প্রত্যাশাহীন প্রত্যুত্তর

প্রতীক্ষার ঘাটে আজ বেঁধেছে নোঙর আমার তরী,
দেবালয়ের বিজন আঙিনায় পূজিত দেবতাকে পেতে
যে বরটা চাইতে হতো, সে বর আমি কখনও চাইতে পারিনি,
তাই তো ঘাটে এসেছি বেঁধে আমার ছোট্ট তরী।


না, আজ কোনও পিছুটান নেই,
নামিয়ে এসেছি সবটা বোঝা ওপারেতেই।
কাঠের ছোট্ট ঘরটির হিমশীতল দরজার
ওপাশ থেকেই এসেছি ফিরে আজ চিরতরে।


বড্ড ভারহীন লাগছে আজ নিজেকে,
সাঁঝের বাতিটি ধরিয়েছি আজ,
সলতে রয়েছে অপেক্ষমাণ…
কিন্তু সে জানে না এখনও,
অপেক্ষা নয়, প্রতীক্ষাই ওর ভবিতব্য!


দেবালয়ের দেবতাকে যে মর্ত্যেই মানায়,
নয় এক অভাগিনীর ছোট্ট কুঁড়েতে।
সে অভাগিনীর ঠোঁটের পবিত্রতা আছে যদিও,
বোধের পরিপক্বতা নেই ততটা গভীরভাবে।
নীরবে নৈবেদ্য সাজিয়ে, পুজোর ফাঁকে
তার নিঃসঙ্গ উপস্থিতি অনুভবে নেওয়াই
সে অভাগিনীর নিয়তি কেবল।
তাই তো আজ অগোছালো কথোপকথনের
প্রতীক্ষাই তার শেষ আশ্রয়!


ক্ষতি আর কী-ইবা তাতে?
এ-ই যদি হয় তার অস্তিত্বটুক,
তবে হিসেবে ক্ষতির ঘরে থাকবে কী আর!
আছে শুধুই কিছু অপ্রকাশ্য স্বস্তি, খুশি!


কোন এক হাওয়া এসে আজ মনোভবনে
নিঃসঙ্গ সংগোপনে দোলা দিয়ে যায়।
শত বছরের পাহাড়সম বেদনাগুলি
আজ কী হাহাকারে ওদের উপস্থিতির খবর বলে।


দিনের চোখে চোখ রাখতেই রাত হয়ে ওঠে স্পর্শকাতর!
আজকের এ প্রভাত যেন অশ্রুসিক্ত সব কামিনীর
যাতনার এক সূতিকাগৃহ!


আজ আমার বিদায়বেলায়, যত ব্যথাভার,
যত্নে এনেছি এই সমাসন্ন গোধূলিলগনে।
এইটুকুই শুধু...কোনও এক নীরব শীতল সত্যান্বেষীকে দেওয়া
আমার প্রত্যাশাহীন প্রত্যুত্তর!