(আগের পর্বের পর…)
বাইরে ঝড় হচ্ছে। বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। প্রচণ্ড শব্দ হচ্ছে। সবকিছুই নিস্তব্ধ হয়ে শুধুই প্রকৃতির রুক্ষতা প্রকাশ পাচ্ছে। এই ঝড়ও একসময় থেমে যাবে। আবার সবকিছু স্বাভাবিক হবে। আবার রোদ উঠবে। সবকিছু শান্ত হবে। এটাই নিয়ম। জীবনেও ঝড় আসে, আসবে। আবার শেষ হয়ে যাবে। এটাই নিয়ম। বরং ঝড় না-আসাটাই অনিয়ম। ঝড় না এলে কী করে বুঝব আমরা যে ঝড় না থাকলে কতটা শান্তিতে আমরা থাকি? প্রত্যেকটা ঝড় এক একটা এক এক রকম হয়। আমরা ভয় পাই, কিন্তু পরক্ষণেই মানিয়ে নিতে শিখে যাই। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি ঝড় থামিয়ে দেবার জন্য। ঈশ্বর সহায় হোন। করুণাই বলেন, কিংবা ক্ষমাই বলেন, আর যা-ই বলেন, ঈশ্বর তা-ই করেন। এর মাধ্যমে জীবনে ঝড়ের মোকাবিলা করতে করতে আমরা আমাদের নিজেদের শক্তি সম্পর্কে অবগত হই। ঝড় থেমে যায়, কিন্তু আমাদের অভিজ্ঞতা, ঝড় থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান শেষ হয়ে কিংবা হারিয়ে যায় না। বরং এটা আমাদের আরও শক্তিশালী করে, অভিজ্ঞ করে। আমাদের শান্তির পথ খুঁজে নেওয়ার মতো আশা যোগায়। আমাদের ক্ষত-বিক্ষত মনকে শান্ত করে। এসব স্বাভাবিক নিয়ম। এসব চলার নামই জীবন। এসব না-চলাটা অনিয়ম এবং অস্বাভাবিক। তাই ঝড়ে আমরা ভীত হয়ে যেভাবে সৃষ্টিকর্তাকে ডাকি, সৃষ্টিকর্তা আমাদের ডাক শুনে ঝড় থামিয়ে দেন, তেমনি জীবনে ঝড় এলেও সৃষ্টিকর্তাকে সেভাবে করে বেশি বেশি ডাকলে তিনি শুনতে পান। তিনি সে কষ্ট, সে ঝড় মোকাবিলা করার শক্তি আমাদের দেন। শুধু আমাদের ভয় না পেয়ে সৃষ্টিকর্তাকে ডাকতে হবে, ধৈর্য ধরে থাকতে হবে। ঝড় না থামা পর্যন্ত ওটা করে যেতেই হবে। তবেই আমাদের জীবনের ঝড় একসময় থামবে, ধীরে ধীরে রৌদ্র উঠবে। সব আবার সুন্দর হবে…ঠিক এক রৌদ্রোজ্জ্বল দিনের মতো।
অতিঝড় কিংবা অতিবৃষ্টি, কোনওটাই বেশি পরিমাণে হলে আর ভালো লাগে না, তবে মাঝেমধ্যে এরও দরকার আছে। নাহলে মানুষ দম্ভের আস্ফালনেই শেষ হয়ে যাবে। বাঁচতে হলেও কষ্টের প্রয়োজন। কষ্টহীন জীবন জীবনের প্রকৃত স্বাদ দেয় না, বরং একঘেয়েমি লাগে সবকিছুই। এজন্যই ঝড় এলে আমি ভরসা রাখব একমাত্র আমার স্রষ্টার উপর। তিনি যেহেতু ঝড়ের সৃষ্টিকর্তা, সেহেতু ঝড় থামাবেন তিনিই। আমি শুধুই তাঁকে ডাকব, আর ধৈর্য ধরে থাকব। ভেঙে পড়লে চলবে না। ভেঙে পড়ে যদি নিজের কোনও ক্ষতি হয়ে যায়, তা হলে ঈশ্বর তখন সব ঝড় থামাবেন ঠিকই, তবে সেই ক্ষতিটা কিন্তু থেকে যাবে, কেননা ক্ষতিটা হয়েছে আমার নিজের দোষে। শুধু নিজের ভালোর জন্য হলেও নিজের ক্ষতিটা আমি করব না। বিপদের সময় মানুষের আচরণ ও কাজ বিপদ কেটে যাবার পর তার আমলনামা লেখে। এজন্যই বিপদের সময় চুপচাপ ধৈর্য ধারণ করতে বলা হয়।
আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি, ঈশ্বর একদিন শুধুই আমাকে জয়ী করবেন ওদের উপরে, আর ওদের প্রত্যেকটা কাজের জন্য ফলভোগ করতে হবে। যখন আমি কষ্টে থাকি, তখন ওদের মজা লাগে। ওরা সাহায্য করা তো দূরের কথা, একটুও পাশে এসে দাঁড়িয়ে আমার সাথে ভালো করে দুটো কথা পর্যন্ত বলে না। ভেতরে ভেতরে হাসে, আর আমাকে কষ্টে দেখেই আনন্দে থাকে। আমাকে কষ্টে দেখতেই ওরা স্বস্তি পায়। ওদের দেখলে আমি মনে মনে বলি, একদিন সবই বিপরীত হবে। তোদেরও আমাকে দরকার পড়বে এবং খুব করে দরকার পড়বে। তোরা সেদিন সাহায্যের জন্য আমার পা-ও ধরবি, কেননা তোদের ধারণার চেয়েও জঘন্য পরিমাণে আর জঘন্যতম পর্যায়ে তোরা আমার মনে কষ্টগুলো দিয়েছিস। তোদের এসব আচরণ আমি ক্ষমা করব ঠিকই, কিন্তু মুছে ফেলতে চাইলেও হয়তো মুছে ফেলতে পারব না। আমার মনে হয়, আমার প্রয়োজনেই ঈশ্বর এগুলো আমাকে মনে রাখতে বাধ্য করবেন। তোদের এখন ভালো সময় যাচ্ছে তো, তাই তোরা তোদের নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত, কারও দিকে তাকানোর সময় নেই তোদের। তোরা রক্ত ভুলে যাস। তোরা মানবতা মনুষ্যত্ব ভুলে যাস। তোরা সুসময়ের বন্ধু নিয়ে ব্যস্ত থাকিস। দুঃসময়ের বন্ধুকে ভুলে যাস তোরা। উপকারীর উপকার ভুলে যাস তোরা। তোদেরই করা জঘন্য কাজগুলো বেমালুম ভুলে যাস তোরা। ভুলে যাস ঈশ্বর এখনও আছেন। তোদের মনে হয়, তোরা সারাজীবনই এমন থাকবি। এমনই থাকবে হয়তো পরিস্থিতি। তোদের এ-ও মনে হয়, ঈশ্বর এসব দেখছেন না। জেনে রাখ, ঈশ্বর আছেন, ঈশ্বর দেখছেন, ঈশ্বর সব জায়গাতেই আছেন। তিনি সব দেখেন, সব শোনেন, সব জানেন। আর আমার হৃদয়ের ঈশ্বর আমাকে ধৈর্য ধরতে বলেছেন, আমি ধৈর্য ধরে থাকব। তোদের কাছে মাথা নত কখনওই করব না, মরে গেলেও না। তোরা দেখে নিস, আমি ঈশ্বরের কৃপায় ভালো থাকব। এই দিনগুলো সব ঘুরে যাবে, সবকিছু বদলে যাবে। ঈশ্বর বলেছেন, নিশ্চয়ই তিনি ধৈর্যশীলদের সঙ্গে রয়েছেন। যে ব্যক্তি ঈশ্বরের উপর নির্ভর করে, তার জন্য ঈশ্বরই যথেষ্ট। ঈশ্বর কষ্টের পর সুখ দেবেন। নিশ্চয়ই কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে। অবশ্যই কষ্টের সাথেই রয়েছে স্বস্তি।
সেদিন আমার আজকের এসব দিনগুলোর কথা মনে পড়বে। পদে পদে অনেক ধরনের কাঁটাভরা ছিল সেসব পথ, যা আমি একাই অতিক্রম করেছি। আমি একাই! শুধু আমার ঈশ্বর জানেন, একলা নিজেকে নিয়ে কীভাবে আমি পার করেছি সেই পর্যায়। এর পুরস্কার স্বয়ং ঈশ্বরই আমাকে দিবেন। এমন একদিন আসবে, যেদিন আমার হাত দিয়েই ঈশ্বর তোদের সাহায্য প্রদান করবেন। সেদিন আমি মনে মনে শুধু হাসব! আর ভাবব, কী ভয়ানক দিনই না গেছে! আমার কেউ ছিল না পাশে এক ঈশ্বর ছাড়া। ঈশ্বরই ছিল সব জায়গায়। হাত ধরে দুইমিনিট সান্ত্বনা দেবার মতো কেউ কখনও ছিল না। একা একা এক একটা দিন আর রাত কীভাবে আমি পার করেছি, সে শুধু আমিই জানি। কখনও মন খারাপ লাগলে বলার মতো কাউকে খুঁজে পাইনি। তোরা সবাই নিজেদের সুখে নিজেরা এতটাই দিশেহারা ছিলি যে, তোদের আর আমার দিকে ফিরে চাওয়ার সময়ই ছিল না। তাই তোদের মনে হয়েছিল, সারাজীবনই তোরা এমনই থেকে যাবি, আমি জানতাম, এই দিন ঈশ্বরের ঘুরিয়ে ফেলবেন। যা হবার তা-ই হবে। শুধুই মনে পড়ে, আমার এই দিনগুলোতে কোনও মানুষ ছিল না পাশে, সেই ভালোবাসার কলিজার টুকরা মানুষটাও না। প্রিয়, একদিন তুমিও বুঝবে, কত কষ্ট হয় চুপ করে থেকে সব সহ্য করে যেতে! নিরর্থক নীরবতায় থাকতে যখন বাধ্য হবে দিনের পর দিন, তখন তুমি বুঝবে সব জেনেবুঝেও কোনও কিছু বলতে না পারার কষ্টটা কত বেশি!
যখন নিজের সব কাজের জন্য নিজেকেই জবাবদিহি করতে হয়, তখন পৃথিবীর আর কাউকে তেমন ভয় লাগে না। আমি পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ভয় পাই নিজেকে। কেউ যদি আমাকে টেকেন-ফর-গ্রান্টেড মনে করে, সে ভুল করবে। নিজেকে এমন হতে দেবো না কখনওই। নিজেকে আমি ভালো করেই চিনি, আর সবচাইতে বড় কথা, আমি নিজেকে সম্মান করি। আর ওদের দিকে তাকিয়ে আসলেই কোনও লাভ নেই। অল্পবিদ্যা ভয়ংকরী! ওরা না বুঝেই লাফাতে থাকে অবিরাম, এতটাই, যেন এমন নির্বোধের জীবন কাটাতেই ওরা পৃথিবীতে এসেছে! যারা কোনও একটা বিষয়ে সার্বিক না বুঝেই একটি মনগড়া কল্পিত ধারণা নিয়ে হুটহাট সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে থাকে অথবা সেই অনুযায়ীই সবকিছু বিচার করে, তাদের পতন অনিবার্য!
আহা, ভুল সংযোগ! যার সাথে আমাদের ঠিক যায় না, তার সাথেই জীবন কাটাতে হওয়া, এর চাইতে ভয়াবহ কষ্টের কিছু আর হয় না। একটা মানুষ অন্য একটা মানুষকে খুব পছন্দ করে অথবা খুব করে চায়। কিন্তু অপর পক্ষের মানুষটি তাকে ঠিক ওরকমভাবে চায় না। সে ক্ষেত্রে জোরপূর্বক কোনও বিয়ের সম্পর্ক তৈরি হলে অনেকসময় ভুল সংযোগ তৈরি হতে পারে। সে মানুষটা আমাকে চায় না, অথচ আমি তাকে পাগলের মতো চাই! কোনওভাবে যদি আমি তাকে, আমাকে ভালোবাসতেই হবে---এই প্রকারের কোনও জোরপূর্বক সম্পর্ক তৈরি করতে বাধ্য করি, তবে সেটা হবে ভুল সংযোগ এবং এসব সম্পর্ক, আমার মনে হয়, জীবনের কোনও না কোনও পর্যায়ে এসে ভেঙে যায়। ভেঙে যাবেই যাবে! আমি কেন কাউকে বাধ্য করব আমাকে ভালোবাসতে? যদি এমন করি, তবে নিশ্চিতভাবেই উভয়পক্ষই ভীষণ রকমের কষ্টে থাকবে। যে সব সম্পর্ক শুরুতেই খাপ খায় না, সেসব সম্পর্ক বেশিরভাগ সময়ই আসলে কখনওই খাপ খায় না। ভালোবাসায় বাধ্য করে পাওয়ার কিছুই নেই, আর এটি আসে দুজন মানুষের ভেতর থেকেই। সম্পূর্ণভাবে একজন অন্যজনকে খুব করে জীবনসঙ্গী হিসেবে চায়, সেটাও একধরনের ভালোবাসা, আর সে ভালোবাসায় থাকে শ্রদ্ধা। ভুল কোনও সম্পর্কে কখনও শ্রদ্ধা জন্মাতে পারে না। সেখানে শুধুই বোঝাপড়া থাকে, আর বোঝাপড়ায় কখনও প্রকৃত সুখ পাওয়া যায় না। আমার ঘৃণা হয় তাদের প্রতি, যারা জোরপূর্বক অন্য কারও কাছ থেকে ভালোবাসা পেতে চায়। তাদের লজ্জা হওয়া উচিত! মানুষের তো এইটুকু আত্মসম্মানবোধ ও বিবেক থাকবে, তাই না? আমাকে যদি কেউ ভালোবাসে, তবে আমার কাজে, চিন্তায়, আচরণে মুগ্ধ হয়েই ভালোবাসবে। ভালোবাসা জোর করে আদায় করার জিনিস নয়। জোর করে আদায় করা যায় ভালোবাসার অভিনয়, ভালোবাসা নয়। তারা আসলে এসব ক্ষেত্রে তাদের ক্ষমতা বা জেদ (ইগো) দেখাতে পছন্দ করে, কিন্তু শেষঅবধি এসব কিছুই কাজে লাগে না। আমাদের উচিত, এসব প্রেমের সম্পর্ক থেকে বের হয়ে এসে বাস্তবসম্মত জীবনযাপন করা।
আমার দেখা প্রেমের সংসারগুলোতে সুখ আজ পর্যন্ত দেখিনি। অ্যারেঞ্জড ম্যারেজের ক্ষেত্রে, প্রথম প্রথম ভালোবাসা তেমন না থাকলেও একটাপর্যায়ে এসে দুজনের প্রতি দুজনের ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, দায়িত্বকর্তব্য গভীর থেকে গভীরতর হয়, কিন্তু প্রেম করে বিয়ে করলে মনে হয়, তাদের সম্পর্কের মাঝে সবটাই থাকে কেবল পরস্পরের উপর দোষ-চাপানো, আর এতে মনে হয় মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কখনও সুখ আসে না। আজকাল এসব ভালোবাসা শুধুই ন্যাকামি মনে হয়। তাতে খুঁজে না পাওয়া যায় সুখ, না পাওয়া যায় ভালোবাসা, না পাওয়া যায় প্রকৃত প্রেম, না পাওয়া যায় শ্রদ্ধাবোধ। না থাকে দায়িত্ব, না থাকে জবাবদিহিতা, না থাকে দুজনের দুজনের প্রতি অপরিহার্যতা। দেখে খুব কষ্ট লাগে, এসব সম্পর্ক একটাসময় কতই না মধুর ছিল, অথচ সময়ের ব্যবধানে এর হয়তো ওর কাছে সব চাওয়া-পাওয়া ফুরিয়ে গেছে, ন্যূনতম ভালোবাসাও এদের মাঝে আর কখনও কাজ করে না। এসব দেখে মাঝে মাঝে ভালোবাসার প্রতি চরম আকারে বিতৃষ্ণা জন্মে যায়। আমি জানি না আমার সাথে কী হবে, তবে এসব নিয়ে খুব বেশি মাথা না ঘামানোই ভালো। সৃষ্টিকর্তা যা আমার ভাগ্যে লিখে রেখেছেন, তা তো পূর্বনির্ধারিত, আর সেটাই হবে। যখন আমরা কাউকে ভালোবেসে অন্ধ হয়ে যাই, তখন তাকে ছাড়া পৃথিবীর সব কিছুই অর্থহীন মনে হয়। এটা কিন্তু সত্যি! আমরা যখন তাকে পেয়ে যাই, তাঁর প্রতি আমাদের যে চাওয়াটুকু, তা যখন পূরণ হয় না এবং ধীরে ধীরে অভিযোগের পরিমাণ বাড়তে থাকে, তখন একটাসময় পর এসে ভালোবাসার মানুষটিকে আবার সেই মন দিয়েই পৃথিবীর সবচাইতে বেশি ঘৃণা করি! এ আবার কেমন ভালোবাসা, যা একসময় ঘৃণায় পরিণত হয়?
মানুষের মন কী যে চায়, তা বোঝা খুব কঠিন। মানুষ যা চায়, তা যদি পেয়ে যায়, তখন সেটি আর চায় না। আবার মানুষ যা চায়, তা যদি না পায়, তবে সারাজীবনই তার জন্য কাঁদতে থাকে। অথচ দেখা যাবে, যেটার জন্য কাঁদছে, যদি সেটা সে পেয়ে যেত, তবে হয়তোবা সেটাকে অবহেলায় দূরে ঠেলে দিত। কী আশ্চর্য, কীভাবে সময়ের ব্যবধানে মানুষ এতবার বদলে যায়! কোথায় যেন পড়েছি, মানুষ মরে গেলে পচে যায়, বেঁচে থাকলে বদলায়, কারণে-অকারণে বদলায়…ভালোবাসার সম্পর্কে এটা সবচাইতে বেশি হয়, অর্থাৎ মানুষ বদলে যায়। যাকে ভালোবাসতাম, তাকে পেয়ে যাওয়ার পর দেখলাম, যাকে ভালোবাসতাম, সে মানুষটা এই মানুষটা নয়, এ মানুষ ভিন্ন মানুষ! পুরো বদলটা অকারণেই হয়! সলিড কারণ কিছুই আর থাকে না। কেউ তার ভালোবাসার মানুষকে কাছে পাবার পর ভালোবাসার সূক্ষ্ম আবেগগুলো যত দ্রুত বদলে যায়, অন্য বদলগুলো হয়তো এত দ্রুত হয় না। আমি এই বিষয়ে খুব নিশ্চিত নই যে, এসব ক্ষেত্রে কি যৌনচাহিদাটাই সবচাইতে বেশি কাজ করে কি না! হলেও হতে পারে! যা-ই হোক, বিয়ের আগে ভালোবাসা বিষয়টাকে এখন থেকে ঘৃণার চোখে দেখতে চাই। বিয়ের পর নাহয় সব উজাড় করে ভালোবাসা হবে! কী বলো! তবে এটা কিন্তু ভেবো না যে তাতে কোনও কিছুর বদল হবে না। বদল কিন্তু হবেই! ভালো পরিমাণেই বদল হবে! আমার ধারণা, বিয়ের আগে সবকিছু পেয়ে গেলে মানুষ তখন ওইসব কিছুর প্রতি আকর্ষণটাই হারিয়ে ফেলে, যার ফলে ওইসব কিছুর মালিক যে মানুষটি, তার প্রতি আকর্ষণও কমে যায়।
কারও কারও মতো আমিও আজকাল ভূমিকম্পের চিন্তা করে ভয়ে ভয়ে সারা দিনরাত শক্ত হয়ে থাকি। রাতে ভয় হয় সবচাইতে বেশি। মনে হয়, এই বুঝি চোখ বন্ধ করলেই মরে যাব! আমি কেন যে বুঝি না, ঈশ্বর যদি সেভাবেই মৃত্যু লিখে রাখেন তো তা-ই হবে। কারও সাধ্য নেই তা আটকে রাখার। এই মৃত্যুর পরের জীবন নিয়েও অত্যধিক ভয় হয়, এজন্য বেশি বেশি প্রার্থনা করি, সারাদিনই ঈশ্বরকে ডাকি। অথচ আমি বুঝি না, ঈশ্বর আছেন, তিনিই আমার সবকিছু দেখবেন, ঈশ্বর সবকিছুর উপরে, আমার সব দায়িত্ব তিনি নেবেন, তিনি তো আমার স্রষ্টা, আমি কেন তার কাছে মাথা নত করব না? আমি শুধু আমার স্রষ্টার কাছেই মাথা নত করব। আমি চাই, ঈশ্বর যেন আমাকে শক্তি দেন, এসব কিছু বোঝার মতো জ্ঞানদান করেন। আবার এটাও মনে হয়, আমি যা ভাবছি, তার মধ্যে অনেক ভুল আছে। তবু আমি জানি, প্রত্যেক কথারই কোনও না কোনও মানে থাকে, অথচ কিছু কথার কোনও কারণই থাকে না! ভাবনার ক্ষেত্রেও তা-ই। আচ্ছা, যে কখনও আমার জীবনে আসেইনি, সে আবার চলে যায় কী করে? মাঝেমধ্যে মনে হয়, সে যেন আমার জীবনে ছিলই না কখনও! এই জন্মের পর আবার যদি জন্ম হয়, সে জন্মে আমি মেয়ে হয়েই জন্মাতে চাই, কারণ মেয়ে হয়ে জন্মালে সবচাইতে বেশি কষ্টের বেঁচে থাকাটা বেঁচে থাকা যায়, আর নিশ্চয়ই কষ্টের পরেই আছে স্বস্তি! হা হা হা!
ছেলে: এত জলদি কীসের? আরও ২-৪ দিন খেলি, ভালো পেলে ছেড়ে দিব! ততদিন থাকো!
মেয়ে: আমার একূল ওকূল দুকূল ভেসে যাক, সব শেষ হয়ে যাক, আমি তবু তোমার খেলনা হয়েই থাকব! আমিও দেখতে চাই, এই পোড়াকপালের শেষটা কেমন হয়!
(কে বলে মেয়েরা বেকুব না? মেয়েরা জেদ করে বলে ভাবে, অথচ জেদের নামে যেটা করে, সেটার নাম হলো গাধামি!)
হ্যাঁ, আমি উদাহরণই হব! ওদের সবাইকে নতুন করে বেঁচে থাকতে আশা জোগাতে আমিই হব ওদের সর্বপ্রথম উদাহরণ। আমাকে দেখেই ওরা শিখুক, এতকিছুর পরও ভালোভাবে থাকা যায়। সব সুন্দরের শেষটা সুন্দর হয়! কষ্টের একটু পরেই স্বস্তি আছে, নিশ্চয়ই তা-ই আছে! যদি ঈশ্বর আমাকে বাঁচিয়ে রাখেন, তা হলে আমিই হতে চাই ওদের সর্বপ্রথম অনুপ্রেরণা। ওরা যেন আঁধারে চোখ খুললেই সর্বপ্রথম আমাকেই দেখতে পায়। আমাকে দেখেই যেন ওদের মধ্যে আবার নতুন করে জীবন শুরু করার অনুপ্রেরণা জাগে। হ্যাঁ, ওদের যেন এক ঈশ্বর ছাড়া আর কারও কাছে মাথা নত করতে না হয়। যেন কারও কাছেই সাহায্যের জন্য দ্বারস্থ হতে না হয়। শুধু আমাকে দেখেই যেন ওরা খুব ভালোভাবেই থাকতে পারে। ঈশ্বর, তুমি আমাকে তো এত দুর্বল করে এই পৃথিবীতে পাঠাওনি! তুমি তো জানো আমি কী পারি কী পারি না। নিশ্চয়ই তুমি এ-ও জানো, আমি আমার সব শক্তি তোমার কাছ থেকেই পাই! আমায় শক্তি দাও, নিজেকে ধরে রাখতে শেখাও। আমার পাশে থাকো, আমি যেন দিশেহারা হয়ে না পড়ি!
একটাদিন সুযোগ আমারও আসবে। আমি বিশ্বাস করি, ঈশ্বর যদি বাঁচিয়ে রাখেন, তা হলে একটাদিন আমিও সুযোগ পাব। ওরা যারা আমাকে নিয়ে অকারণে খেলছে, আমার আবেগগুলোকে প্রতিদিন একটু একটু করে নষ্ট করছে, আমাকে আমার মতো থাকতে দিচ্ছে না, আমাকে যাচ্ছেতাই ব্যবহার করছে, ওদের জবাব দেওয়ার সুযোগটা আমারও একদিন আসবে…সেদিন সব পরিস্থিতি আমার অনুকূলে থাকবে। এরকমই হয়, এরকমই হবে! ঈশ্বরের দেওয়া সব দিন কারও সমান যায় না। নিশ্চয়ই না!
কষ্ট পেতে হয়। ওটা সহ্য করতে হয়। কষ্টকে শক্তিতে পরিণত করতে জানতে হয়। লোকে বলে, দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলেই নাকি মানুষ ঘুরে দাঁড়ায়। আমার পিঠ তখন দেয়ালে গেঁথে গিয়েছিল। ওই সময়ের কষ্ট, যন্ত্রণা, বিষাদ, হতাশা, বিষণ্নতা কখনওই ভোলার নয়। বেঁচে ছিলাম বলেই তো এত এত বোনাস পেলাম! তাই যখন কেউ আমায় জিজ্ঞেস করে, জীবনে সবচাইতে আনন্দের কী? সফল হওয়া? অনেক টাকাপয়সার মালিক হওয়া? বড় হওয়া? তখন আমি বলি, কোনওমতে হলেও বেঁচেথাকাটাই জীবনে সবচাইতে বেশি আনন্দের। আর কেউ না জানুক, আমি তো জানি, কখনও কখনও স্রেফ বেঁচে থাকাটাও ভীষণ কষ্টের। মৃত্যুকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দেওয়াটাও অনেক বড় একটা সাফল্য। আমরা যদি বেঁচে থাকি, তবে আমাদের এই অন্ধকার দিনগুলি নিয়ে একদিন গান লেখা হবে। আমি সেই দিনটার প্রতীক্ষাতে কাটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। জানতাম, সেই গান লেখা বড় কঠিন, তবুও বেঁচে ছিলাম। বেঁচে থাকতে হবে, এটাই ভীষণ জরুরি! আর সেই বেঁচেথাকার সময় অজুহাত না দেখিয়ে নিজের কাজটা করে যেতে হবে। কেননা মুখে যে যা-ই বলুক না কেন, দিনের শেষে লোকে শুধু আমাদের ভুলগুলির কথাই মাথায় রাখে, আর কিছুই না। লোকের নিজের ভুলের দিকে নজর দেয় না, অন্যের ভুলগুলি নিয়েই মেতে থাকে। মানুষ এমনই জাজমেন্টাল আর বাস্টার্ড টাইপের, কিচ্ছু করার নেই।
আমি মানুষকে যত সহজে বিশ্বাস করি, প্রয়োজনে ঠিক তত সহজেই ছুড়ে ফেলে দিতে পারি নর্দমায়, ঠিক যেখানে আমার কাছে তার স্থান। আজ পুরনো ডায়রির পাতা খুলে দেখলাম, তখন যা লিখেছিলাম, যেসব মানুষকে কাছের ভেবে অনেক ভালো ভালো কথা লিখেছিলাম তাদের নিয়ে, তার প্রায় সবই ছিল ভুল! বিপদে পড়ার আগ পর্যন্ত কাউকে কাছের বা বিশ্বস্ত ভেবে নেওয়াটা অনেক বড় বোকামি। কাছের মানুষ সে-ই, যার সাথে আমার মনের সম্পর্ক, সেখানে রক্তের সম্পর্ক থাক আর না থাক, সেটা কোনও ব্যাপারই না!
আমার যদি লজ্জা বলতে কিছু থাকে, আর আমি যদি মেয়েমানুষ হয়ে থাকি, তা হলে আর কোনও দিন ভালোবাসার কোনও সম্পর্কে নিজেকে জড়াব না। লজ্জা নারীর সবকিছুই, আর এটাই যদি বিলিয়ে দিয়ে বেহায়া হয়ে যাই, তা হলে আমি কোনও মেয়েই না! নিজেকে আগে প্রতিষ্ঠিত করব, না হলে মরব। যে নিজের সম্মানের জন্য নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে না পারে, তার বেঁচেথাকার কোনও অধিকার নেই। বেঁচে থেকে সবার সামনে ছোট হয়ে বাঁচার চাইতে মরেযাওয়া অনেক ভালো! কিন্তু মরে গেলে তো সবাই ভাববে, আমি দুর্বল, আমি কিছু পারি না, আমি নিজেকে সম্মান করতে জানি না। যদি অন্যের টাকার উপর ভরসা করেই সারাজীবন চলব, তা হলে নিজেকে নিয়ে কীসের এত অহংকার? আমি কি সবই ভুলে গেছি? আমি কি ভুলে গেছি পিয়াস আমাকে কী সব নোংরা কথাই না বলত! আমি কি ভুলে গেছি আমি আমার জীবনের সমপরিমাণ ভালোবেসেছি যাকে, আমি নিজেকে একটু একটু করে গড়েছি যার স্বপ্নের জন্য, যার মনের মতো করে নিজেকে তৈরি করেছি, সেই মানুষটিই কীভাবে আমাকে খুব সামান্য অজুহাত দেখিয়ে আমার কাছ থেকে সরে গেল…ঠিক তখনই, যখন তাকে আমার দরকার ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি? শেষদিনটাতেও সে আমায় কত কথাই না শোনালো! তার কি একটুও মনে হলো না, আমাকে ছেড়ে গেলে আমি কীভাবে সামনে এগোব? আমার তো লজ্জা নেই, তাই এতকিছুর পরও ওর মতো নিচুমনের মানুষকে ভেবেই নিজেকে কষ্ট দিই, ওর ভালো চাই! যদি লজ্জা থাকে, তা হলে নিজেকে বেঁচেথাকার মতো করে তৈরি করব, আর যদি না করি, তা হলে আমি একটা নির্লজ্জ বেহায়া মেয়ে!
এই মেয়ে! এত নীতি কথা বলবি না! শালী, বেশি পকপক কম কর! পারলে কিছু করে দেখা! যে-ই না ছেরি, তার আবার এত কথার ছিরি!
অনেককিছুই তো লেখা যায়! অনেকেই পারে লিখতে। যাদের লেখার কোনও দরকার নেই, তারাও লিখে। ওদের কেউ কেউ বইও বের করে ফেলে। পরিচিতদের বিরক্ত করে বইটা পড়ার জন্য, অন্যদের পড়তে বলার জন্য। পুরাই ফালতু লাগে ব্যাপারটা! আক্কেলই নেই, আবার বইও লেখে! যা-ই হোক, যাদের লেখা তাদের আবেগের কথা বলে, তারা যেমন লেখে, তেমনি যাদের লেখা ও আবেগের দূরত্ব যোজন যোজন মাইল, তারাও লেখে। পড়লে ধরে ফেলা যায় কিন্তু, কোনটা লেখকের মনের কথা, কোনটা নয়। আরোপিত অনুভূতির সুর খুব কানে লাগে, ভীষণ বিশ্রীভাবে। একদমই ঠিক নয় ওরকম করা। পাঠকের সময় নষ্ট হয়, বিরক্তির উৎপাদন হয়।
আমি আজকাল খুব অভিযোগ করি সবাইকে নিয়ে। সেই অভিযোগ এই যে, নিজের জীবন গুছিয়ে নেবার যোগ্যতা অনেকেরই নেই। ওরা অযথাই সবাইকে দোষ দিয়ে বেড়ায় এইসব বলে---সে এটা আমার জন্য কেন করল না, আমাকে কেন মূল্য দিল না, এ বিষয়ে কেউ একটু সাহায্য করল না কেন, ইত্যাদি ইত্যাদি। এই পৃথিবীতে যা-কিছু হয়েছে, তা হয়েছে কর্মীর নিজের যোগ্যতায়। আমিও যদি কিছু হতে চাই, তা হলে তা করতে হবে আমাকেই, মানে নিজেকেই। অন্যকে দোষ দিয়ে কোনও লাভ নেই। কেউ তো আমার স্বপ্নে বাঁচে না। সবারই আলাদা আলাদা স্বপ্ন আছে, সবাই যার যার স্বপ্নের পথটা প্রস্তুত করছে নিজের যোগ্যতায়। আর আমি এখনও কিছু পারছি না করতে, সেটা একান্তই আমার দোষ। আমি যাকে আমার যোগ্য মনে করি, পছন্দ করি, সে আমার দিকে ফিরেও দেখে না, এটা আমার এক ধরনের অযোগ্যতা। নিশ্চয়ই আমাকে পছন্দ করার মতো সে কিছু খুঁজে পায়নি। সে আমায় পছন্দ করেনি মানে এ নয় যে আর কেউ আমায় পছন্দ করবে না। এক একটা মানুষের পছন্দ এক এক রকমের।
যা-ই হোক, যোগ্যতার মাপকাঠিতে আমি কাউকে বিচার করব না, কেননা সেই বিচারের যোগ্যতা আমার নেই। তা ছাড়া আমার তো অন্য কাউকে বিচার করার প্রশ্নই আসে না, আমার নিজেরই তো বুদ্ধি কম। এটা মানি, এটা মেনে নেওয়াই মঙ্গল। যে গাধা নিজেকে গাধা মানতে পারে না, সে গাধা চিরজীবনই গাধা থেকে যায়। আমার যদি নিজেকে কিছু করতে হয়, অর্থাৎ যদি আমার নিজের কোনও পরিচয় দরকার হয়, যা আমাকে অন্যের সামনে তুলে ধরবে সম্মানের স্থানে, তা হলে সেটা তৈরি করতে হবে আমাকেই। আমাকে বর্তমান পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসার পথ খুঁজে বের করতে হবে। গর্ব করার মতো নিজের একটি পরিচয় তৈরি করাটা অত সহজ না। আমার তো অনেক অনেক স্বপ্ন! আমি কী করতে চাই, তার একটা পূর্বপরিকল্পনা থাকতে হবে। কে না জানে, সেরা কাজের পেছনে পরিকল্পনা থাকবেই! সেই পরিকল্পনা ধরেই সামনের দিকে হাঁটতে হবে। তা করতে না পারলে আমি যেন পরবর্তীতে নিজের ভাগ্যকে দোষ না দিই!
আমার নিজের প্রতি খুব করুণা হয়! কীভাবে কীভাবে সবাই যার যার জায়গা গুছিয়ে নিজের একটা পরিচয় তৈরি করে ফেলে, নিজেকে আলাদাভাবে সবার কাছে প্রকাশ করে, অথচ আমি এতকিছু জেনেবুঝে দেখেশুনেও কী করব, শুধু তা-ই ভাবি! সামান্য একটা বিসিএস ক্যাডার, তা-ও হতে গেলে নাকি আমাকে অন্যের উপর ভরসা করতে হয়! কোচিং-য়ে দৌড়াও, অমুকের বাড়িতে দৌড়াও! অনর্থকই সময়নষ্ট ছাড়া আর কী! সারাদিন পড়তে বসার আগে, নতুন কিছু শুরু করার আগে এই সমস্যা সেই সমস্যা, হ্যান হয়েছে ত্যান হয়েছে, এসব আজগুবি চিন্তা আর যুক্তি দাঁড় করাই। আমি যে একটা আস্ত ফাঁকিবাজ, সেটা সবার কাছে লুকাতে পারলেও নিজের কাছে তো আর লুকাতে পারব না। অনিলা, তুই কিছু পারিস না, খালি পারিস বড় বড় কথা বলতে! তুই একটা গাধা, তুই একটা ছাগল! যদি পারিস তো বলে না দেখিয়ে করে দেখা! তুই একদম চুপ করে থাক, অত ঢং করিস না!
এই যে স্যার! শুনুন, আমি ক্রাশট্রাশ কম খাই! অত ক্রাশ খাওয়ার সময় আমার নাই! আর আমি চোখেও কম দেখি, সুতরাং ওইরকম লম্বা লম্বা মেসেজে বকবক কম করেন! অনেকদিন বইখাতা থেকে দূরে ছিলাম। আমার ডায়রি, আমার বই, কলম, লেখা এগুলো ছেড়ে থাকতে এখন ভালো লাগে না। খুব একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম অনেকদিন ধরেই! মনটা খুব একটা ভালো ছিল না। আমরা অসুস্থতা, আমার নানারকম দুশ্চিন্তা। একটা বড় ধাক্কা…যাকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পাওয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি ভালোবেসে আর ভালোবাসা দিয়ে, সে-ই যখন হঠাৎ করেই বিয়ে করে ফেলল আমাকে কিছু না জানিয়েই, নিজেকে কেমন যেন মানিয়ে নিতে পারছিলাম না। এদিকে মা অসুস্থ, তাকে ওষুধ খাইয়ে ডাক্তার দেখিয়েও কোনও কাজ হচ্ছে না। খুব সময়সাপেক্ষ ব্যাপার তার সেরে-ওঠাটা। এদিকে আবার আমার প্রথমবর্ষের পরীক্ষা ঘনিয়ে আসছে, অথচ পড়া কিছুই হয়নি। আবার কম্পিউটার-কেনার টাকা জমাতে পারছি না। সবকিছু মিলিয়ে সবদিক দিয়েই ক্লান্ত ছিলাম, তাই ভাবলাম, একটু অন্য কোথাও থেকে ঘুরে আসি। মনটাকে একটু পরিবর্তন করা দরকার। এত দিন ডায়রি - খাতা - কলম থেকে দূরেথাকা! এগুলো এখন আমাকে কাছে টানে। দুইকলম লিখতে না পারলে ভালো লাগে না। আসলে দুশ্চিন্তা থাকবেই, এটা জীবনের একটা অংশ। কত কথা কত সময় মনে এসে ধরা দেয়, সব তো আর লেখা হয় না, অথচ লিখে ফেলতে পারলে নিজেকে অনেক হালকা লাগত!
বইটই দেখলে একটু ভালো লাগে, মনকে হালকা মনে হয়। সবচাইতে আনন্দ পাই কিছু না কিছু লিখে ফেলতে পারলে। হয়তো আমি যা লিখি, তা লেখা পদবাচ্যই নয়, তবু তা আমার কাছে পরম আদরের, খুব দামি। আমি যখন লিখি, তখন আমার মনে হয়, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ লেখাটি আমার কলম থেকে বেরোচ্ছে! আহা, সে কী স্বর্গীয় অনুভূতি! লেখা শেষ হলে চোখের সামনে লেখাটি দেখে মনে হয় যেন একটুকরো স্বর্গ! কে কী ভাবল, কে কী ভাবল না, সেটা নিয়ে মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই। ওরা যদি বুঝত কত যে কষ্ট হয় লিখতে! টানা ১০-১২ ঘণ্টা স্থির মনে, মেজাজে ও মস্তিষ্কে লিখে-যাওয়া, মোটেই সহজ নয়! মনের উপর ও শরীরের উপর অসীম চাপ পড়ে! তবু, মাঝে মাঝে যখন অতিরিক্ত নানান মানসিক চাপে স্বপ্ন দেখতে পর্যন্ত ভুলে যাই, ন্যূনতম সাধারণ ও স্বাভাবিক থাকাটা পর্যন্ত আর হয়ে ওঠে না, তখন এই একটা জিনিসই আমাকে পরম আদরে আদরে শান্ত করে দেয়। আপন কাউকে কাছে না পেলেও মনে হয়, এই কাগজ আর কলম আমার কতকালের সঙ্গী! যেন আমার সব কষ্টের সঙ্গী, আমার বেঁচেথাকার একমাত্র অবলম্বন! সত্যিই এখন আর কেন জানি তেমন একটা কষ্ট হয় না, কোনও কিছুতেই কষ্ট হয় না, শুধু চিন্তা হয়, কীভাবে কীভাবে সামনে এগোতে পারি! শুধু সুযোগ আর দরজা খুঁজে পেলে, অথবা আমি নিজেই তা তৈরি করে ফেলতে পারলে, আমি আরও দ্রুত সামনের দিকে এগোতে পারব। যতই সামনে এগোচ্ছি, ততই বুঝতে পারছি, প্রকৃত বন্ধুর কত অভাব! কেউ পাশে থাকে না, কেউই আমার মন বোঝে না, কেউই একটুও মাথায় হাত রাখে না। কেউই বলে না, অত চিন্তা করিস না, আমি আছি তো! অথবা কেউই পাশে থাকে না বিনাস্বার্থে, বিশেষ করে সে, যার কাছ থেকে আমি আশা করি যে, অন্তত সে আমায় বুকে টেনে নিয়ে শক্ত করে ধরে রাখবে! পাই না কাউকেই! আর কিছু নয়, স্রেফ একটু কাছেও টানে না! বলে না, আমি আছি ছায়া হয়ে তোমার পাশে! আমি জানি, এখন আমাকে তোমার খুব দরকার!...অমন করে কেউই বলে না! এখন বুঝি, এরকমই হয়! কেউই থাকে না অসময়ে!
আসলে আমরা অন্যদের নিয়ে যা ভাবি, যা যা করি, তার প্রায় সবই ভুল। এ পৃথিবীতে ভালোবাসা বলে কিছু নেই। সবই হচ্ছে কেবল স্বার্থ! সবই হচ্ছে কেবল পাওয়ার আশা! গিভ অ্যান্ড টেক! এর চাইতে বড় রিলেশন আর নেই। দেওয়া এবং পাওয়া, এই তো জীবন! আমি আর কখনও ভালোবাসার পেছনে অযথা ছুটব না। যদি কখনও ভালোবাসা স্বেচ্ছায় এসে ধরা দেয়, তখন ভেবে দেখব নাহয়। নিজেকে সেভাবে করেই তৈরি করছি আমি। আমি শুধুই আমার। আমি বেঁচে আছি কেবল আমার জন্য। আমি বেঁচে থাকব শুধু আমার জন্য। ভালোবাসা স্বেচ্ছায় ধরা দেয় তো দেবে, নাহয় নিজেকে সেভাবে করেই তৈরি করছি…কীভাবে? আমি শুধুই আমার আমি…এটাই মাথায় রেখে!
তোমাকে মিস করি! খুব বেশি মিস করি। এতে আমি আমার লক্ষ্য থেকে অনেক দূরে সরে যাচ্ছি। এটা হতে দেওয়া যাবে না। তুমি তো ভালো আছ, আরও ভালো থাকবে। একসময় তুমি তোমার লক্ষ্যে পৌঁছে যাবে, আর আমি কিছুই করতে পারব না। তোমাকে উপরে উঠতে দেখব হাঁ করে, আর আমি আরও নিচে নামতে থাকব। তখন আমি আবারও ডিপ্রেশনে চলে যাব। এর সত্যিই কোনও অর্থ নেই!
একদিন তুমি খুব করে বুঝবে আমার শূন্যতা। একদিন তুমি আমার শূন্যতায় একেবারেই এলোমেলো হয়ে যাবে। আমাকে দেওয়া তোমার প্রতিটি কষ্ট একদিন তোমাকে খুব করে ঠুকরে দেবে, দেখে নিয়ো। আমার সহ্যকরা প্রতিটি কষ্টের একটি একটি বিন্দু তোমাকে নিজের নিঃশ্বাসের সাথে একেবারে দুমড়ে-মুচড়ে ছিঁড়েকুড়ে খাবে, ভেতর থেকে একেবারে শেষ হয়ে আসবে তুমি! তোমার প্রতিটা নিঃশ্বাস একদিন পাগলের মতো আমায় খুঁজবে, দেখে নিয়ো। তোমার দেওয়া প্রতিটি কষ্টের স্মৃতি, যা আমি নিশ্চুপ হয়ে সহ্য করেছি, সেগুলি মনে করেই একদিন ভীষণ কাঁদবে তুমি। আমার পা জড়িয়ে ধরে কাঁদতে ইচ্ছে করবে তোমার, কিন্তু ততদিনে তুমি হবে আমার কাছে একটা খেলনা! সে খেলনা নিয়ে শুধু খেলাই যায়, এ বেশি কিছু নয়। যা আমি হারিয়েছি, তা ছিল আমার কষ্টের গড়া জিনিস---ভালোবাসা। তুমি খুব করে একদিন বুঝবে, আমার এই কষ্টের আর আবেগের এই জিনিসের মূল্য যে কী! কী দিয়ে তোমাকে তার মূল্যশোধ করতে হবে সেদিন, তুমি সময় হলেই অনুভব করতে পারবে। সেদিন তোমার আর কিছুই করার থাকবে না! তোমার পরিবারও সেদিন ঠিকই বুঝবে!
আমার ঘুমজড়ানো স্বপ্নে তুমি আমারই আছ! ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখি, চোখের মণির সঞ্চালনের দূরত্বেই তুমি আছ! জেগে জেগেও, এমনই ভাবি! আচ্ছা, তুমি কেমন হবে? কেমন যে হবে…সত্যি বলছি, সেটা দেখার এখন ভীষণ আগ্রহ আমার! এতকিছুর পর যে এলে, তোমার অপেক্ষাতেই যেন অনেক টুকরো টুকরো বেলা কাটিয়ে দিয়েছি কত কত নাটক দেখে দেখে! কী আর বলব কষ্টের সেই করুণ অধ্যায়গুলোর কথা! জানি, তুমি শুনলে খুব কষ্ট পাবে, কেননা আমি যে তোমার সেই মানুষটিই, যাকে তুমি এতদিন ধরে পেতে চেয়েছ! এত বেলা করে এলে বলে কিছুই বলব না তোমায়! রাগ অভিমান কিছুই দেখাব না! কিছুই করব না তোমাকে! আমি তো জানি, তুমি আসবে বলেই আমি তৈরি হচ্ছিলাম! তুমি এসেছ, তোমায় হারাতে পারব না কিছুতেই!
অনিলা, এখন তোমার চুপ থাকার এবং বোকা থাকার সময়! অবশ্যই অবশ্যই তুমি অন্য কাউকেই কোনও বিষয়ে জ্ঞানদান করবে না, কেননা তুমি নিজেকে এখনও প্রতিষ্ঠিত করতেই পারোনি! নিজের কোনও আলাদা এবং গর্ব করার মতো সম্মানজনক স্থান বা পরিচিতি কোনওটাই তুমি বানাতে পারোনি! সুতরাং, সবাইকে জ্ঞান না দিয়ে নিজেকে জ্ঞান দাও এবং নিজেকে তৈরি করার পেছনে সময় ব্যয় করে অন্যের জীবনে ইন্টারফেয়ার-করা বাদ দাও। মনে রেখো, তোমার এখনও কিছুই নেই। এখন তোমার সবার সামনে মাথা নত করে থাকার সময়। এখন তোমার সবকিছু মুখবুজে সহ্য করার সময়। এখন এসবের মাঝ দিয়ে গেলেই তুমি তোমার পরিচিতি তৈরি করতে পারবে। তুমি তো জানোই, কোনও কিছু করার আগেই নিজেকে বড় কিছু ভাবা মূর্খের কাজ! তুমি যদি মূর্খ হও, তা হলেই তুমি তা করতে পারো! কিন্তু মনে রেখো, এটি করলে তুমি কেবল কতগুলো মূর্খের সামনেই সম্মান পাবে। যাদের কাছে সম্মান পেতে খুব একটা কষ্ট করতেই হয় না এবং যারা সামান্যতেই নিজেকে অনেক বড় কিছু ভেবে বসে, তুমিও তাদের মাঝে একজন হয়ে যাচ্ছ কিন্তু! সাবধান, অনিলা! নিজেকে গোছাও আগে! নিজেকে প্রতিদিন একটু একটু করে নতুন রূপ দাও। তোমার যোগ্যতাকে সাজাও এবং প্রশ্ন করো নিজেকে, তুমি আসলে কী চাও, কীভাবে চাও! নিজেকে অমূল্য সম্পদে পরিণত করো। সম্মান জোর করে নেওয়ার জিনিস না, এটি অর্জন করতে হয়।
তুমি অন্যের অ্যাটেনশনের শিকার হয়ো না। এখন তোমার নিজেকে তৈরি করতে গেলে তোমার মাথাটা নত করে রাখতে হবে। চুপ করে থাকতে হবে। বোকা হয়ে থাকতে হবে। আর প্রতিদিন নিজেকে একটু একটু করে তৈরি করতে হবে। সামনে এগোতেই হবে, অনিলা! যে যা-ই বলুক, সব মুখবুজে সহ্য করতে হবে, আর অন্যের জীবন নিয়ে মাথা ঘামাবে কম, তাকে তার নিজের মতো করে বাঁচতে দাও, নিজের মতো করে গড়ে উঠতে দাও। অন্য কারও জীবনের ভাবনা নিয়ে কথাবলার মতো যোগ্যতা তোমার এখনও নেই। আগে নিজেকে যোগ্য করো, নিজেকে জানো, নিজের ভেতরটা খোঁজো। নিজের অবস্থানটা তৈরি করো অফুরন্ত সময় ব্যয় করে। নিজের ব্যাপারে চুপ করে থাকো, পুরোপুরি বোকা হয়ে থাকো। অত জ্ঞান দিতে যেয়ো না। নিজেকে তৈরি করো সঠিক পথে পরিশ্রম করে। আশ্চর্য কোনও কিছু তোমার জীবনেও হবে, শুধু ধৈর্য ধরো, সহ্য করো। দাঁতে দাঁত চেপে কষ্ট নাও। দুঃখকে গ্রহণ করো। মনে রেখো, পৃথিবীর কেউই তোমার স্বপ্নে বাঁচে না। বাকিদের কাছে তোমার স্বপ্নটা অভিনবই! ওদের সাথে এটা নিয়ে কথা বলে কিংবা ওদের একটিও পরামর্শ গ্রহণ করে কোনও লাভ নেই, বরং ক্ষতি হয়ে যাওয়ার আশংকা আছে! তাই তোমার স্বপ্ন পূরণ করার দায়িত্ব তোমার একার এবং শুধুই তোমার। নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে হলে চুপচাপ থেকেই তা করতে হবে, অন্যথায় তুমি কিছুই করতে পারবে না। আমার কথা শোনো। তোমার মন বলছে, তোমাকে চুপ করে থাকতে হবে, গভীরভাবে উপলব্ধি করতে হবে, পথ খুঁজতে হবে। খুঁজতে খুঁজতেই পথ পেয়ে যাবে, শুধু খুঁজো আর খুঁজতেই থাকো। নিজেকে তৈরি করার জন্য এত সময় ব্যয় করো যেন অন্য কিছু মনে আসার বাড়তি কোনও সময় না থাকে। মনের কথাগুলি শুনো এবং মেনে চলো, অনিলা!
এখন থেকে অপমানিত হলে গায়ে মাখো এবং উপযুক্ত ফিডব্যাক তৈরি করো নিজের মধ্যে। মনে রেখো, তোমার সাফল্য অনেক জোরে কথা বলবে, তাই তুমি কাউকে কোনও উত্তর দিতে যেয়ো না। তোমার সাফল্য সবার নীরবতাকে কিনে নেবে এবং যদি সফল হয়ে যাও, নিজের আলাদা স্থান তৈরি করে নিতে পারো, তা হলে সবাই তোমার কাছে আসবে তোমার কেয়ার নিতে। তখন তোমাকে আগ বাড়িয়ে কাউকে নিজের মূল্যটা জানাতে হবে না। নিজের মর্যাদা কারও কাছ থেকে খুঁজে নিতে হবে না বরং সবাই এসে তোমাকে মর্যাদা দিয়ে যাবে। তোমার কাছে উপদেশ চাইবে, সুতরাং জ্ঞান-দেওয়া বন্ধ করো। অনুগ্রহ করে তোমার মুখটা বন্ধ রাখো এবং তুমি এই বন্ধরাখার মাধ্যমেই শিখবে, কীভাবে শুনতে হয়, কীভাবে কৌশলে অন্যের কথা শুনতে হয়, অন্যের কাছ থেকে শিখতে হয়, তোমার জীবনের জন্য কাজ করতে হয়, তোমার স্বপ্ন পূরণ করার জন্য লড়তে হয় নিজের সাথেই এবং তুমি যদি তা করতে পারো, তবে জীবনে যা-ই চাও, তা-ই পাবে!
তোমার সামনে এসে এসে নিজে কিছু একটা করার আগেই যারা বেশি কথা বলে, তাদের জীবনে সুন্দর সময়টা আর আসে না। তাদের জীবনটা এরকমই থেকে যায় সারাজীবন, অর্থাৎ এক বাচালের জীবন বাচালতায়ই কেটে যায় আমৃত্যু! আর কিছুই ভেবো না, কেবলই নিজেকে নিয়ে ভাবো। কী করলে নিজেকে আর একটু এগিয়ে নেওয়া যাবে, কী করে নতুন পথের সন্ধান পাওয়া যাবে, তা খুঁজতে খুঁজতেই তুমি পেয়ে যাবে। জানোই তো, ছাত্র যখন তৈরি হয়, শিক্ষকের তখন আগমন ঘটে! আবারও বলছি, নিজেকে অফুরন্ত সময় দাও, কিছু একটা করো তোমার স্বপ্ন সত্যি করতে, যা তোমাকে চেনায় নতুনভাবে, যা হলে তোমার আশেপাশের মানুষ তোমার পুরনো সব ব্যর্থতার কথা ভুলে যাবে। সবাইকে সময় দেওয়া বন্ধ করে দাও। নিজেকে তৈরি করার কাজে সময় দাও, নিজেকে ঘরের মধ্যে দরজা বন্ধ করে আটকে রাখো। জীবনটা ফাজলামো করার জিনিস নয়, অনিলা! নিজেকে এতটাই উজ্জ্বল করো যাতে সেই আলোতে সবার চোখ ঝলসে যায়! আর শুধু সে আলো অন্যদের চোখে ফেলে ফেলে সবাইকে অবাক করে দাও! একেবারে তাক লাগিয়ে দাও! তোমার আলোয় ওদের আলোকিত করো!
(চলবে…)
3 comments
সব সুন্দরের শেষটা সুন্দরই হয়। অনেক সুন্দর কথা বলেছেন স্যার ।আপনার লেখা পড়ে অনেক অনুপ্রেরণা পাই । নতুন করে কিছু করতে এবং নিজেকে গড়তে।
Dada apnar paa e lokkho koty salam. Apnar likha tajokhn porsilm dada tokhn seta likha silo na miracle vabe amar jiboner sathe ghote jaoa ghotona gulo porsilm. Nijer kase khub obak lagsilo ata vebe j amar kosto gulo amar sathe ghote jaoa ghotona gulo anilar jiboner sathe mile jasse. Nije k r nijer sopno gulo kharai felsilm dada. Sotty dada try korbo nijer sopno k puron korar jonno atotai somai dibo jeno onnor sukher songserer chinta mathai na ase. Salut dada apna k. Love u so much….💙💙
Failure is the Pilar of success.কথাটি যতো টা সহজে বলা যায় তার চেয়ে অনেক কঠিন করে দেখানো। আমাকে একজন খুব ভালোবাসতো কিন্তু মুখে প্রকাশ করতে পারতো না।আমি যখন বুঝেছিলাম তখন ঠিকই তার ভালোবাসা সাদরে গ্রহণ করি।তার দুঃখ, কষ্ট সবকিছুর ঢাল হয়েছিলাম। খুব করে ওযতো টা বাসতো তার চেয়ে ও বেশি বাসতে থাকলাম।আর আজ দু’বছর পর আমিই তার কাছে অচেনা হয়ে গেলাম। আমাকে সেআর পাত্তা দেয় না, মেসেজ রিপ্লাই দেয় না,তার জন্যে আজও অপেক্ষার প্রহর গুনে ১৮ঘন্টা অতিক্রান্ত হবার পরও আমার গলা দিয়ে কোনো দানাপানি পরে না।সে জানে আমি কষ্টে আছি তবুও একটা মেসেজ রিপ্লাই দেয় না।আমি আজ ছেচড়া হয়ে গেছি তাকে ভালোবেসে। কোনোমতেই তাকে ছাড়া চলছে না। আমার কি দোষ ছিল তার ভালোবাসার জবাবে ভালোবেসে!!??