গোধূলি না ফুরোতেই/দুই

অনেকগুলা আদর।

মুখ হাঁ করো, আমি থালায় খাবার সাজিয়ে রেখেছি।

হুঁ।

হুহ্‌! অ্যাই ছেলে, ভাল করে তাকাও তো! চোখটা বড়োবড়ো করে।

তোমার মুখে খাবার নিয়ে আমার মুখে দাও।…………তাকালাম।

ইহহহহহহ্‌ বললেই খেতে পারবে বুঝি? হি হি হি! চোখের মণিটা বামে আর ডানে নড়াও তো!

হুঁ।

তুমি একটা গোলাপ ফুল। চোখের সামনেই থাকতে হবে বা ঘ্রাণ নিতেই হবে এমন না, তোমাকে ভাবলেও আনন্দ হয়।

তুমি একটা ম্যাওঁ।

তুমি আছো, এটাই যথেষ্ট। কুয়ুউউউ…………..

প্রেমে পড়ে গেলে দূরে ঠেলে দেবে নাতো?

তার আগে শিওর হবো ওটা প্রেম না ভালোবাসা………..

ভেবে বলো।

আমি প্রেম নিবো না, ভালোবাসা নিবো। ভালোবাসার বড্ড অভাব!

ভালোবাসা অনেক বড়ো কিছু।

চাইতে দোষের কী?

আমি মিথ্যে বলতে পারি না।

জানি সে আমি।

কখনো অমন কিছু অনুভব করলে নিজেই টের পাবে, মুখে বলতে পারব না।

তা জানি। হৃদয় যে কেবলি জানান দেয়!

হ্যাঁ, সোনা।

তবে সবারই কিছু না কিছু অদ্ভুতুড়ে কিছু থাকে। আমি তোমার অদ্ভুতুড়ে কিছু একটা হয়ে থাকতে চাই। রইতে দেবে গো? ও হ্যালো! চড়ুই! কই যাও না বলে? এখন তবে একাএকাই বকবক করি! আচ্ছা, ঝরেপড়া পাপড়িগুলোকে কুড়িয়ে নিয়ে কখনো পড়ার টেবিলে রেখেছিলে? বেলী ফুলের মালার চেয়েও কিন্তু বেলী গাছের তলায় পড়েথাকা ফুলগুলোকে বেশি সুন্দর লাগে আমার, জানো! আর কুয়াশায় ঢাকা চাদর ফেলেফেলে সেগুলিকে ছুঁইয়ে দিয়ে কুড়িয়ে নিতে বড্ড ভালো লাগে! আচ্ছা, তোমার ভ্রূযুগল কখনো কুঁচকাবে আমার কথা শুনে? অবশ্য, আমার কথা শুনলে তোমার ভ্রূ নয়, চোখই ডাকু সর্দারের মতো হয়ে যায়! কী থেকে যে কী বলি আমি! ছবিটা দেখো, এটা আমার পুচকি বিএফ! তোমার ওখানে কারেন্ট চলে গেছে, তাই না? গালে হাত দিয়ে বসা কিন্তু আমার স্বভাব। অপেক্ষা করলেও এমনি করেই অপেক্ষা করি। আসি এখন। টা টা।

ফোন ধরনি কেন? এই বাবু………কই?

ভাত খাই।

খাও। ফোন ধর নাই।

খাওয়ার সময় মেসেজ করতে হয় না। পাশে ছিলাম নাহ্‌। এখন দেখলাম।

ফোন দাও। তুমি হারায়ে যাবা, আমি জানি।

এই! কীইসসে?

তুমি হারায়ে গেসো।

কখন? উবুক! কী বলে এই বুদ্ধুটা!

কিসু না। কও। গল্প বলো।

হুহ্‌!

গল্প শুনবো।

ওক্কা!

এক ছিলো রাজা। আর এক ছিলো রাণী। ম্যাওঁ! ওহ দোনো মারগেয়া। গল্প শেষ। কুয়ুউ! কীস্সে?

কিসু না!

কী কর?

খেলাম।

এত মলিন লাগছে কেন তোমাকে?

কও।

ভাতঘুম দেবে নাকি আবার?

ভাত। জল। সালাদ। বিফ। ডিম। সবজি। খাই। তুমি ঘুমাবা?

সব ঘুম বাদ! আমি দিনে ঘুমাতে পারি না, মানে ঘুম পায় না। আমি চুপচাপ রইতে পারি না। তুমি না থাকলে নানীকে জ্বালাতাম এখন।

আদর দাওওওওওওওওও। আজ ছুটি।

ইহহহহহহহ্‌ আদর দিয়েদিয়ে আবার বাঁদর করে না তুলি!

কী?

হ্যাঁ।

আচ্ছা।

আমায় একটা কবিতা শুনাবে?

হুঁ।

শুনাও।

ও হ্যালো!

ম্যাওঁ…….মিয়াঁও!

এটা কবিতাআআআআআআআআ?? কই তুমি?

তোমার বুকে।

সেখানে তো পচনের গন্ধ! থাকতে কষ্ট হচ্ছে না?

মানে? বুঝিনি।

তুমি বললে না……তোমার বুকে?

আমার বুকে গন্ধ?

আহা, আমি সেটার উত্তরে বলেছি। বুকের দুই ইঞ্চি গভীরে হৃদয়পচনের গন্ধ।

মুড অফ হয়ে গেসে!

কেন?

বুকে আর কাজ নাই।

হিহিহি…………

আসো, আমরা সমাজ, সভ্যতা, সংস্কৃতি নিয়ে বাল ছিঁড়ি।

ছিঁড়ে আর কী হবে? তারচে’ এক কাজ করা যাক। সেগুলি বড় হোক আরো। তখন সেসব দিয়ে আমরা ঘুড়ি উড়াবো।

বাল পছন্দ? আমার কিন্তু পছন্দ!

নাহ্‌ পচা ছেলে!

ও!

ইসসস্‌ তোমার সাথে আমার মিলবে কেন? তবে আমার ঘাম পছন্দ। আমার ঘামের ঘ্রাণ ভাল লাগে। ঘাড়, বগল………উফফফ্‌!

হুম। দুই স্তনের মাঝখানে………..

আমি তো সেখানে কোনো ঘ্রাণ পাই না!

নাভির নিচে………তোমারটা তুমি পাবে না।

ওহ্‌!

উরুসন্ধিতে………আমি কি তোমার সাথে সামলে কথা বলবো? সরি!

আমার লজ্জা করছে!

আমার সাথে? আচ্ছা, সরি।

সরি বললে কেমনটা লাগে! আম খাবে?

থামিয়েছ তুমিই তো! হ্যাঁ, খাইয়ে দাও।

হাঁ করো তো! বড়ো করে হাঁ করবে কিন্তু!

ম্যাওঁ। তোমার ঠোঁট খাবোওওওওওওওও! ক‌ই???????????????????? এইইইইইইইইইইইইইই

হ্যাঁঅ্যাঅ্যাঅ্যাঅ্যাঅ্যা…………….ও হ্যালো! চড়ুই! কল এসেছিলো!

বুঝলাম।

কী বুঝলে?

মানুষের খালি কল আসে!

উঁহু!

মানুষ কেবল আমার কল ধরতে পারে না।

ও হ্যালো! আমি পাশে ছিলাম নাহ্‌।

হুহ্‌! কে ফোন দিসে?

কে দিসে?

হ্যাঁ।

কে? আচ্ছা, একটা কথা বলি?

কল আসছে বললা না?

বলো!

আমি তোমার কথা বলেছি, বাপ!

তোমার কল আসছিলো না?

নাহ্‌! তোমার কথা বলেছি। আসছে কি না সেটা।

আমি তো ভাত খাইসি। তুমি চলে গেলে একটু আগে।

ওরে বুদ্ধু! মাত্র তো তুমি গেলে! তখন কে কল দিসে?

তোমার কলের পর তো আর কোনো কল নেই।

ওহ্‌!

হ্যাঁ।

আমার কথা তুমি এমনেও বুঝবে নাহ্‌! মেসেজে বুঝা যায় শুধু। আমি আম খাচ্ছিলাম।

তোমার কথা বুঝব না কেন?

আমার কথা আমার বাড়ির লোক ছাড়া কম মানুষ বুঝে।

কেন?

আমি আস্তেধীরে কথা বলতে পারি না। এটার জন্য প্র্যাকটিস চলে। ধীরেসুস্থে কথা বলার। আচ্ছা?

আচ্ছা, আমি কি একটু বেশি জেরা করে ফেলছি?

কখন?

এখন।

এটা জিজ্ঞেস করায় দূর হতে দূরের মনে হচ্ছে তোমাকে। জেরা বলছ কেন? ও হ্যালো! কী যেন জিজ্ঞেস করার কথা বলেছিলে……….

তুমি করো!

আচ্ছা, তোমার কি পা ব্যথা করে না? না মানে কত মানুষের হৃদয়ে হাঁটাহাটি কর! অ্যাই চড়ুই, দুষ্টু চড়ুই!

কত মানুষের????

সে ঢের হবে!

নিজ থেকে ঢুকেছি?

নাহ্‌! তুমি কেন ঢুকবা, বুদ্ধু?

তোমারটায়?

সেতো আমার প্রার্থনাতেই!

সরাসরি বলো। ঘোরানো কথা বুঝি না।

ঘুরিয়ে বললাম কোথায়? এত্ত রেগে যাও কেন?

তোমার হৃদয়ে আছি, কি নেই?????????????????? একশোবার রাগবো!

নিঃসন্দেহে আছো! তুমি রেগে গেলে লাল মুরগির বাচ্চার মতো লাগে।

ভালোবাসায়? প্রেমে? নাকি হুদাই? আমার জানা প্রয়োজন।

আগেই বলেছি। প্রেম চাই না। কেবলই প্রেম থাকলে তাহলে তোমাকেও সেখানে রাখবো নাহ্‌। তুমি থাকলে ভালোবাসায় থাকবে।

ঘোরানো কথা বলবে না। তোমার কথার মানে ঠিক ঠাহর করতে পারছি না। সরাসরি উত্তর দাও।……….মানে, এখনো পর্যন্ত হুদাই। ধন্যবাদ!

ওটা তো তুমি বললে, চড়ুই, আমি বলিনি। তুমি তোমার বাক্যটি চাপিয়ে দিলে।

সেলফি দাও। তোমাকে দেখবো।

উঁহু।

দেখো নাহ্‌। অদ্ভুতুড়ে হয়েই রইবো। একটা ছবি দিই, ওয়েট।

দেবে না?

ইসসস্‌ যেটা দিতে চাই, ওটা যাচ্ছে নাহ্‌। বাদ দাও!

কী দিয়ে ভাত খাইসো?

হাত দিয়ে তুলে মুখ দিয়ে।

ও আচ্ছা।

জানো………..

কী?

কেমন আছো, জিজ্ঞেস করা হয়নি তোমায়। কেমন আছ?

যেমন রেখেছ।

তবে তো মন্দ আছো। আমি তো ভাল রাখতে অক্ষম।

তোমার অক্ষমতা কি কেবল আমার বেলাতেই?

নাহ্‌! বিকেল সময়টাতে কী করো?

চড়ুই, শুন না!

বলো।

আমার কোনো কাজের রুটিন থাকে না। ছোটবেলায় কোনো দুষ্টুমির জন্য অনেক বকুনি আর মার খেয়েছ?

কী করছ?

ফোন করা যাবে?

হ্যাঁ।

চড়ুই, নেট প্রবলেমের জন্য বোধহয় কেটে গেছে।

আমি তো ভাবলাম কেটে দিয়েছ কোনো কারণে।

না গো……..

অনেক নেট প্রবলেম থাকে আমাদের এলাকায়।

………………………………

অ্যাই! ঘুমাচ্ছো?

খেলা দেখি, বাবুই।

চা খাবে?

হুঁ।

বাবুউউউউউউউউউউউউউউ…………….

চড়ুইইইইইইইইইইইইইইইইইইই……………………

এখনো চা দাওনি।

দিয়েছিলাম তো। তুমি খেলা দেখায় মগ্ন ছিলে। ঠাণ্ডা হয়ে গেছে।

তুমি দাওনি।

উঁহু।

শুধু অফার করেছ।

তুমি তাকাওনি।

ম্যাওঁ।

কুয়ুউ। ও হ্যালো! নৈশভোজন হলো?

…………………………………………………….

এই বাবু!

জ্বি, চড়ুই!

কী কর?

এইতো কিছু না।

তুমি?

এইতো কিছু না!

খেয়েছ? কাল অফিস আছে না?

নেই। খেয়েছি।

হুম।

তুমি ডিনার করেছ?

হ্যাঁ।

ঢাকায় কখন ফিরবে?

কয়েকদিনের মধ্যেই।

বললে না কাল কি পরশু?……….এই!

টিকেট ম্যানেজ করতে একটু সমস্যা হচ্ছে গো! হ্যাঁ, বলো।

আচ্ছা। কী করছ?

তোমার সাথে কথা বলছি। তুমি কী করছো?

খেলা দেখা শেষ?

কত্ত আগে!

আমি শোবো।

আচ্ছা শোও। লক্ষী ছেলের মতো ঘুমিয়ে পড়ো। শুভ রাত্রি। চোখের পাতায় ঘুম টইটুম্বুর থাক!

…………………………

শুভ সকাল। আঁখি খোলো। সকালের নাস্তায় কী খাবে, বলো।

বাবু, শুভ সকাল।

কী করো?

ঘুম ভাঙল। ফ্রেশ হলাম। নাস্তা করছি। তুমি খেয়েছ?

হ্যাঁ।

ব্যস্ত?

নাহ্‌! তুমিই তো নেই। ভাবলাম, তুমি ব্যস্ত কি না!

তোমার মাথা! চা খাই।

খাও।

বাসায় সবাই কেমন আছে?

ভাল। তুমি রাগ করসো আমার সাথে?

এ……..মা! না না!

তুমি বদলে গেছ!

ও হ্যালো! কী করছো? স্নান হয়েছে? উফফ্‌ যা গরম পড়েছে!

স্নান করবো।

দেরি কোরো না। যাও, সেরে আসো।

কোথায় ছিলে? খেলাম। সকাল হতে খাইনি। মাত্র খেলাম।

তুমি করিয়ে দাও।

চলো, করিয়ে দিচ্ছি।

খাওনি কেন?

আমার মা একটা বদ মহিলা।

কেন?

রান্না করতে দেরি করেছে। আর যখন রান্না শেষ, তাও বলেনি।

সকালে নাস্তা করনি কেন?

বললাম তো!

নাস্তা করতে কি রান্না হতে হয়?

বাড়িতে খাবার ধরনটা অন্যরকম। সকালে চা নাস্তা করে আবার নাস্তা-ভাতের আয়োজন। এরপর দুপুরের। এরপর বিকেলের নাস্তা, তাও নাস্তা-ভাত আর চা। এরপর রাতের।

বুঝেছি।

মধ্যরাতে আবার!

আহা!

খাবারের মাছি আমরা!

বাবু, একটা সেলফি তুলে পাঠাও। তোমাকে দেখবো।

উঁহু। নো দেখাদেখি।

আচ্ছা।

মুখ দেখা বারণ।

এটা তো আগের।

সপ্তাহখানেক আগের।

এখন তুলো।

ওয়ে নাই আইজকা!

কেন?

আমার ফোনটা সার্ভিসিং-এ। পানিতে গোসল দেওয়াইছিলাম। এটায় ক্যামেরা নষ্ট।

ও আচ্ছা।

কী? যাও! স্নান সেরে আসো।

তুমি আমার কোনো কথা শুন? আমি কেন শুনবো?

উঁহু, একটাও শুনি না। হ্যাঁ, তুমি শুনবে। আমি শুনি না বলেই শুনবে।

না।

কাঁদবো?

না।

কাঁদবোই! কথা না শুনলে কাঁদবোই!

আগে তুমি শুনো।

উঁহু।

আমি তো তোমার একটি কথাও শুনবোনে! আমি তোমার অদ্ভুতুড়ে কেউ!

হবে না!

হব্বেএএএএএ!!

না।

ভক্করচক্কর? আমার সাথে?

আমার কথা না শুনলে ব্রেকাপ করে ফেলব।

আমি শূন্য থেকেই শুরু করবো নাহয়! তুমি তোমার দিক থেকে করো।

আচ্ছা, আসি।

পিলিজ লাগে!

বাই।

এই শুনো!

হুঁ।

সাবধানে যেও।

কোথায় যাবো সাবধানে?

ওয়াশরুমে। তুমি তো এখন স্নানে যাবে।

আচ্ছা।

ধন্যবাদ। তুমিও ভাল থেকো।

আর আসবে না বুঝি?

জানি না। তুমি কোনো কথা শুন না। তোমাকে নিয়ে ভুল ভাবছি।

বেশ, তবে তাই হোক!

আচ্ছা।

জোর করে তো আর কিছু হয় না। যা ছুঁই, তা-ই কষ্ট হয়ে যায়!

এসব ফাঁকিবাজি কথাবার্তা।

বেশ।

আমাকে অ্যাভয়েড করছ!!!!!!!!!!!!!!!

নাহ্‌! অভিমান হচ্ছে।

বুঝতে পারছি।

কী বুঝতে পারছো?

কচু। আলু। পটল। বেগুন। ঝিঙ্গা।

সব দিয়ে সবজি হয়।

তুমি একটা আলু।

গোলআলু!

দ্যাখো! হুহ্!

তুমি দ্যাখো………..আমার ভালোবাসা!

কোথায় তুমি?

নেট স্লো! আছি।

…………………………………………..

এই বাবুটা কি আমার?????

ছবির এ পাগলীটা তো নিজেরই নাহ্‌! তোমার কী করে হবে?

আচ্ছা। শুভ সন্ধ্যা, নিষ্ঠুর বাবুই পাখি!

শুভ সন্ধ্যা, কেয়ারলেস চড়ুই!

ওহ্‌!

কী কর?

ঘুম ভাঙল। গোসল করব। নুডলস খাবো। তুমি কী কর?

গোসল দিলাম। কারেন্ট নেই। বাইরে বসে আছি। চা খাবো।

……………………………..

শুভ সকাল। কেমন আছো? আজ তো অফিস ছিলো, তাই না? সকালে খেয়েছ? বাসার সবাই কেমন আছে? নাকি এখনো ঝিমুচ্ছ রাণীক্ষেতে আক্রান্ত মুরগির মতো?

আমি অফিসে তো! খাইনি কিছু।

লক্ষী ছেলে!

তুমি কী করছ?

হতচ্ছাড়াটা! খাওনি কেন?

খেয়েছ?

নাহ্‌, খাবো। একটু বাদে। পড়ছিলাম তো। আরো কয়েকটা প্রশ্ন দেখি। ইসসস্‌ যদি ক্লাসের পড়া পড়তে না হতো!

কী প্রশ্ন? কী পড়?

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস। আমার সাল মনে থাকে না।

আমারও।

চিমটি! চড়ুই, একটা কথা বলি?…………..টিংটং! নক! নক! ও হ্যালো! এই যে……..শুনছো?

হুঁ, বলো, বাবুই পাখি!

ভুলে গেছি।

আচ্ছা, ভুলে আছো!

ভুল হয়েছে হয়তো!

কীরকম?

ভুলে যাওয়াটা।

এমন করে কথা বলছ যে?

তুমি বলছো যে?

আমি কী বলেছি?? লাঞ্চ করেছ? কী করছ?

করেছি। তুমি খেয়েছ? কার্টুন দেখছি। তুমি কী করছো?……….তবে আমি কী বলেছি?

আমি অফিসের কাজে বাইরে।

কী কার্টুন দেখছ, বাবু?

গোপালভাঁড়। ওদিকটায় কি বৃষ্টি হচ্ছে?

হচ্ছে না।

বৃষ্টি হলে ভিজো না। ফেরার পথে হলে ভিজো। ভেজার মানে, আমি বৃষ্টিকে স্রেফ ছুঁতে বলেছি।

ঠোঁটে?

কপোলে। আর যে চুলগুলো গোসলের পর কপালে পরে সেগুলোতে। আর তোমার প্রিয় কবিতাটায়।

……………………………………………..

এই! কই? বাসায় ফিরেছো? খেয়েছ? খেলা দেখছিলে?

আমি কাজ করছিলাম একটু আগ পর্যন্ত। এখন ফ্রি আছি। ভাবছি, লিখবো। তুমি কী করছ?

তোমার সাথে কথা বলছি। আর ব্যাগ গুছাই।

কেন ব্যাগ গুছাও?

বাঃরে! ঢাকায় ফিরতে হবে না?

আচ্ছা। কবে ফিরছ?

টিকেটই তো পেতে দেরি হচ্ছে!

হুম।

তবে পরশুর মধ্যে পেয়ে যাবো আশা রাখছি।

আচ্ছা।

এই শুনছো……..

হুঁ।

খেয়ে নিয়ে লিখতে বসো।

খাইয়ে দাও, কোলে উঠো।

ওরেএএএ বুড়ো খোকা! চড়ুই! শুনছো? শুনতে এতো দেরি করো কেন?

হ্যাঁ।

এরপর আর বলতে মন চায় না।

আমাকে কেউ আদর করে না কেন????????

……………………………………………….

একটা খুব টাচি গল্প পড়লাম!

কার গল্প?

ছোট্ট, বাট অসম্ভব সুন্দর। পড়বে?

হুঁ।

হাহাহাহা………..

ওই হাসিটা আমায় রোজ দেবে? তোমার………

দেবো। এই, ঠোঁটে একটা কামড় দেবে?

আমি কি মশা নাকি?

সরি। লাগবে না।

অ্যাই শোনো……….

হ্যাঁ।

হ্যাঁ না, আচ্ছা বলবা। ওটাই শুনতে ভাল লাগে।

আছো?

……………………………………………..

শুভ সকাল। সকালে খেয়েছ? অফিসে? বাসায় সবাই কেমন আছেন?

আমাকে না বলে ঘুমিয়েছ। এমন কেন করো?

শুনার জন্য তো ছিলে না। তুমি কেবলি আমার জন্য বরাদ্দ নও তো!

ভুল ভাবো কেন?

ভাবাও যে……..সে যাকগে! কী কর?

তুমি আমাকে বোঝোই তো না!

সবটা বুঝতে সময় লাগবে………সে সময়টুকু যদি দাও, তবে বুঝবো। নিঃসন্দেহে! অ্যাই দ্যাখো, তুমিও যখন আসি…………যাই কর, আমার মনটায় টং করে নেড়ে ওঠে। বুঝেছো, চড়ুই?

তোমার প্রেম আর ভালোবাসার দেয়াল ভেবে তোমাকে উৎসর্গ করে একটা কবিতা লিখেছি। এইমাত্র। দেখবেন, ম্যাডাম??

জ্বি, দেখবো।

এই নাও………….

বিরক্তিকর ভালোবাসা দিয়ো না, বরং……

ভালোবাসায় বিরক্ত কোরো—সেও ভাল।

ভালো নাহ্‌য় না-ইবা বেসো, তবু ছল কোরো না,

ওদের যতোই প্রাসাদ থাকুক, আমি নাহ্‌য় ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে রিক্ত রবো।

ভালোবাসার নামে স্পর্শ যা, তা চাই না, তারচে’ বরং স্পর্শকাতর ভালোবাসাটাই দারুণ লাগে।

মাতাল যে প্রেমটা আসে, তাকে আমি দূরে রেখে দিই ভালোবাসায় মাতাল হতেই।

ভালোবাসতে চাই বারংবার‌ই,

প্রেমে পড়তে চাই মুহূর্তের আবর্তনে,

তোমার মাঝে হারাতে চাই নিখোঁজ হয়ে,

এক পুরুষের ভিন্ন প্রেমের স্বাদ পেতে চাই ভিন্ন মনে।

আমি চাইছি না—

কেবল আমায় ঘিরেই বেঁচে থাকো,

সব কিছু ছেড়েছুঁড়ে আমার নিয়েই ব্যস্ত থাকো,

কাতর প্রেমে থামিয়ে জীবন ভালোবাসি বলে চেঁচিয়ে বাঁচো,

অতল প্রেমে ডুবিয়ে আমায় সব ভুলে আজ আমাতে মাতো।

চাইছি কেবল—

একটু হলেও ভালোবাসায় ঠাঁইটা পেতে,

ভালোবাসায় একটু ভেসে আমায় বলো, অতো রাগ কেন, প্রিয়া?

মনখারাপের মেঘটুকু কেন বৃষ্টি নামায় অকারণেই?

যে রাতে আমি কষ্টে কাঁদি, রাত ফুরোলেই কণ্ঠ তোমার আমায় বলুক, ঘুমাওনি আজ? খুব কেঁদেছো?

নৈঃশব্দ্যের তর্জনীতে শব্দ ধরে ঠিক যতটা,

ভালোবাসার তপ্তশ্বাসে অভিমান ওই ততটা!

(এই কবিতার নাম কী দেয়া যায়?)

চাওয়ার মাঝে কি ক্ষণিক পাওয়া ছিলো নাহ্‌? নাম দাও……..উৎসর্গে বাবুই, অন্তে চড়ুই

তোমার জন্য লেখা। তোমার পছন্দ হয়নি?

অনেক গভীর কিছুর প্রকাশ আমি ঠিকঠাক করতে পারি না। আমার এতোটাই ভাল লেগেছে যে এটা প্রকাশ করার জন্য আমার অনেকটা সময় আর জায়গা লাগবে। তবুও সংশয়……….আমার জন্য কেউ কেন লিখবে? আমি এটা তো মানে কল্পনারও বাইরে! তাও আবার তুমি লিখেছো!! এর বহিঃপ্রকাশ কীকরে করতে হয়, বলোতো?

তোমাকে খুব অনুভব করতে ইচ্ছে করে।

তা-ই বুঝি!!

হ্যাঁ।

আকাশের ঠিকানায় আবদার। চিরকুট। একটু ছুঁয়ে দেবে? জাহাজ নয়, নৌকো চাই। দুপুরপ্রেম। মেঘ হবে? এইগুলি থেকে একটা দিয়ে দাও কবিতার নাম। যদিও আমি এসব কিছু পারি না।

সুন্দরসুন্দর নাম দিয়েছ তো!

তোমাকে পবিত্র পাপ করে রাখতে ইচ্ছে করে আমার!

রাখো, আমার আপত্তি নেই।

আমার অজানা একটা সংশয় থাকে, এই বুঝি আপত্তি করবে! সংশয়ে ভালোবাসা মরে। মনে হয়, আবার এই বুঝি দরজায় ছিটকিনি দেবে! আর এ ভয়ে এতোটাও পবিত্র পাপ করতেও মূর্ছাপ্রায়! অ্যাই দুপুর হয়ে এলো। কখন খাবে?

আজ আমার স্টাফের জন্মদিন। ওর জন্য কেক কাটবো। তুমি খেয়েছ?

আচ্ছা তোমার জন্মদিন কবে গো? মাত্র খেলাম।

১১ নভেম্বর। তোমার?

২ ডিসেম্বর।

আচ্ছা।

তোমার জন্মদিনে কী কর? রোজ যেমনটি, তেমনটিই। তুমি কী কর?

একই।

তোমার সামনের জন্মদিনটা আমায় দিয়ো।

দিলাম।

তবে মজার ব্যপার হলো……

কী?

আজকালকার জন্মদিনগুলো কেবল ফেসবুকের নোটিফিকেশনে সীমাবদ্ধ।

হ্যাঁ, ঠিক।

হুম।

বন্ধুটির জন্মদিনে কী কী করা হচ্ছে?

বন্ধু নয়, আমার স্টাফ।

আচ্ছা।

কেক। মোমবাতি। ফুল। মিষ্টি। খাবার। উপহার। ব্যস্‌!

ও আচ্ছা।

আমি আমার স্টাফদের আনন্দে রাখার চেষ্টা করি।

ওই যে বলেছিলাম………তুমি একটা গোলাপ।

……………………….

ভাত খাই। কী করছ? এই!

হুঁ। চা খেয়েছ? ও হ্যালো………..

কই তুমি?

আমি তোমার বিস্মৃতিতে।

কী করছ?

হেল্পারি। এই চোখেমুখে এত ক্লান্তি কেন আজ? এত ক্লান্ত লাগছে কেন তোমাকে?

তুমি চুমু খাওনি বলে।

চুমু খেলে যে সব কাজে মনোযোগ দিতে পারতে নাহ্‌!

দেবে না, তা-ই বলো।

আচ্ছা। গান শুনি। সৌরেন্দ্র-সৌম্যজিতের……….মধুর তোমার। চিরসখা হে।

ভর সন্ধ্যায় গান শুনতে হয় না। অ্যাই শুনো! কখন ফিরবা?

তোমার বুকে?

আমার চিলেকোঠায়।

যখন ডাকবে।

আমার তো বেরুতেই দিতে মন চায় না!

তবে কেন দূরেই রাখো?

কাছেতে রইবে না যে!

থাকতে চাইছি তো! সত্যি!

পুরুষ তো অশ্বমেধের ঘোড়া, রাখতে চাইতে নেই! বরং তোমার ছায়ায় রই?

রাখবে না, সেটা বলো। সাহস রেখো। আমার সাহস ভাল লাগে। Monsoon Diaries| A Tagore Medley। শুনেছ?

না বললাম কখন?………….অ্যাই শুনো! খালি পায়ে হাঁটবে?

হুঁ। হাত ধরে?

আমার একটা অভ্যেস আছে, জানো?

কী?

কনিষ্ঠা আঙুল ধরে হাঁটা, যেমনটি মায়ের ধরি।

হেঁটো।

ঠিক তো?

হ্যাঁ। কবে দেখা হবে?

যেদিন দেখা হবে না বলে তুমি ভেবে নেবে, সেদিন।

এসব ফাঁকিবাজি কথাবার্তা!

তোমার মনে হতেই পারে।

সরাসরি বলো।

প্রিয় রঙ? দেরি কোরো না।

আমার অস্থির লাগে। সাদা। তোমাকে কী জিজ্ঞেস করেছি?

সমুদ্র না পাহাড়?

পাহাড়।

রবীন্দ্রনাথ, নাকি নজরুল?

দুইই; সেক্স নাকি লেখা—–দুইই………ওটাও তেমনই।

দিন নাকি রাত?

রাত।

রিক্সা নাকি নৌকা?

রিক্সা।

রোম্যান্টিক গল্প নাকি থ্রিলার গল্প?

রোম্যান্টিক।

বাসায় কখন ফিরবে?

আমার বাসা আর অফিস রুম পাশাপাশি।

বেরুবে?

লিখছি যে!

লিখো তবে। পরে কথা হবে।

রাতে কেন ফোন কর না?

ভাবি, লিখো বা ঘুমাও।

তোমাকে পেতে ইচ্ছে করে, তুমি আসো না।

আমি তো তোমার স্বপ্ন নই!

ভুল ভাবছ।

আমি কেবলই কল্পনা। তুমি মানতে পারছো নাহ্‌!

না, এতটা সময় ধরে ভ্রান্তি ঘুরে না।

কল্পনার সময় তো আরো দীর্ঘ।

কথা ঘুরিয়ো না।

এমন করে নিচ্ছো কেন গো, চড়ুই?

অস্থির লাগে তোমাকে ভাবলে।

এতটা ভালোবাসা তো নয়……..

তবে?

তার নাম তো জানিনে! তোমার কী মনে হয়……?

জানি না। ভালোবাসি!

বাসো না। বাসলে এটার উত্তর ‘জানি না’ হতো না। ভাবার সময় নিতে নাহ্‌! অ্যাই শুনো! তোমার কোন কাজগুলো ভুলে যাও, বলোতো?

তুমি যা মনে করিয়ে দাও না!

চশমাটা শাড়ির আঁচল দিয়ে মুছে দিবো। চা-টা না খাওয়ার জন্য চেঁচামেচি করবো। সারারাত বইয়ে মুখ গুঁজে রইলে লাইটটা বন্ধ করে দিয়ে ঘুমোতে বলবো।………..যদি সে দিনগুলো চাই, তখন?……….ওহ্‌, যা বলছিলাম………….বারান্দা, নাকি ছাদ? মেঘলা সকাল, নাকি রোদেলা বিকেল? শীত, নাকি বসন্ত? বক, নাকি মাছরাঙা?…………….আচ্ছা, আসি। শুভ রাত্রি।

থাকো। কবিতাশেষে নক দিই। প্লিজ! পাঁচটা কবিতা দিলাম। পড়ে, কেমন লাগলো, বলবে?

তুমি লিখেছো আর সেটা ভাল না লেগে পারে! অসম্ভব ভাল লেগেছে!

কী করছ? কোথায় তুমি??? না বলে ঘুমিয়েছ?

………………………………………………………..

শুভ সকাল! আচ্ছা, প্রথম রোদ্দুর তোমার মুখে এসে পড়লে তোমায় তখন কেমন দেখায়? কেমন রাঙা হয়ে ওঠো?

দেখলেই বুঝবে! শুভ সকাল।

হ্যাঁ, দেখলেই বুঝবো। আর আমি না বলে যাইনি, তুমিই থাকো না আমি যাবার বেলায়।………..সিন করতেও তোমার আলসেমি।

এই বোকা বাবুই! অফিসে তো! কোথায় তুমি? কী করছ? তোমার জন্য কিছু লিখতে ইচ্ছে করছে।