ভাবনাদেয়ালের পলেস্তারা (৫২ৎ অংশ)

ভাবনা: তিনশো আটান্ন

………………………………………

এক। কেউই ব্যস্ত না। It’s all about priority! So, before expecting, think twice, why you should expect.

সময় নেই, তা নয়। সময় আছে, কিন্তু সেটা আপনি কেন পাবেন?

কেউ আগে সময় দিত, এখন আর দেয় না? ভেবে দেখুন তো, আগে কেন দিত?

কেউ আগে সময় দিত না, এখন দেয়? ভেবে দেখুন তো, এখন কেন দেয়?

আমি ওর সময়টা পাবোই পাবো! এটা মনে আসে? Stop expecting, kid! আপনি ভাবছেন এমন করে। ও কি ভাবছে? ও আসলে কী ভাবছে? আপনার ভাবনার দায়টুকু কেউই নেবে না, সত্যি বলছি, কেউই না! নিজের সুখের দায়িত্বটুকু নিজের কাঁধেই রাখুন না! অনেক ভাল থাকবেন ওতে!

একা থাকতে শিখুন, একলা চলতে শিখুন, একা মরতে শিখুন। দেখবেন, বড় ভাল আছেন। কিছুই এক্সপেক্ট করবেন না, একেবারে কিছুই না। সামান্যটুকু পেলেও সেটাকে দারুণ মনে হবে! কে কী করছে, কীভাবে আছে, সেসব নিয়ে একটুও ভাববেন না। নিজেরটা নিয়েই দিব্যি থাকুন না! আরেকজনের জীবনটা কেমন হবে, সেটা ঠিক করে দেয়ার আপনি কেউই না! বিশ্বাস করুন, পৃথিবীতে কেউই ভুল করছে না। যদি ওরকম করে ভাবেন, তবে আপনি ভুল করছেন। আপনার ওইখানে বৃষ্টি হয়, আমার এইখানে হয় না। আপনি বলবেন, বৃষ্টি ভাল। আমি বলবো, বৃষ্টি ছাড়াও তো খারাপ না। কী দরকার আমারটা নিয়ে আপনার বলার? থাকুন না আপনি আপনারটা নিয়ে! পৃথিবীতে সবাই যে যার মতো করে ভাল থাকে, ভাল থাকাটা শিখে নেয়।

দুই। In life, to fail successfully is an art. Life did not come to us with a user-manual. So, it’s our right to use and abuse it. When we refuse to take things as they are, things refuse to take us as we are. You might think, you are special, you are not everyone. Fact is, everyone is everyone. Our life is measured only by the people who measure theirs by us. Sometimes, leaving is living. Life is like a small glass jar. You can never have everything into it and have it at the same time. Death counts not the years you survive, but the years you really live.

তিন। Stop overthinking. “If you’re going through hell, keep going.” Que sera sera — Whatever was, was; whatever is, is; whatever will be, will be. যা হবার তা হবেই। Life didn’t come to us with a user-manual. So, it’s our right to use and to abuse it! Sometimes, failures are just too good! To fail successfully is an art. Deciding what you really want matters. Our problem is, we don’t know what we want. It took me almost 2 decades to decide what I really want. When I’d decided finally, it took me only a few months to get what I really want.

চার। . . . . . . . এই পৃথিবীতে নিজের চিহ্ন রেখে যাওয়া সোজা নয়। এর জন্য ধৈর্য ধরতে হয়, প্রতিজ্ঞা থাকতে হয়। হেসেখেলে সফল হওয়া যায় না। সাফল্যের জন্য প্রতি মুহূর্তে ব্যর্থতার সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয়। তুমি যদি সংগ্রাম করে নিজের জায়গা করে নিতে পিছপা না হও, দশজনের সামনে নিজেকে দিয়ে উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারো আর যত বাধা আসুক না কেন হাল ছেড়ে না দিয়ে লেগে থাকতে জানো, তাহলে আমি নিশ্চিত বলতে পারি, শুধু তুমিই সফল হবে না, তোমাকে দেখে আরও অনেকে সফল হতে শিখবে।

পাঁচ। শিবাজি চট্টোপাধ্যায়ের কণ্ঠে ‘খোঁপার ওই গোলাপ দিয়ে’ গানটা শুনলাম। পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা। আহা, আমাদের যদি একজন পুলক বন্দ্যোপাধ্যায় থাকতেন!

ছয়। আমি তো ছিলাম বেশ নিজের ছন্দে…….কী অপূর্ব! কথাগুলি কী যে সুন্দর!

সাত। অমৃক সিং অরোরার মায়াভরা কণ্ঠে রূপসী দোহাই তোমার! আহ্‌! এটি বাবার প্রিয় গানগুলির একটি। বহুবহু বছর পর আজ হঠাৎ গানটা মাথায় বাজল! আহা, কত বন্ধুও হারিয়ে যায়, কেবল এক গানই কখনো হারায় না। সময় অনেকটা পথ পাড়ি দিলেও সুর ঠিকই থেকে যায় হৃদয়ের কোনো রহস্যময় কোটরে।

আট। ‘সেন্ট অব আ ওম্যান’ মুভিতে আল পাচিনো নাচছেন একটা মেয়ের সাথে। বাজছে ‘ডান্স মি টু দ্য এন্ড অব লাভ’। ভরাট কণ্ঠের গায়কটির নাম লিওনার্দ কোহেন। এই গানের Oh let me see your beauty when the witnesses are gone/ Let me feel you moving like they do in Babylon/ Show me slowly what I only know the limits of/ Oh dance me to the end of love/ Dance me to the end of love এই কথাগুলি বড়ো প্রিয়। আহা!

নয়। সুচিত্রা সেন নিজে গাইছেন………..নতুন গানের নিমন্ত্রণে আসবে কে?……..বনে নয় আজ মনে হয়।

প্রথমটি আমার বিশেষ প্রিয়।

দশ। Flaer Smin – Alone In The Dark

(সত্যিই) ঘরের বাতি নিভিয়ে শুনুন। রক্তও যে কখনো কেঁপে ওঠে, টের পাবেন!

এগারো। লতার জাদুতে জানা থা হামসে দূর বাহানে বানা লিয়ে। এমন অপূর্ব যাদুর নদী!!

বারো। ঈশ্বর যখন নারীরূপে সুরে ভাসেন, তখন ‘আতরদানি’র মতো গানের জন্ম হয়………আহা, বড় প্রিয় গান!চিত্রা সিং, ভালোবাসি!

তেরো। হামকো দুশমান কি নিগাহোন! কী যাদু! কী মোহ! এমন গানও হয়! মনটাকে খুব শান্ত করে দেয়, এমন একটা গান!

চিত্রা সিং—অর্ধেক মানবী, অর্ধেক ঈশ্বরী! আমাদের বড় দুর্ভাগ্য, পুত্রের মৃত্যুর পর উনি আর কখনোই গাইলেন না।

চৌদ্দ। না জেনেবুঝে কারো সম্পর্কে কিছু বলে ফেলো না। এতে কাছের কেউ দূরে সরে যাবে। আয়নাতেও তো কারো মুখ বেশি সময়ের জন্য থেকে যায় না। বড় কারো সাথে চলার সময় দূরত্ব রেখে চলো, নিজের ইগোটা ধরে রাখলে নদী কখনও সাগরে মিশে যাওয়ার আনন্দটা পায় না। …………………………………………………………………………………………………………………………………. আহা, কত মধুর সত্য কথা! জীবনের কত জটিল দর্শন গজলে কত সহজ করে বলা আছে! শুনছি জগজিতের কণ্ঠে Parakhna mat parakhne mein koi apna nahin rahta।

পনেরো। কাজাল চান্দিরামানির কণ্ঠে Woh Humsafar Tha Magar

গানের অর্থঃ যেদিন আমাদের পথ ভিন্ন হল আমাদেরই সায়ে, সেদিন তুমিও কাঁদোনি, কাঁদিনি আমিও। তবু প্রিয়তম হে, আজ এ কী হল, বলো; পারো না ঘুমাতে শান্তিতে তুমি, পারি না আমিও! …………. কী অপূর্ব! একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহতা যাঁদের হৃদয় বিদীর্ণ করেছিল, তাঁদের মধ্যে পাকিস্তানি কবি নাসির তুরাবি অন্যতম। উনি এ অমর সংগীতের স্রষ্টা। যে অসীম বেদনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জন্ম হয়, এ গজলটি তারই এক শোকগাথা। (গজলটি আবিদা পারভীনের কণ্ঠেও আছে, তবে আমাকে বেশি স্পর্শ করেছেন কাজল চান্দিরামানি।)

ভাবনা: তিনশো উনষাট

………………………………………

এক। খুব বেশি হৃদয়গ্রাহী গান আমাকে মাতাল করে দেয়। তেমনই একটা গান garaj baras pyasi dharti। এমন গান যখন শুনি, তখন কেবলই মনে হতে থাকে, বৃষ্টি ঝরে বলে এমন গান আসে না, এমন গান আসে বলেই বৃষ্টি ঝরে। এমন কিছু সুরে যখন ভাসি, তখন মনে হয়, বেঁচে থাকাই সবচাইতে বড়ো প্রার্থনা! নিদা ফাজলির লেখা। উনারা মানুষ নন, ঈশ্বরতুল্য! জগজিৎ, খুব বেশি ভালোবাসি। ভাল থেকো।

দুই। গুলজারের ‘মির্জা গালিব’ মুভির গান আআহ কো চাহিয়ে! ……………সত্যিকারের ভালোবাসার খোঁজ পেতে পুরো এক জীবনও খর্চা হয়ে যেতে পারে! আহা…..! এই গানের লাইনগুলি পড়ার জন্যও সারাজীবন খর্চা করা যেতে পারে! এমন করেও লেখা যায়!!!

তিন। ‘পিঞ্জর’ মুভির গান Haath Chhute Bhi। আহা, কত দিন পর শুনলাম! মাথায় কী এক রেশ ছড়াতেই থাকেন জগজিৎ!

চার। জগজিতের কণ্ঠে Arth মুভির গান Koi Yeh Kaise Bataye। খুব প্রিয় একটা গজল! এই সুর সুরার চাইতেও কড়া!

পাঁচ। ১০ টুকরো ভালোবাসা শেয়ার করি, কেমন?

ফরিদা খানুমের কণ্ঠে আজ জানে কি জিদ না করো

নায়ারা নুরের কণ্ঠে আয়ে জেজব্যয়ে দিল ঘের ম্যয় চাহু

আসরারের কণ্ঠে তেরে ইশক কি ইন্তেহার চাহাতা হু

আলী জাফরের কণ্ঠে কোয়ি উম্মিদ বার নাহি আতি

সুরাইয়ার কণ্ঠে ইয়ে না থি হামারি কিসমাত

আনিতা সিংভির কণ্ঠে রাঙ্গ প্যাইরাহান কা খুশবু জুলফ রেহরানে কা নাম

আসিফ মেহদির কণ্ঠে শুনা হ্যয় লোগ উসসে আঁখ

হাবিব ওয়ালি মুহাম্মদের কণ্ঠে মারনে কি দুয়ায়ে কিঁউ মাঙ্গো

আহমেদ জাহানজেবের কণ্ঠে আপ কি ইয়াদ আতি রাহি রাতভ্যর

ফাউজিয়া আরশির কণ্ঠে হাসতি আপনি হুবাব কিসি হ্যয়

এই দুইদিন গজল নিয়েই আছি। কত মধুর, কত স্বর্গীয়! (ওপরের ১০টা গজলের মধ্যে প্রথমটি বাদে আর কোন কোনটা আগে শুনেছেন?)

ছয়। ব্রাজিল হারলে জিতে যায় আর্জেন্টিনা।

আজ ব্রাজিলের হারাই উচিত! দেখা যাক!

এই হারটা ব্রাজিলের প্রাপ্য ছিল। অভিনন্দন, বেলজিয়াম!

সাত। আমরা এমন ভদ্রসভ্য কখনোই ছিলাম না, এখনো নই, কখনোই হবো না। তাই, আমাদের দেশ কখনোই জাপানের মত উন্নত হবে না।

আট। They played, we saw, we won. We played, they saw, we won. এই দুইয়ের মধ্যে গুণগত পার্থক্য থাকবেই! স্বাভাবিক। প্রিয় ব্রাজিল কোয়ার্টার ফাইনালে। বরাবরের মতোই—নিজে খেলে! অভিনন্দন। ভালোবাসা। শুভ কামনা।

নয়। যারা খেলে জেতে, তাদের খেলে জেতার অভ্যাস তো আছেই, কী বলেন?

দশ। আজকের নেইমার–অভিনয় কম, প্রতিপক্ষের যম! সাবাস, ব্রাজিল!

এগারো। রাফির কণ্ঠে Chaudhvin Ka Chand Ho…………আহা, কী মধুর! বেশিই মায়াবী! ঘুমিয়ে পড়ো না, প্রিয়া। রাতের যৌবন এখনো শেষ হয়নি!

বারো। এত রাতে এত সূর্য!!

বাবারা, অত তাড়াহুড়ো কোরো না। সবাই আর্জেন্টিনাকে গোল দেয়ার সুযোগ পাবে। একএক করে লাইনে দাঁড়াও, ধৈর্য ধরো!!

আর্জেন্টিনাকে সেকেন্ড রাউন্ডে ওঠার জন্য অভিনন্দন!! ফ্রান্সকে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার জন্য অভিনন্দন!! আর্জেন্টিনার সমর্থকদের ধৈর্যের পরীক্ষা দেয়ার জন্য ধন্যবাদ। আবার আসবেন।

Ricky Martin’s Cup of Life! The song that still awakens up!!

তেরো। শুরু হওয়ার আগেই পড়ে গেলে হবে? কিডিং অ্যাপার্ট, গুড লাক, আর্জেন্টিনা!!

চৌদ্দ। বড়লোক হতে চাইলে ব্যবসা শিখো। ছোটলোক হতে চাইলে লেখাপড়া শিখো।

পনেরো। কেউ খেলে উত্তীর্ণ, কেউ অংকে উত্তীর্ণ! কেউ জেতে ও জিতল বলে, কেউ জেতে অন্য কেউ হারল বলে। দুইই সুন্দর। জয় মাত্রই সুন্দর! কেন পথ নিয়ে মাথাব্যথা, জেতাটাই বড় কথা, হেরে গেলে শেইম, শেইম! ইটস্ অ্যা গেইম! নচিকেতার গান। এমনিই মনে পড়ল। জগতের সকল প্রাণী সুখী হউক, মঙ্গললাভ করুক। ধন্যবাদ। আবার আসবেন।

ষোলো। সেরারা হাঁটে নিজের পায়েই—এমনি করে!!!!

সতেরো। এই পৃথিবীতে প্রায় সাড়ে সাতশো কোটি মানুষ। অথচ খুঁজে দেখুন, এমন একজনকেও পাবেন না, যে আপনাকে আপনার মতো করে চায়, ভালোবাসে। সবাই ভালোবাসতে জানে তার নিজের মতো করে, যাকে ভালোবাসছে, তার মতো করে নয়। যদি এমন কাউকে পেয়েও যান, যে আপনাকে আপনার মতো করে চায়, ভালোবাসে, দেখবেন, কোনোভাবেই তাকে সারাজীবনের জন্য পাচ্ছেন না। সে অন্য কারুর, আপনিও অন্য কারুর। এই প্যারাডক্স মেনে নিয়ে সারাজীবন দুঃখ নিয়ে কাটাতে হয়। কিছু করার নেই। আপনার মন্দটাকেও মেনে নিয়ে ভালটাকে আরো বাড়তে দেবে, এমন কাউকে পেয়ে যাওয়া বড়ো সৌভাগ্যের ব্যাপার। সচরাচর এমন কাউকে পাওয়া যায় না। তাই নিজের মন্দটাকে সুকৌশলে লুকিয়ে রেখে ভালটাকে সামনে এনেএনে সারাজীবনই নিপুণ অভিনয়ে চলতে হয়। মানুষ মিথ্যে শুনে তা বিশ্বাস করে বাঁচতে পছন্দ করে। এমন অক্ষতিকর মিথ্যের বসতির নাম‌ই সংসার।

আঠারো। যারা বলে, শারীরিক কষ্টের চাইতে মানসিক কষ্টের তীব্রতা বেশি, তারা আসলে কোনোদিন মাইর খায় নাই। সিরিয়াসলি!

উনিশ। অসীম দুঃখ আর তাচ্ছিল্য নেয়ার ক্ষমতা যার যত বেশি, জীবনকে অনুভব করার শক্তি তার তত বেশি। আঘাতেই মঙ্গল! মাথায় মুকুট পরার আগে নিজেকে ধুলোয় মিশতে দিতে জানতে হয়। কাঁটায় যার ভয় নেই, গোলাপ তো তার‌ই হাতে মানায়!

বিশ। যার জন্য তোমাকে কারো কাছে ছোট হতে হয়নি, কখনোই তাকে তোমার জন্য কারো কাছে ছোট হতে বোলো না, যদি না তার প্রতি তোমার নিখাদ ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা থাকে।

একুশ। নিজেদের নানান সমস্যা নিয়ে কথা বলার সময় বেশিরভাগ মেয়েই কোনো সমাধান চায় না; ওরা কেবল চায়, কেউ ধৈর্য ধরে ওদের সব কথা শুনুক। তাই ওরা যদিও মুখে বলে, ওরা জ্ঞানী মানুষ ভালোবাসে, আদতে ওরা ভালোবাসে কোনো কৌশলী নির্বোধকে, যার মাথায় পদার্থ থাকুক না থাকুক, কথা শোনার মত অসীম ধৈর্য আছে, দেয়ার মত সময় আছে।

বাইশ। আমার দুঃখ এ নয় যে, তুমি আমায় ভালোবাসো না; আমি জানি, তুমি আমায় ভালোবাসো।

আমার দুঃখ বরং এ-ই যে, আমার ভালোবাসাটাই তুমি বোঝো না; তুমি জানোই না, আমি তোমায় ভালোবাসি।

যে ভালোবাসা দেখায়, তুমি তাকে কাছে টানো,

যে সত্যিই ভালোবাসে, তুমি তাকে গাধা মানো!

মেয়ে, তুমি ভালোবাসা কেবল দেখতেই শিখেছো, হায়, অনুভব করতে শেখোনি! তাই, প্রতারিত হ‌ওয়াই তোমার জন্মগত দায় ও নিয়তি।

ভালোবাসা বোঝার বেলায় পৃথিবীর সব মেয়েই টিন‌এজার!

তেইশ। যার জন্য মরতেও রাজি, সে-ই কিনা হায় মেরেই ফেলে!

যার জন্য বাঁচতেও নারাজ, সে-ই তো দেখি বাঁচিয়ে রাখে!

যে পাখি বন্দি খাঁচায়, সে কখনো মনে না ধরে,

যে পাখি উড়াল দিলো, তার জন্যই প্রাণটা মরে!

পরকালটা খুঁজতে গিয়ে জীবনটাকেই দিই যে ফাঁকি,

কেবলাকাবা ঘুরেছি মিছেই, প্রার্থনাটাই করার বাকি!

জীবন বলো এমন কেন?

চব্বিশ। Humein Aur Jeene Ki Chahat আহা! কী গান! কী সুর! কী কণ্ঠ!

মাঝরাতে ঘুম ভেঙে গান শুনতে ইচ্ছে করলে হঠাৎ মনে হয়……… জীবন বড়ো সুন্দর, ব্রাদার!

পঁচিশ। নিম্নবিত্ত আর মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেদের বাবারা একসময় বুড়ো হতে থাকে, তখন জীবনের প্রয়োজনেই ওদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে হয়। উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলেদের বাবারা কখনো বুড়ো হতে থাকে না, তাই কোনো কিছুর প্রয়োজনেই ওদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে হয় না।

বাবা, তোর বাবার বয়স হচ্ছে, সংসারের হাল তো তোকেই ধরতে হবে, কিছু একটা কর। ……… মায়ের মুখে এমন কথা যে ছেলেকে শুনতে হয় না, সে ছেলে বড়ো নির্ভার, বড়ো সৌভাগ্যবান; অত‌এব, প্রায়ই…….বড়ো অপদার্থ।

ভাবনা: তিনশো ষাট

………………………………………

এক। আপনি যখন আপনার প্রাক্তনের উপর রাগ ঝাড়তে নানান কথা লিখে ফেসবুকে পোস্ট করেন, তখন আপনার প্রাক্তন এককাপ কফিহাতে আপনার পোস্ট পড়েন, উনার ঠোঁটের কোণায় বিজয়ীর পৈশাচিক হাসি ফুটে ওঠে, আর আপনার প্রতি আপনাআপনিই উৎসারিত হয় কিছু তাচ্ছিল্যভরা তৃপ্তি……..…. Yesssssssss!!! You still cry for me! I’m that much adorable!! You still miss me, you can’t live without me, you life is like Hell! I win, loser!!!

সমানে কাঁদছেন আর উনাকে জেতাচ্ছেন। কোনো মানে হয়?! পুরাই হাইস্যকর!!!

দুই। এইসব দেখলে মাথা ঘুরতে থাকে। আমি যদি একা হতাম, কোনো পিছুটান না থাকতো, কবেই পৃথিবী ঘুরতে বেরিয়ে পড়তাম! সত্যিই পড়তাম! বন্ধন কেবলই কেড়ে নেয়— স্বাধীনতা, আনন্দ, স্বস্তি! এত সুন্দর একটা পৃথিবীতে এলাম, তার সৌন্দর্য না দেখেই টুক করে মরে যাবো! কোনো মানে হয়?

তিন। বিশাল হয়ে ওঠো। ওরকম হতে চাইলে ভেতরে কিছু থাকতে হয়, নইলে হয় না। ফাঁকিতে জীবন কাটে বটে, কিন্তু জীবন গড়ে না। সবাইই পিঁপড়া হয়েই জন্মায়। এরপর? বিশাল হয়ে ওঠার চেষ্টা! ক্রমাগত। এই প্রক্রিয়ায় যার যত ফাঁকি, তার তত ঝুঁকি। খুব অল্প কয়েকজন নিজেকে কাজে ব্যস্ত রাখে, বেশিরভাগই ………অকাজে। বড়ো মানুষের কাজ ও ছোটো মানুষের কাজের ধরনে আর গড়নে অনেক তফাৎ! ছোটলোক যে কাজে ভাব নেয়, বড়োরা হয়তো সেটাকে আমলে নেয়ার মত কাজ বলেই মনে করে না! ওতে কী হয়? বেশিরভাগই পিঁপড়া থেকে ছাগল হয়, গুটিকয়েক হয় হাতি। এরপর? ছাগলের দল লেগে থাকে হাতির পেছনে। হাতির অত নিচে তাকানোর সময়ই নেই। ও যে জন্মেছেই হাতি হয়ে বাঁচতে! ছাগল লাগে হাতির পেছনে, হাতি লাগে নিজের পেছনেই! হাতির পেছনে লেগে ছাগল ওঠে জাতে, নিজের পেছনে লেগে হাতি ওঠে ধাতে! এখন কথা হল, হাতিরা পারে কি বাঁচতে অমন হাতি হয়ে? সবসময়ই? না, পারে না। কখনো-বা অতি উৎসাহী ছাগলের দল ওকে টেনেহিঁচড়ে মাটিতে ফেলে দেয়, ওকে পড়তে দেখে ওরা সবাই উল্লাস করে। শিং নাড়ায়, লাফায় আর চেঁচায়! দে তালি—ছাগলের তালি! ওরা বোঝে না, হাতি মাটিতে পড়ে গেলেও ছাগলের চাইতে উঁচুই থাকে, হাতিকে ফেলে দিলেও ছাগল হাতির সমান হতে পারে না। বুঝবে কেমন করে? ছাগলরা হাতির উচ্চতা সম্পর্কেই যে জানে না! ছাগলের দৃষ্টি যেখানে শেষ, হাতির দৃষ্টি সেখানে শুরু! হাতি হয়ে বাঁচার আনন্দ হাতি হয়ে বেঁচেই পাওয়া যায়, ছাগল হয়ে নেচে নয়! যার ওজন যত বেশি সে তত কম লাফায়। লাফের ধরন, চেনায় গড়ন। দিনের শেষে হাতি হাতিই থাকে, আর ছাগল ছাগলই থেকে যায়।

চার। পুরুষ মানুষের জীবনের ২টা স্টেজ আছে:

প্রথমটি। যখন কোনো কিছু কেনার সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে তার দাম জানতে হয়।

দ্বিতীয়টি। যখন কোনো কিছু কেনার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর তার দাম জানলেও চলে।

পাঁচ। রাজশাহীর পর্যটন মোটেলে প্রতিদিন সকালবেলা রবীন্দ্র সংগীত, নজরুল সংগীত, দ্বিজেন্দ্র সংগীত, অতুলপ্রসাদের গান, রজনীকান্তের গান, আধুনিক গান ছেড়ে দেয়া হয়। অপূর্ব একটা ব্যাপার! কী যে ভাল লাগে! এমন সিদ্ধান্তের জন্য কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ। অন্যরাও এটা অনুসরণ করতে পারেন। দিন শুরু হোক সুরের সাথে।

ছয়। Don’t respect anyone. Don’t hate anyone. Take everyone as they are. If you can’t, it’s your problem, not theirs. They are what they are, not what you think. Learn to accept it. Your respect can’t save anyone, your hatred can’t destroy anyone. Take them or leave them. That’s all.

সাত। সবাইকে সিঁড়ি চেনাতে হয় না, সবাইকে পথ দেখাতে হয় না। মানুষ বড়ই নিমকহারাম প্রাণী। যে সিঁড়ি চেনায়, পথ দেখায়, প্রথম লাথিটা মানুষ তাকেই মারে! ইতিহাস এটাই বলে।

এখন কথা হলো, আমি যা করি, তা কেন করি?

উত্তর একটাই: করতে ভাল লাগে বলেই করি। কাজটি মহৎ, এমন কোনো ভাবনা আমাকে কোনোকালেই কোনো কাজে উৎসাহ দেয় না। ওরকম যদি হতো, তবে আমি অনাহারী আর ভাগ্যবিড়ম্বিত মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াতাম। ক‌ই, অতোটা দাঁড়াই নাতো! একেবারেই যে দাঁড়াই না, তাও নয়, তবে সেটা আমার সামর্থ্যের তুলনায় অনেক অল্প। আমার কাছে কাজের মোটিভেশন মহত্ত্ব নয়, টাকাকড়ি নয়, মানবতা নয়……….স্রেফ আনন্দ। যে কাজে আমি আনন্দ পাই না, সে কাজ যতোই মহৎ হোক না কেন, আমি করি না।

করতে ভাল লাগুক না লাগুক, তবুও করি, এমন কিছু নেই? হ্যাঁ, আছে—চাকরি। কারণ, সেটা প্রয়োজন। সেটার সাথে আমার এবং আমার পরিবারের অস্তিত্বের প্রশ্ন জড়িত। যা করতেই হচ্ছে, তার পেছনে আনন্দ খুঁজতে যাওয়া বোকামি। লোকে ওষুধ খেতে ভাল লাগে বলে ওষুধ খায় না, বাঁচতে হলে ওষুধ খেতে হবে বলেই ওষুধ খায়। আনন্দে বাঁচার চাইতে বাঁচা জরুরি।

আট। বরং আহত হও, রক্তাক্ত হও।

ওদের আরও হিংস্র হতে দাও, হিংস্রতাকে সহ্য করতে শেখো।

জেনে রেখো, মানুষ মূলত ভণ্ড, বর্বর ও ঘৃণ্য। বিশ্বাস হলো না? ইতিহাস থেকে শেখো।

নিজের সমস্ত শক্তি নিঃশেষ করে হলেও ঘুরে দাঁড়াও। শেষ হয়ে যেও না, তুমি শেষ হয়ে গেলে অনেকে যে জিতে যায়!

সবাই তোমার বিপক্ষে দাঁড়িয়ে গেছে? দাঁড়াবেই তো! ওদের কারুর‌ই যে তোমার বিপক্ষে একা দাঁড়ানোর শক্তি নেই! সবলরা একার বিরুদ্ধে একাই লড়াই করে, দুর্বলরা দলবেঁধে। ব্যাপারটাকে এনজয় করো!

ওদেরকে হারিয়ে দাও! দেখিয়ে দাও, তোমার একার শক্তি ওদের সম্মিলিত শক্তির চাইতেও বেশি। নিজেকে অপ্রতিরোধ্য করে তোলো। ঘুরেদাঁড়ানো মানুষের শক্তি দ্বিগুণ হয়। ওদের বোঝাও, তোমাকে হারিয়ে দেওয়া সহজ নয়।

কাউকে আঘাত করে বড় হতে হয়। কাউকে আহত হয়ে বড় হতে হয়। সময়‌ই বলে দেয়, কার শক্তি বেশি!

সস্তারা সস্তায় আনন্দ পায়, দামিরা দামিতে। দামিকে ভালোবাসো, তাহলে দামিও তোমাকে ভালোবাসবে। ছোট কাজ ছোটলোকদের জন্য ছেড়ে দাও, ওদের সবসময়ই জিতিয়ে দাও। ছোটলোক ছোট লড়াইয়ে জিতে আনন্দ পায়।

তুমি মঞ্চে ছিলে। ওদের সহ্য হচ্ছিল না। ওরা মঞ্চ দখল করতে চেয়েছিল, তাই তোমাকে সরিয়ে রেখেছে। বহুদিন।

তুমি ছিলে না। মঞ্চ ফাঁকাই ছিল। মঞ্চের দখল নেয়া সহজ নয়। প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তি লাগে, ক্ষমতা লাগে, যোগ্যতা লাগে। এর কোনোটিই ওদের নেই। প্রমাণিত!

ফিরে এসো। মঞ্চ তোমারই! কাঁপো! কাঁপাও!

নয়। শুনলাম Manikya Malaraya Poovi। মেয়ের চোখের নাচ দেখে ক্রাশ আর ছ্যাঁকা, দুইই খেয়ে পুরাই ত্যারাব্যাঁকা হয়ে একটা কবিতাণু প্রসব করে ফেললাম:

ওই মেয়ের চোখের নাচন,

ধরালো কী বুকের কাঁপন!

দিল না সে ধরা,

তবু প্রেমে পড়া,

নো রিলেশন, হুদাই কনফিউশন,

হায় বোকামন, মানে না বারণ,

খেলাম ছ্যাঁকা, হলাম বাঁকা……….কেনো এ ধোঁকা!

কী হায় উপায়……….. তাই……..শুধু দেখে যাই………

ভাবনা: তিনশো একষট্টি

………………………………………

এক। তবে, সরস্বতী কাদের উপর তুষ্ট?

প্রশ্নটা বেশ!

উত্তরটাকে দিই ঘুরিয়ে, নিয়ো বুঝে।

পুজোর নামে বাড়াবাড়ি, বইয়ের সাথে ছাড়াছাড়ি,

ফাঁকিবাজিতে কাড়াকাড়ি—

যে ভক্তরা এসব করে উৎসাহ পাও তাড়াতাড়ি,

ঠিক জেনে নাও,

বিদ্যাদেবী বরাবরই ছাগলছানার এমন নাচে রুষ্ট!

(অনেকেই জিজ্ঞেস করে যাচ্ছেন……

দাদা, বইমেলায় কখন আসছেন?

আমি বলছি, ঠিক নেই। নাও আসতে পারি, গতবারও আসিনি।

রিপ্লাই আসছে……. আসবেন না মানে? আপনার তো আসা উচিত! বই নিয়ে এত কথা বলেন, আর বইমেলায় আসবেন না? ইত্যাদি, ইত্যাদি!

সোজাসাপ্টা বলি, বইমেলায় আসতেই হবে? কিন্তু কেন? জগতে উচিত অনুচিত বলে কিছু নেই। যা আছে, তা হলো, কী হচ্ছে, কী হচ্ছে না। আমি গতবার বইমেলায় না এসেই প্রায় চারশো বই কিনেছি, অনলাইনে। আপনি ক’টা কিনলেন? ঢাকায় থাকি না, তাই চাইলেও আসতে পারি না। অনেক বই কিনতে হয়, তাই মেলায় একবার এসে অতো বই কিনতে পারি না, কয়েকবার আসতে হয়, যা সম্ভব নয়। হিসেব সহজ। বেকারত্ব কখনোকখনো মধুর।)

পুনশ্চ। বিদ্যাদেবীর আরাধনা মণ্ডপে নয়, পড়ার টেবিলে হয়। অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। হ্যাপি সরস্বতী পুজো!

পুনঃ পুনশ্চ। আসুন, ছাগলের চাষের পাশাপাশি বইয়ের চাষও করি।

দুই। যে যাকে পায়, সে তাকে সুন্দর দেখে না।

তিন। Often,

the less you have,

the more you show.

চার। শবনম মুস্তারির কণ্ঠে শুনলাম নজরুল সংগীত ‘আমার নয়নে নয়ন রাখি’। আহা, কী অপূর্ব!!

পাঁচ। চাকরি করা মানেই সহ্য করা।

ছয়। উপন্যাসকে সিনেমা বানালে সবসময়ই যে উপন্যাসের বারোটা বেজে যায় না, তার একটা অতি চমৎকার নিদর্শন বনফুলের ‘অগ্নীশ্বর’ উপন্যাসের সিনেমারূপ ‘অগ্নীশ্বর’— আমার চোখে উত্তমকুমারের সেরা পাঁচটি মুভির একটি। কুড়িগ্রামে থাকাকালীন এ মুভিটা দেখেছি। ‘তবু মনে রেখো’ গানটি যখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজছিল, তখন শিশুর মতন অঝোরে কেঁদেছি। বুকের মধ্যে অতো হাহাকার শেষ কবে জেগেছিল, মনে নেই। নিজের সাথে ওই অবোধ ডাক্তারের অমন অসহ্য চারিত্রিক মিল খুব কষ্ট দিচ্ছিল; মানুষের বিশুদ্ধতম অনুভূতি হলো অপরাধবোধ, তাই হয়তো।

যদি পুরাতন প্রেম ঢাকা পড়ে যায় নবপ্রেমজালে।

যদি থাকি কাছাকাছি,

দেখিতে না পাও ছায়ার মতন আছি না আছি–

তবু মনে রেখো।

………….এমন আকুতি আর্তি মানতে মনকে অনেক চাপ সহ্য করতে হয়। কে যেন মনের জানালায় এসে আমাকে অসহায় করে দেয়, প্রশ্নবিদ্ধ করে……তবু কেন?………. রবীন্দ্রনাথ বরাবরই অসহ্য—সুখে, কষ্টে!

সাত। Ye Mat Kaho Khuda Se………… অপূর্ব একটা গান! বুকের মধ্যে বাজতে থাকে যেন!

আট। আমার বিয়ের সময় বৌভাতে অনেক মানুষকে নিমন্ত্রণ করেছিলাম। আমার সুসময়ে আমার আশেপাশে কত মানুষ ছিলেন! হ্যাঁ, সবসময়ই আমাকে লোকজন ঘিরে রাখতেন— বিপদে পড়ার আগ পর্যন্ত।

আমার বিপদের সময় আমি আমার পরিবারের ৪ জনের বাইরে হাতেগোনা ৬-৭ জন মানুষকে পাশে পেয়েছি। আর কেউই পাশে ছিলেন না। হ্যাঁ, অনেকেই হাত বাড়াতে না পারলেও পা বাড়িয়ে দিয়েছেন—লাথি মেরে আরো বিপদে ফেলে দেয়ার জন্য।

জীবন এমনই, অন্তত বাংলাদেশে যাপিত জীবন!

ভালই হয়েছে। মানুষ চিনেছি। এবং, সাথে জীবনও!

প্রশংসা কিংবা নিন্দা, কোনোটাই এখন আর আগের মতন আমাকে স্পর্শ করে না। বেশিরভাগ মানুষই ঘৃণ্য। খুব দেরিতে হলেও মানুষকে অবিশ্বাস করতে শিখে গেছি। অবিশ্বাসের জয় হোক।

যাঁরা পাশে ছিলেন, আমৃত্যু তাঁদের মনে রাখবো। নিজের সুখের বিনিময়ে হলেও তাঁদের সুখ চাইবো। আমার যখন কিছুই ছিল না, তখন তাঁরা পাশে ছিলেন। আমার মৃত্যুর পর, যখন আমার পাশে কে আছেন, কে নেই, আমি দেখতে পাবো না, তখন‌ও তাঁরা পাশে থাকবেন। নিশ্চয়ই থাকবেন।

আমার আগের আইডিতে আমার ফলোয়ার ছিলেন ২.৫ লাখ। এর ০.০১% করলে হয় ২৫। বিপদের সময় আমার ফলোয়ারদের ০.০১% মানুষ‌ও আমার পাশে ছিলেন না।

বুঝুন এবার, কেউ যখন বলেন, ভাইয়া, আমি আপনার অনেক ফ্যান, তার প্রকৃত অর্থ হল, উনি আসলে উনার নিজের ফ্যান—মানে, কোনো না কোনো ব্যক্তিগত লাভের জন্য‌ই উনি আমার ফ্যান।

মন থেকেই একটা হাহাহা রিঅ্যাক্ট চলে আসে!!!

সবাই ভাল থাকুক।

নয়। My 10-year Challenge Status:

2009: I dreamt of seeing myself well established.

2019: I am much better established than what I dreamt of.

Thanks, God!

Life is a challenge. Win it or blame it.

দশ। শাহ আবদুল করিমকে নিয়ে একটা লেখা পড়লাম। একজন অসাধারণ মানুষের জীবনগাথা। সত্যিই, মহত্ত্বের জন্য সারল্য লাগে, সাথে কিছুটা পাগলামি—সাধারণের চোখে।
লেখার এক প্যারায় আমাদের জাতিগত মূর্খতা আর অকৃতজ্ঞতার ছবি আঁকা আছে…….
……………. তিনি সবচেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছিলেন যখন দেখলেন তিনি গান বাজনা করেন দেখে সরলার লাশ জানাজার জন্য লোক পাওয়া যাচ্ছে না। গ্রামের মসজিদের ইমাম সাহেব বললেন, বাউলের স্ত্রীর আবার কিসের জানাজা, বাউলার স্ত্রীর জানাজা পড়ানোর দরকার নেই।
সুনামগঞ্জ—আমার দেখা সবচাইতে সুন্দর জায়গাগুলির একটি। বেশিই অপূর্ব! যদি আমাকে বলা হয়, নিজের জেলা বাদে কোথায় বাকিটা জীবন থেকে যেতে চাইবেন, আমি নির্দ্বিধায় বলবো— সুনামগঞ্জে।

এগারো। To earn anything in the world, first you have to learn to respect 2 things:

The thing you want to earn

The persons who have already earned it

বারো। আমরা পরের বাগানের গাছকে আগাছা ভাবি, নিজের বাগানের আগাছাকে গাছ ভাবি।

তেরো। অ্যারোগ্যান্স এবং মডেস্টি, দুটোই ক্যারি করতে জানতে হয়; ন‌ইলে খুবই বেমানান লাগে। সবাইকে অ্যারোগ্যান্ট হ‌ওয়া যেমনি মানায় না, তেমনি অনেকের মডেস্টি দেখলে হিপোক্রিসি মনে হয়। আমি যা বহন করতে পারব না, তা বহন করে চলতে গেলে ঘাড় কুঁজো করে হাঁটতে হবে, দেখতে বাজে দেখাবে। স্বাভাবিক।

চৌদ্দ। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় আর শ্রাবন্তী মজুমদারের কণ্ঠে তুমি আমার মা। বড়ো প্রিয় গান………. মেয়েদের, মেয়ের মায়েদের গানটা ছোঁবেই!

পনেরো। ধনী শ্বশুরের পুত্রবধূর স্বামী অপেক্ষা ধনী শ্বশুরের জামাতার স্ত্রী অধিক অহংকারী।

ষোলো। Some lessons 2018 taught me:

1. You have to fight and win/lose your fight alone.

2. Helpless people are recklessly selfish by nature.

3. The weak always hate the strong.

4. You need to remember only the people who stand by you during your bad days.

5. When you are in danger, you will never get help from the expected people.

6. Success has many fathers, failure is an orphan.

7. Inferior people love to see superior people be in danger.

8. People who talk much are usually the people who can do less.

9. Never take anyone for granted even if they are a part of your family.

10. People who are really powerful, never show their power.

11. Most of the people give you the advice you don’t need.

12. Expect nothing free as there is always a deal—expressed or hidden.

13. Almost all the praises and criticisms you get are just rubbish.

14. You never need to give space and time to everyone.

15. Jealous people can never be high-achievers.

16. If you’re suffering, only you know the pain.

17. People for whom you’re giving everything of your life, will misunderstand you the most.

18. Being ordinary is a choice, so is being extraordinary.

19. The more you give attention to the unnecessary things, the more you become an unnecessary man.

20. If you want to succeed, first learn to believe that successful people know more than you about the path to success.

21. The more you think about the dark sides of the great people, the more you become a part of their dark sides, not of their greatness.

Happy New Year!!

ভাবনা: তিনশো বাষট্টি

………………………………………

এক। ডিয়ার ভাইব‌ইনসমাজ, ইনবক্সে এত্তগুলা মরামরা হ্যাপি নিউ ইয়ার না পাঠায়ে একহালি জ্যান্ত কলা পাঠালেও তো পারেন!

দুই। দুইজন ছেলে ভার্সিটির ফার্স্ট ইয়ার থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত এক‌ই রুমে তেমন কোনো ঝামেলা ছাড়াই কাটিয়ে দিতে পারে, কিন্তু দুইজন মেয়ে এই সময়ে অন্তত তিনবার রুম বদলাবে।

তিন। মানুষকে ছেড়ে আসতে হয়, মানুষ ছেড়ে থাকতে পারে।

চার।কার‌ও কোনও ব্যক্তিগত বিষয়, যা আপনি জেনেছেন অন্য কারও কাছ থেকে এবং যা তিনি ইচ্ছে করেই আপনাকে বলেননি বলে মনে হয়, তা নিয়ে তাঁকে কিছু বলা কিংবা জিজ্ঞেস করা ব্যক্তিত্বহীনতার পরিচায়ক।

পাঁচ। Every successful person has a glorious present.

Every unsuccessful person has a glorious past.

ছয়। একশোটা গাধা মরে একটা বড়ভাই হয়।

সাত। চাকরিতে ও জীবনে, ভাল কাজের পুরস্কার সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকে আসবে। অপরদিকে, খারাপ কাজের শাস্তি সর্বদাই নগদ।

আট। সারাজীবন অসহায়দের পাশে দাঁড়ান যিনি, তিনি নিজে কখনো অসহায় হয়ে পড়লে পাশে দাঁড়ানোর মত সাহায্যপ্রাপ্তদের মধ্য থেকে কাজের কাউকেই পান না। সত্যিকারের কাজের যে দুয়েকজনকে পান, তাঁরা এমন কেউ, যাঁদের পাশে তিনি কখনোই দাঁড়াননি। হয়তো এটাই প্রকৃতির পুরস্কার!

নয়। ভালোবেসে বিয়ে করলে প্রথম কাজ: নিজেকে ইম্পর্ট্যান্ট প্রমাণ করা। ওতে স্ত্রীকে সবাই অ্যাকসেপ্ট করতে বাধ্য হবে। ন‌ইলে স্ত্রীকে তো বটেই, নিজেকেও সবার চোখে আনঅ্যাকসেপ্টেড হয়েই বাঁচতে হবে।

দশ। অপ্রাপ্তমনস্করা দুঃখ লুকাতে জানে না, দুম্ করে শেয়ার করে ফেলে।

এগারো। স্ত্রী—পুরুষজীবনের অদৃষ্ট!

স্বামী—নারীজীবনের অদৃষ্ট!

সমাজ—অদৃষ্টের অথর্ব দর্শক!

বারো। তুই হাসলি যখন। ‘সমান্তরাল’ মুভির গান। আহা গানটা! একঝাঁক মনছোঁয়া কথার সুরদৃশ্য!

আগ্রহীরা মুভিটাও টুক করে দেখে ফেলতে পারেন। ভাল লাগবে।

সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: এ মুভিতে, বিসিএস পরীক্ষায় আসবে, এমন কিছু নেই।

তেরো। একটা মানুষ, যাকে কেউই চায় না, সে কোথায় ঘর বাঁধে?

‘সমান্তরাল’ দেখছি। ভাল লাগছে!!

চৌদ্দ। যে তোমাকে সুন্দর দেখে না, তুমি কেন তাকে সুন্দর দেখ? যে তোমার চোখ বোঝে না, কেন তার‌ই চোখে স্বর্গ খোঁজ?

পনেরো। মানুষ নিজের অপমান যত সহজে মেনে নিতে পারে, তার ভালোবাসার মানুষের অপমান তত সহজে মেনে নিতে পারে না।

ষোলো। যে আম খেতে ভাল, সে আমের গায়ে দুইএকটা দাগ থাকলেও অসুবিধা নাই।

#আগে_যদি_জানতাম

সতেরো। যে কখনোই তোমার কাছ থেকে কিছুই পায়নি, কেন তার কাছেও অনেক কিছু চেয়ে বসো? বাঙালি বলে?

আঠারো। যেসব দুই টাকার ছাগল দুই লাখ টাকার ফাল মারে, তারা শেষ পর্যন্ত দুই টাকার ছাগলই থেকে যায়।

#পরীক্ষিত_সত্য

উনিশ। ‘রিকল’ ব্যান্ডের ‘এতটা ভালোবাসি’! আহা, এক পিস জ্যান্ত ভালোবাসা!!!

বিশ। ব্যস্ততা ও বেকারত্ব, দুইই বদভ্যাস।

একুশ। বেশিরভাগ মেয়েই দুইটা জিনিসের বশ: স্বর্ণ আর বর্ণ (কথা)

বাইশ। যে দেশে ন্যূনতম প্রাপ্য সার্ভিসটাও পরিচয় দিয়ে নেয়া লাগে, সে দেশ নিয়ে বড়ো স্বপ্ন দেখতে বড়ো আহাম্মক হ‌ওয়া লাগে।

তেইশ। মনে পড়ে আজ সে কোন জনমে। কমল দাশগুপ্তর সুরে নজরুলগীতি। আহা, কথাগুলি কেমন করে প্রাণে গিয়ে লাগে!

চব্বিশ। Never judge her mind seeing her dress.

Never judge his dress seeing his mind.

পঁচিশ। এসো শারদ প্রাতের পথিক। কত মধুর একটা গান! ছোঁয়! দোলায়!! বাঁধে!!!

ছাব্বিশ। মানুষ দারিদ্র্য থেকে মুক্তি চায়, কিন্তু যা কিছু তাকে দরিদ্র করে রাখে, তা কিছু থেকে মুক্তি চায় না।

সাতাশ। যাকে আমি অনেক বড়ো করে দেখি, তার সাথে সম্পর্ক রাখার চাইতে যে আমাকে অনেক বড়ো করে দেখে, তার সাথে সম্পর্ক রাখা বেশি কাজের।

আটাশ। আমার মতে, নিজের স্বাস্থ্যের পর তিনটি জিনিসকে সবচাইতে বেশি যত্নে রাখতে হয়:

সম্পর্ক

টাকা

রিজিক

আপনার মতে?

উনত্রিশ। The more your selfies, the less your self!

ত্রিশ। Mental sex is sexier than physical sex.

একত্রিশ। একাএকা ভাল হ‌ওয়া যায়, কিন্তু একাএকা নষ্ট হ‌ওয়া যায় না।

বত্রিশ। শাড়ির দোকানের কর্মচারীদের দিকে তাকান। ভাবুন, ওদের কতকত মেয়েকে সহ্য করতে হয়! আর আমরা কিনা একটা মেয়েকেই সহ্য করতে পারি না!

#সেল্ফ_মোটিভেশন

তেত্রিশ। আমি চাই, আমার কাছের মানুষগুলি ভাল থাকুক। যদি আমার সাথে দুর্ব্যবহার করে ওদের কেউ ভাল থাকে, আমি সেটাও হাসিমুখে মেনে নিতে রাজি। আমি নাহয় নীরবে কষ্ট গিলে যাবো, তবু ওরা ভাল থাকুক।

চৌত্রিশ। প্রেম—স্বপ্নের ছদ্মবেশে এক দুঃস্বপ্ন!

পঁয়ত্রিশ। বৃষ্টি হতো, হয়, হবে।

কারো চোখে বৃষ্টি দেখতে ইচ্ছে হতো, হয়, হবে।

অমন চোখও ছিল, আছে, থাকবেও।

শুধু বৃষ্টিদেখার চোখ ছিল না, নেই, থাকবেও না।

এমন গান বড়ো আফসোস জাগিয়ে তোলে!

সকাল থেকে এ গান এমন রোদ্দুরেও জল ঝরাচ্ছে!!

…………ইসস্‌ মাঞ্জিল মুভির Rim Zhim Gire Sawanগানটা!

ছত্রিশ। যাকে কখনো বাসে ঝুলতে হয়নি, তার পক্ষে বাস কেনার সামর্থ্য অর্জন করা কঠিন।

সাইত্রিশ। People criticize you? Well, it means, you’re important.

If you’re not important, people will never criticize you.

Let them criticize, meanwhile, let yourself be more important.

আটত্রিশ। দিন দুই-তিনের জন্য ভবে, কত্তা বলে সবাই মানে,

সেই কত্তারে দেবে ফেলে, কালাকালের কত্তা এলে।

…….গানের কথাগুলো কেমন একটা শান্তি ছড়িয়ে দেয় শরীরে, মনে।

পান্নালাল—বাবার সুবাদে আমাদের ছোটবেলার পরম আদরের বন্ধুদের একজন। প্রণাম নিয়ো।

উনচল্লিশ। Hallelujah – Pentatonix ………. যখন কণ্ঠে হৃদয় ওঠে!

চল্লিশ। একটা ভোর পাহাড়ের গায়ে লেপটে থেকে দেখুন। রাতের পাহাড়ে জেগে থাকবেন। জেগে জেগে দেখবেন, পাহাড়ি বাঁশির সুর কেন অন্যরকমের। পাতায় পাতায় কী সে কানাকানি চলে রাতভর, সে খোঁজ আপনি কোনো বইতেই কোনোদিনই পাবেন না। পাহাড়ি নদী কেন আর দশটা নদী নয়, সেকথা জানতে আপনাকে পাহাড়ে যেতেই হবে। বুনো ফুলের ঘ্রাণে যে মত্ততা, সেটা টবে-সাজানো ফুলে আসবে কোত্থেকে? একটাই সূর্যের যে কতরকমের রং, সেটা পাহাড়ের শরীরে ছোট্ট করে লুকিয়ে থেকে দেখে নিতে হবে। ভোর আসবে, পাহাড় জাগবে, সাথে আপনি নিজেই টের পাবেন, মন-খারাপ করে থাকাটা কী ভীষণ কঠিন একটা কাজ!

একচল্লিশ। যেশুদাস আর হেমলতার কণ্ঠে যাব দীপ জ্বালে আনা, যাব শাম ঢালে আনা। এ গানের মহান স্রষ্টা রবীন্দ্র জৈন অন্ধ ছিলেন। উনি একবার বলেছিলেন, আমি যদি কখনো দৃষ্টি ফিরে পেতাম, তবে আমি প্রথমেই যেশুদাসকে দেখতে চাইতাম।

প্রণাম, যেশুদাস! আমাদের কত সৌভাগ্য, আমরা তোমার সুরে বড়ো হয়েছি!

বিয়াল্লিশ। খুব প্রিয় গীতিকার আবু হেনা মোস্তফা কামালের লেখায় আমাদের নাইটিঙ্গেল রুনার যাদু। শুনছি অনেক বৃষ্টি ঝরে তুমি এলে।

তেতাল্লিশ। George Benson এবং Roberta Flackএর You Are The Love Of My Life……… অপূর্ব গান!!

এই সুরে আশা ভোঁসলের একটা বাংলা গান আছে। বলতে পারবেন, কোনটা?

চুয়াল্লিশ। ছোটলোকের সাথে কখনো হ্যান্ডশেক করতে নেই।

পঁয়তাল্লিশ। জগজিৎ আর লতার কণ্ঠে Allah Janta Hain……… Voices from heaven!

ভাবনা: তিনশো তেষট্টি

………………………………………

এক। জীবনের সব ক্ষতিই ব্যক্তিগত।

দুই। বিদায়, কুড়িগ্রাম!! বিদায়, লালমনিরহাট!!

কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট এবং এখানকার মানুষকে খুব মিস করব। আমার চাকরির ৭ বছর চলছে। এখনো পর্যন্ত চাকরিজীবনের সেরা সময়টা রংপুরে কাটিয়ে গেলাম। উত্তরবঙ্গের মানুষের সারল্য, আতিথেয়তা আর অকপটতা সারাজীবন মনে থাকবে। আহা রংপুর—সে এক মুগ্ধকর!!

কুড়িগ্রামেই বেশি সময় কেটেছে। কুড়িগ্রাম নিয়ে একটা কথাই বলব: গান আর নদীর মেলবন্ধনে যে হৃদয় গড়া, সে হৃদয়ের কাছে বারবার ফিরে আসতেই হবে……শান্তির খোঁজে!

প্রিয় চট্টগ্রাম, আসছি!!

যাঁরা এখনো জানেন না, তাঁদের জন্য বলছি……আমি সম্প্রতি কাস্টম হাউস, চট্টগ্রাম–এ বদলি হয়েছি।

রংপুর, খুব ভাল থেকো।

তিন। জীবনে আর কিছু নয়, একজন ‘তুই’ লাগে। মুনমুন মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে ‘বছর চারেক পর’ শুনলাম। এত অপূর্বও হয় কবিতানির্মাণ! এমন করে এক মুনমুনই পারে! শ্রদ্ধা নিয়ো, ভালোবাসা জেনো!

চার। সুমনা হক। ছোটবেলার ক্রাশ!! ইসসসস্‌……..মাঝে আরো কিছু বছর গেলো………

পাঁচ। জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানানো হয় না। ইচ্ছে করলেও,জানাতে চাই না। চাই, কেবল প্রিয়দের প্রিয়বার্তায়, শুভ কামনায় আর ভালোবাসায় প্রিয় মানুষটি ভাল থাকুক। আর অভালোবাসারা থাকুক অনেক দূরে।

এমন এক দিনে তিনি এসেছিলেন। তিনি বারবার ফিরে আসেন—ভালোবাসায়, তাঁর কীর্তিতে ভর করে। তিনি মিশে আছেন জ্যোৎস্নাআলোয়, বৃষ্টিজলে, অশ্রুতে। বইয়ের গন্ধে। আরও কত কীসে!

নভেম্বর আসে, নভেম্বর যায়। অনুভূতিরা সব আড়ালেই থেকে যায়। জমেথাকা জল নিজেকেই ভেজায়।

কিন্তু প্রার্থনারা ঠিক থেকে যায়।

তাঁর জন্য কারো মন,

কোনো কষ্ট, রাগ, অভিমান কিংবা ক্ষোভ

পুষে না রাখুক।

জানা কি অজানা, যেমনই হোক,

ন্যায়সংগত কিংবা তা নয়,

কষ্ট তো কষ্ট কেবলই!

ভালোবাসায়, ক্ষমা করে দিক না সবাই,

প্রার্থনা এই!

আর হ্যাঁ, প্রতি নভেম্বর ভালমানুষের ঘর গুত্তুসেগুত্তুসে ভরে যাক! (জানবাচ্চার বাচ্চা হলো গুত্তুস!) ওই ছোট্ট বাবুরা প্রচণ্ড দুষ্টু হোক! জ্বালাতে জ্বালাতে কারো জীবন চরম অতিষ্ট করে তুলুক! মানুষের মাথার সব চুল পড়ে যাক! না না, থুক্কু! চুল পড়ে গেলে তো হবে না, তাহলে ওদের বউরা চুল টানবে কী করে! চুল টানতে না পারলে তো জীবন ষোলোআনা না হোক, অন্তত আটআনাই বৃথা!

আরে ঐ পাগলাটা!

যার জন্য হলুদ রঙকে সহ্যই করতে পারে না, এমন মেয়েও প্রেমিককে বলে, আমাদের প্রথম দেখা হওয়ার দিনটাতে হলুদ পাঞ্জাবি পরে এসো!

হ্যাঁ, হিমুর হুমায়ূন আহমেদ।

তিনি তো চলে গেলেন।

তাঁকে তো বলা হয়নি কখনো………কতটা ভালোবাসি!

তাঁর প্রতি জন্মদিনে লেখা, হলুদ কাপড়ে মোড়ানো চিঠিগুলো তাঁকে আর দেয়া হয়ে ওঠেনি।

মানুষ চলে যাওয়ার আগেই তাঁকে ভালোবাসার কথা জানাতে হয়। আগে বুঝিনি।

তাই ১৩ নভেম্বর এলে কান্না গিলে ফেলা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না।

তারপর আরেকজন নভেম্বর বয় আছেন, যিনি খুবই খারাপ! যাকে খালি ধাক্কা দিয়ে পানিতে ফেলে দিতে ইচ্ছে হয়, তাঁর আগমনও এই নভেম্বরেই……তাঁকে তো কিছুই বলা যায় না, এমনকি বিশেষ দিনের শুভেচ্ছাটাও জানানো হয় না। কারণ তিনি আমাকেই ধাক্কা মাইরা তাঁর নিজের পৃথিবীর বাইরে রাখেন!

ভালোবাসার মানুষগুলোর জন্য ভেতরে থাকা অনুভূতিগুলো, তাই নিজেরই কেবল জানা হয়, অনুভূতিরা নিজেকেই কাঁদায়।

জন্মদিনগুলো, কতটা স্পেশাল, তা তাঁদের কখনো বোঝানো যাবে না।

ভালোবাসার মানুষগুলোর উপর, কারো কোন রাগ কিংবা কষ্ট থাকলে, তারা ক্ষমা করে দিক……জন্মদিনের প্রার্থনা এটাই!

ছয়। পরম মমতায়, ওদের কুড়িয়ে নিয়ে মালা গাঁথা হোক, অবহেলায় অবলীলায় পায়ে পিষে ফেলাই হোক কিংবা নরম ঘাসে পড়ে থেকে, নিঃশেষ হয়ে যাওয়া অবধি অস্পর্শিতই থেকে যাক, যা কিছুই ঘটুক—বকুলেরা ঝরবেই!

সাত। মাইনষের খাইয়াদাইয়া কুনু কাম নাই, শপিং করতে যায়, একটা ড্রেস কিইননা আনে, তারপর সেই ড্রেস পইরা আবার শপিং-এ যায়। তারপর আরেকটা ড্রেস নিয়া আসে।

সেইটা পইরা আবার শপিং-এ যায়! পরবর্তীতে, আবার যেইটা শপিং কইরা আনে, সেইটা পইরা আবার শপিং করতে যায়!

চলতে থাকে। চলতেই থাকে।

উফফফ্‌…….!!

দ্বৈত: মাইনষে যা খুশি করুক, তোর কী? সবাই কি তোর মতো রবিনহুড, হারকিউলিকস্ হইবো নাকি!?

আমি: মানে কী…..!? এইহানে আবার রবিনহুড আইছে কই থেইকা…!?

দ্বৈত: ঐ যে তুই একবার বলছিলি না যে তোর মন চায় রবিনহুড, হারকিউলিকসের মতো সারাজীবন একই পোশাক পইরা রাখতে পারলে, ভাল হইতো!

আমি: অ, ঐটা তো বলছিলাম…….তাই বইলা তো আর হারকিউলিকস হইয়া যাই নাই! সাথে তো এইটাও বলছিলাম যে এক পোশাক দুইবার পরারও কোনো মানে নাই……এইটা তো মনে রাখস নাই, ঐটা তো ঠিকই মনে রাখছস……শালা….!!

দ্বৈত: ঐটাও মনে আছে, কিন্তু ঐটা তো জীবনেও করবি না…….তুই যেই কিপটা!

আমি: অইইইকক!…….চউউপপপ!! আমি কিপ্টা না, আমি শুধু অপচয় করতে চাই না…..হুহহ্!! যাহ্……দূর হ তুই…….দূরে গিয়া বাঁইচ্চা থাক!

আট। ক্রিসমাস উপলক্ষে………ক্রিসমাস নিপল কভার!

আচ্ছা, সব দেখাতে পারলে, শুধুমাত্র অইটুকুন নিপলটা কী দোষ করে!?

একটা ড্রেস বানাতে পারে না, যেটাতে সমস্ত শরীর ঢাকা থাকবে………শুধুমাত্র দুইটা নিপল আর নিচে দুই ইঞ্চি খোলা থাকবে!

এই ড্রেস যে পরবে, তাকে দেখিয়ে সবাই বলবে, দেখো, কত্ত সাহসী ড্রেস পরেছে!

…………ওই যে খুব খোলামেলা অভিনয় করলে, বলে না যে সাহসী অভিনয় করেছে………ওরকম!

কথাটা শুনলেই মেজাজটা খারাপ হয়ে যায়…..এখানে সাহসের কী হল? এটা একটা নিজস্ব ইচ্ছের ব্যাপার…..সাহসের কিছু নেই…..

নয়। যেদিন ক্লাস করতে ভাল লাগে না, সেদিন ইয়াং স্যাররা লেকচার দেয়ার সময়, সামনের বেঞ্চিতে বসে, স্যারদের চোখে চোখ রেখে, একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি, উনাদের অস্বস্তিতে ফেলার জন্য!

কীসের কী! তেনারা আরও বেশি সময় ধরে চোখে চোখ রেখে, আরামসে বকবক করতে থাকে!….উল্টো, ভীষণ অস্বস্তিতে, একসময়, নিজেই চোখ সরিয়ে নিই!

স্যাররা নিশ্চয়ই বুইঝা ফেলেন যে শয়তানির উদ্দেশ্যেই তাকিয়ে আছি!

দশ। ভালোবাসলে, কেবল ভালোবাসতেই হয়…….ভালোবেসে, অপর প্রান্তের মানুষটা এ প্রান্তের কাছ থেকে কী পেলো, সে হিসেব কখনো করতে নেই…..

কোনো মানুষের নিজের মধ্যে যদি এমন কিছু থাকে, যা ভালোবাসার মানুষটাকে সম্পর্কে থাকতে প্রভাবিত করে, তবে তা উপরি পাওনা……কিন্তু এর হিসেব কখনো করতে নেই।

এগারো। আজ ২৭ অক্টোবর……২ বছর হয়ে গেলো…….

পুরনো কষ্টের ধোঁয়ায় নতুন গন্ধ…….

ভাবি, কষ্টকে স্থান ছেড়ে দিলে, কষ্টও হয়তোবা কোন এক অসময়ে সুখকে জায়গা ছেড়ে দেবে।

কষ্ট আসে……সময়ের পিঠে চড়ে, বিদেয়ও নেয় অমন করে….কষ্টে, খারাপ থাকার চাইতে……সুখে, ভাল থাকতে না পারাটা বেশি যন্ত্রণার।

জীবন, যে রঙেই ঘিরে থাকুক, সবাই ভাল থাকুক।

বারো। আমার ভয়াবহ রকমের ফোন রিসিভ না করার অভ্যাস। কোনো জরুরী প্রয়োজনে ফোন আসতে পারে, এমন না হলে, অপরিচিত তো দূরের কথা, পরিচিতদের ফোনও রিসিভ করি না!

এজন্য যখন সবাই কথা শোনায়, বকা দেয়, তখন আমি চার কান খুইলা সেইসব শুনি, বিয়াল্লিশ দাঁত দিয়া সেইসব বকা চাবাইয়া চাবাইয়া খাই! অপরাধ যেহেতু করি, সাজা তো সাদরে গ্রহণ করতেই হবে!…হেহে…

এই অবস্থা এতই খারাপ যে, একবার আমার এক দাদি মারা যাওয়ার খবরটা পর্যন্ত সময়মতো কেউ আমাকে দিতে পারে নাই!

আমিও আর ভয়েভয়ে কাউকে বলতে পারি নাই, ফোন রিসিভ করি নাই ঠিকাসে, কিন্তু একটা মেসেজ তো দিতে পারতা!

বহু আগে কে যেন বলছিল, “কল সেন্টারে জব করবি?”

সাথেসাথে আমার গলা শুকায় গেছে! “এক গ্লাস পানি দিবি?”

“কী……!??

“হে হে হে……”

আর, রিসিভ করতেই হবে, এমন কোন ফোন চলে এলে, ইচ্ছা করে দৌড়ায়া পালায় যাই!….হে হে

অথচ এই আমিই একদিন প্রচণ্ড অস্থিরতায় বারবার ফোন দিতে গিয়ে ব্লক খেয়ে যাই! (ভিডিও কল দিয়েছিল আমাকে, এক মিনিট যেতে না যেতেই বলল, সব কাপড় খুলে ফেলতে…….কথা শুনিনি বলে ফোনটা কেটে দিয়েছিল!

অথচ, কতগুলো মাস ধরে একটু কথা বলার জন্য আমি অস্থির হয়ে ছিলাম……ফোনটা কেটে দেয়ার পর আরো অস্থির হয়ে বারবার ফোন দিয়েছিলাম……)

একটা ফোন করার জন্য কত যে দোকান খুঁজেছি…….

বালের সব দোকান—একটাতেও কল করা যায় না!

অবশেষে একটা দোকান থেকে ফোন করেছিলাম…….

………………যে আচরণ অন্য কেউ করলে মেয়েটি তাকে খুন পর্যন্ত করে ফেলতে পারবে, সে একই আচরণ ভালোবাসার মানুষটি করলে মেয়েটি কিছুই মনে করবে না। বরং ওই মুহূর্তে মেয়েটির মনে হতে থাকবে, এমন হওয়াটাই স্বাভাবিক। উল্টো অমন আচরণের পেছনে সে কোনো না কোনো গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়ে ফেলবে!

আচ্ছা, মেয়েরা কি সবসময়ই ভুল মানুষের কাছেই বাঁধা পড়ে?

যে মানুষটা আমাকে এত অবহেলা করে, আমি কিনা তার জন্যই এমন মরিয়া হয়ে থাকি?

ভাবনা: তিনশো চৌষট্টি

………………………………………

এক। আজ আমি আমার জীবনে ঘটে যাওয়া সত্যিকারের একটি ভালোবাসার ঘটনা আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।

আমি এলএলবি’তে পড়েছি। ২০১৫-তে একটি প্রাইভেট ভার্সিটিতে আইন বিভাগে ভর্তি হই। ২০১৭ সালে যখন আমার অনার্সের থার্ড ইয়ার চলছে, তখন কেমন করে জানি আমার প্রাইমারি স্কুলের এক ফ্রেন্ডের সাথে অজানা এক অনুভূতিতে ভালোবাসার সম্পর্ক হয়। কেউ কাউকে প্রপোজও করিনি। আমার আগে তার একজন বয়ফ্রেন্ডও ছিল, তার সাথে ব্রেকাপ হয় ২০১৫-তে। তবুও আমি সব মেনেই তাকে ভালোবাসি।

ভালোবাসার সময়টা ছিল ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭। মেয়েটির বাড়ি ছিল ফরিদপুরে। সে করেরডাঙা কলেজে গণিতে অনার্স পড়ছিল। যা-ই হোক, আমাদের পরিবারে একটা মেয়ে বিয়ে দেবার ব্যাপারে অনেক কিছু মেইনটেন করতে হয়, কিন্তু ওদের পরিবারে এত কিছু মেইনটেন করে না। তবুও আমি সবকিছু মেনে তাকে ভালোবাসি। আমরা দুজন দুজনকে এত ভালোবেসেছি যে বুঝাতে পারব না। সে আমায় কথা দিয়েছিল, সে আমি ছাড়া আর কারো হবে না। এভাবে দেখতেদেখতে বছর কেটে যায়। অনেক গভীরের ভালোবাসা আমাদের। দেড় বছর কেটে গেল এভাবে।

হঠাৎ ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখ সে আমায় দেখা করতে বলে। আমি দেখা করি একটা পার্কে। সে আমায় বলে, “আমার দুলাভাই আমার বিয়ে ঠিক করেছে একটা ছেলের সাথে। আর আমি যদি বিয়ে না করি, তাহলে উনি আমার বোনকে ডিভোর্স দিয়ে দিবেন।” আমি বলি, “এ কেমন কথা? তুমি তোমার দুলাভাইকে বোঝাও যে তুমি একটা রিলেশন আছো। নয়ত ওই ছেলেটাকে বোঝাও, কারণ একজন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ কখনোই একটা মন ভাঙবেন না।”

সে মানসম্মানের ভয়ে কাউকে কিছু বলতে চাইল না, কারণ দুলাভাই যদি এটা এলাকা করে দেয়, তাহলে পরিবারের মানসম্মান আর থাকবে না। আমি একটা ছেলে হয়ে এ কথা শুনে রাস্তায় বসে চিৎকার করে শত মানুষের সামনে কেঁদেছি। কিন্তু সে বলে, ফ্যামিলিকে কষ্ট দিয়ে কেউ সুখী হতে পারে না, তাই সেও তার পরিবারকে কষ্ট দিতে পারবে না। কারণ, তার পরিবার তো তার খারাপ চায় না! “প্লিজ রাব্বি, তুমি নিজেকে মানিয়ে নাও। আমার ২২ বছরের পরিবারকে দেড় বছরের ভালোবাসার জন্য কষ্ট দিতে পারব না।” অনেক কেঁদেছি রাস্তায় পড়ে। মা আর খালাকে এনেছি তার সামনে। উনারা বললেন, “যদি তুমি আমাদের পরিবারের বৌ হয়ে আস, অন্তত তোমার পড়াশুনার কোনো ক্ষতি হবে না। তোমাদের পরিবারকে আমরা ম্যানেজ করবো। তোমাদের হাতখরচের টাকাটা আমরা যে করেই হোক, যোগাড় করে দেবো। আর তোমরা দু’জন তো টিউশনি করেও চলতে পারবে। এভাবে আমাদের ছেলেটাকে কষ্ট দিয়ে চলে যাওয়াটা ঠিক নয়।” আম্মু আরো বললেন, “তুমি যদি রাজি থাক, তোমার বাবার সাথে আমরা কথা বলতে পারি।” কিন্তু সে বলে, “না, আন্টি, রাব্বি বেকার, আব্বু আপনাদের অপমান করে বাসা থেকে বের করে দিবে।”

বাসায় চলে আসার পর তাকে ফোন করলাম, ফেসবুকে নক করলাম,অনেক কান্নাকাটি করলাম। নাওয়াখাওয়া ছেড়ে প্রায় অসুস্থ হয়ে গেলাম। তবুও সে আমার কাছে আসবে না, ফ্যামিলির পছন্দমত বিয়ে করবে। সে আমায় ফেসবুক থেকে ব্লক করে দেয়। মোবাইল ফোনেও ব্লক করে। তার একটাই কথা, ফ্যামিলিকে কষ্ট দিতে পারবে না। তারপর ওর মাকে আমি ফোন দিলাম। ওর মা বললেন, ছেলের ফরিদপুর শহরে বাড়ি আছে, ভাড়াটিয়া আছে, দোকান আছে। আমি বেকার, কী করে কী করব! তারপর বিন্দু আমাকে আমাকে ফোন দেয় তার মাকে কেন আমি ফোন দিলাম, সে কৈফিয়ত চাইতে। সে আমার খালাকে বলে, “আমি যদি রাব্বির জন্য আমার ফ্যামিলি ছাড়তে পারি, ভবিষ্যতে রাব্বিকেও যে ছেড়ে দেবো না, এর গ্যারান্টি কী?” এ কথা শুনে আমি হতবাক হয়ে গেলাম। তারপর তার ভাই ফোন করে বলেন, তোমাদের মধ্যে কি লিখিত চুক্তি হয়েছে যে প্রেম করলে বিয়ে করতে হবে? আরো বললেন, আমি ৩ বছর মাস্টার্স পাস করে এত পরীক্ষা দিয়েও চাকরি পাই না, তুমি কী করবে শুনি? আরো যা নয়, তা ব্যবহার করে আমার খালার সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললেন।

শেষমেশ মা-বাবা ছোট হয়ে যাচ্ছে বলে আমি চুপ হয়ে যাই। তারপর ৬ অক্টোবর মেয়েটির বিয়ে হয়। আমি ওর দেয়া কষ্ট সহ্য করতে পারি না। বুকের ভেতর তীব্র ব্যথা হয়, চোখের জল এখনো শুকায় না। এখন আমি সত্যি যেন এক ধরনের রুগী হয়ে পড়েছি। তাতে কারো কিছু যায় আসে না। আমি মরে গেলেই বা কী? সে তো তার স্বামী নিয়ে দিব্যি সুখী। সে ঘুরে বেড়াচ্ছে, ছবি আপলোড করে ফেসবুক ভর্তি করে ফেলছে। আমিই মনে কষ্ট পাই আর সারাক্ষণই কাঁদি।

ভালোবাসা কাউকে করে রাজার রাজা, আর কাউকে করে দাসেরও দাস।

দুই। আপনার আইডিটা ‘নেই’ হবার পর থেকে আমার প্রচণ্ড যন্ত্রণা হতো। চারপাশের সমস্ত কিছু বিরক্ত লাগতো। সব কিছু স্বাভাবিক নিয়মেই চলছে, এটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিলাম না! যে মানুষগুলো সকালবিকাল একটা আইডির লেখা পড়তো, তাদের সবারই আজ সেই আইডিটা ছাড়াও সবকিছু দিব্যি কেটে যাচ্ছে, সেই মানুষটার এখন কী অবস্থা, তাতেও কারুরই কিছুই এসে যায় না; এইসব মানতেই পারছিলাম না। মানুষ এত বিস্মৃতিতে বাঁচবে কেনো?

চলমান সমস্ত কিছু অসহ্য লাগতো। ইচ্ছে করতো, ভেতরের সবটা শক্তি দিয়ে সবকিছুকে স্থির করে রাখি! আরো কত কী যে সারাক্ষণ মাথায় আসতো! এখনও আমি আমার আইডিটাতে ঢুকতে পারি না, আমি সহ্য করতে পারি না! আমার মনে হয় যেনো বিশাল এক রাজ্যে আমি ভীষণ একা, আমাকে ফেলে আপনি কোথায় হারিয়ে গেছেন…….চারপাশে কেউ নেই…….কিচ্ছু নেই…..কারণ, চারপাশে কেউ ছিল না, কিচ্ছু ছিল না….শুধু আপনিই ছিলেন……আসলে আপনি ছিলেন না, আমিই আপনাকে রেখেছিলাম……শুধু আপনাকেই…….

তাই সেখানের একাকীত্ব আমি নিতে পারি না!

আমি সবসময় নেগেটিভ কিছু থেকে একটা পজিটিভ কিছু খুঁজে বের করে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করি। এক্ষেত্রেও হয়েছিল তা-ই। সেই সময় আইডিটা যে কারণে বন্ধ করা হয়েছিল, সেই কারণটা ছাড়াও ঘটনাটাকে নানান দিকে ঘুরানোর চেষ্টা চলছিল। অনেক ব্যক্তিগত ব্যাপার উঠে আসছিল, যার সব সত্য নয়, আবার সব মিথ্যেও নয়।

কিছু হিসেব মিলিয়ে দেখলাম, ডিজেবল হয়ে গিয়ে, ভালই হয়েছে! তা না হলে অন্য কোনো গুরুতর সমস্যা দেখা দিত।

আপনার প্রায় সব লেখাই বাংলায় থাকতো আর আমার ফোনে বাংলা পড়া যেত না।

আর একটা অদ্ভুত কাজ, কত যে ধৈর্য নিয়ে করতাম সেই সময়!

তা হল, বাংলিশে লেখা সব কমেন্ট পড়েপড়ে, স্ট্যাটাসটা কী সম্পর্কে লেখা, সেটা বুঝতে চেষ্টা করতাম!

আরো কত কী যে করতাম……..

দেখতাম, কত রং যে সময়েসময়ে আসছে……আনন্দে ভাসছে…..চুড়ান্তে মাতাল হচ্ছে……তারপর একসময় রংহীন হয়ে, গভীর গহ্বরে বিষাদে হারিয়ে যাচ্ছে………

আবার নতুন রং উঁকি দিচ্ছে……

প্রক্রিয়ার পুনরাবৃত্তি। চলছে তো চলছেই!

আরো কত কী যে দেখতাম!

যখন নতুন ফোনে বাংলা পড়তে পারলাম, তখন দিনরাতের অনেকটা সময় চলে যেতো পুরোনো, নতুন লেখাগুলো পড়তেপড়তে।

কিন্তু খুব সমস্যা দেখা দিতো। কারণ, যেকোনো লেখা পড়ে দুনিয়ার সব প্রশ্ন মাথায় আসতো……সব প্রশ্নের উত্তর জানতে ইচ্ছে করতো……এজন্য আপনার উপর প্রচণ্ড রাগ হতো!

প্রায়ই মনে হতো, আপনাকে তুলে নিয়ে আসি!……হি হি……তারপর অনেকদিন আটকায় রাখি!….পাশে বসিয়ে, সব লেখাগুলো একেএকে আমি পড়বো, আর মনেআসা সব প্রশ্নের উত্তর আপনি দেবেন!

সব লেখা পড়া হয়ে গেলে, জানা হয়ে গেলে, বুঝা হয়ে গেলে, তারপর মন চাইলে আপনাকে ছাড়বো, নয়তো আমার কাছেই আটকে রাখবো!…হুম!!

নক করার পর থেকে তো মেসেজ দেওয়া হতো……কিন্তু তার আগের সব ছিল একেবারেই নীরবে…….আপনাকে পড়তাম চুপিচুপি, লুকিয়ে।

তখন কে জানতো একসময় ভালোবাসার কষ্টজলে, মন তাকে রোজ ভেজাবে!

ফ্যান থাকা ভাল, কিন্তু পাগলা ফ্যান খুবই ভয়ানক……এইসব পাগলা ফ্যানদের ভয়াবহতা সে সময় খুব চোখে পড়ছে। সত্যিটা না জেনে,না বুঝে, মঙ্গল করার চেষ্টা—খুব বেশি অমঙ্গলের দিকে চলে যাচ্ছিল।

শেষমেশ আইডিটা ডিজেবল হওয়ায়, অনেক বিপদ কেটে গেছে।

এরপর থেকে নিরেট কষ্টটা ভেতরে থেকে গেলো, আর বাইরের আমি’টা ধীরেধীরে স্বাভাবিক হতে চেষ্টা করল। এখনও মনে হলে, আইডিটাকে দৃশ্যমান রূপ দিয়ে, জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে হয়।

তারপর, একদিন নতুন আইডি খোলা হলো।

অথচ……..

মনে পড়লেই, একটা ছিঃ নিজেই নিজেকে দিই।

তিন। জীবনটা এত সুন্দর, অথচ অনেক মানুষ কিনা কেবল দণ্ডগর্তে আটকে থাকতে চায়!

দণ্ডগর্ত নিশ্চয়ই চমৎকার…….কিন্তু দণ্ড কেবলই গর্তে আটকে থাকলে, এর সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়….. দণ্ডগর্তকেই সব মনে করলে, ওটা আসলে কোথাও-ই থাকে না!

চার। ঐ যে স্কুলের সামনে আন্টিরা, ভাবীরা, আপুরা জটলা পাকায়া দাঁড়ায়াদাঁড়ায়া বা বইসাবইসা ‘জানেএএএন ভাআআআবীইইই’ বইলা লম্বা টান দিয়া তেনাদের শাশুড়ি, ননদসহ শ্বশুরবাড়ির চৌদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধার করেন, তাদের দেখলেই আমার মন চায় একটা খুউউউব গন্ধযুক্ত পাদ দিয়া তাহাদের সভা ভাইঙ্গা দেই!

কিন্তু যেহেতু যার যা ইচ্ছা, তা-ই করবে……যারে খুশি তারে করবে! যা ইচ্ছা তা-ই করবে বইলা স্বাধীনতা নামক একখান কথা আছে, তাই আর পাদটা দিতে পারি না!…….চাইপা চুইপা অতি কষ্টে চইলা আসি!