খুঁজতে থাকে সত্যান্বেষী

 
আমার পরিচয়, আমি এক নীরব শীতল সত্যান্বেষী।
যা দেখাই, তা হল, আমার
ধূর্ত, ধাঁধানো হাসি। আমার উদ্দেশ্য, আমার জন্ম খোঁজা।
আমি একটি মিথ্যে গোধূলিতে সতর্ক গুপ্তচরের মতো জাদু নিক্ষেপ করেছি,
সে যাদু মিথ্যে নয়, যদি
আমার নিচে খড়ের সিংহাসনটি অক্ষত থাকে।
ধুলো সরিয়ে যে সন্ধে নেমে এলো, সেটি ঘোরলাগা, ঠাণ্ডা, নীলচে।
এবং, যখনই সম্রাট তাঁর পোশাক পরেছেন,
সবাই দেখল, শান্ত হয়ে রইল।


আমি হাঁটুগেড়ে বসে গোলাপ কুড়িয়ে নিচ্ছিলাম
ততক্ষণ পর্যন্ত, একটা ভদ্রোচিত পুষ্পস্তবক প্রসব করতে যতক্ষণ কুড়োতে হয়।
আমায় দেখে কিছু পাগল বলল,
দিন এখন নাকি আর কাটে না, দিন এমনিই কেটে যাওয়ার দিন ফুরিয়ে আসছে।
আমি তো ভাঙতেভাঙতে কোনওমতে বেঁচে আছি,
প্রার্থনা করে যাওয়ার মতো অস্তিত্ব নিয়ে আজও ভাবি,
একসময় যে বেঁচে ছিলাম, এটা তো সত্য!


পাগলদের ডেকে সান্ত্বনা দিই,
জানোই তো, রাত, সারারাত ধরে, বাতাসের চাবুক দিয়ে মারধর করে,
আপনি কেন প্রাণবন্ত ব্যক্তি হয়ে উঠলেন না,
সে সম্পর্কে ভুলেও জিজ্ঞেস করবেন না এবং অভিযোগ করার সাহস করবেন না!
শুনে তারা আরও পাগল হয়ে উঠছিল,
ওদের দেখে আমার মনে হল,
তারা কোনো অতীতেও আমার সাথে দেখা করতে এসেছিল,
ওদের সবারই আছে একটা করে বুনো স্বর্গীয় দেহ, ওরা যেন মহাজাগতিক জীবাণু।


দৃষ্টিনন্দন, কোমল কিছু ছোট বাছুর চরছে,
সেখানে পাহাড়ের উপরে ছোটছোট ডেইজি ফুল,
সমুদ্রের উপরে হাজারহাজার প্রাচীন ধূসর ফেনা।
বিশৃঙ্খলাই অনেকটা অচেতন তবু ধ্রুব অস্তিত্ব হয়ে গেছে,
এবং সম্ভবত এসব নিয়েই কিছু লোক দারুণ সুখী।


………অন্ধকার ফুঁড়ে ওঠে মখমল-মোলায়েম শরীর,
উদ্বেগ ভুলে বেগে ঢুকে পড়ি মুহূর্তেই,
আবির্ভাব হয় দয়ালু এক সন্ধের।
দেখলাম, আমার বোধের দোকানটি
ঝাঁপি নামিয়ে দিয়ে ক্রমেই নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে
এবং আমি স্পষ্টই দেখতে পাচ্ছি, আমি কে হতে পারি, কতটুকু হতে পারি।


ভোরফোটা সোনালি আলোর ফোয়ারাকে
নেপলসের অন্ধকার নীল আকাশের ক্লান্তিতে বেঁধে,
ভিসুভিয়াসের ওমে অপরাহ্ণকে স্বাগত জানাই।
সেখানে সুস্বাদু মাংস পুড়িয়ে কয়েকটি প্রশ্ন তৈরি করা হয়েছে,
এবং সমুদ্রের তীরে
একটি ভিক্ষুক---সুখী; সুখী, তাই অর্ধনগ্ন।


একসময়, রাত ফিরে এলে চাঁদ মুখ লুকিয়ে রইল।
চারিদিকে আমাদের টর্চের আলো পড়ছিল,
দেখলাম, আমাদের ফানুস বাতাসে উড়ে গেছে অনেক আগেই।
মনে দুঃখ নিয়ে কিছু লড়াইয়ে স্বেচ্ছায় হেরে গিয়ে
আমরা পায়ে হেঁটে বনের দিকে এগিয়ে গেছি। আমরা তখন সরীসৃপের মতো চলছিলাম।


শর্ত ছিল, আমরা জ্বলতে পারব, তবে
চকমক করতে পারব না। ওটা চোখে বড্ড লাগে!
ভয়ে আমরা জ্বলিইনি!


যারা শর্ত বেঁধে দিয়েছিল, তাদের জীবনের দিকে তাকালাম।
ঝলমলে, আর সেখানে রাজত্ব করছে ভয়ংকর অন্ধকার!
আমরা তবে এক ধাপ এগিয়ে, ভেবে খুশি হয়ে উঠলাম।
সেই এগোনো ধাপে, আমরা অর্থ কি অনর্থ, কোনোটাই দেখতে পাই না,
এমন-কী, একে অপরকেও দেখতে পাই না।
কেবল একটি স্ফুলিঙ্গ, সেই অন্ধকারের মধ্যেও
আমাদের নিচু মাথায় ছড়িয়ে গিয়েছিল,
আমরা একটানা চিন্তা করেও বুঝে উঠতে পারিনি---
আমরা কি আজ সত্যিই ড্রাগনকে হত্যা করব?
ওকে তবে মেরেই ফেলব?


চাঁদটি এখনো তার মুখ লুকিয়ে রেখেছে, আমাদের
মশালগুলি দীর্ঘ সময় পুড়ে ফুরিয়ে গেছে, আমাদের
লণ্ঠনগুলি বাতাসে উড়ে গেছে।
নেতা, বোকা নেতা সেই রাতের প্রতীক্ষায় আছে
যে রাতে কেউ কাঁদবে না,
সবাই দেখবে, নিজেদের অবশিষ্ট বোধটুকুও ভেঙে পড়েছে।