গোধূলি না ফুরোতেই/এক

অপরিচিত কারো সাথে ফেসবুক ফ্রেন্ডশিপে আগ্রহ নেই। সরি।

জ্বি আজ্ঞে।

হুম।

তবে অভয় দিলে একখানা কতা কইতুম।

কয়া ফালান।

ধইন্যাপাতা। সবাই তো পূর্বেই পরিচিত থাকে না, তাই না! আচ্ছা, আমি নাহয় বরং ফলোতে see first দিয়াই রাখি!

পরিচিত হলেই হয়!

আপনার ইচ্ছা। আপনি অভয় দিয়েছিলেন কিন্তু! এখন অমন কড়া করে বলবেন না, প্লিজ।

কী অভয় দিয়েছি?

একখান কথা বলার।

বলেন।

বলেছি তো! আচ্ছা, সেইসব যাকগে!

উত্তর দিলাম তো!

আপনি আমাকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন তাতেই ভাল লেগেছে।

হ্যাঁ।

আপনার লেখা আমার ভাল লাগে। আমি আপনার লেখা পড়ি রোজ। আপনার প্রোফাইলে আমি দিনে একবার হলেও ঢুঁ মারি।

লাঞ্চ করেছেন?

জ্বি। আপনি খেয়েছেন?

না। এখনো সময় পাইনি। খাবো।

সে কী! বেলা তো গড়িয়ে যাচ্ছে!

জ্বি। কিছু ফাইলের কাজ আছে। এরপর।

জ্বি, আচ্ছা।

আপনি কী করেন? কোথায় থাকেন?

আমি পড়াশুনা করি। তেজগাঁও কলেজ, অনার্স ফাইনাল ইয়ার, আর আগারগাঁও তালতলা থাকি।

আচ্ছা।

জ্বি। কী করছেন?

এখন আপনার সাথে কথা বলছি।

আপনার একখান ছবি দেখলুম! ওলে বাবালে কী মন ভালকরা হাসি! ওলেমালেকীছুন্দলকতা! জনাব আমার সাথে কতা কইচেন!

ওঃ!

জ্বি। এটা কি অর্ধচন্দ্র?

পূর্ণ।

আমার অপরাধ?

হুদাই।

ঝগড়া করুম। মাইনা নিমু না! আমি এতটা মহীয়সী নই।

নাম্বার দেন, কাইজ্জা করি।

*********** আমি রিঅ্যাকশন শুনার অপেক্ষায়।

কখন ফোন করব?

ঝগড়া থেমে গেলে।

মানে?

কাইজ্জা করবেন বললেন নাহ্‌!

হুহ্‌!

জ্বি।

ফ্যামিলি নিয়ে থাকেন?

নাহ্‌! হোস্টেলে থাকি।

আচ্ছা। বাহ্‌! স্বাধীন জীবন! আপনার একটা সেলফি দেন, আপনাকে দেখি।

আমার মা ছাড়া কেউ নেই, তাই এতো স্বাধীনতা বুঝি না।

সরি, আমি জানতাম না।

সরি, কেন? নিন, দেখুন।

এটা আপনার সেলফি?

আমি বলবো, এটা আমি, কিন্তু আপনি বলবেন ডায়না খান ডাইনি!

ডায়না কে?

ওই যে ডাইনি চরিত্রের অভিনেত্রী!

চিনি না।

খেয়েছেন?

সেলফি দেবেন না, বললেই হয়। ভীতুর ডিম!

খাবো না। হিহিহি…….ইচ্ছে করছে না।

আচ্ছা, আপনি বোধহয় কনজারভেটিভ।

অবেলায় তো এমন হবেই!

আসি, কেমন? টা টা।

না খেয়ে অসুখ বাঁধায়েন নাহ্‌ আবার! যাচ্চেন!! আচ্চা। টা টা।

হুহ্‌।

আচ্ছা, শিশিরবিন্দু ছুঁয়ে দিয়েছেন কখনো?

কতবার!

আকাশে যখন রৌদ্র সহাস্য বদনে আপনার দিকে তাকিয়ে ছিলো, তখন আপনি তার আলোয় চোখ মিলিয়েছেন কখনো?

ডরাইসি!

কেন?

নেন, পড়েন।

হুমমমমম!

আচ্ছা, দূর্বাঘাসের ঘ্রাণ নিয়েছিলেন কখনো?

হ্যাঁ।

আমার কাছে ভারি মিষ্টি সে গন্ধ। আপনার কাছে কেমন?

প্রেমিকার চুলের ঘ্রাণের মত, কিংবা ঘাড়ের কোণার।

প্রেমিকাকে কখনো শক্ত হাতে ধরে বাঁকা টিপটাকে সরিয়ে যথার্থ স্থানে বসিয়েছিলেন?

অনেকবার! শাড়ি পরানোর সময়।

সে নিশ্চয় অর্ধাঙ্গিনী!

হ্যাঁ, অন্য কারো।

প্রেমিকরা অন্য কারোরই হয়……

হোক না! মন টানলে কাছে আসাই যায়!

মন টানাহ্যাঁচড়ায় পড়লে, তখন?

মিথ্যে এড়িয়ে চললে কম পড়বে। আমার প্রেমিকা অন্য কারো বাগদত্তা ছিলো।

তাহলে হারালো যে!

আপনাকে এইসব কেন বলব? কাউকে দেখাবেন?

নাহ্‌ থাক, বলতে হবে না। এ তো কথার প্রসঙ্গে এগুচ্ছিল।

ভয় পাই। মেয়েদের আত্মসম্মানবোধ কমে যাচ্ছে। ইনবক্স মার্কেটিং করে গাড়িবাড়ি করে ফেলে!

তা বুঝতে পেরেছি। হ্যাঁ, এমন ঘটনা অহরহ।

বাথরুমের দরোজা খোলা রেখে স্নান করার মতো।

তা বৈকি! আর আমি আপনার পরিচিতও নই, এরূপ বলা বা মনে করাটা স্বাভাবিক। এখনো তো খাননি, হালকা কিছু খেয়ে নিন।

ডিম মামলেট খেলাম।

একেবারে খালি পেটে থাকা উচিত নয়। বাসায় সবাই কেমন আছেন?

ভালই। আপনার একটা সেলফি চেয়েছিলাম। দিলেন না।

আচ্ছা, দিচ্ছি। আর আমার আইডি ফেইক নয়।

এটা আগের তোলা।

হ্যাঁ, কিছুদিন আগে।

এখন তুলুন।

এখন!!!

হ্যাঁ।…………পচা মেয়ে একটা! এটা কি সেলফি?

ক্যামনে সেলফি হয়? এর চেয়ে ভালা চেলপি তুলতেয়ারি নাহ্‌!

আচ্ছা। সুন্দর লাগতেসে।

থ্যাংকু! আপনাকে সুন্দর বলবো না। সে তো সবাই বলে! আমি নাহয় অন্যকিছু বলি। আপনি স্নিগ্ধ।

আরো দেন। দেখবো।

গুলি করে দিলাম। কী দিবো?

সেলফি।……………কই?

দুঃখিত, নেটে ছিলাম নাহ্‌।

পাঠালাম।

ভাল।

নেট স্লো, সময় লাগছে তাই। চা খাবেন?

ক্রাশড্‌! এখন তুলে দিলেন না?

মা চা বানিয়েছে, খেয়ে নেই আগে। আসছি। আপনি খেলে চলে আসুন। চা আড্ডা হবে।

সারাক্ষণই তো ওয়েট করিয়ে রাখেন।

আসব না, থাকেন ওয়েট করে! জানেন, আমি ভাল চা বানাতে পারি। কফিও ভাল পারি বানাতে।

খাওয়ান একদিন।

ওক্কা। বাঃ……রে চায়ের দাওয়াত দিলুম তো! না করলে শুনবো নাকি তাতে?

দেখা হোক, সব হবে।

এখন কী করছেন?

লিখছিলাম আর আপনার জন্য ওয়েট করছিলাম।

অপেক্ষা করতে হবে না। এটা অনেক কষ্টের। আমি এমনিতেই আসবো।

আপনার বাড়ি চট্টগ্রামে?

হ্যাঁ।

আমার ওখানে ভালোবাসা ছিলো। আচ্ছা, চট্টগ্রামের মানুষ চট্টগ্রামের বাইরের মানুষের সাথে আত্মীয়তা করে না নাকি বিয়ের ব্যপারে?

মানে?

বললাম, ধরুন, বিয়ের ব্যপারে চট্টগ্রামের বাইরে কারো সাথে সম্বন্ধ করে না, এমনটা কি?

করে তো!

আমাকে আমার বন্ধুটি বলেছিলো।

ওহ্‌!

প্রেম করেছেন?

ভালোবেসেছিলাম।

কয়টা?

আচ্ছা। প্রথম জন ৯ বছর ভালোবাসার পর সুন্দরী একজনকে বিয়ে করেছে। আর দ্বিতীয় জনের ব্যাপারে আমি উদাসিন। না বলেছি বাসি, না বলেছি বাসি না। তাই সে তার মতোন করে বেসে না বেসে চলেছে আরকি!

আচ্ছা।

অকালপক্বতা ছিলো।

কেউ কখনো শাড়ি পরিয়ে দেয়নি?

নাহ্‌! তবে হাতে হাত রেখে চোখের দিকে তাকিয়ে বলেছিলো, তোমার দিকে তাকিয়ে পাপ করা অসম্ভব!

বাহ্‌, ভাল নপুংসক প্রেমিক পেয়েছিলেন তো!………….সুনীলের একটা কবিতা মাথায় এল। কোনো এক নীরাকে নিয়ে লেখা।

হ্যাঁ, সে সত্যিই ভাল ছিলো। আমারই ভাগ্য ভাল ছিলো না। কী কবিতা, শুনি!

ভাল ছিলো? নাকি নিরুপায় ছিলো?

নিরুপায়!

আমার খুব বাজে একটা অভিজ্ঞতা আছে এ ব্যাপারে। কখনো কথা হলে বলবো।

ওক্কা।

মার খেতেখেতে বেঁচে গেছি!

হিহিহি……..ভাগ্যিস! নইলে আজ কার সাথে কথা হতো?

অতি সুদর্শন অতি কোয়ালিফাইড এক বন্ধুর সাথে এক সুন্দরী মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলাম।

তারপর?

আমার সে বন্ধুটি উচ্চতায় ৬-২, সুন্দর ফিগার, দেখতে রণবীর কাপুর টাইপ। বুয়েটে পড়েছে, ইলেকট্রিক্যালে, এরপর আইবিএতে।

তারপর।

বাট…………………

?

সেক্স করতে পারত না।

ইয়াগ!

বিয়ের দুইমাসের মধ্যে ডিভোর্স হয়ে গেছে।

এই কতা আপনারে কয়েচে?

আর ইউ অ্যা কিড? এই কথা খুব লুকানোর বা বলা যাবে না, এমন কথা?

না, আমি বয়স্ক মহিলা! হেহে……..নাহ্‌ বাবা! সেটা বলিনি।

মেয়েই বলেছে! খুব বাজেভাবেই বলেছে।

আমি বলেচি তাই বলে এমন কিছুর জন্য ডিভোর্স হয় নাকি?

ওহ্‌! হওয়ারই কথা।

তারপর?

আমি হলেও দিয়ে দিতাম! সেক্স ছাড়া বাঁচা সম্ভব!?

হায় হায়!

ওদের এক বছর পরিচয় ছিলো। আমার মাধ্যমেই পরিচয় হয়েছে।

তারপর?

মেয়ে সেক্স করতে চাইলে বন্ধু এড়িয়ে যেত! বলত, বিয়ের পর সব হবে!

তারপর?

বাট, আমার বন্ধুর সব দোষ বিয়ের আগেই মেয়েকে বলা উচিত ছিলো। বাজে কাজ করেছে একটা। মেয়েটা খুব বাজেবাজে কথা শুনিয়েছে আমাকে।

আপনাকে?

** পারে না, ওর চাকরি ধুয়ে পানি খাবো নাকি? এই টাইপের। হ্যাঁ, আমাকে। বন্ধু অনেক ভাল জব করে। বিএটি’তে আছে।

আপনারর কী দোষ এতে?

সেটা তো জানি না।

তারপর?

এইত! ডিভোর্সড!

হায়রে!

বন্ধুটির এখন দুইজন জিএফ আছে। মেয়ের খোঁজ জানি না। আমাকে ফোন করলে ভয়ে রিসিভ করি না। খুব বিশ্রী গালি জানে ওই মেয়ে! কল্পনাতীত!

কী করে কী হলো! এখন দুইটা জিএফ! কেমনে কী?

সে মেয়ে ঢাকা মেডিক্যালে পড়ে। ফাইনাল ইয়ারে।

ওহ্‌!

দেখতে তো অনেক বেশিই সুন্দর সে! ওর জন্য মেয়ে পটানো কঠিন না। ওর সবচাইতে বড় গুণ, খুব মিথ্যে বলতে পারে। কথা বলার স্টাইল ভদ্র, সুন্দর।

আপনার বন্ধুটি? সুদর্শন দিয়ে কী আর হয়!

মেয়েরা মিথ্যে আর কপটতা খুব খায়!

হ্যাঁ, তা ঠিক, খায়। আমরা কেন এত বোকা?

আমি সরাসরি কথা বলি। তাই আমি একা!

হাহাহাহাহা……..আপনি একা?

মানে?

ওই যে বললেন আপনি একা…….তাই ভ্যাবাচ্যাকা খেলুম!

ডোন্ট জাজ মি। ইউ ডোন্ট নৌ মি।

আচ্ছা, আমি কি কথা গুছিয়ে বলতে পারি না, নাকি আমার কথাগুলো তীরধনুক টাইপের? আমার কথায় কষ্ট পেলেন কি না বোধগম্য হচ্ছে না।

ঠিক আছে, সমস্যা নেই।

আমি আপনাকে জাজ করার জন্য কিছু বলিনি।

………………………………………….

না বলে চলে যান কেন?

দয়া করে অমন কিছু ভেবে নিয়েন নাহ্‌! আচ্ছা, বলে যাবো। বাসায় একটু কাজ করতে হয়।

কী করছেন? না বলে চলে যাওয়া কি ঠিক? ইউ ডোন্ট কেয়ার!

বাবা, বলে যাবো তো!

ফাইন!

কানে ধরলাম। কানে ধরলে বুঝি ওরকম করতে হয়?

অত আদর করে কথা বললে কিন্তু আদর করে দেবো।

কড়া করে বললে তো ঘুষি দিবেন!

বাসায় কখন ফিরবেন? আদর দেবো না? আচ্ছা!

কবিতা ভালোবাসেন?

হ্যাঁ, বড্ড ভালোবাসি!

আচ্ছা।

আচ্ছা মানে, দেবো না আদর?

না, দেবেন না। আপনি আমায় খালি বকুনি দিয়েন!

কবিতা দিই? আমার খুব প্রিয় একটা? আমারই লেখা। লিংক দিলাম।

পড়লাম। ঠিক ঠিক, তবেই না মূল ভালোবাসা পাওয়া হবে, তাই না?

আপনাকে ভাল লেগেছে। খুউব।

কারণে? না অকারণে?

বিশ্লেষণ করতেই হবে?

আপনার পছন্দের প্রশংসা না করলেই নয়। আপনি যা লিখেন, তা-ই যেন কবিতা হয়ে যায়। যদি সেটা একটু রূঢ় করে বলেন, সেটা বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। আর যদি কোমল করে বলেন, সেটা অতল ভালোবাসা হয়ে ঝরে। একটুও মিথ্যে বলিনি।………….নাহ্‌ বিশ্লেষণ চাইনে! আপনি বলেছেন তাতেই যথেষ্ট।

আমি মিথ্যে বলি না, কপটতা করি না।

জ্বি, বুঝেছি।

……………………………………….

ও হ্যালো! শুনছেন………

হ্যাঁ। বলুন।

আপনি তো খাননি। কখন বাসায় ফিরবেন?

একটা কথা বলি?

বলুন না!

আমি কিছু না কিছু খেতেই থাকি।

আপনার কাউকে কী ডাকে শুধাতে ভাল লাগে? আপনি, তুমি, না তুইতে?

আপনাকে কাছের ভাবতে ইচ্ছে করছে, তুমি করে বলতে ইচ্ছে করছে।

হ্যাঁ, বাইরের এত আজেবাজে খাবার খেয়ে ক্ষুধা নষ্ট করা আরকি! আর আপনি চাইলে তুমি করে বলতে পারেন। আপনি আমাকে আপনি করে বললে ইতস্তত বোধ করছি।

আমাকেও বলুন, যদি চান। এই কবিতা পড়ুন। এই কবিতাটা না পড়ে পড়তে হবে। মানে, স্রেফ অনুভব করবেন আরকি! ওটা পড়া হয়ে গেলে এটা।

আমি তো গ্রামে, নেট একটু জিরো টাইপের অবস্থায় আছে। আমি পড়ে নিয়ে পরে বলতে পারবো। আচ্ছা?……………আপনার দাঁত আর চুল আপনার চেয়েও বেশী স্নিগ্ধ! পুরো আপনিটাতে চুল আর চোখ বেশি ভাল লেগেছে। এই ছবিটা দেখলে……….উফফফফফ্‌! ভাগ্যিস, এমবি নেই।

ওকে।

হ্যাঁ।

আজকে, ভাবছি, হুইস্কি খাবো। রাতে। খেলা দেখার সময়। অনেক অনেক অনেক মাস খাই না।

আজ কেন খেতে হবে তবে?

আমি অত ভেবে কিছু করি না।

আরো কয়েক বছর পর নাহয় খাইয়েন।

মুহূর্তের দুনিয়ায় বাঁচি।

তা বটে!

যদি প্রশ্ন করি এতগুলো মাস কেন খাননি তবে?

এমনিতেই। আমার অনেক কষ্ট, একাকিত্ব।

আচ্ছা, ওদিকটায় কি বৃষ্টি হচ্ছে?

না।

কষ্টগুলো আমাকে ভাগ নয়, পুরোটাই দেবেন? এতে আমার একটা বিশেষ লাভ হবে।

যদি ভালোবাসা দেন, তবে! কী লাভ?

আপনার কষ্টগুলো সামলাতে-সামলাতে নিজের গুলোর হদিস আর রইবে নাহ্‌! ইসসস্‌ বিনিময় প্রথা চলবে নাহ্‌! ভালোবাসা দিলে কষ্ট দেবেন! এ কেমন কথা!

বিনিময় কিছু ক্ষেত্রে ভাল।

এটায় নাহয় বিনিময় রইলো নাহ্‌! দান করে দিন আমাকে। আপনার কল্যাণ হবে!

ভয় পেলেন? আচ্ছা, ছেড়ে দিলাম!

উঁহু। ওক্কা! ধরলে ভয়? তবে কষ্টগুলো দেবেন কিন্তু, হ্যাঁ?

ভয়!! সময় বলে দেবে।

সময়ের জন্য পথ চেয়ে রইলুম।

আটকে গেলে কিন্তু ছাড়াতে পারবেন না।

আচ্ছা সুপার গ্লু বাঁচবে তাহলে! বৃষ্টি ভাল লাগে?

কেন? ভিজবেন হাত ধরে?

নাহ্‌! সর্দি হলে তখন আমার উপ্রেই দোষ বর্তাবে! যদিও আমি কড়া লিকার করে আদা চা করতে পারি। আমি আসছি এখন, ওক্কা? আপনি হাতের কাজগুলো সারুন। আর বাসায় সাবধানে ফিরিয়েন।

আমি যে ভাবলাম, আমার কাছেই আসছেন, তার কী হবে?

ওক্কা!

আচ্ছা, আসুন তবে।

বৃষ্টি তো নেই, পাড়ি জমাবো কীকরে?

মন আনা যায়।

মনেমনে কথা বলার সিস্টেমটা কিন্তু আমি পারি!

আমিও!

আচ্ছা, আমি প্রথমে অনেকগুলো ‘দুঃখিত’ জমা রাখতে চাই আপনার কাছে। আমি প্রচুর বকবক করি। এতে অনেক অন্যায় কথাও বলে ফেলি।

আমার ভাল লাগছে।

আর এজন্য যেটা আপনার খারাপ লাগবে, সেটা থেকে একটা করে ‘দুঃখিত’ নিয়ে নিবেন, ওক্কা?

হ্যাঁ।

এ মা, আমি তো আপনার সাথে এখনো বকবক শুরুই করিনি! একবার বকবক করলে বলবেন, আপনাকে ফলোয়ারেও রাখবো নাহ্‌! ওদিকে আপনার কানের পোকা হার্ট অ্যাট্যাক করবে!

আপনি কেন আমার নন?

আমি তো আমারই নই, তাই কারুরই হতে পারি না। আচ্ছা, আমি যদি আপনার সুন্দর নাক বরাবর একটা ঘুষি দিই, তখন? ধরুন, ঘুষি দেবার পর আপনার নাকে কচটেপ লাগিয়ে দেই? নাহ্‌, বেশি চিপকায় দিবো না, যাতে শ্বাসে সমস্যা না হয়।

এর আগে জড়িয়ে ধরবেন, আচ্ছা?

এত্ত আদর করে ঘুষি দেই না। বড়জোর সেবা দিবো ঘুষি দিয়া।

হুম।

গল্প শুনবেন?

হ্যাঁ।

এক রাজা, এক রাণী। ওদের দুই ছেলে। ওদের অনেক সুখ।………….দুই ছেলেই বিয়ে করলো, এরপর ওদের সুখ গুডবাই বলে চলে গেলো। গল্প শেষ।

ওহ্‌!

নিজের লেখা?

হিহি……….

খুব খুব খুব মজা পেলাম।

হাসুন তবে! তাহলে ভাববো সত্যিই ভাল লেগেছে। আমার একটা গল্পের কারণে হাসলে আমি সারাদিন আপনাকে গল্প শুনাতে রাজি।

হাহাহাহাহাহাহা

ধন্যবাদ দিয়ে হাসিটা থামাবো নাহ্‌! হাসলে সত্যই ভাল লাগে দেখতে।

আর কোথাও এসেছে গল্পটা?

আমি তো জানিনে!

নাকি আজকেই জন্মাল?

এর আগে একদিন জন্মেছিলো, আমার ছোট ভাই শুনবে বলে বায়না ধরেছিলো। এরপর ফাজলামো করে বলেছিলাম। আপনি গল্প লিখুন। আপনি ভাল গল্প বানান।

এখন লিখব না। একটু পরে।

আমি ফাজিল, তাই আমার মাথায় উল্টাপাল্টা বুদ্ধি ছাড়া ভাল বুদ্ধি একটিও পাবেননে! তবে অভদ্র নই কিন্তু! ওক্কা? কী হল, বলুনতো মশাই, বিদায় নিই ১ ঘণ্টা আগে, আর যাই ১ ঘণ্টা পরে! আসচি একখন! টাটা।

অপেক্ষায় থাকবো।

……………………………………….

এই!

হ্যাঁ! ও হ্যালো! আপনি নাই!

মিয়াঁও!

কোথাও কেউ নেই।

হাউ মাউ খাউ!

কারুর গন্ধ না পাউ!

পচা একটা!

সেইম টু ইউ! সর্দি হলে গন্ধ কীকরে পাবো?

ধরে একদম……..

আমি ছোট্ট পাখি! আমাকে মারবেন নাহ্‌!

আমার বাবুই পাখি হবেন?

যদি কখনো কাক হয়ে যাই!

আচ্ছা, হবেন না। ঠিক আছে।

বাঃরে! খালি নিজেরটাই বলছে! আমারটায়ও তো যুক্তি আচে, বাপু! বাসায় ফিরেছেন?

আমার অফিস ঘরের পাশেই শোবার ঘর।

রাতের খাবার হলো?

আপনি খাইয়ে দেন।

হাত ধুয়ে নিই, ওয়েট। হি হি হি………

আমি অন্নেক সুন্দর করে খাওয়ায়ে দিতে পারি।

সত্যি? আমিও পারি! এটা তো চাইলে পরখ কইত্তে পারবো নাহ্‌!

কখনো দেখা হলে, দেবো।

ওক্কা!

বাই দ্য রাস্তা, আমাকে খাওয়ায় দিবেন কেন? (আপনার কথার মতো বললে……)

দিব না? আচ্ছা, দিব না।

বারণ তো করিনি।

অতো জেরা ভাল লাগে না।

এ সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইনে, বাপু! ফলোয়ার হিসেবে রাখার অপরাধে কামড়ে দেয়ার সুযোগ পাবো আঙুলে।

ইসসসসসসস্‌!

পিলিজ লাগে, খাইয়ে দিয়েন!

হুহ্।

হো! নো ভক্করচক্কর!

নৈশভোজন হলো?

অনেক বৃষ্টি এখানে। বিদ্যুৎ নেই। ফোনটা বন্ধ হয়ে যাবে এখুনিই! ভাল থাকবেন। শুভ রাত্রি।

এই…….না! পাওয়ার ব্যাংক নাই???…………শুভ রাত্রি।

১০% আছে। চলুক।

না। কাজে লাগবে।

পাওয়ার ব্যাংকটা পাওয়া যাচ্ছে নাগো!

চার্জটা রেখে দিন।

এমনিই বন্ধ হয়ে যাবে!

ফোন আসতে পারে তো!

ততক্ষণ কাজে লাগাই। জরুরি ফোন আসবে নাহ্‌! আপনি বলেননি কিন্তু, রাতে খেয়েছেন কি না।

একটু কণ্ঠ শোনা যাবে? ভাত খাইনি।

বৃষ্টির শব্দে খুঁজে নিতে পারলে নিন। কেন খাননি?

অন্য কিছু খাই।

ওহ্‌!

সত্যিই অনেক কিছু খাই……..টাই। এই………….

হুঁ।

কিছু না।

মন খারাপ? কী হয়েছে?

আপনার ছবি সব নামিয়ে ডেস্কটপে রেখেছি।

কেন?

জানি না।

বুদ্ধু একটা!

হ্যাঁ তো! বুদ্ধুই আমি!

হ্যাঁ মশাই, আপনি একটা বুদ্ধু।

কেন?

তাতো জানিনে!

আপনিও বুদ্ধু তাহলে!

হুহ্‌! তবে বুদ্ধু নামটাতেই বেশ মানাচ্চে গো! হ্যাঁ, সে তো আগে থেকেই বুদ্ধু আমি!

না। আমি অন্য নামে ডাকবো। বাবুই পাখি?

ওক্কা!

আদর করে ডাকবো।

আমি একটা নাম দিবো আপনার?

হ্যাঁ। হিহি……..আমার উপর রাগ করলেও আমাকে ময়না ডাকা লাগবে!

তাইতো, ওটা দিলাম না।

আমি আপনাকে চড়ুই ডাকবো।

ওটা কাউকে ডাকতাম!

তাই………? সত্যিই? এটা তো চড়ুইভাতির অর্ধেক!

হ্যাঁ।

ও আচ্ছা।

হ্যাঁ। এই………..

হুঁ।

কতটা চার্জ আছে?

৬%।

ইসসস্‌! আমার ইচ্ছে করছে, পাওয়ার ব্যাংকটা দিয়ে আসি।

মন্দ হতো নাহ্‌! পাওয়ার ব্যাংকের চার্জটা নিয়ে এলেই হতো, পুরোটা বহন করতে হতো না।

হ্যাঁ। আমার নাম কী?

আমার কাছে চড়ুই।

আচ্ছা।

হুম। আমি কিন্তু চড়ুই নামেই ডাকবো, বলে দিলুম।

ঠিক আছে।

(বাবুই set your nickname to চড়ুই)

বাবুই চড়ুই! একটা সিরিজ পড়বেন? অনেক আগের লেখা।

হুঁ।

ওয়েট।

ওক্কা।

দিলাম। এই বাবু!

পড়ছিই তো! (কথায় -ই প্রত্যয় আছে কিন্তু!)

মোবাইলে চার্জ আছে?

৪%।

আদর করে বাবু ডাকছি।

নাম তো ওটাই! আইচ্চা!

মিয়াঁও।

কুয়ু কুয়ু কুয়ু……..কুয়ুউউউ! হি হি হি!

এই বেড়াল!

কীহ্‌ বাঁদরছানা!

এহহহহহ্‌!

হ্যাঁআআআআআআ!

ছবিতে কমেন্ট করলে যে শাশুড়ি মা-টা কে?

আমার মা। আমার মামাতো ভাই এটা। ও আমার মাকে শাশুড়ি মা বলে।

আচ্ছা।

পাকনা ওইটা! অ্যাই যাহ্‌! ২%! লেখাটা আরো বাকি!

কেন? আচ্ছা।

পড়া বাকি তো!

শুভ রাত্রি, বাবুইসোনা!

নাআআআআআআ………২% আছে তো!

মিয়াঁও!

পুরোটাই দিয়ে যেতে চাই যে! কুয়ুউ!

আজকে রাতেই পুরোটা? শেষ হয়ে যাবে নাতো আবার?

চার্জ? হিহিহিহি

হ্যাঁ।

বন্ধ হওয়া পর্যন্ত………

হ্যাঁ।

যদি কাল না পাই চড়ুইকে, তখন? এজন্যি!

আমাকে সবটুকু ঢেলে দিন! পাবেন না? কেন?

চড়ুই তো বড্ড অভিমানের পোঁটলা!

কেন? এটা মনে হল কেন?

তাতো জানিনে! শুনুন………তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়বেন কিন্তু!

ঘুম পাড়িয়ে না দিয়ে যে মানুষ চলে যায়, তার কী হবে!

হুহ্‌…….ওক্কা চড়ুই? আচ্ছা, চোখ বন্ধ করুন। বাবুই ওর ছোট্ট আঙুলে আপনার চুলে বিলি কেটে দিচ্ছে। উফফফফ্‌ ১% চার্জ!

ঠোঁটটা ভেজাই?

কান্না পাচ্ছে! চার্জ নেই! অ্যাই, চোখ খুলেচেন কেনো?

বন্ধ তো চোখ! চোখে চুমু খাও।

নো ভংচং! ঠুকরে দিবো!

নাহ্‌ আদর দিবা! শুভ রাত্রি, বাবুইসোনা! সকালে উঠে নক দিয়ো। অপেক্ষা করব।

………………………………………………….

শুভ দুপুর।

এইটুকুই স্রেফ?

কখন ঘুম ভেঙেছে?

এখন।

এত বেলায়! ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নাও।

আগে বলো, তুমি এরকম ক্যাটক্যাট করে কথা বলছ কেন? আমি কী করেছি?

ওলে পাখিটালে! আমি কই ক্যাটক্যাট করে বলছি?

না। সিরিয়াসলি বলো।

এমন একটা ঘুষি দিবো না! আপনিই না ছিলেন না! তাই আমি চুপ করে ছিলাম। এখন আছেন, তাই কথা বলছি।

তুমি অ্যাভয়েড করছ।

বকবক চুরুউ! অ্যাই শুনেন! আপনি তুমি বলেছেন!

হুঁ।

ইয়েএএএএএ!

আপনি ‘তুমি’ বলে আবার ‘আপনি’তে চলে এসেছেন।

উপস! আমি তুমি বলেছিলাম! ভুলে। দুঃখিত। আমি তুমি বলায় বলেছিলেন?

আমিও দুঃখিত।

আমি তো ভাবলাম কালকে বলতে অনুরোধ করেছি জন্য হয়তো বলেছেন। বললে কী হয়?

হ্যাঁ। খুশি হয়েছিলাম। অবশ্য আগেও বলেছি।

আমি কী বলবো, সে তো বলে দেননি! তাই আপনিতেই আছি। তারপরও উনার রাগ।…………….ও হ্যালো ও হ্যালো ও হ্যালো ও হ্যালো ও হ্যালো ও হ্যালো ও হ্যালো!!!!

বলেছি। কনভারসেশন চেক করেন!

হ্যাঁ, রাতে তো বলেছিলে। আমি যাবার পর। আচ্ছা, আমি বলবো তুমি করে।

আগেও বলেছি।

উঁহু।

আমি যাবার পর বলেছো।

হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ আগেও বলেছি!

না না না!

চুউউউউউউউপ!

হি হি হি………

কোথায় তুমি?

তোমার বুকের মধ্যিখানে!

লোমে চুমু খাওওওওওওওওওও!

উঁহু! রক্তকণিকায় খাবো, খেলে।

পছন্দ নয়? আচ্ছা।

ওক্কা।

কামড়ে ধরো, রক্ত বেরোবে। আঁচড়ে ধরো, রক্ত বেরোবে।

আমি তো মহিলা রাক্ষস! সব শুষে নেবার ক্ষমতা রাখি।

কয়জনের নিলে এখনো পর্যন্ত?

রক্তই তো পেলাম না মানুষের!

মিথ্যে কথা!

বলবো কেন মিথ্যে? তোমার কাছে আমার কোন স্বার্থ তো নেই! থাকলে হয়তো কিছুটা বলতাম।

কখনো কারো স্পর্শে আসোনি?

হাতে আর ঠোঁটে ছিলাম।

খুলে বলো। আরেকটা কথা জানিয়ে রাখি?

ও তার হাতের আঙুলের গ্যাপে আমার হাত রেখে আমায় রাস্তা পার করাতো। আর ঠোঁটে চুম্বন পেয়েছিলাম। প্রথম ভালোবাসায়।……..কী কথা জানিয়ে রাখতে চাও, বলো!

আমি কিন্তু কেবলই টাইম পাস করতে তোমার সাথে গল্প করি না। খুব ভাল লাগছে তোমাকে।

আচ্ছা। তা একটু বুঝেছি। কারণ তুমি চাইলে আমার সাথে সেখানেই কথা থামিয়ে দিতে পারতে।

চুম্বন হয়েছে। সঙ্গম হয়নি?

সঙ্গম করার আগেই আমরা অনেক দূরে ছিলাম। আর যখন সত্যিই চাইতাম, তখন আমরা আলাদা।

মানে, তোমার কখনো সেক্সের অভিজ্ঞতা হয়নি?

এখনো নয়। তবে এমনটা আশাও করিনি। কারণ আমি বিয়ে করবো নাহ্‌!

শোনো, এই যে কথা বলে যাচ্ছি, এটা ঠিক হচ্ছে কি না, জানি না।

আমার সোনাপাখিটা! আমার পুতুল খুউব পছন্দ। এটার সাথে কথা বলি আমি।

আমি কিনে দেবো।

চড়ুই, তুমি রইলেই হবে। আমার কিছু লাগবে নাহ্‌!

আমি থাকবো, থেকে যেতে হবে।

সত্যি বলছো?

হ্যাঁ, সত্যি বলছি। কালকের কবিতা পড়েছ?

হ্যাঁ। আমি কবিতাটা শেয়ার করে রেখেছি। ওটা আবৃত্তি করবো একদিন।

আচ্ছা, তোমার হাইট কত?

৫-৪।

আমার ৫-১১।

আচ্ছা।

বাহ্!

কী?

বাহ্ বললে তো তাই।

আমার হাইট পছন্দ।

আর বোলো না।

কী?

এটার জন্য বিড়ম্বনায় পড়ি।

কেন?

আমার বান্ধবীরা, যারা ছোট্ট, মানে সাইজে, তাদের সাথে দাঁড়ালে আমার লজ্জা করে।

আচ্ছা।

কখনো লজ্জা পেয়ে মুখ লুকানোর ওয়ে নেই।

হুঁ।

অ্যাই শুনো। খেয়েছ?

ব্রাঞ্চ করবো একেবারে।

সকালে খেতে হয় না বুঝি? কী হ‌ইসে?

খাবো।

হুহ্‌! বাসায় সবাই কেমন আছেন?

উঠলাম‌ই তো দেরিতে!

বের হবে আজ?

তুমি এসে খাইয়ে দাও।

হুহ্‌ নবাবজাদা অলস কোথাকার!

আদর দাও।