পঙ্‌ক্তিবদ্ধ স্বগতোক্তি

 দোহাই তোমার! চলে যেয়ো না।
না হোক দেখা, না হোক কথা,
আর পাশেবসা একটু দূরে,
আঙুলছোঁয়ার সব অজুহাত লুকিয়ে থাকুক,
না হোক কিছুই এই এতটুক--আগের মতো!
শুধু তুমি থাকো, কাছে থেকে যাও,
অনন্ত সময় ঘিরবে যখন...
শহর-উঠোনে নিভৃত কোণে নিজের খেয়ালে
মিশে গেছো তুমি গোপন দেয়ালে!
এই রয়ে যাওয়া মনের ভেতর, কী অনুভব, কেউ কখনো জানবে নাকো আমার মতো!
এই শহরের হাওয়া-রাস্তা জড়িয়ে গায়ে,
উড়ছ তুমি, হাঁটছ দারুণ...
অবুঝ আমি
ছুটে-ছুটে যাই, কাঁপে ব্যালকনি
খুব বারেবার...
এলোহাওয়া সব
চুমু খেয়ে নিই,
সেইখানে তুমি মিশে আছো বলে
হাওয়া পুড়ে যায়, পুড়তেই থাকে আদি ঈর্ষায়...
ওরা যে তোমায় ঠিক ছুঁয়েছে; আমি পারিনি।
তোমার ঘ্রাণে ওদের শরীর ভাসে অবিরাম,
উষ্ণ তোমায় জড়িয়ে হাওয়া মাতাল হলো,
হাওয়ার সুরা আমায় নাচায় ভীষণ স্তোভে।
গভীর শ্বাসে তোমায় টানি বুকের ভেতর,
ইচ্ছে করে, ওই নিঃশ্বাস বুকেই থাকুক--
এক জন্মের প্রবল দাবি আটকে রাখুক--ভালোবাসায় কিংবা প্রেমে।
গন্ধে তোমার বাতাস কাঁপে,
বাতাসে তোমার গন্ধ কাঁপে,
মন-শরীরের যুগল কাঁপে নিপুণ সুরে।
 
কী হলো রে? ভয় পেয়েছিস? পালিয়ে যাবি? রাখবি আমায় অনেক দূরে আগের চেয়ে?
বোকা ছেলে!
আচ্ছা রাখিস, এই বেলা শোন!
দেখ না ভেবে, জ্বালাবো তোকে,
অমন সময় কোথায় পাবো?
জীবন বড় শক্ত হাতে
সময় সবই নেয় যে কেড়ে!
এই যে ক’টা আঙুল খেলে,
মনের কোণে ভাবনা এলে,
রাখতে বেঁধে এই নিজেকে,
শেখার দেরি আর ততো নয়--যেমন ভাবিস।
মাথায় রাখিস!
তোকে লিখে যাই,
তোর আদরে আঙুল হাঁটাই,
তোর স্মৃতিতে কেঁপে-কেঁপে যাই,
জানতিস যদি
কেমন সাধে শাস্তি কামাই
তোকে লিখে, তোকে ভেবে, তোকে ডেকে...
দুঃখ বেচে দুঃখ কিনি তীব্র দামে তোরই নেশায়।
এই বোকাটা!
ভ্রূজোড়াটা কুঁচকে, চোখটা অমন মচকে,
ভাবিস নাতো!
বিরক্তিটা দেখলে পরে মারবো ঘুষি,
নাকটা দেবো থ্যাবড়ে!
 
লিখতে আমায় করিস বারণ, বলতো কেন?
এই লিখে যে দিব্যি আছি, এমন তো নয়!
তবুও কেন রাগিস অতো?
কষ্ট আমার হাসায় তোকে--সুখও ওতে! সত্যিটা এ-ই!
আমায় ঠেলে ভালোই আছিস, তাই না বাবু?
আসবে সেদিন, দেখবি যেদিন,
চারপাশটা এতোই ফাঁকা,
তুই হারাবি তোর নিজেতেই!
 
খুব বকছি নিজের সাথেই, তাই না বলো?
রাগ কোরো না লক্ষ্মী আমার, মাথা ঠিক নেই।
ভালোবাসা চাই না, শুধু স্বস্তি দিয়ো।
না-ই দিলে প্রেম, একটু হলেও শান্তি দিয়ো।