খুন হয়ে যাওয়ার পর

 সুহা, নাকি সুবাহ?
আর কোনও নাম?
যে নাম কিনা দেয় মুছে বিস্মৃত অতীত!
বলে ফেলো সব আরও আছে যতো!
 
তুমি ভুলে গেলে?
এত সহজেই যায় ভোলা!
কচি আঙুলের নখের ডগায়,
তোমার হাতে উঠেছে বেড়ে
যে স্পর্শ, যে অনুভব...সব ভুলে গেলে!
ওই ধমনীতে যে রক্ত চলে বয়ে...
কান পেতে শোনো, সে রক্তে বাজে কীসের প্রপাত!
ভুলে গেলে? তুমি ভুলে গেলে!
 
তুমি ভালোবাসার কথা বলেছিলে...
ভালোবাসা স্বার্থপর হয় নাকো, বোকা!
বোঝোনি তো!
তুমি ছিলেই কেবল পণ্য,
কিছু মাতাল সময়ের জন্য--
স্রেফ উষ্ণতা বেচে কেনা যায় যাকে!
ও কি বেসেছে ভালো এতটুকু? হায় কমলসুহা!
ওগো সুহা, তুমি শুনছো?
কমলসুহা মরে গেছে বুঝি!
সুহারা হয়তো মরে যায়!
তবে ভালোবাসা কি মৃত্যুর মত?
নাকি, মৃত্যুই টানে ভালোবাসা?
 
সবকিছুতে ভালোবাসা খুঁজে আজও আমায় বাঁচতে হয়...
কমলসুহা, সে তুমি বুঝবে না।
ও তোমায় বাসেনি ভালো, প্রিয়তমা।
এটা নিছকই এক প্রেমের গল্প, আর কিছু নয়।
অমন অস্তিত্ব অস্তিত্বকে বিলীন করে দেয়...
কেবলই নাভির নিচে জমে যে উষ্ণতা--
ভুললে ওতেই, কমলসুহা? নাকি, অন্যকিছুর মোহে অন্য হলে?
 
তুমি একে ডেকেছিলে আপন করে, ভেবেছিলে--ত্যাগ। কেন, বলো কমলসুহা?
ও ছেড়েছে বা কী, বলার মত?
যদি ও বাসেই ভালো--সত্যিকারের,
তুমি দেখি থেকেই দেখো--যেমন ছিলে,
ওকেই নাহয় আসতে বলো, তোমার পথে!
বোঝো এত, সরল অংকই বোঝো না কেবল!
আমি চোখের জলে ভাসি--
ও ভাসে পুণ্যসুখে।
তুমি ভেসে যাও কীসের পাপে?
চোখের জলে হয় না পুণ্য--
সে জল কেবল পাপ সয়ে যায়!
 
সুহা, নাকি সুবাহ--কী নামে ডাকি?
কত সহজেই বছর চারেক যায় ঘুরে!
কন্যা তোমার হাঁটতে পারে,
আধো বোলে ‘আম্মা’ ডাকে।
দারুণ, সুহা! নাকি সুবাহকলি?
 
অর্থপ্রেমে অর্থ প্রেমের ভুললে তুমি...
তবু যদি থাকতে ভালো, হতেম খুশি সবচে’ বেশি!
আমি শুনেছি, সুহা সুবাহকলি হয়ে বাসন মাজে, কাপড় কাচে,
খায় আধপেট--তাও নাকি সতীন দিলে!
পুণ্য আদায় হয়ে গেলে,
পসরা পাপের এমনি মেলে!
 
কমলসুহা? নাকি সুবাহকলি?
আজ তুমি অন্যঘরে একলা বাঁচ, কষ্টে কাঁদ।
আমার তুমি নও কখনওই--এও আমি মানতে পারি!
তবু যখন ভাবি, আমার সুহা কান্না গিলে ঘুমিয়ে পড়ে রাত্রি হলে,
বুকে ভেঙে যায়!
কমলসুহারা সুবাহকলি হয়ে মরে।
কেন ফিরলে না? কেন তুমি ফিরলে না?
কমলসুহার মরার আগে একবার কেন ভাবলে না?