পিপাসা

তুমি দেবে, তুমি আমায় দেবে,
গেল কত দিন...
এই কথাটি নিত্য ভেবে ভেবে।
সুখে দুঃখে উঠিয়ে নেবে,
এমন ভেবে বাড়িয়েছি দুহাত
বিনিদ্র কত শুধু দিনরাত!
ভেবেছি কেবলই, দেবে, তুমি দেবে,
আরও কিছু দেবে…!


দিলে, তুমি দিলে, শুধু দিলে…
কখনওবা, পলে পলে, তিলে তিলে,
কখনও হঠাৎ, বিপুল প্লাবনে…
দানের শ্রাবণে।


নিয়েছি শত, ফেলেছি কত, দিয়েছি ছড়ায়ে,
হাতে পায়ে সেসব রেখেছি জড়ায়ে
জালের মতন,
দানের রতন
লাগিয়েছি হায় ধুলার খেলায়,
অযত্নে আর কত যে হেলায়,
আলস্যভরে
ফেলে গিয়েছি ভাঙা সেই খেলাঘরে।


তবু তুমি দিলে, শুধু দিলে আর দিলে,
তোমার দানের পাত্র নিত্য ভরে উঠেছে নিখিলে।
অজস্র তোমার
সে নিত্যদানের ভার,
তাই আজ আর
পারি না বইতে,
পারি না সইতে।


এ ভিখিরি হৃদয়ের অক্ষয় প্রত্যাশা---
দোরে তোমার নিত্য যাওয়া-আসা।
যত পাই, তত পেয়ে পেয়ে,
আর তত চেয়ে চেয়ে
পাওয়া চাওয়া সব শুধু বেড়ে যায়…
অনন্ত সে দায়,
সইতে না পারি হায়...
জীবনের প্রভাত-সন্ধ্যা ভরতে কেবলই ঝুলি-ভিক্ষায়...!
নেবে তুমি আমায়, তুমি নেবে...ও গো তুমিই নেবে,
এ প্রার্থনা, বলো, পুরোবে আর কবে!


শূন্য পিপাসায় গড়া এ পেয়ালাখানি
ধুলায় ফেলে যাকে নিত্য নিত্য টানি,
সারারাত্রির পথ-চাওয়া কম্পিত আলোর
প্রতীক্ষার শেষ দীপশিখাটিই
নিমেষে নিভায়ে
নিশীথের বায়ে,
এ কণ্ঠের মালা তোমারই গলায় পরে
নেবে আমায়, তুমি নেবে আমায়…
তোমার দানের অনন্ত স্তূপ হতে…
তোমার রিক্ত আকাশের অন্তহীন ওই নির্মল আলোতে!