-ভাবতে আজকাল অন্য কিছু একটা সন্দেহ হচ্ছে নিজেকে নিয়ে। মিথ্যা বললাম কিন্তু! আসলে সন্দেহটা অনেক আগে থেকেই হত কিন্তু কনফার্ম কীভাবে হব বুঝতে পারি না। তো দ্য গ্রন্থিক, আসলে আমার কী জানি হইসে। আমি কয়েকটা উপসর্গ বলতেসি, আপনি বলেন এটা আসলে কী, মানে আমার কী হইসে!

১। আমার মাথায় সবসময়ই ‘গ্রন্থিক’ নামটা নেচে বেড়ায়, মানে কিছুটা জিকিরটাইপ বলা চলে………গ্রন্থিক! গ্রন্থিক! গ্রন্থিক! মাঝেমাঝে নামের সাথে দুএকটা প্রশ্ন ফ্রি চলে আসে, যেমন, গ্রন্থিক এখন কী করতেসে? বা কী ভাবতেসে! এইতো, এইসব।

২। আপনাকে নিয়ে অন্যদের সাথে কথা বলতে ভাল লাগতেসে, মানে আপনার নাম তুলে কথা না বললেও আপনার লেখা পড়ে যতটুকু আপনাকে চিনসি, সেগুলার আশপাশ দিয়ে, মানে স্ট্যাটাস-রিলেটেড কথা বললেও ভাল লাগতেসে।

৩। যে দুই-একজনের সাথে আপনার নাম বলে কথা বলা যায়, তারা আপনাকে বকলে আমার মন খারাপ হয়ে যাচ্ছে। তাদের সাথে শত্রুতা করে ফেলতে ইচ্ছা করতেসে।

৪। আপনার অতীতের যে দুই একটা গল্প শুনসি আর এসব যখন ভাবি, তখনই মনে হচ্ছে, ইসস্‌! বাচ্চা ছেলেটা কত কষ্ট পেত! তখনও আমার খুব খারাপ লাগতেসে আর শুধু মনে হচ্ছে, অতীতে চলে যেয়ে আপনার সাথে একটু কথা বলে আসি, একটু করে কাঁধে হাত রেখে সাহস দিয়ে আসি, একটু বলি যেন নিজেকে আপনি একা না ভাবেন, আর এহেম……এহেম……ইয়ে মানে, একটু হাতটাও ধরে আসি। দয়া করে পেয়ে বসবেন না, আমি শুধু লিখার ব্যাপারে অনেস্ট থাকতে চাই বলেই হাত ধরার কথাটা বলে ফেললাম, কিন্তু খোদার কসম আর আপনি ভাল করে ব্যাপারটা বুঝেন যে এটা ওই সময়ের ‘নোবডি’ গ্রন্থিকের জন্য, তাও সবসময় না, ওই স্ট্যাটাসগুলার সময়ে। আর গ্রন্থিকের লেখায় নেগেটিভ কমেন্ট যদিও তেমন থাকে না, একআধটা চোখে পড়লে মনখারাপ হয়ে যায়। কমেন্ট পড়ে মনখারাপ হয় না, মনখারাপ হয় যখন ভাবি এটা পড়লে তো গ্রন্থিকের মনখারাপ হবে! কিন্তু……! একটা ‘কিন্তু’ আছে কিন্তু! আমি যদি একআধটা নেগেটিভ কথা বলি আর যদি জানিও যে এতে হয়তো গ্রন্থিক রাগ করতে পারে, তো তখন একটুও খারাপ লাগে না! ব্যাপারটা কি অধিকারবোধ নাকি? এমন একতরফা অধিকার ফলানোর কী মানে? তাও আবার মনেমনে?

৫। আপনাকে দেখি মেয়েদের সাথে ওপেনলি ফ্লার্ট করেন! আমাকে আবার এসব দেখতেও হয়! কী কষ্ট! আবার দেখি যে কিছু মেয়ে সাড়াও দেয়, তো কিছু মেয়ে নিজেই ওরকম করা শুরু করে। কেন জানি, এসব দেখে হিংসায় আমার কলিজাটা জ্বলেপুড়ে ছাই হয়ে উড়ে যায়! আচ্ছা জনাব, শিব নাকি গায়ে ছাইটাই মেখে বসে থাকতেন? এটার ব্যাখ্যাটা আমার খুব জানতে ইচ্ছা করতেসে। একটু বলবেন? দয়া করে এই ভেবে রেগে যাবেন না যে আমি আপনার ধর্ম নিয়ে ফাজলামো করলাম। এই ধর্ম কি আপনি রেজিস্ট্রি করে নিজের নামে করে নিয়েছেন নাকি? এটা যে আমার ধর্ম না, একথা কে বলসে আপনাকে? সব ধর্মই আমার ধর্ম। আমি আমার কোন ধর্ম নিয়ে কী বলব, সেটা আমার ব্যাপার। হ্যাঁ, আপনার মতন অত সম্মান আমি কোনও ধর্মকেই করি না। কোনটা ভাল আর কোনটা মন্দ, এটা বোঝার ক্ষমতা স্রষ্টা আমাকে দিসেই তো, না? ধর্ম আমার অতটা দরকার হয় না, তবে ধর্মের প্রতি মানুষের যে সম্মান বা বিশ্বাস, সেটাকে কিন্তু সত্যিই আমি অনেক সম্মান করি। বিশ্বাস করেন! আপনার সামনে এমনি মজা করে আর সাহস করে এসব বলি, ভাই। আমি কারও বিশ্বাসে আঘাত দেই না, এমনকি যদি কেউ ভূতের গল্পও বিশ্বাস নিয়ে বলে, আমি সেটাও বিশ্বাস করার চেষ্টা করি। আমি একজন বিশ্বাসপ্রিয় মানুষ। এইরেহ্‌! বকতেবকতে কোথায় চলে আসলাম!

৬। আমি যখনই ফেসবুকে ঢুকি, যত কমই ঢুকি না ক্যান, তার ৯৬% সময়ই আমি সরাসরি আপনার ঠিকানায় যাই, মানে গ্রন্থিক-ডট-আইবিএ দিয়ে সরাসরি আপনার পেজে। আর বাকি ২% কেউ কিছু দিয়ে দেখতে বললে বা ট্যাগ করলে বা কিছু বলতে চাইলে বা যদি ফোন করে বসতে বলে, তখন, আর বাকি ২% আমার নিজের কিছু দেখার থাকলে, তখন।

আরও আছে! আরও আছে! কিন্তু সেগুলা বললে ন্যাকান্যাকা বাংলা সিনেমার নায়িকা দেখাবে, তাই বলব না। আচ্ছা যেটুকু বললাম, সেটুকু নিয়েই আগে কথা শেষ করি? আমার এক ফ্রেন্ড বলসে এইসব কিছু না, এসব শুধুই আকর্ষণ (ইনফ্যাচুয়েশন) আর এটা স্বাভাবিক একটা ব্যাপার, আর বলসে, যা খুশি কর, মজা কর, ফাজলামো কর, খালি সিরিয়াস কিছু করিস না, তাইলেই হবে। আচ্ছা, আমার এক্কেবারে সত্যিকার বয়স বলি। (কাউকে বলবেন না, প্লিজ!) ২৮ বছর ৪ মাস ২৫ দিন। তো এই বয়সেও কি টিনএজারদের মতন স্রেফ আকর্ষণ থেকেই উপরের উপসর্গগুলা দেখা দিবে? আর ধরলাম স্রেফ আকর্ষণই, তাইলে অন্য ছেলেদের প্রতিও সেটা ফিল করতেসি না কেন? অন্য কারও দিকে তাকাতে ইচ্ছা করতেসে না কেন? অন্য কাউকে নিয়ে ভাবতে ইচ্ছা করতেসে না কেন? অন্য কাউকে খোঁচাতে ইচ্ছা করতেসে না কেন? অন্য কাউকে মনের সব কথা খুলে বলতে ইচ্ছা করতেসে না কেন? অন্য কারও সামনে নিজেকে নির্লজ্জ করে বারবার নিয়ে আসতে ইচ্ছা করতেসে না কেন? অন্য কাউকে দুনিয়ার সব সত্যিগুলা বলে ফেলতে ইচ্ছা করতেসে না কেন? তাই বলে আমাকে অত ভাল মেয়েও ভাইবেন না কিন্তু, আমি অনেক শয়তান ছিলাম, আছি আর থাকবও, তবে, প্রব্লেম এই যে, মানে কী হইসে জানেন, আজকাল কারও দিকে তাকাতেও ইচ্ছা করতেসে না। বুড়ি হয়া গ্যালাম রে!