প্রেমে ওঠার পর

  ভেবেছিলাম, চলেই যাব!
আজ মনে হয়, মরে-যাওয়াটা ব্যর্থ আরও, পুরনো ধাঁচের!
মরব কেবল ভাল কিছু করার পরই, এর আগে নয়!
ছোট্ট মনে, ব্যর্থ প্রাণে মরব কেন?
জন্মে গেলে বাঁচতে যে হয়--সে দায় মানা কী যন্ত্রণার!
তবু কী অদ্ভুত! বাঁচার নেশায় সবই তো চলে!
 
থাকলে জীবন, কষ্ট থাকেই--
একটু কমে বাঁচতে গেলে সে কষ্টই উল্টো বাড়ে!
আর কতটা কষ্ট পেলে দেয়াল হবো!
আর কতটা কষ্ট পেলে মানুষ হবো!
সবচে বেশি কষ্ট যেটুক--সেটাই আসুক!
আর কিছু নয়, একটুখানি কষ্ট দেবে?
 
লোকে নাম দিয়েছে--ভালোবাসা!
তাকে দেখলে চোখে--মন্দ ভীষণ!......ভালো তো নয়ই, মন্দ-বাসা!
ভাল নয় যা--‘ভালোবাসা’ নাম!
মন্দবাসায় বাঁচলে যদি বাড়িওয়ালাকে চেঁচাই সুখে,
মন্দমন্দ ভালোবাসায় বাঁচলে কেন চুপ করে রই?
ইটপাথরের যে বাসাটা--মন্দবাসা!
মনপাথরের যে বাসাটা--মন্দবাসাই!
 
: এই মেয়েটা! বেকার নাকি? কাজটাজ নেই?
জীবন ফেলে সারাক্ষণই এইখানে কী? হুঁ?
: ব্যস্তবাবু, জীবন বাঁচে তোমার কাছে, বোঝো না তাও? পাগল নাকি?
জীবন ফেলে কোথায় যাব? হুহ্‌!
তোমার যত বান্ধবী আর মেয়ের ঝাঁপি,
দিব্যি ওদের, যাও না চলে এ মন থেকে!
না যাও যদি, অভিশাপ নাও--সুখ-পাখি সব পালিয়ে যাবে!
 
এই যে আমি আধাই পাগল, বোঝোনি আগে.....তাই না, বলো?
প্রমোশনের ঠ্যালায় এখন পুরাইও পাগল!......থ্যাংক ইউ, স্যার!
হাসছ তো খুব? বেশ মজা, না?
কাঁদলে আমি, ভালই লাগে, এ-ই না, বলো?
পাগল করে, গেছো সরে--খুব বাহাদুর!
যাব নাতো, থাকব বসে তোমার কাছেই!
ভাবছ, কেমন বেহায়া, না? দেরিতে হলেও ধরেছ ঠিকই! বুঝলে আগে...বেঁচে যেতাম!
 
এই ছেলেটা! কী হয়েছে? কাউকে তোমার মনে ধরেছে?
আহা, আহা! আমারও যদি ধরত মনে!
হাত ধরে যার, বাঁচতে শিখি, সে-ই যখন হাতটা সরায়,
বুঝতে পারো, কেমন লাগে?
এই! আসো না, একটু করে!
আমার যে খুব ইচ্ছে করে,
পাশে বসিয়ে দেখবো তোমায় আগের মত!
 
জানো, হাসতে এখন ভয় করে খুউব!
যে দিন কাটে হাসির সুখে, সে দিনই দেখি পালায় দ্রুত!
টিস্যুর মত--বন্ধু যত, বদলে ফেলো! কেমনে পারো?
হত যদি এমন, এক তোমাতেই কাটতো জীবন,
তোমারও, প্রিয়, এক আমাতেই কাটতো জীবন,
জীবন তখন নদীর মতন...আর কী লাগে?
 
ঘৃণা করি--ভালোবাসি, তাই!
ভালোবাসি--তুমি কেবল তুমি বলেই!
এই! বলতো, অমন ঘৃণা কেমন ঘৃণা?
আচ্ছা, তবে ভাল থেকো.....
আমি নাহয় থাকব দূরেই,
ভালোবাসায় কাউকে বেঁধো।
 
মনের ভেতর তোমার বাড়ি--মনটা এমন বিশ্রী কেন?
ভুল বকছি? হয় যদি তা......ভুলই জীবন!
সারাদিনেও কোনও কাজ নেই....বারেবারেই তোমায় ভাবি,
ঘুমটা ভাঙে তোমায় ভেবে, সন্ধে নামে তোমায় দেখে,
ঘুম আসে না, তুমি এসে যাও!
জানো, ‘ভাবনা’ নামের রোগ এসেছে, আমি সে ভাবনারোগের প্রথম রুগী,
ভাবতে-ভাবতে মরেই যাব--রোগটা এমন!
 
বলতে পারো, এই মরার প্রেম কেন হায় রাতেই বাড়ে!
ভোর ফুটে যায়, ঘুম আসে না তবু কেন হায়!
এ হৃদয় যেমন তন্ত্রে চলে--একনায়কের,
প্রেমের ছোরায় দৃষ্টি ফুঁড়ে দেয় করে ভাগ,
শূন্য আমার ঢাকতে এ মন কী ছলনায়
বেঁধেছিলে হায়! কংকাল--সেও তো দেখি ঢাকাই পড়ে.....
কষ্ট ঢাকা......এতই সোজা?
 
রাগ কোরো না, বলি, শোনো,
এ জীবনে তুমি ছাড়া নেই বন্ধু কোনো।
আমি যে তোমার শখের ঘুড়ি,
তুমিই নাটাই, তুমিই সুতো,
আমি কেবলই তোমার মতো,
উড়বো ঘুরে, যেমনি বলো।
দুঃখরথের ওই চাকা আর ঘুরবে কত? খুব তো হলো!
লক্ষ্মী আমার, রাগটা ঝেড়ে দুহাত ধরো, ঘরে চলো!