তোমায় না পেলে

তোমায় না পেলে কখনও এমন করে ভালোবাসিটা বলা হতো না।
তোমায় না পেলে এই নীল আকাশটাকে এতটা আপন মনেই হতো না।
তোমায় না পেলে কখনও আয়ুরেখা ধরে আমার তাসের খেলায় তোমার ঘরটিকে চেনা হতো না।
তোমায় না পেলে এই অবেলায় সাগরপারে ঝিনুক কখনও কুড়োনো হতো না।
তোমায় না পেলে কাঁটার দখল ভুলে গোলাপের রং আর পাপড়ির ঘ্রাণ ঠিক কখনও বোঝা হতো না।
তোমায় না পেলে এই দুচোখের অসীম সুখে প্রেমকে কখনও খোঁজা হতো না।
তোমায় না পেলে কোনও বলিষ্ঠ বুকে মাথা গুঁজবার ঠাঁই হতো না।
তোমায় না পেলে এই রাতকে এতটা স্তব্ধ নিবিড় মনে হতো না।
তোমায় না পেলে প্রতি জ্যোৎস্নায় সংকোচহীনতায় কারও কাঁধে মাথা রাখবার সাধ হতো না।
তোমায় না পেলে এই খসেপড়া চুনের আবেগদেয়ালে ফাগুনের রং মাখানোর ইচ্ছে হতো না।
তোমায় না পেলে এই নরম গালের আবদারে ঘুম-জড়ানো ওই জোড়া চোখ ছুঁয়ে দেখবার এক দুরারোগ্য অসুখে শরীর অসাড় হতো না।
তোমায় না পেলে এই চৈত্রে ওই দুচোখে সর্বনাশটুকু দেখা হতো না।
তোমায় না পেলে জানালার কুয়াশাবাষ্প-লেপটানো কাচ বেয়ে আবেগের চুপিচুপি কড়া নাড়ার শব্দ হতো না।
তোমায় না পেলে এই দুপুরে কিংবা মধ্যরাতে রাস্তার পিচে কিংবা আগুনে-পোকায় কবিতার খোঁজ জানা হতো না।
তোমায় না পেলে রক্তজবার রক্তাক্ত পাপড়িটাকে কখনও নিজের করে পাওয়া হতো না।
তোমায় না পেলে পলাশ-শিমুল আর কৃষ্ণচূড়ার আয়োজন এত রোমহর্ষক সত্যিই হতো না।
তোমায় না পেলে রাতের আঁধারে কোজাগরীর জন্মবৃত্তান্তটা কখনও লেখা হতো না।
তোমায় না পেলে এই দুঃখবিলাস খুব যত্ন করে আগলে কখনও রাখা হতো না।
তোমায় না পেলে পুনর্জন্মের পুণ্যফলের হিসেব নিকেশ ভুলেও কখনও করা হতো না।
তোমায় না পেলে এই বুকের ভেতর ভালোবাসার কাটাছেঁড়ার উৎসব জমে ক্ষীর হতো না।
তোমায় না পেলে ঠুনকো এই অস্তিত্বকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে শেখা কখনও হতো না।
তোমায় না পেলে এই শরীর জুড়ে অবসাদটাকে খুব আদরে জাপটে কখনও ধরাই হতো না।
তোমায় না পেলে বোবা বালিকাবধূর নিশ্চুপ চোখে শব্দের বসত কখনও খোঁজা হতো না।
তোমায় না পেলে এই হাজার বছরের হাজার ব্যস্ততায় লেপটে-থাকা অস্থিরতার হিসেবটুকু রাখা হতো না।
তোমায় না পেলে বেঁচে-থাকার বিশ্বস্ত গল্পে কখনও পুনর্দখল পাওয়াই হতো না।
তোমায় না পেলে এই তোমায় পাওয়ার নেশায় এমন মত্ত হয়ে ওঠা হতো না।