ঘরলক্ষ্মী নয়, কাব্যলক্ষ্মী

আমি যে তোমার কেবলই কাব্যলক্ষ্মী; ঘরলক্ষ্মী, সে তো নই-ই!
তাই তোমার কবিতায় আমার একান্তই নিজস্ব অধিকারে অবারিত প্রবেশাধিকার থাকলেও,
তোমার মনের ঘরে আমার প্রবেশ শুধুই এক অনধিকার-অনুপ্রবেশ মাত্র!


ধরো, যদি হঠাৎ কোনও বর্ষণমুখর সন্ধেতে, বরষার ঘনঘটায়,
পরিচয়টা হয়েই গেল কোনও অসম্ভবের সংগতে!


সেই সন্ধেয়, সেই মুহূর্তে যদি পরিচয়হীনতার দাবি নিয়ে
সামনে এসে পথ রুদ্ধ করি,
তবে কি আমায় মনের ঘরের কোনাটায় লেপটে থাকতে বলবে বিরক্ত করছি বলে?
না কি তোমার কবিতায় সদাপ্রবেশের ঠিক দ্বারেই...
প্রতিবন্ধকতা তুলে দিয়ে, আমার সমস্ত গতি রোধ করে পায়ে শেকল পরিয়ে দেবে?


কখনও যদি হারাবে বলে পথে বেরিয়ে পড়ো হাঁটুজলেই,
তবে জলের সে পথে একটি মাত্র জলচর সঙ্গী হিসেবে
সাথে নিতে আপত্তিকর হয়ে উঠবে কে বেশি---
কাব্যলক্ষ্মী, না কি ঘরের লক্ষ্মী?


গাঢ় কালো অথবা খয়েরি রংয়ের কালচে হয়ে ওঠা
এক বিষণ্ণ সুন্দর বিকেল দেখেছ কি কখনও?
কোনটাকে বেশি আপন বলে মনে হয়েছে?
সেই বিষণ্ণ সুন্দর বিকেলটাকে?
না কি বিকেলের কালচে হয়ে ওঠা গাঢ় খয়েরি রংটাকে?


প্রতি মুহূর্তে তোমার জন্যে এই যে প্রতীক্ষা,
একে কোন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছ?
কাব্যের লক্ষ্মীর শিখরস্পর্শী স্পর্ধা হিসেবে?
না কি ঘরের লক্ষ্মীর অমোঘ নিয়তি হিসেবে?


হাজার বছর একসাথে পথ চলবে ভেবে
যে বিশেষ সন্ধিক্ষণে আমায় পেতে চেয়েছিলে নিজের করে,
বাঁধতে চেয়েছিলে শত জন্মের মতো আরাধ্য প্রেয়সীটি রূপে,
সে সন্ধিক্ষণ-প্রভায়, সেখানে কোথাও কি আমি ছিলাম আদৌ?
না কি ছিল শুধুই ‘আমি’ নামক তোমারই সৃষ্ট কোনও এক কাব্যলক্ষ্মী!


তাই বুঝি ঘরলক্ষ্মী হয়ে একান্ত শুধু তোমারই হয়ে ওঠার মতো
বিন্দুসমও স্পৃহা আমার আর হলো না গো?
এভাবেই বুঝি আজ হয়েছি আমি তোমার কাব্যলক্ষ্মী?
বুঝেছি, আমি শুধুই কাব্যের লক্ষ্মী গো,...ঘরের লক্ষ্মী---সে আমি নই কিছুতেই!