তবু ফিরে এসো

  
 তোমার হৃদয় কে নিয়েছে?
 বলে দাও ওকে, ও তোমার যোগ্য কিছুতেই নয়!
 কে তোমায় নিয়েছে জড়িয়ে নির্ভরতায়?
 বলে দাও ওকে, ও তোমার যোগ্য কিছুতেই নয়!
 আমায় রাখো ধরে, তোমার যত ব্যথা, হাত পেতে নেবো, দিচ্ছি কথা।
 শুধু তুমি থাকলে পাশে কোনও ব্যথাই আমি পরোয়া করি না।
  
 হৃদয় তোমার ভাঙছে কেন? এমন হওয়ার তো কথা ছিল না!
 হৃদয় ভাঙলে কষ্ট কত---বুঝেছ তো, প্রিয়?
 কেন এ পৃথিবী ঘুরছে মাতাল তোমায় ফেলে?
 তোমায় কখনও কেউ বোঝে না, তোমার তুমি’টা যেমন আছে, তেমন করে যে কেউ চায় না...
 বলছি শোনো, হও মুক্ত, দারুণ বাঁচো! নিজের জীবন বাঁচাও নিজেই!
 তোমায় দেখি, কত কী যে বলতে ইচ্ছে করে, তবু এ মুখে কোনও কথা সরে না!
  
 কেন ওগো তুমি সূর্যের মতো একা?
 হৃদয় তোমার কে ভেঙেছে অমন করে?
 কেন প্রতারকই শুধু ভালোবাসা পায়?
 পুরো এ পৃথিবী তোমার হবে, যদি তুমি চাও!
 শুধু ভুলের মাশুলে ভুল কোরো না, তাতেই হবে।
 তোমায় কে বুঝেছে? কখন? কবে?
 কেন হৃদয় তোমার নাচে কেবলই গুনে গুনে?
 জেনে রেখো প্রিয়, তোমাকে পাওয়ার যোগ্যতাই নেই ওদের কারও!
 ভুলে যাও, প্রিয়, ক্ষমা করে বাঁচো!
 নিজেকে এতটা প্রশ্নে রেখো না, উত্তরে বাঁচো!
  
 একদিন আমি বুড়ো হয়ে যাব।
 পুরনো সময়ে ফিরে যেতে যেতে বুঝব সেদিন...
 এই আজকের আগামীকালটা হয়ে যেত যদি অন্য রকম,
 আজকের এই আমরাও যদি আরও একটু নিতাম বেঁচে,
 যদি আরও কিছু গানে আর কিছু সুরে নিতাম বেঁধে জীবনটাকে...
 প্রতিটি অশ্রুই রোমন্থনের অশ্রু হতো, দমের ভারটা বয়ে আফসোসটুক কাঁদত না আর!
  
 সত্যিই যদি পুরনো সময় ফিরে পাওয়া যেত,
 কী চাইতাম তবে? বদলে কী দিতাম নিজের মতন? বলে ফেলতাম কী, বলিনিকো যা ভুলেও কখনও?
 আজকে এসে...আমি কি তবে ক্লান্ত হতাম এমন করে? আমার প্রশ্ন যত, ভাবাত কি আমায় এমন করেই?
 গতকাল যে আগামী আমায় ভাবিয়েছে খুব, আরেক আগামী আজকেই কেন ভাবায় আবার?
 তবে কি...আগামী নিয়ে ভাবাই জীবন?
 যে প্রেম কাঁদাল কালকে তোমায়, কে সে প্রেমেই আজকেও কাঁদো?
  
 আমরা দুজন একসাথে বেঁচে বুড়ো হয়ে যাব...
 সেদিন দুজন ভাবব হেসে, জীবনের পথ কোথায় চলে? কোন সে বাঁকে?
 সুখেই বাঁচার কথা ছিল, তবু সেধেই কেন কষ্ট নিলাম! কীসের মোহে?
 সেদিন নাহয় ভিজিয়ে দিয়ো তোমার ঘ্রাণে! সব বদলায়...শুধু ঘ্রাণ থেকে যায়!
 সেদিন যদি না-ও থাকি, তবু এক-এক করে সব উত্তরের প্রশ্ন করো...দাঁড়িয়ে আমার সমাধিপাশে।
  
 চোখ দুটো আর দেখে না কিছুই, দৃষ্টিটাও বোধ হয় গেছে!
 এ হৃদয়ে ভাসে ঘ্রাণটা কীসের, বুঝি না কিছুতেই!
 আমি তোমার চোখেতে পৃথিবী দেখে স্বপ্নে বেঁচে অন্ধ হয়েছি,
 তোমার আলো যে অগ্নিকুণ্ড, বুঝিনি কখনও পোড়ার আগে!
 এখন আমি চোখ মেললে সবই দেখি...শুধু তোমায় দেখি না, তাই এ দুটি চোখ বুজেই রাখি!
  
 ওই দুচোখের বড়াই কোরো না,
 এক আমি বাদে কে দিয়েছে দাম তোমার চোখের?
 কিছু মানুষের প্রেম থাকে না, তবুও দেখে,
 কিছু মানুষের প্রেম থাকে, তাই দেখতে পায় না।
 সবাই তো আর খোঁজে না আলো, এমনও তো আছে, আলো এলেই আঁধারে বাঁচে!
 এ চোখে কেবলই শূন্যতা নামে। দেখো না বুঝি?
  
 আমার যত পথ, তুষারে ঢাকা।
 আমি জানালা খুললে সূর্য দেখি না, এ ঘরেতে আর রোদ ঢোকে না।
 গ্রিলটাতে আর জমে না শিশির, শুধুই অশ্রু জমে।
 গ্রীষ্ম আসে, কাটে না তবুও শূন্যতাটুকু,
 অতীতের স্মৃতি শুধু ফিরে আসে, বারে বারে শুধু ফিরে ফিরে আসে...
 রাস্তায় দেখি কত লোক হাঁটে---ছেলেবুড়োরা রং খেলে যায়,
 জীবন হাঁকে, জীবন ছোটে, শুধু আমি বসে রই আর দেখে যাই।
 পুরনো সে পথে, ফেলেআসা দিনে কত স্বপ্ন, কল্পনা কত...
 মনে পড়ে, প্রিয়?
 জীবন যদি এমনিই ফুরোয়, লাভ কী, বলো?
  
 তুমি ফিরে এসো প্রার্থনা হয়ে,
 তুমি ফিরে এসো নিঃশব্দের ঘোমটা সরিয়ে।
 ভুল জানি প্রিয়, মানুষই তো করে, করেছ তুমিও।
 যদি তুমি আসো, তোমার ভুলের পাহাড়ও হেসে দেবো পাড়ি দুজন মিলে।
 তোমায় পেলে হাসিমুখে আজ মৃত্যু সরিয়ে বাঁচতে ঠিকই শিখে নেবো, প্রিয়!
 আর যা-ই কর, শুধু ‘বিদায়’ বোলো না।