ভাবনাদেয়ালের পলেস্তারা (২য় অংশ)

ভাবনা: আট।

…………………………

“ম্যাচুরিটি শেষ হলে কি টাকাটা আবার জমা রাখবেন?”

“জ্বি।”

(সামনে বসেথাকা একজন অসুস্থ বৃদ্ধলোককে দেখিয়ে)

“তাহলে, আর উনার নামে না করলেই বোধহয় ভাল।”

“মানে?”

“না আসলে বলছিলাম কী, উনার কখন, কী হয়ে…….মানে, উনি অসুস্থ মানুষ তো, তাই…….”

“না না, ঠিক আছে, ব্যাপারটা আমার মাথায়ও আছে, আমি এমনিতেই অন্যনামে করতাম।”

কথাটা শোনার পর, বৃদ্ধ লোকটার অসহায় চেহারাটা……তাকিয়ে দেখতেও কষ্ট লাগছিল। হয়তো উনি ভাবছিলেন, “হিয়ারিং এইডটা প্রায়ই বাসায় ফেলে বেরিয়ে পড়ি, অথচ আজকেই মনে করে লাগাতে হল?” এখন তাঁর, অনেককিছুই না জেনে, সুখী থাকার বয়স।

“তবে হ্যাঁ, উনাকে নমিনি রাখতে পারেন।”

“না না, বাবাকে আর না, আমার ছোটভাইকে নমিনি করবো। তাহলে, আর কোনো টেনশনই থাকল না।”

“হ্যাঁ হ্যাঁ, ঠিকই বলেছেন। ওটাই বেটার।”

এরপর, একটু দূরে বসা, উনার সাথেআসা বৃদ্ধ লোকটাকে, মুখে রুমাল চেপে বাথরুমের দিকে যেতে দেখলাম। পুরু চশমাটা, মাঝেমাঝে, বেশ কাজে দেয়, শুধু দেখতেই না, নিজেকে আড়াল করতেও………এ বয়সেও, উনি ছেলের সামনে কাঁদতে চান না…….হয়তো, এখনো, অভ্যেসটা হয়ে ওঠেনি।

মানুষের মনে, কত সহজেই, চলে আসে, সে তার বাবার পর মরবে! বাবা আগে এসেছেন, অতএব, বাবা আগে যাবেন। বেঁচেথাকার সময়টাতে, আমরা ধরেই নিই, আমরা কোনোদিনও মরবো না। আমরা বিশ্বাস করতে পছন্দ করি, মৃত্যুর হাত থেকে, আমরা, বৃদ্ধ লোকটির চাইতে নিশ্চিন্ত, নিরুদ্বিগ্ন।……..অথচ, মৃত্যুর পরিসংখ্যান ভিন্ন কথা বলে।

কথা হচ্ছিল, সোনালি ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা ও জনৈক ব্যক্তির মধ্যে। ব্যাংক কর্মকর্তা হয়তো ঠিক কথাই বলছিলেন, খুবই স্বাভাবিক ও সাধারণ কথাই বলছিলেন। যেহেতু বৃদ্ধ লোকটার জীবনের সময় প্রায় শেষ হয়ে এসেছে, কাজেই তাঁর নামে আর অ্যাকাউন্ট করার কোনোই অর্থ নেই। কিন্তু, কখনো-কখনো, এই অতি সাধারণ, স্বাভাবিক ব্যাপারগুলোই যে, একটা মানুষের মনটাকে—কতটা অস্বাভাবিক, অসহনীয় যন্ত্রণা দিতে পারে, তা কেবল সে-ই বুঝে, যে পায়। জীবনের সবচেয়ে স্বাভাবিক, সাধারণ ঘটনাগুলোর মধ্যেই সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাপারগুলো লুকিয়ে থাকে, আমরা ওদের দেখতে পাই না, অথচ ওরা আমাদের ঠিকই দেখে, দেখে রাখে, দেখে যায়, আর সময় বুঝে, চরম আঘাতটা করে বসে! তখন, হয় সহ্য করা, নতুবা শেষ হয়ে যাওয়া—এর যেকোনোটি মেনে নিতে হয়।

টাকার তো নিজের কোনো মূল্য নেই, মানুষের জন্যই তো টাকার মূল্য। অথচ, এই মানুষগুলোই কিনা, একদিন—সত্যিসত্যিই মূল্যহীন হয়ে পড়ে…….কিন্তু, টাকার মূল্য থেকে যায়। জীবনটা এরকমই—মূল্যহীন টাকার মূল্য, সবচাইতে মূল্যবান ধনটিকেও একেবারেই মূল্যহীন করে দেয়।

ভাবনা: নয়।

…………………………

সোনার তরী’টা হাতে নিলাম।

ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই— ছোটো সে তরী/ আমারি সোনার ধানে গিয়েছে ভরি।…….পড়ছি আর ভাবছি, রবীন্দ্রনাথটা, এতো বোকা কেন!? সোনার ধানের জন্য যদি—আমারই জায়গা না হয় তরীতে, তবে দরকারটা কী বাপু অতো সোনার ধানফানের!? তরীতে কোনো ধান থাকবে না, শুধু তরী থাকবে, এক মাঝি থাকবে—অনেক জায়গা, নো টেনশন, ডু ফুর্তিটাইপ তরীই লাগবে আমার। তরী তীরে এলে, আমি একাই লাফাতে লাফাতে তরীতে উঠব! আরাম করে গা এলিয়ে দেবো। শরীর-চোখ-মন নাচাবো। আহহহহ্! কী সুখ! কী সুখ! হাওয়ায় পতপত করে পাল উড়বে, তরী আমায় ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। আহা আহা! ওসব, বরষাটরষা বাদ—শাদা গাভীর পালের মতো হাল্কা মেঘ চরে বেড়াবে, মেঘফুঁড়ে রোদ্দুর ছড়িয়েছিটিয়ে আকাশটাকে ঝকঝকে ফকফকে করে দেবে। আকাশ নেমে আসবে নিচে, আরও নিচে, শুধুই আমার জন্য—হাত বাড়ালেই ছুঁয়ে ফেলা যাবে। আদরের আকাশটার বদলানো, সিধা জলের খেলা, এলো হাওয়ার নাচন দেখে দেখে মনটা ভরে উঠবে। দুপাশের গ্রাম, মাঠঘাট, পথ, গাছগাছালি হাতছানি দিয়ে ডেকেই যাবে—আয় আয়! যেতে পারবো না একছুটে, তাই, আকর্ষণ থাকবে বেশি। দুধারের খেত হতে কৃষকরা সোনা-সোনা ধান কেটে নেবে, রাখাল তার বাঁশির সুরে পাগল করে দেবে, গাছের ছায়ায়-ছায়ায় ঘুঘুর ডাকে ক্লান্ত দুপুর জিরোবে, আর আমি একফাঁকে টুক্ করে তরী থেকে নেমে পড়বো। রাখালের গামছাটা নিয়ে নিজের মাথায় বেঁধে বাঁশিহাতে একটা ছবি তুলে ফেসবুকে আপলোড করে দেবো; কিংবা, ওর লালগরুটার মুখের কাছে আমার ঠোঁটদুটোকে সামনের দিকে বৃত্তাকারে বাঁকিয়ে, চোখজোড়া কুঁচকে ফেলে, চুমুর ঢঙে ক্লিক্ করে এক্খানা প্রিজমায়িত কোষ্ঠকাঠিন্য-সেলফি! আর অমনিই, লাইক আসবে শতেশতে, ‘লুকিং কুউউউল্!’ কমেন্টে-কমেন্টে ভরে যাবে পোস্ট, মনে হবে, “আহা, কী আনন্দ আকাশে বাতাসে!” কেউ যদি গানটান গেয়ে কাছের কোনো নৌকোতে ঘোরাফেরা করে, ওকে কাছে ডেকে একটা গানই নাহয় শুনে নেবো, গান পছন্দ হলে, একটা ক্লাউডনাইন ধরিয়ে দেবো ওর হাতে, কত খুশি হবে ও। ও যদি আরও চায়, পকেটের স্নিকারস্‌টাও খাওয়াতে রাজি, এরপর ও চলে যাক, যেদিকে যেতে চায়। তবে, কোনোমতেই সাথের সবকটা চকোলেট ওর হাতে তুলে দেবো না—পরে কি আমি মুড়ি চিবাবো? আর, যদি মোর ডাক শুনে ও না আসে, তবে একলা খাবো রে! যদি আমায় না-ই চিনে গো সে হায়, আমি কেন নেবো চিনে তারে? আজাইরা! কোনো দরকার আছে? না চিনলে তো পুরাই নগদে বিন্দাস! সেই ক্লাউডনাইন আর স্নিকারস্—দুটোই আমি নিজেই খেয়ে নেবো। ইয়ামমম্মিইইইই…..!! অতো যেচে পড়ে চেনার টাইম কই? ওর করুণা ধুয়ে কি আমি মিরিন্ডা খাবো? রংতুলির আঁচড়ে হঠাৎ জেগেওঠা নদীতে বেড়াবো আর ফেসবুকে স্ট্যাটাস মারবো—আই রক্! তরী রকস্! মাঝি রকস্! নদী রকস্! গগন রকস্! ধান রকস্! তরুছায়া রকস্! খেত রকস্! গ্রাম রকস্! জল রকস্! ঢেউ রকস্! লাইফ রকস্!……রাখাল, লালগরু আর মাঝিকে ট্যাগ করে দেবো, হাউ ইউ আর ফিলিং-এ অ্যাড করে দেবো—অসাম্ ইমো, চেকইনে দেবো—নদীর বুক!……..লাইক আসবে শ’য়ে শ’য়ে। কমেন্ট আসবে, “এনজয়, ড্যুড্!” শেয়ারে লোকে লিখবে, “ইটস্ লাইফ—লিভ ইট্!”

…….আহা আহা আহা! এসব, স্রেফ ভেবেও, আনন্দে তাথৈ-তাথৈ করে নাচব বলে, এক পা মাত্রই উপরে তুলব-তুলব করছি, আর অমনিই, কোন বেরসিক, নিচ থেকে শক্ত করে পা টেনে ধরে বলল—“ওরে বোকা মূর্খ গাধা! সোনার ধানই যদি তোর কাছে না থাকে, তবে তোর তীরে তরী আসবে কেন? আসলেও, তোর কাছে ভিড়বেই বা কোন দুঃখে!? কী আছে তোর?”

হায়! আমার সমস্ত সুখ কর্পূরের মত উবে গেল। প্রেম করার আগেই, ছ্যাঁকাট্যাকা খেয়ে ব্যাঁকা হয়ে গেলাম। মনে-মনে ভাবলাম, সত্যিই তো, তরী তো শুধু আমার জন্য তীরে আসবে না, আমার যা মূল্য, তা তো শুধুই আমার কাছেই, ওতে তরীর কী এসে যায়?—এ সত্য যে বড় সত্য! এ সত্যটা মানতে বুকটা যতই ব্যথায় কুঁকড়ে যাক্‌, এটা অস্বীকার করি কীভাবে?

বুঝতে পেরেছি, ওই হতচ্ছাড়া দাড়িওয়ালা বুড়ামিয়াই ঠিক, আমিই বরং বোকা।

ভাবনা: দশ।

…………………………

“এখন অনেক রাত……খোলা আকাশের নিচে…….জীবনের অনেক আয়োজন……” সে কী কথা!? এই সাতসকালে—অনেক রাত!? মানেটা কী, বাপু? আচ্ছা, হবে না-ই বা কেন!? প্রকৃতির জন্য ভোর হোক, সকাল হোক, যাচ্ছেতাই হোক, আমার মনের ওখানে তো রাত, রীতিমতো ঘনকালো! অসুবিধে তো নেই! আমার মনের ভেতরটা যদি রাতের আঁধারে ডুবে থাকে, আর সেখানে ওই গানটাই বাজতে চায়, তবে আমার কী-ই বা করার থাকে? হোক সকাল, আমি এ সকাল মানি না। “এ কোন সকাল, রাতের চেয়েও অন্ধকার……..” আমি সকালকে ভালোবাসতে ভুলে যাবো। আচ্ছা, পাখিগুলো, ভোরেই কেন কিচিরমিচির করে? অন্যসময়ে করে না কেন? ওদের কিচিরমিচির শুনতে চাইলে, ভোর থাকতেই কেন ঘুম থেকে উঠতে হবে? আমি যে ওদেরকে ভালোবাসি। তাহলে, কেন ওরা আমার সময়মত কিচিরমিচির করবে না? যাকে ভালোবাসি, সে যদি, যা চাই, তা না দেয়, তবে কেমনটা লাগে? আমার তো ভালোবাসার মানুষকে ওর পছন্দের জিনিসটা দিতে না পারলে, নিজেরই খারাপ লাগে। ওদের কি তেমন লাগে না? নাকি, ওরা আমাকে ভালোইবাসে না? আমি কি এমনকিছু চাইছি, যা দিতে গেলে, ওদেরকে নতুন কিছুতে অভ্যস্ত হতে হবে? ওরা তো ওইসময়ে, মানে ভোরটা একটু ফুরোলে আরকি, জেগেই থাকে, একটু কিচিরমিচির করে দিলেই তো হয়! ভোরটাই ওদের কিচিরমিচিরের সময়? আচ্ছা, সময়ের কাজটি অসময়ে করা যাবে না কেন? অসময়ও তো, একটা সময়ই, তাই না?

সকালে, যে দুটো প্রশ্ন মনে হলে মেজাজ খারাপ হয়—এক। আজ কী নাস্তা করবো? দুই। আজ কী রান্না করবো? সকালে কী নাস্তা করবো, সেটা ঠিক করতে করতে দুপুর হয়ে যায়—নাস্তা আর করা হয় না। দুপুরে কী রান্না করবো, এটা ঠিক করতে করতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। লাঞ্চের সময়ে ব্রেকফাস্ট—ব্রাঞ্চ। সেটাও হয় না আমার। আমার হয়, ডিনারের সময়ে ব্রাঞ্চ—ব্রানার—আমার বানানো নতুন শব্দ। কোনো সমস্যা!? ব্রেকফাস্ট লাঞ্চ মিলিয়ে ওরা ব্রাঞ্চ বানালো, আর আমি লাঞ্চ ডিনার মিলিয়ে ব্রানার বানাতে পারবো না? নিশ্চয়ই পারবো। ইংরেজদের দেশে জন্মাইনি, ঠিক আছে, কিন্তু ব্যাটাদের ভাষাটা তো শিখেছি, তাই না? আমিও নাহয় একটু সমৃদ্ধ করে দিই ওদেরকে! রাতে, সকাল-দুপুরের খাবার খাওয়া যাবে না, এটা কোন কেতাবে লেখা আছে? আমরা খেয়ে ফেললেই তো হয়। আমরা নিয়ম বানাই, নাকি, নিয়ম আমাদের বানায়? কথা হল, ভোর দেড়টায় উঠে এখনো ব্রেকফাস্ট করিনি, ঘড়ির কাঁটা ২ ছুঁল বলে! লুচি আর ডাল খেতে ইচ্ছে করছে, কিন্তু বানাতে ইচ্ছে করছে না, বাইরে গিয়ে খাবো, সেটা তো ভাবতেও পারছি না! তাহলে, কী আর করা! থাকো উপোস! এই ভরদুপুরের কড়া রোদ। প্রকৃতির এক অন্যরকম নীরবতা। ঘরের মেঝে, সিলিং, দেয়াল, চৌকাঠগুলো, জানালা—সবকিছুই মিলেমিশে রৌদ্রকে আদর করে-করে ঘরে ডেকে আনছে। দুপুরের ঝাঁঝাঁ প্রকৃতি কেমন একটা নেশা ধরিয়ে দেয়। মনে, শরীরে, হৃদয়ে, ভাবনায়—ভালোবাসা, মাদকতা জাগায়। কে বলে, রোমান্টিসিজম্‌ কেবলই রাতের দখলে? ইসস্‌! যদি রোমান্টিসিজম্‌ চিবিয়ে খেয়ে ফেললে আর খিদে না পেত! ভালোবাসা চিবিয়ে খেয়ে পেট ভরানো গেলে ওসব ফালতু চাকরিফাকরি করতোটা কে?

ভাবনা: এগারো।

…………………………

কী অন্ধকার হয়ে গেছে। বৃষ্টি, সাথে ঝড়ও। এমন অন্ধকার দেখে কে বলবে, এখন দুপুর বারোটা বাজে! আপনি এখন কোথায়? বাসে? কতদূর গেলেন? দেখুন না জানালাটা দিয়ে—বৃষ্টিইইই…….ভাল লাগবে। নেক্সট স্টপেজে বাসটাকে একটু থামতে বলুন না! আমি চলে আসি একছুটে? দুই মগ গরমাগরম কফি নিয়ে বাসে উঠি। চারপাশে অন্ধকার, মধ্যরাত্রির নীরবতা, বাসের ছুটেচলা, ঝুউউউমম্‌ বৃষ্টি, বাতাসে বৃষ্টির ঘ্রাণ, দুই মগ কফির উমমমম্‌! আর আমরা দুজন। জীবনটা সুন্দর, না? জানি, এ সবই মিথ্যে। মিথ্যে জীবনটাকে ঘিরে, সময়ে-সময়ে কতগুলো মিথ্যে অনুভূতি, শনিগ্রহের বলয়ের মতো, জীবনকে ঘিরে রাখে। অহেতুক, অবান্তর, গন্তব্যহীন অনুভূতি। কিন্তু, বাস্তবতা হচ্ছে, জীবনে বেঁচে থাকতে এই মিথ্যে অনুভূতিও লাগে। একেকটা সময়, পাশে কাউকেই পাই না, বড় অসহায় লাগতে থাকে। ঠিক তখনই, কোত্থেকে যেন সেসব অনুভূতি এসে পাশে দাঁড়ায়। বলে, আমি নাহয় মিথ্যেই, তবুও তো আছি পাশে! আমি না থাকলে, কাকে নিয়ে থাকতে, বলো? এই পাশেথাকা, সাথেথাকা, সঙ্গদেয়া—এসবও কি মিথ্যে? মিথ্যে অনুভূতি নিয়ে হাসিমুখে বেঁচেথাকাটাও জীবন! ওই অনুভূতি না থাকলে, হয়তো বেঁচে থাকাই কষ্টের হয়ে পড়ত। বেঁচে আছি—এই-ই তো দারুণ! যা বাঁচিয়ে রাখে, তা তো আরও দারুণ! হোক মিথ্যে, নিজের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে ভাবি, এই যে বেশ আছি ওকে নিয়ে, এটা কি সত্যি নয়? ও যে সত্যের চাইতেও বেশি সত্য, ধ্রুব! নিজের কাছ থেকেও, নিজের সমস্ত অনুভূতি লুকিয়ে ফেলতে পারলে খুব ভাল হতো। কিন্তু হায়, যতই লুকোতে চাই, ততই প্রকট হয়ে ধরা দেয়! যখনই রাস্তায় বের হই, চোখে সানগ্লাসটা থাকে। লোকে ভাবে, ওটা ফ্যাশন, অথচ, ওটা প্রয়োজন—কষ্টের ব্যাপার, আমি ওই দুটোর একটা কারণেও চোখ ঢেকে রাখি না। সানগ্লাসটা চোখ ঢাকতে যতটা দরকার, তার চাইতে বেশি দরকার কান্না লুকোতে। কড়া রোদে রাস্তায় হাঁটতে-হাঁটতে কত যে কাঁদি রোদচশমার আড়ালে, সে খোঁজ কেবল রেই-বেন’ই জানে। কখনো-কখনো, নিজের অবস্থা দেখে, নিজেই আনমনে হেসে ফেলি। বুঝেছি, শেষ পর্যন্ত, এ দুঃখকেই বিয়ে করে সংসারী হতে হবে আমাকে। তোরা যে যা বলিস ভাই, আমার এই বিয়েটাই চাই!

ভাবনা: বারো।

…………………………

আমার কত ইচ্ছেকে যে প্রশ্রয় দিতে ইচ্ছে করে! এই যেমন, প্রিয় মানুষের কণ্ঠস্বর শুনতে ইচ্ছে করে। ওরা যে শোনায় না! ফোন করি, কেটে দেয়। পৃথিবীতে, প্রিয় মানুষগুলোই কেন অমন নিষ্ঠুরতা নিয়ে চলে? একপৃথিবী ব্যস্ততা নাকের ডগায় নিয়ে চলে ওরা। যাদের ভাল লাগে না, ওদেরই কোনো কাজ নেই। ভাবনায় আসে, আহা! যদি একটা গান রেকর্ড করে পাঠাতো—হোক ধেড়ে গলায়, তাও, প্রিয় মানুষের গান তো! পাবো না জানি, তবু, ইচ্ছে করে খুশি হয়ে উঠতে তো আর দোষ নেই। যাকে ভালোবাসি, কিন্তু পাবো না, ইচ্ছে করতে ভাল লাগে—সে বিয়ে না করুক। তা কী আর হয়? পৃথিবীসুদ্ধ মানুষ বিয়ে না করে বসে থাকবে, অথচ, ও-ই সবার আগে আগে দৌড়ে-দৌড়ে ঠিক বিয়ে করে ফেলবে। এটাই নিয়ম। ভালোবাসার মানুষের বিয়ের দিন মনখারাপ করে না থেকে, বরং কীভাবে বিয়েটা মজা করে খেয়ে আসা যায়, তা শিখে নিতে ইচ্ছে করে। একজন আছে, ‘সে’ সামনে থাকলে, তার মাথায় এখন এক বালতি পানি ঢেলে দিতাম! জানি না কেন ইচ্ছে করছে। ভালোবাসা, তা-ই করতে বলছে যে! আমার কী দোষ!? তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিতেও ইচ্ছে করছে। কেন সে, আমার মেসেজ না পড়েই মনে যা আসে, তা-ই লিখে আনসার পাঠিয়ে দেয়, তার কাছে তা জানতে চেয়ে, সরাসরি তার নাকের উপর দুম্ করে একটা ঘুষি মেরে দিতে ইচ্ছে করছে। ঝুউউউম্ বৃষ্টিতে, তাকে, কিংবা প্রকৃতিকে ভিজে যেতে দেখতে ইচ্ছে করছে। একা, তার সাথে কোথাও আমার দেখা হয়ে গেলে, আমি সত্যিসত্যি তাকে খুউব মারবো! কীভাবে মারবো, ঠিক করিনি। আর, টেনে-টেনে ওর চুলগুলি একদম ছিঁড়ে ফেলবো! তারপর, বোতলে ভরে বাসায় নিয়ে আসবো। আমার পড়ার টেবিলের উপর রেখে দেবো, আর মাঝে-মাঝে, ভেংচি কাটবো। ও যদি চায় বাইরে আসতে, আরও শক্ত করে বোতলের ছিপিটা আটকে দেবো। আচ্ছা, ওকে বোতলে ভরে নিয়ে আসলে কি ও আম্মুউউউউ বলে চিৎকার করবে বাচ্চাদের মতো? তাহলে কিন্তু আমিই কান্না করে ফেলব! প্রায়ই তো ইচ্ছে করে, ইচ্ছেগুলোকে, জীবন থেকে দিয়ে দিই—একেবারে ছুট্টিইইইই…….দিই না। ইচ্ছেরা জীবন থেকে চলে গেলে মানুষ বড় একা হয়ে পড়ে। একটা সেলফি পোস্ট করতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু ফেসের অবস্থা ভাল না। সারাদিন বনেবাদারে ঘুরে-ঘুরে চেহারা নষ্ট করে ফেলেছি। তার উপর, গাল চুলকাচ্ছে। চুলকে-চুলকে গালটাল লাল করে ফেলেছি। এমন সেলফি দিলে যদি সবাই বিরক্ত হয়? আচ্ছা, যারা, যেসব মেয়ের চেহারা ভাল না, তাদের ছবিতে লাইক দেয় না—তারা, ওই মেয়েদেরও যে লাইক পেতে ইচ্ছে করে, তা কি বোঝে না? দেখতে ভাল না, ঠিক আছে বাবা, আমার প্রেমে নাহয় না-ই বা পড়লে, তা-ই বলে কি একটা তুচ্ছ লাইকও দেয়া যাবে না? এমন লাইকবিহীন নিষ্ঠুর ফেসবুকে থেকে কী হবে? আমি কি এ ফেসবুকের স্বপ্ন দেখেছিলাম? রাগেদুঃখে, ইচ্ছে করে, সাঁতারটা ভুলেটুলে সাগরে ঝাঁপ দিই। আচ্ছা, সাগরে ঝাঁপ দিলেই কি আবার সাঁতারটাতার কাটতে ইচ্ছে করবে নাকি? নিজেকে বেঁধে যদি নিই, ঝাঁপ দেয়ার আগে—কেমন হবে? আহহহ্…….নিজেকে বেঁধে নিলে, ঝাঁপটা দেবো কীকরে? বেঁধে নেয়ার ইচ্ছেটা কি তবে বাদ? অনিচ্ছেয় যা করা হয়, তা আসলে করা হয়ই না। তবে, ইচ্ছের কাজগুলোই বা করতে পারি কই? সারাদিন যা করি, তা যদি রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে কারো সাথে শেয়ার করতে পারতাম, তবে—প্রতিমাসের স্লিপিংপিলের টাকাটা বেঁচে যেত! আআআআআ…….কানের ভেতরে একটা পোকা ঢুকেছে, বের করতে পারছি না। ওটা কী সুখে লাফাচ্ছে! একদম ধরে আছাড় মারতে পারতাম! হুউউউউ……..এত্তএত্ত খারাপ কেন আপনি? সব আপনার দোষ! সত্যি বলছি, আপনার মনটাকে হাগ…….কানের পোকাটা বের করতে পারলে—শুভরাত…….না থাক্‌! পোকা বের করতে না পারলেও, আপনাকে শুভরাত…….উফফফ্‌! এ তো মহাযন্ত্রণা দেখছি! প্রিয় মানুষ হৃদয় থেকে বেরিয়ে গেলে, আর কানে পোকা ঢুকলে—যন্ত্রণা একই! হায়! ম্যরি কান! কান ম্যরি জান! এহহহ্‌ পোকা আউট! ইয়েএএএএ…….অনেক-অনেক মারতে ইচ্ছে করে—হাতে কিংবা জালিবেত দিয়ে। কাকে, কেন—জানি না, তবে, ইচ্ছে করে…….আচ্ছা, মনখারাপের সময় মানুষ কী করে? খারাপ মনটাকে ভাল করতে, কে কী ধরনের সফল বা ব্যর্থ চেষ্টা করে জানি না, তবে, আমি তো একটা সেইরকম গোসল দিয়ে আসলাম। ভালোই তো লাগে, দেখছি! ভাবছি, যদি, ক্রিকেটে শুধুই বাংলাদেশ জিতত, তবে কি, আর কোনোদিনই আমাদের মনটন খারাপ হতো না?

ভাবনা: তেরো।

…………………………

সীমাহীন বিস্তৃত কোনো বিশেষ অদৃশ্যকে ভালো না বেসে, ভালোবাসা আটকে যায় কিনা—ছয় ফুটই নাহয় ধরলাম, অমন কোনো অদ্ভুত জ্যান্ত বস্তুতে! বিবেক, জ্ঞান, প্রজ্ঞা—হাহ্‌ হাহ্‌ হাহ্‌…….জানি, ওসব শব্দ শুনলেও হাসি পায়। তাও কি, ওসব বাজে হয়ে গেছে পুরোপুরি? অক্লান্ত হাতে, নিজের কবর খুঁড়ি নিজেই। সত্যিই, ভাল করে স্বার্থপরটাও হতে শিখতে পারিনি আমরা। আরেএএএ…..এসব কী বলছি? বোকা নাকি? অদৃশ্যের কোনো মূল্য আছে!? যত্তোসব রাবিশ!…….হায়, আমাদের হয়তো, কখনো, লাশ দেখা হয়নি। দেখলেও, সে লাশ আমাদের টানেনি। হায় দ্বৈতসত্তা! অনেক কষ্টে মানুষ কাঁদে। আবার, আনমনে কেঁদে ওঠে অনেক সুখেও—একজন ভাল মানুষের প্রতি মুগ্ধতায়ও চোখে পানি চলে আসে…….মনটা চিৎকার করে কেঁদে ওঠে খারাপ মানুষের নোংরা মানসিকতায় বা তার কাজে। সব পেয়েযাওয়াটা, মানুষের মাঝে এক ধরনের হাহাকারের সৃষ্টি করে—সবপেয়েছির দেশের লোকেরাও সত্যিই ভাল নেই।…….কিছুই না-পাওয়া মানুষ, হাহাকারের মধ্যেই বেঁচে থাকে।—দুটো সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুর বাসিন্দার গন্তব্য তো একই! কেন এমন হয়? হয়তো, এজন্যই—মানুষ শূন্য থেকে আসে, আবার শূন্যেই চলে যায়। তা-ই যদি হয়, তবে, কেবলই সুখ চেয়ে, সুখ পেয়ে কী লাভ? তবুও, মানুষ সুখই যে চায়! হঠাৎই জেগেওঠা এলোমেলো ঝড়ো হাওয়া—সুখ এনে দেয়, কিন্তু, সুখী করে না। তাতে কী-ই বা এসে যায়? একবার যদি ভাবি, এই যে গায়ে এসে লাগছে যে মিষ্টি হাওয়াটা, তা হয়তো প্রিয় কিছু মানুষকে স্পর্শ করে এসেছে…….আহ্‌! তখন সামান্য একটু মৃদু হাওয়ায়ও, মনটা কেমন করে ওঠে, নাচতে থাকে! লোকে বলে, পাগলের সুখ নাকি মনে-মনে। কী জানি! আমার তো মনে হয়, সবার সুখই মনে-মনে। এই মনে যদি সুখের ভাবনাকে জায়গা না দিই, তবে আমায় সুখী করে, এমন সাধ্য কার? মনের বাইরে যতটা দেখা যায়, শুধুই ততটাই মাথায় এনে যদি সুখের সংজ্ঞা খুঁজে ফেরে কেউ, তবে তার চাইতে বড় নির্বোধ আর হয় না। ঠোঁটদুটো থেকে ঝর্ণার জলের মতো সারাক্ষণই হাসি ঝরছে, এমন মানুষও যে কতটা দুঃখে জীবন কাটায়, সে খোঁজ কে রাখে? আবার, অনেককেই দেখি, লাঞ্চের সময়, শার্টে একটুখানি ঝোল পড়ল বলে, ঝোলের দাগে, দুঃখের সাগরে ভাসছে। কে যে কীসের নেশায় বাঁচে, কেউ বলতে পারে না। আশ্চর্যের বিষয়, প্রায়ই মানুষ নিজেই জানে না, সে আসলে কেন বেঁচে আছে, কী পেলে তার ভাল লাগবে, কোন ব্যাপারটায় সে আনন্দ পাবে। আমি খুব কনফিউজড্‌ হয়ে থাকি, ঠিক কীভাবে জীবনটা কাটালে, অনেকদিন পরেও, কখনোই মনে হবে না, “নাহ্‌! জীবনটা একটু অন্যরকম হতে পারতো!” কখনো মনে হয়, ফেলেআসা জীবনটাতে অনেক বেশি সুখ, আরাম, আয়েশ, আনন্দ পেয়ে গেছি, এর চেয়ে ভালোথাকা যায় না, অন্তত আমার ক্ষেত্রে, সত্যিই এর চেয়ে ভালোথাকার প্রয়োজন নেই। তাই, বাকি জীবনটা কষ্টে কাটলেও আক্ষেপ করা একদমই ঠিক হবে না। এবার, কষ্টের জন্য মনটাকে প্রস্তুত করে ফেলা উচিৎ। আবার কখনো মনে হয়, জীবনটা কেটেছে একটার পর একটা বিচিত্র সব কষ্টের আনাগোনায়। কষ্ট, তোর কি একটুও ক্লান্তি নেই রে!? সুখ, কোথায় তুই!? অন্নেক্‌ হয়েছে, এইবার তো একটু ধরা দে বাপ! জীবনের কষ্টগুলো—কখনো নিঃশেষ হয়ে যায় না। সময়ে-সময়ে কেবল রূপ বদলায়। সুখগুলোও, ওরকমই। ভিন্ন সুখ, মূলত একই সুখই—শুধু সুখের রঙটাই ভিন্ন।

ভাবনা: চৌদ্দ।

…………………………

রাইফেল স্কয়ারে বসে-বসে আরাম করে সুসি খাচ্ছি, জীবনটাকে সুন্দর-সুন্দর লাগছে। হঠাৎই সুন্দর জীবনটাতে ধাক্কা এসে লাগল! “দেখ্‌তো, মেয়েটার স্কিন কী সুন্দর! কী ভালোই না লাগছে দেখতে! আর তোর? তোর কী অবস্থা!” মা’র কথায় আমি সেই স্কিনসুন্দরীর দিকে তাকালাম। ওরে বাবারে বাবা! এ মেয়ে কি প্রতিদিন একটা করে মেকাপ বক্স কিনে নাকি!? আর কত সময় নিয়ে তা মুখে ঘষে!? আমার সারাজীবনের সমস্ত সাজ একসাথে করলেও তো এর চেয়ে কম হবে! আমার মতো আবাল আর আছে? আমার রূপের রহস্য, যা কেউ কোনোদিনই জিজ্ঞেস করবে না, তা হলো—মুখে ৩০ টাকার গ্লিসারিন মেখে বের হই! লাখ টাকা খরচ করে যারা সৌন্দর্যের পেছনে, তাদের সুন্দর লাগবে না তো কি আমাকে সুন্দর লাগবে? একবার খুব ইচ্ছে করছিল, ওই সুন্দরীর মুখখানা ধুয়ে, ওর আসল চেহারাটা একটু দেখতে! ওই রোদে, বৃষ্টি নামানোর মন্ত্র জানলে, আমি পড়া শুরু করে দিতাম। ওগো বৃষ্টি, ওর মুখের প্রলেপ ধুয়ে দাও! আজকাল, মেকাপসুন্দরীরা আর ‘ফর্সামুখ, কালোহাত’ স্টাইলে বাইরে আসে না, ওদের বুদ্ধি বেড়ে গেছে—হাতমুখ দুটোকেই, ঘষতে ঘষতে ধবধবে ফর্সা করে বাইরে বের হয়। তবে, যে যা-ই বলুক, অনেক মানুষই কিন্তু ঐ মেকাপধারীদেরই পছন্দ করে। ছদ্মবেশী সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়। কিন্তু আমার মাথায় কাজ করে, আমার ভেতরেই বলি, আর বাইরেই বলি, যা আমার নয়, যা আমি নই—সেই ছদ্মরূপটা নিয়ে মানুষকে মুগ্ধ করায় কী সুখ? অথচ দেখি, যে যতই, মুখে ‘ভাল চাই, ভাল চাই’ করে-করে পাগল হোক না কেন, ঠিকই ধরা দেয় সেই খারাপের মধ্যেই, খারাপেরই মোহে আচ্ছন্ন হয়ে থাকে—যদি সে খারাপটা বাহ্যিকভাবে দেখতে ভাল হয়। ইদানিং, মানুষের মতো সমাজও মেকাপ করতে শিখে গেছে। পার্থক্য শুধু এই, মাঝে-মাঝে ঘষেটষে মেকাপ তুলে যে একটু সত্যিকারের রূপটায় ফিরবে—সমাজের সেই রিমোভারটাই নেই।

ড্রেসিংটেবিলের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে, খোলাজানালা দিয়ে বাইরের বিলবোর্ডে এক্সট্রাফেয়ারনেস বিউটিক্রিমের অ্যাড দেখে, আয়নার দিকে তাকিয়ে, ঠোঁটমুখ বাঁকিয়ে, খুউব জানতে ইচ্ছে করে—ভ্রুপ্লাক করি না বলে কি আমাকে—এক্সট্রাঅসুন্দরী দেখায়? যাকগে, আর ত্যানাপ্যাঁচানো বাদ দিই! আসলে, অসুন্দর চেহারার মেয়েদের মায়ের মনে কোনো শান্তি নেই। মেয়েরা বিয়ে করে মনকে, আর পুরুষরা বিয়ে করে শরীরকে। কী-ই বা করার আছে? অসুন্দর মেয়েদেরকেও যে বিয়ে দিতে হয়! মায়েদেরই বা কী দোষ?

কোথাও যাওয়ার সময়, যখন নিজেকে সুন্দর দেখানোর কোনোই দরকার নেই—তখন, অন্তত কোন সুন্দরীর দেশাতবোনের মতো হলেও দেখাবে!

আর, যেখানে যাওয়ার সময়, নিজেকে সুন্দর দেখানোর খুব প্রয়োজন—সেখানে, নিজেকে দেখতে লাগে, এক্কেবারে শাকচুন্নীর নানির মতো! …..এমনিতেই তো দেখতে শাকচুন্নীর মতো, তখন একেবারে প্রমোশন হয়েটয়ে ছারখার হয়ে যায়।

আপুরা, আপনাদেরও কি এমন হয়?

‘হ্যাঁ’ হলে, কাঁদুন।

‘না’ হলে, নাচুন।