ভাবনাদেয়ালের পলেস্তারা (৯৯তি অংশ)

 ভাবনা: ছয়শো সাতাশি
...............................................................
এক।
জীবনকে যেভাবে দেখেছিলাম
-----------------------------------------
(যতদূর মনে পড়ে, সময়টা ২০১১ সালের মাঝামাঝি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ’তে সবেমাত্র ক্লাস শুরু হয়েছে। আমি আইবিএ’র এমবিএ ৪৫ডি ব্যাচের ছাত্র ছিলাম। রোল নম্বর ছিল ৮৩, সেকশন বি। সে-সময় কোনও এক ক্লাসে স্যার আমাদের ‘Where do you like to see yourself in ten years from now?’ এই প্রশ্নের উত্তর লিখতে দিয়েছিলেন। একেক জন একেক রকম উত্তর লিখেছিলেন। সে-দিন আমি নিচের কথাগুলি কাগজে লিখেছিলাম। আমার ক্যারিয়ার কী হবে, কেমন হবে, কখন হবে তার কিছুই আমি জানতাম না তখন।
দুইদিন আগে পুরনো কাগজপত্র ঘাঁটতে গিয়ে এটা পেলাম। পড়ে ভালো লেগেছে, তাই সে-লেখাটি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। এখানে আমি যে লক্ষ্যের কথা লিখেছি, সেখানে পৌঁছতে আমার ১০ বছর লাগেনি, তার অনেক অনেক আগেই আমি সেখানে পৌঁছে গেছি। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।
আপনার নিজের জীবনের দিকে তাকান। তার পর আপনিও প্রশ্নটির উত্তর একটা কাগজে লিখে রাখুন। বলার জন্য বলছি না, সত্যিই লিখে রাখুন। আমরা যদি একটুও মাথায় না রাখি, আমরা কোথায় আছি, কোথায় যেতে চাইছি, তবে সামনের দিকে এগোনো সহজ নয়। হ্যাঁ, জীবন কোনও একভাবে কেটেই যাবে, তবু আরও ভালো একটা জীবন আপনার ও আপনার পরিবারের হতেও তো পারে! সমাজের মানুষের প্রতিও তো আমাদের অনেক দায়িত্ব আছে, তাই না?
তাই বলছি, হাতে একটুকরো কাগজ নিন, লিখুন। কখনও হয়তো আমার মতোই আপনারও শেয়ার করতে ইচ্ছে করবে। আমি আপনাদের জন্য প্রার্থনা করছি, আপনাদের জীবনে সেই দিনটা আসুক। সবাই নিজের মতো করে ভালো থাকুক।)
The plan needs to meet up three essential fronts. They are—
i) What to do
ii) When to do
iii) How to do
The first two approaches serve to meet up my objective. The third one is directly related to my working strategy.
Now, I am preparing myself to serve the purpose of letting others see me in a position that is hoped to be worth-seeing in ten years from now.
What approach: I would like to be in the topmost position of any corporate or public sector.
When approach: By the end of 2021.
How approach: I am motivating myself in my everyday working arena. I am gathering knowledge through reading self-motivating books. I am learning the essential techniques and prioritizing them. I am building my attitude. I am improving my decision-making skills. I try to organize the programs of my university on my own accord. I am developing a positive vision.
I will try my best to achieve what will let others know my identity in a very impressive manner. I have another secondary plan. I want to be a writer in ten years from now. I like to see at least 15 books to my credit before my death. I am now writing blogs, essays (literary and philosophical), poems, etc. I am in the habit of very extensive reading as well.
দুই। তার পর বলো, এত প্রেম আসে কইত্থেইকা? টাকা পাও এইগুলা কইরা?
তিন। এই পৃথিবীতে ভালোবাসা শেষকথা নয়, শান্তি ও শুধু শান্তিই শেষকথা। তাই সেই মানুষটি অনেক দুঃখী, যাকে এমন কেউ ভালোবাসে, যে তাকে তার মতো থাকতে দেয় না। কার‌ও ভালোবাসার দাবিতে অশান্তিতে বাঁচার চাইতে বরং তার উদাসীনতায় স্বস্তিতে বাঁচা অনেক ভালো।
চার। নিজে করে না দেখে কোন‌ও চাকরিকে ভালো বোলো না।
নিজে খেয়ে না দেখে কোন‌ও খাবারকে সুস্বাদু বোলো না।
নিজে ঘুরে না দেখে কোন‌ও জায়গাকে দারুণ বোলো না।
নিজে বেঁচে না দেখে কোন‌ও জীবনকে অপূর্ব বোলো না।
নিজে ঘর না করে কোন‌ও স্বামী/ স্ত্রীকে ভালো বোলো না।
দেখতে ভালো মনে হ‌ওয়া আর সত্যিই ভালো হ‌ওয়ার মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে।
পাঁচ। আমাদের বন্ধুরা প্রায় সবাই-ই চরিত্রহীন।
আমাদের বান্ধবীরা সবাই-ই চরিত্রবান।
আর আমরা? শুধুই চরিত্রহীন।
ছয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই, আত্মসম্মানবোধহীন পিতার সন্তান আত্মসম্মানবোধহীনই হয়ে থাকে।
সাত। কেউ পরিশ্রম করেও ব্যর্থ হলে তাকে মেনে নেওয়া যায়, কিন্তু কেউ আলস্যের কারণে ব্যর্থ হলে তাকে সহ্য করাও কষ্টকর।
আর এক ধরনের লোককে সহ্য হয় না, যারা সময় থাকতে ফুর্তি করে বেড়ায়, সময় ফুরিয়ে গেলে সাহায্য চাইতে আসে।
তৃতীয় ধরনের এক অদ্ভুত জীব আছে, যারা পরিশ্রমীও না, অলস‌ও না; সফল‌ও না, ব্যর্থও না। কেউ বলতে পারবেন, ওরা কারা?
আট। যে আমাকে একসময় বিয়ে করতে রাজি হয়নি, তার অবস্থা দেখে আমি আজকে হাসি।
আমি যাকে একসময় বিয়ে করতে রাজি হইনি, আমার অবস্থা দেখে সে আজকে হাসে।
এ জগতের এটাই বোধহয় নিয়ম।
নয়। বালক, তুমি বালিকার পোস্টে দিচ্ছ লাইক, ছবিতে দিচ্ছ লাভ।
এদিকে আমি আমার বসের পোস্টে দিচ্ছি লাইক, ছবিতে দিচ্ছি লাভ।
বালিকা তোমাকে পাত্তা দেয় না,
আমার বস আমাকে পাত্তা দেন না।
আমরা দুইজন‌ই ব্যর্থ মানুষ।
বালক, আসো, গলাগলি করে কাঁদি।
দশ। বাবাদের একটা কমন প্রশ্ন:
বাবা/ মা, তুই ভাত খেয়েছিস?
মায়েদের একটা কমন প্রশ্ন:
বাবা/ মা, তুই কবে বিয়ে করবি?
বাবাদের কাছে সন্তানের ভাত-খাওয়াটা অনেক গুরুত্ব বহন করে, কেননা যে তারিখ থেকে একটা ছেলে বাবা হয়, সে তারিখ থেকে সন্তান খেল কি না সেটা তাঁর কাছে সবচাইতে বড়ো ব্যাপার। বাবাকে তো খাওয়াতে হয়, তাই ওরকম করে জিজ্ঞেস করাটা ওঁদের অভ্যেস হয়ে গেছে।
কিন্তু মায়েদের কাছে সন্তানের বিয়ে-করাটা অনেক গুরুত্ব বহন করে কেন, তার উত্তর আমি এখনও পাইনি। কেন একজন মায়ের কাছে মনে হয়, এ পৃথিবীতে তাঁর সন্তান এসেছে কেবল বিয়ে করার জন্যই? আপনাদের কী মনে হয়? কখনও ভেবে দেখেছেন ব্যাপারটা?
এগারো। কখনও-কখনও ইচ্ছে হয়, পঙ্গু হয়ে বিছানায় পড়ে থেকে দেখি...আমার চারপাশের মানুষগুলি আসলে কেমন!
অবশ্য...আমি অনেকটা দেখে ফেলেছিও...তাই মানুষকে ফিরিয়ে-দেয়াটা আমার জন্য খুব সহজ হয়ে গেছে।
বারো। একসময় মনের সুখে গাইতাম, সেদিন দুজনে দুলেছিনু বনে...তারপর হঠাৎ একদিন বলে বসলাম, ও তো আমাকে জোর করে দোলনায় উঠাইসে, এরপর ধাক্কা মারি ফালায় দিসে। মাটিতে পড়ে আমি অনেক ব্যথা পাইসি! তখন বুঝি নাই, এখন বুঝতেসি! ও খারাপ, আমি ভাল...আম্মুউউউ...
এইসব ভণ্ডদের ধরে-ধরে থাবড়াইতে ইচ্ছা করে!
তেরো। ছোটবেলায় আরেক জনের খাতার দিকে তাকালে মাস্টারমশাইয়ের বকা শুনতে হত, আর বড়বেলায় ফেসবুকের দিকে তাকালে ব‌উয়ের সন্দেহ সহ্য করতে হয়। আমি কোথায় গেলে একটু শান্তি পাব, মা?
ভাবনা: ছয়শো আটাশি
...............................................................
এক। বেশিরভাগ পুরুষের গাউনের নিচে পরিবারের সদস্যদের পোশাকগুলি সযত্নে রক্ষিত থাকে, গাউন খুললেই সেগুলি দেখা যায়। কার‌ও-কার‌ও গাউন থেকে আর‌ও কিছু পোশাক বেরুবে। একজন পুরুষের জন্য সত্যিই এটা সৌভাগ্য। ছোট্ট একটা জীবন, সে জীবনে যত নির্ভরতা কাঁধে নেওয়া যায়, তত‌ই আনন্দ। আমি এরকম ভাবি।
বাবা হচ্ছেন সেই মানুষটি, যাঁকে আমরা সারাজীবনই ভুল বুঝে যাই, এবং তাঁর মৃত্যুর পর তাঁকে মাথায় তুলে নাচতে থাকি। আপনি, আমি কেউই এর বাইরে ন‌ই। কোন‌ও মানে হয়?
দুই। প্রতিটি মানুষেরই কেউ একজন থাকে, যে একজনের ইনবক্সে মানুষটার অসংখ্য মেসেজ আনসিন পড়ে থাকে।
প্রতিটি মানুষেরই কেউ একজন থাকে, যে একজনের অসংখ্য মেসেজ মানুষটার ইনবক্সে আনসিন পড়ে থাকে।
ফোন করা যায় না, ফোন ধরা যায় না, শুধুই মেসেজ পাঠানো যায়।
মুখে কিছুই বলা যায় না, শুধুই লিখে পাঠিয়ে দেয়া যায়, কখনওবা তাও করা যায় না!
আরও কষ্টের...সিন বাট আনরিপ্লাইড!
তিন। ভুল করলে ভাল, পা মাটিতে থাকে।
চার। আমার আগের পোস্টের কমেন্টথ্রেডে (ইনবক্সেও) অনেকেই অনেক কথা বলেছেন, বলছেন। বিরক্ত হয়ে কিছু কমেন্ট ডিলিটও করে দিয়েছি। (কেন? এটা আমার ওয়াল। এখানে আমি আপনার বেয়াদবি সহ্য করতে আসি নাই।) বিনয়ের সাথে বলছি, এই সুশান্ত পাল আজকের দিন পর্যন্ত তার লেখার, বক্তৃতার ও অন্যান্য কাজের মধ্য দিয়ে এই পর্যন্ত যতজনকে (সংখ্যাটা অন্তত ২০ লক্ষ) পথ দেখিয়েছে, আপনি কিংবা আপনার পরিচিত কেউ কাজটা এখনও পর্যন্ত করেননি।..............আমি করতে পেরেছি, এটা আমার সৌভাগ্য।
ব্যক্তিগতভাবে, ফোনে কিংবা সাক্ষাতে কাউন্সেলিং করে সুইসাইডের পথ থেকে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে এনেছি এখনও পর্যন্ত ৭৩ জনকে। পরোক্ষভাবে, সংখ্যাটা অগনিত। আপনি 'হেমলক সোসাইটি' কেবলই স্ক্রিনে দেখেছেন। আমি সে সোসাইটি'র একজন প্রাক্তন নিরলস কর্মী।
শতভাগ নিঃস্বার্থভাবে। কোনও আর্থিক সুবিধা না নিয়ে।
বিনিময়ে আমি কী পেয়েছি? লোকের আঘাত, নির্যাতন, অত্যাচার।
বেশি কথা বলবেন না। আপনি লোকের জন্য কী করতে পেরেছেন, নিজেকে সে প্রশ্নটি করুন।
আবারও বলছি, আপনি, আগে আমি যা করেছি, তার অন্তত দশ ভাগের এক ভাগ মানুষের জন্য করে দেখান, বিন্দুমাত্রও স্বার্থ ব্যতীত, এরপর আপনার সাথে আমার কথা হবে।
ধন্যবাদ।
পাঁচ। ভাই রে, আপনাকে চিনি না, জানি না, আর আপনি কিনা প্রথম পরিচয়েই চাকরি পাওয়ার বুদ্ধি চেয়ে বসেন! আপনি তো নিজের বউকেও বলামাত্র শাড়িগহনা কিনে দেন (দেবেন) না, তাই না? আমাকে কি আপনার বউয়ের চাইতেও আপনআপন লাগে? নাকি, ওই যে কিছু মানুষ আছে না, টয়লেট দেখলেই যাদের হিসু করতে ইচ্ছা করে, আপনিও তাদের দলের?
ছয়। আমাদের একজন সাকিব ছিল।
আমাদের একজন মুশফিক আছে।
কেউ প্রস্থানে,
কেউ স্বস্থানে!
বাংলাদেশ---খেললে, বেশ!!
সাত। বাজল তোমার আলোর বেণু…এ গানকে সরিয়ে রেখে বাঙালির পুজো শুরু হয় না, কখনো হয়নি, সামনেও হবে না।
যেমনি নজরুলের 'ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ' গানকে সরিয়ে রেখে ঈদ শুরু হয় না, কখনো হয়নি, সামনেও হবে না।
জ্ঞানবুদ্ধি হ‌ওয়ার পর থেকে এমনটাই দেখেছি।
কিছু মানুষের বিকল্প হয় না। ফলে, কিছু জিনিসেরও বিকল্প হয় না। এই যেমন, আরেকজন রবীন্দ্রনাথ কখনো আসবেন না। ফলে, রবীন্দ্রসংগীতের বিকল্প কেবল রবীন্দ্রসংগীতই থেকে যাবে শেষ পর্যন্ত।
এইসব গান কেবলই গান নয়। এইসব গান বিশ্বাসের, ভালোবাসার, আবেগের। এর কোনো ব্যাখ্যা নেই, এর কোনো ব্যাখ্যার দরকারই নেই। এ সংসারের সবচাইতে সুন্দর অনুভূতিগুলির কোনো ব্যাখ্যা হয় না।
…একেই বলে ক্লাসিক বা কালজয়ী। একটি গান ও সে গানের পেছনের সবাই এমনি করেই ইতিহাস হয়ে থাকেন।
আট।
ডুবি রোমন্থনে
----------------------------------
(২০০৭ সালে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট-এর আয়োজনে চুয়েট অডিটোরিয়ামে একটা সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সে-সেমিনারে উপস্থাপনার দায়িত্বে ছিলাম আমি এবং আমাদের বান্ধবী ঊর্মি। স্যারদের নির্দেশে উপস্থাপনাটি করতে হয়েছিল ইংরেজিতে। তার জন্য সে-সময় আমি যে-স্ক্রিপ্টটি লিখেছিলাম, হার্ডডিস্কে পুরনো কিছু ফাইল ঘাঁটতে গিয়ে আজ সেটি খুঁজে পেলাম। স্ক্রিপ্টটি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।)
Dear audience,
I, Sushanta Paul, from 2002 batch, on behalf of the Department of Computer Science & Engineering, would like to invite the pleasure of your charming presence to the seminar on “Information & Communication Technology 2007” on this auspicious day. Now I request Urmy to throw a glance at today’s program.
Thanks, Sushanta. I am.........from 2002 batch. Today’s program is a seminar and a reunion as well. We feel very fortunate today to discover ourselves in the midst of your company. Today’s day-long program has been arranged on the occasion of the reunion which is divided into two parts: an informative technical session and a cultural session. I want to inform all of you that it is the second reunion but first cultural program organized by the Department of Computer Science & Engineering held at the CUET auditorium. Now, Sushanta, would you please invite all of our honorable guests?
Thank you, Urmy. Now, I would have my pleasure to request respectable participants to take their respective seats.
Thanks. Today, we are enthusiastically gratified to have our senior............ from 1998 batch, Mohammad Golam Hossain from 1998 batch, Nefaur Rahaman from 2000 batch, our special guest Engr. Mir Mohammad Saki Kawsar, General Secretary, CUET Teachers’ Association, Engr. Mohammad Ali Ashraf, Chairman, The Institution of Engineers, Bangladesh, Chittagong Centre, our chief guest Prof. Dr. Shyamal Kanti Biswas, Chairman, CICT, CUET, our valued guest Prof. Dr. Mohammad Tazul Islam, Chairman, Seminar Organizing Committee and all of our seniors. Now, I ask all the guests to take your seats arranged on the dais.
Thank you very much. Now, I request Urmy to ask for receiving our honorable guests with bouquets.
Thanks, Sushanta. Now, I request Shashee, Armin, Farhana, Nishita, Meghla to receive our honorable guests with bouquets.
I express our heartiest thanks to our guests to grant our reception.
Now, I request Mohammad Monjurul Islam from 2005 batch, to recite from the Holy Quran.
Thanks, Monjurul. Now, I ardently request our honorable chief guest Prof. Dr. Shyamal Kanti Biswas, Chairman, CICT, CUET to inaugurate today’s dignified program.
Thank you, Sir. Now, I request our dear sir Mr. A S M Kayes, Member Secretary, Seminar Organizing Committee, to deliver his address of welcome.
……………………………………………………………………………
(after his speech)
How sweet and gracious, even in common speech,
Is that fine sense which can welcome all to the light…….
Truly speaking, the glow that you have spread through your welcoming will last till the end.
Now, I request Mr..........., Ex-student, ’98 batch, CUET to convey his message for all of us.
(after his speech)
“The noblest passion to inspire all seeks its shelter to the noblest minds. “ Thanks, Mr..........., for inducing this passion!
Now, I invite the presence of Mohammad Golam Hossain, Ex-student, ’99 batch, CUET, to pass on your dignified speech.
(after his speech)
I work when I'm inspired,
I dream when I’m prompted.
Thanks, Mr. Golam Hossain, for teaching us how to dream!
Now, I fervently request Mr. Nefaur Rahaman, Ex-student, ’00 batch, CUET to present your appealing speech before us.
(after his speech)
“When a thought raises your spirit, seek for it, go for it as it is the right way to choose.” Thanks, Mr. Nefaur Rahaman, for your valuable speech!
At this phase, now, I would like to request the pleasure of our special guest Engr. Mir Mohammad Saki Kawsar, General Secretary, CUET Teachers’ Association to be right here to gratify us with your radiant speech.
(after his speech)
Through the clouds we can never float;
Until we have a little magic boat,
Shaped like the crescent moon.
We dream of brightening the darkened paths and even of cheering the lonely way if you kindly assist us. Thank you, Sir, for showing us a radiant hope.
Now, Engr. Mohammad Ali Ashraf, Chairman, The Institution of Engineers, Bangladesh, Chittagong Centre, kindly intensify the grandeur of today’s auspicious program with your fascinating speech.
(after his speech)
A man is great as far as he can dream.
Thank you, Sir, for giving us the courage to touch the rainbow of a dream!
Now, I have my full pleasure to invite the honor of our chief guest Prof. Dr. Shyamal Kanti Biswas, Chairman, CICT, CUET to deliver his inspiring speech.
(after his speech)
Come to the edge, He said. They said, "We are afraid." "Come to the edge," He again said. They came. He pushed them... and they flew.
We would never be afraid, rather fly, if you help us, Sir. Thank you.
Last of this session, our valued guest Prof. Dr. Mohammad Tazul Islam, Chairman, Seminar Organizing Committee; please induce a flame of passion among us by the candor of your speech.
(after his speech)
Some words are not merely words they can even reveal the light of thought!
We feel highly motivated by your radiant speech! Thank you, Sir.
Now, dear audience, at this very moment, let’s take a short break for refreshment. After that, we will be back to start our technical session. Please enjoy yourself with the snacks.
Now, I welcome you all to the technical session of today’s program. I request our chief guest Prof. Dr. Shyamal Kanti Biswas, Chairman, CICT, CUET to chair and conduct this session.
Now, at the end of our first technical session, I would like to announce a break for Salatul Jum’a and lunch. The students are asked to go to their respective classes for taking lunch.
I once again welcome you all to the second technical session of today’s program. I request Mr. Mohammad Ibrahim Khan, Assistant Prof., Department of CSE, CUET to chair and conduct this session.
Now, at the end of our second technical session, I would like to announce once again a break before switching to our Open Discussion Part of the technical session.
Now, I greet you all to the Open Discussion Part of the technical session. For conducting this part, I respectfully request the presence of our special guest Engr. Mir Mohammad Saki Kawsar, General Secretary, CUET Teachers’ Association.
Now, we would like to conclude the technical session of today’s program and invite you to enjoy the enthralling cultural session. We express our thanks to all of you for your kind assistance and support without which the plan of organizing this program would not have seen the light of reality.
ভাবনা: ছয়শো উননব্বই
...............................................................
এক। Looking Back At Myself
-------------------------------------------------
(written on 24 July 2003)
I have been in a city since my childhood. The town has been changed bit by bit with the passage of time even more than I have been with my age.
Amazingly enough, the people on a hasty pace remained the same; however, they have been multiplied a lot. They seem to have been born to be in a constant race, be the warriors of an ostensibly eternal struggle! I discover them dreaming to reach the Utopia that hardly comes true. Some of them cherish the dream from a bottomless adoration within their soul, yet, some also get cast off with the broken dreams. The eyes those dreams, weep in nuisance to have seen dreams wrecked; appear before me in different colors. The persons growing up with dreams of diverse colors treasured in their soul stir my heart much.
Once life seemed a Disneyland to me; however, at present, pessimistically, I can feel the futility of that notion. Every person is too lonely to be bold enough in the rat-race of life. The alluring stairs to reach the topmost level always make him intimidated and meager. The restrictions of the contiguous society persistently draw a rapt state for a person enough to constrain the primitive instincts in every pace of life. Here we are to mask ourselves behind the curtain of civilization: a demonstration of optimism in the guise of pessimism--such is the norm of life!
I know I must join that stream of life, adopt that fashion. So, I discover myself ever-hectic at trying to espouse the trend of civility killing the impulsive instincts within my soul. I have started becoming transfigured in the uniform of the society too naive to ensure the spontaneous growth of the soul. I can feel this so-called resurgence exterminates my vivacity every single moment, the dreams my soul yearns for become paler, and the seemingly ornamented norms of the society seize my personality unwarranted. This society teaches me to account for everything; all innermost aspects of life: love, affection, friendship, humanity, relationship--these also appear measurable before me! I am now in a track of race; life is my preferred game; I know I am losing my soul, yet I cannot but; I continue yelling to escape...again, again and again!! I don't know I will have to suit my role in the never-ending drama to mount up and up as Sisyphus had to…
দুই। আমাকে যাঁরা চেনেন, তাঁরা দুই ভাগে বিভক্ত।  যাঁরা আমার লেখা 'সাপলুডুর জীবন' পড়েছেন,   এবং যাঁরা পড়েননি।
লেখাটা যাঁদের পড়া আছে, তাঁরা জানেন, আইবিএ'তে আমার ইন্টারভিউর টাইমস্লট চেঞ্জ করার বিষয়ে আমি একটা অ্যাপ্লিকেশন লিখেছিলাম, যেটি রাহী স্যার অনুগ্রহ করে গ্রহণ করেছিলেন বলেই সেদিনের সেই অতি-অবিশ্বাস্য ঘটনাটির জন্ম হয়েছিল।
কিছু পুরনো ওয়ার্ডফাইল ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়ে সেই অ্যাপ্লিকেশনটা পেলাম। ওটার দাম হয়তো বলার মতো তেমন কিছুই না, কিন্তু আমার কাছে সেটা অমূল্য! আপনাদের সাথে অ্যাপ্লিকেশনটা শেয়ার করছি:
15 January 2011
The Program Director, MBA Program Institute of Business Administration University of Dhaka Dhaka
Subject: Prayer for changing the time slot of the interview schedule of the MBA Program Admission
Sir,
This letter expresses my earnest request to change my interview schedule of the MBA Program Admission 2010-2011. I am a candidate for Full-Time Course, my admit number is 2745 and I am on Interview Board 6 scheduled to be conducted at the 10:00 am to 1:00 pm time slot on January 17, 2011. I am appearing at the 30th BCS written examination and my Examination Centre is at Chittagong. I have an examination on January 17, 2011, coincided with the same time slot of the interview and so it is not possible for me to come from Chittagong and attend the interview at 10:00 am.
I will be highly obliged if you kindly permit me to attend the interview at the 6:00 pm to 8:30 pm time slot scheduled for Evening Board 3 and Evening Board 4 on January 17, 2011.
Yours faithfully Sushanta Paul
(সে-সময় একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম, যা আমার 'সাপলুডুর জীবন' লেখাটিতে আছে। সে-স্ট্যাটাসের শেষ অংশের ব্যাখ্যায় নিচের কিছু কথা লিখেছিলাম:
Let me share the Story behind the Story and elucidate the last part of my status. It would have been quite impossible for me to reach Dhaka University from Dhaka International Airport within just 50 minutes (!!) to attend the interview session of IBA in time on Jan 17, but for the cordial help of Sharmeen didi (Sharmeen Muiz) & Ira madam (Johora Bebe Ira). They’re the persons who made that miracle happen!! And, Romel bhai (Monirul Alam Romel) is the “Man with the Bike” who dared fight against time to meet the deadline!! ....... I feel honoured to express my heartfelt gratitude to these three saviours. ........ Miracles Happen When You Believe!!)
তিন। বন্ধু উৎপল চুয়েট-লাইফের একটা অতি-মজার ঘটনা মনে করিয়ে দিল।
কোন সেমিস্টারে ম্যাথস ছিল, মনে নেই। তো ম্যাথসের প্রথম ৪টা সিটি'তে উৎপল (আমার চুয়েট-লাইফের বেস্ট ফ্রেন্ডদের একজন) অলরেডি ১৫ করে ৬০ পেয়ে যায়। (১৫'তে ১৫ কিন্তু, কম কথা নয়!) কাউন্ট করা হবে বেস্ট ৪ আউট অব ৫। তাই উৎপলের ৫ নম্বর পরীক্ষাটা দেওয়ার কোনও মানেই নেই। তবে ওর প্রস্তুতি ছিল।
এদিকে আমি বেচারা গরীবমানুষ প্রথম ৪টাতেই পেয়েছি আজেবাজে মার্কস। (মানে, ১০-এর আশেপাশে আরকি!) ভাবলাম, শেষটা যদি আমার হয়ে উৎপল দিয়ে দেয়, তা হলে যদি কিছু মার্কস বাড়ে...! প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলাম যদিও, তবু ছাত্র হিসেবে গরীব ছিলাম বলে উৎপলের চাইতে বেশি মার্কস পাব, এটা মাথায় আনার মতো দুঃসাহস হয়নি!
উৎপলকে বললাম, দোস্ত, আজকের একজামটা তুই আমার হয়ে দিয়ে দে, আর আমি তোর হয়ে দিয়ে দেবো। মানে আমি ওকে রিকোয়েস্ট করে রাজি করালাম যে সিটি'র খাতায় আমরা নাম এক্সচেঞ্জ করব।
যে কথা সে কাজ! আমার অনুরোধ ফেলার মানুষ উৎপল নয়, তার উপর সে পরীক্ষাটা ওর জন্য রিডানড্যান্ট!
আহা, পৃথিবী কত সুন্দর! কত সুন্দর পাখি, গাছ, লতা, পাতা, ফুল, ফল...!
ওয়েট! পিকচার আভি বাকি হ্যায়, মেরে দোস্ত!
কাহিনি হইল, সে পরীক্ষায় উৎপল পেল ১৫, আর আমি পেলাম ১২। অথচ সে ১৫ আসলে আমার পাওয়া, আর ১২ উৎপলের পাওয়া! কিন্তু আমার নামের পাশে যোগ হলো ১২, উৎপলের নামের পাশে ১৫।
চুয়েটে পড়ার সময় আমি শালা এতই গরীব ছিলাম যে কোনটাতে আমার প্রস্তুতি ভালো, আর কোনটাতে খারাপ, সেটাই বুঝতে পারতাম না! যাকেই দেখতাম, তাকেই দেখলে মনে হতো, সে আমার চাইতে বেশি নম্বর পাবে...আর উৎপল তো ছিল আদতেই খুব সিরিয়াস গোছের স্টুডেন্ট! নিজেকে বিশ্বাস করে ওকে অবিশ্বাস করার স্পর্ধাটা দেখাই কী করে!
ভাবনা: ছয়শো নব্বই
...............................................................
এক। সত্যজিৎ রায়ের প্রায় মুভির নায়ক সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। সত্যজিৎ-সৌমিত্রের কেমিস্ট্রিটা দারুণ ছিল। অথচ 'নায়ক' সিনেমায় সত্যজিৎ নিলেন উত্তমকুমারকে। সিনেমার স্ক্রিনপ্লেও লিখেছেন উত্তমকে মাথায় রেখেই। উত্তমই কেন? সৌমিত্র নয় কেন? একই প্রশ্ন ছিল খোদ সৌমিত্রেরও। সত্যজিতকেই জিজ্ঞেস করে বসলেন। তাঁর উত্তর কী ছিল, জানেন?..............তুমি কি উত্তম?
উত্তম বড়ো, নাকি সৌমিত্র বড়ো; টেন্ডুলকার বড়ো, নাকি লারা বড়ো; পেলে বড়ো, নাকি ম্যারাডোনা বড়ো; সে তর্কে যাওয়া নিরর্থক। এঁদের বড়ত্ব কোনো তুলনায় মাপা সম্ভব নয়। তবে টুকটাক সিনেমা দেখে এটা বুঝে গেছি, বড়ো অভিনেতার সিনেমা দেখার চাইতে বড়ো নির্মাতার সিনেমা দেখা অধিক নিরাপদ। ওতে সময় নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি কমে। বিনয়ের সাথে বলি, উত্তমকুমারের সব সিনেমাই ভাল নয়, শুধু অভিনয় দিয়েই সব হয় না, নির্মাণ অনেক গুরুত্ব বহন করে। বাজে নির্মাতার হাতে পড়ে একটা ভাল গল্পও মাঠে মারা যায়। ভাল নির্মাতা একেবারেই অপেশাদার অভিনেতার কাছ থেকেও মাস্টারপিস বের করে নিয়ে আসতে পারেন। ইতালির নিওরিয়্যালিস্ট ঘরানার কিছু মুভিতে আমরা তার প্রমাণ পেয়েছি। চরিত্রের সাথে মিল রেখে কাউকে অনেকটা রাস্তা থেকে ধরে এনে অভিনয় করিয়ে ভিত্তোরিও ডি সিকা-রা দ্য বাইসাইকেল থিফ, শুশাইন, উমবার্তো ডি.-র মতো মাস্টারপিস বানিয়ে ফেলতে পারেন!
আচ্ছা, আপনাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, কোন নির্মাতার সব ছবি দেখেছেন/দেখার ইচ্ছে রাখেন, উত্তরে কাকে/কাকে কাকে রাখবেন? আমারটা বলছি:
বাংলা ভাষার ছবির ক্ষেত্রে: সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক, ঋতুপর্ণ ঘোষ
বাংলা বাদে অন্য ভাষার ছবির ক্ষেত্রে: ইংমার বার্গম্যান, লুইস বুনুয়েল, ভিত্তোরিও ডি সিকা, ইয়াসুজিরো ওজু, আব্বাস কিয়ারোস্তামি
দুই। Where there is a CCTV, there is a crime. No CCTV, no crime.
তিন। এই যে ফেসবুক চালাও, অথচ বসের পোস্টে লাইক-কমেন্ট দাও না, তোমার জানের মায়া নাই, কুসুম?
চার। তরুণীদের মিষ্টি গলায় আমি সচরাচর বিভ্রান্ত হই না। অভিজ্ঞতায় দেখেছি, মিষ্টি গলার তরুণীরা সাধারণত মৈনাক পর্বতের মতো বিশাল হয়। যে যত মোটা, তার গলা তত চিকণ।
~ হুমায়ূন আহমেদ
সো ট্রু, বস!
মিষ্টি গলার তরুণীরা আরো দুই শ্রেণীর হন। এক। বাচ্চা মেয়ে। দুই। প্রৌঢ়া মহিলা। অতএব, সাধু সাবধান!
বেশিরভাগ সুন্দরীরই গলা মিষ্টি নয়। মজার মজার গল্প বলতে পারা বেশিরভাগ মেয়েই সুন্দরী নয়। গলা শুনিয়া কেউ লাফাসনে আর, আড়ালে তার বাংলার পাঁচ হাসে।
আরেকটা কথা। কোনো মেয়েই অন্যকোনো ছেলের সাথে রাত বারোটার পর কথা বলার পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকলে আপনার সাথে প্রথম দিনেই ওই বিশেষ সময়টাতে কথা বলতে রাজি হবে না।
ছেলেদের ক্ষেত্রেও এই কথাগুলো প্রযোজ্য।
বি প্র্যাকটিক্যাল, ফ্রেন্ডস। জীবনটা হঠাত্‍ বৃষ্টি ফিল্মের মতো ফিল্মি নয়। এখানে পর্বতের সাথে মূষিকের কিংবা বিস্টের সাথে বিউটির দেখা হয়ে গেলে কারোরই ইনভেস্টমেন্টের বারোটা বাজবে না।
পাঁচ। Happiness is . . . . . . . পরিবারের সাথে সময় কাটানো
ছয়। Follow your passion sincerely, it'll follow you more sincerely.
সাত। কখনও কখনও কাঁদতে ইচ্ছে হয়, ভীষণ ইচ্ছে হয়! তখন কিছু কথা লাগে...
ক্ষয়ে ক্ষয়ে যাওয়া এ সময়/ মেনে নেয় তার পরাজয়/ জীবন পড়ে ধুলোতে, হারিয়ে সঞ্চয়/ যার কথা ভাসে মেঘলা বাতাসে/ তবু সে দূরে তা মানি না।
আট। আমার রুমের বাইরে ডিউটি করেন যিনি, তাঁকে কখনও হাসতে পর্যন্ত দেখিনি। ভীষণ গম্ভীর, বোকা বোকা চেহারায় তাকিয়ে থাকেন। উপরের পাটির দাঁতগুলি সামনের দিকে বের-করা বলে ওঁকে দেখতে আরও বোকা বোকা লাগে। একেবারে সহজসরল টাইপের একটা মানুষ। চোখের চাহনি স্থির, অমায়িক। যা-ই বলি, শুনেও বলেন 'জ্বি স্যার', না শুনেও বলেন 'জ্বি স্যার'। কিছু মানুষ থাকে না...যাঁদের দেখলে মনে হয়, এঁদের মনে বোধহয় কোনও পাপ নেই, ওরকম একজন মানুষ। আমার তো ওঁকে দেখলে মনে 'হতো' এঁর মনে কোনও প্রেম নেই, কোনও আবেগ-অনুভূতি নেই, কোনও দুঃখও বোধহয় নেই।
'হতো' বলেছি, কারণ আজকে আর তা মনে হচ্ছে না। কালকে বাংলাদেশের জয় উপলক্ষ্যে উনি আমাদের অফিসের সবাইকে সন্দেশ কিনে খাওয়ালেন! সন্দেশ কিনে খাওয়ানোটা খুব বড় কিছু নয়, তবে এমন কাটখোট্টা মানুষের মনেও এতটা গভীর আবেগ লুকিয়ে আছে, তা দেখে মুগ্ধ হয়ে গেছি! নিজেরই আফসোস হচ্ছে এ ভেবে যে কালকে আমি রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত অফিস করায় ওঁকেও আমার সাথে আটকে থাকতে হয়েছে। অবশ্য উনি অফিসের কাছেই থাকেন। আমি যা করিনি, তা উনি করে ফেলেছেন! ওঁকে রুমে ডেকে জিজ্ঞেস করতেই উনি লজ্জায় মাথা নিচু করে বললেন, "স্যার, আমি গরীব মানুষ, পারলে ওই ছেলেদের ভালো একটা জায়গায় নিয়ে খাওয়াতাম। আহা, আমাদের জন্য এত কিছু করল বাচ্চা বাচ্চা ছেলেগুলি!"...একে কৃতজ্ঞতা বলে, একে দেশপ্রেম বলে।
খুশিতে আমি আমার রুমের টিভিটা ওঁকে দিয়ে দিয়েছি। বলেছি, আপনি এটাতে খেলা দেখবেন, সিনেমা দেখবেন।
দেশ অনেক বড় জিনিস, দেশের জন্য হাসিমুখে কলিজা কেটেও খাইয়ে দেওয়া যায়, সেখানে সন্দেশ তো খুব তুচ্ছ ব্যাপার!
নয়। মেধাবী মানুষের মেধাকে সহ্য করতে শেখো। ভেবে দেখো, তোমার মেধাহীনতাকেও কিন্তু তারা সহ্য করে। তারা যদি তোমার গোবরের গন্ধকে সহ্য করতে পারে, তবে তুমি কেন তাদের মগজের ঘ্রাণকে সহ্য করতে পারছ না?
দশ। আমি কী পছন্দ করি কী পছন্দ করি না, তা এমন কেউ জানে আমি যার প্রিয় মানুষ, এটা এক কথা; আমি কী পছন্দ করি কী পছন্দ করি না, তা এমন কেউ কেয়ার করে আমি যার প্রিয় মানুষ, এটা আর এক কথা। প্রথমটির নাম সম্পর্ক, দ্বিতীয়টির নাম ভালোবাসা। সব সম্পর্কে যেমনি ভালোবাসা থাকে না, ঠিক তেমনি সব ভালোবাসায় সম্পর্ক থাকে না।
এগারো। কারও সম্পর্কে ভালো কিছু বলার না থাকলে চুপ করে থাকাটাই শ্রেয়। কেউই আপনার আমার সার্টিফিকেট ধুয়ে পানি খাওয়ার জন্য বসে নেই। তবে হ্যাঁ, অন্য লোকের ক্ষতি করে বেঁচে আছে যারা, তাদের ক্ষেত্রে এই কথাটি খাটে না।
ভাবনা: ছয়শো একানব্বই
...............................................................
এক ধরনের অসহায়ত্ব আছে। তা হলো নিজেকে বোঝাতে না পারার অসহায়ত্ব। কেউ আপনাকে ক্রমাগত ভুল বুঝেই যাচ্ছে, এটা সহ্য করা কী যে কঠিন কী যে কঠিন! হয় না এমন, আপনি কাউকে খুব ভালোবাসেন, কিন্তু সে মানুষটা আপনাকে---ভালোবাসে না, সেটা ব্যাপার না; বোঝে না, সেটাও কিছু নয়; পাত্তা দেয় না, তাও মানা যায়---কিন্তু সে আপনাকে ভুল বোঝে। এটা খুব কষ্ট দেয়। কাউকে ভালোবাসি, সে ভালোবাসে না, এমন তো হতেই পারে। ভালোবাসাকে সব সময়ই যে একটা টু-ওয়ে ট্রাফিক হতে হবে, এমন নয়। আমি যে ভালোবাসি, তা তো আমাকে আনন্দ দেয়, অসীম শান্তি দেয়। প্রেমে পড়ার মতো আশ্চর্য সুন্দর অনুভূতি আর কী আছে! তবে সে আমায় ভুল বোঝে, এটা মেনে নেওয়াটা খুব কষ্টের। কে আমায় ভুল বোঝে কে ঠিক বোঝে, তার পরোয়া আমি করি না, তবে আমি যে তাকে ভালোবাসি, তাই তার বেলায় পরোয়াটা না চাইলেও করতে হয়, আপনা থেকেই চলে আসে।‍ আমি বেঁচে আছি কি নেই, তা সে গ্রাহ্য করে না, এইটুকু মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু আমার বেঁচে থাকাটা তাকে পীড়া দেয়, এটা মানতে হয় কী উপায়ে? আমার সত্যিই তা জানা নেই।
আর একটা ব্যাপার দেখেছি। আমি কাউকে স্নেহে বাঁধতে চাই, আমি তার প্রতি আন্তরিক, তার সাথে প্রত্যাশাহীন একটা সহজ যোগাযোগ রাখতে চাই, আর সে আমায় ভুল বোঝে আর বুঝেই যাচ্ছে, কখনও কখনও ঘৃণা পর্যন্ত করছে! নিজের ভাবনা ও অবস্থানটা শত চেষ্টায়ও তাকে বোঝাতে পারি না। সে যা বোঝে, সেখান থেকে সরবেই না। এমনকি আমি যদি এ কারণে আফসোসে আত্মহত্যাও করে বসি, তাও সে তার ভাবনাতেই থেকে যাবে। সে যা ভাবে, যা ভাবতে তার ভালো লাগে, তার মন তাকে যা ভাবতে বলছে, সেখান থেকে সে কিছুতেই সরে আসে না। কখনও হয়তো কিছুটা সরে এসে দুইদিন সহজ সম্পর্ক রাখে, আমারও মনে হয় সব ঠিক হয়ে গেছে বোধহয়, আবার হঠাৎ করেই without the least instigation সে ফিরে যায় আগের রুদ্রমূর্তিতে। অন্তর থেকে ঘৃণা ছুড়ে দেয়, ঘৃণা না হলেও এমন কিছু জাজমেন্ট করতে থাকে আর করতেই থাকে, যেগুলি আমি সত্যিই ডিজার্ভ করি না। তার সম্পর্কে আমি যা ভাবি, আমি তাকে যেভাবে দেখি, সে আমাকে যেমন করে গ্রহণ করুক বলে আমি চাই...সেসবের ধারেকাছেও না গিয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা অবস্থানে দাঁড়িয়ে সে নিজেকে, আমাকে ও আমাদের এই সম্পর্কটাকে (প্রেমের সম্পর্ক নয়, দুইজন মানুষের মাঝে সম্পর্ক) ব্যাখ্যা করতে থাকে আর নিরলসভাবে করতেই থাকে। হাজারো চেষ্টায়ও কিছু হয় না আর। সে তার ভাবনায় অটল অবিচল হয়েই থাকে। যেহেতু আমি সম্পর্কটা রাখতে চাই, সেহেতু এটা মেনে নিতে আমার খুব যন্ত্রণা হয়।
মানুষ অনেক কিছুই ভেবে নেয়। ভাবতে ভালো লাগে, ভেবে নেয়। কারও ভাবনার উপর তো আমাদের কোনও হাত নেই, আর আমাদের পক্ষে সম্ভবও নয় জনে জনে ধরে ধরে নিজেকে ব্যাখ্যা করা। আমাদের যে চোখে দেখতে ভালো লাগে, মানুষ আমাদের সে চোখেই দেখে। অগত্যা কী আর করা যাবে? যার যেমন ইচ্ছে ভেবে নিক গিয়ে, আমরা আমাদের কাজটা আন্তরিকভাবে করে যাব। লোকের প্রতিটি কথাকে মাথায় রেখে চলা অসম্ভব। সেক্ষেত্রে থেমে যাওয়াই একমাত্র পথ। আর থেমে যাওয়ার মানেই তো মৃত্যু! যে আমায় চেনে না, জানে না, বোঝে না, সেও আমায় জাজ করে, আমার সম্পর্কে নানান ভাবনা জানাতে থাকে---যে ভাবনাগুলোর কোনও ভিত্তিই নেই! বাঁচতে চাইলে এসবকে পাত্তা দিতে হয় না, এসবকে শুনলেও তা হৃদয়ে রাখতে হয় না।
...তবে যদি সে মানুষটি এমন কেউ হয় যাকে আমি ভালোবাসি বা স্নেহ করি, তখন খুব অসহায় লাগে। কাছের কারও কাছে নিজেকে বোঝাতে না পারার মতো অসহায়ত্ব আর নেই।
একটা ছোট্ট উদাহরণ দিতে ইচ্ছে করছে। একজন আছেন যাঁকে তাঁর কাজের জন্য, ব্যক্তিত্বের কারণে আমি খুব শ্রদ্ধা করি, অনেকেই তাঁকে খুব শ্রদ্ধার চোখে দেখেন। তিনি শ্রদ্ধারই যোগ্য। তিনি যে আমাকে চেনেন, এটা আমি জানতাম না। জানলাম একদিন। কীভাবে? আমার এক ভয়াবহ বিপদের সময়, যখন আমাকে নিয়ে ফেসবুকে দুইলাইন বাজে কথা লেখাটা রীতিমতো ধর্মাচরণের মতোই কর্তব্য হয়ে পড়েছিল অনেকের কাছে, তখন অন্য অনেকের মতোই তিনিও তাঁর ওয়ালে একটা বড় পোস্ট দিলেন। সে পোস্টে কী কী ছিল, সে আলোচনায় যাচ্ছি না। কয়েকটি লাইন ছিল, যেগুলিকে সংক্ষেপে বললে দাঁড়ায়---আমি পয়সা নিয়ে ক্যারিয়ার আড্ডা করি, আমি বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের এজেন্ট, এবং এসব করে করে আমি অগাধ অর্থবিত্তের মালিক হয়েছি।...বিশ্বাস করুন, সেদিন ভাইয়ার সে পোস্টটি দেখে আমি ঝরঝর করে কেঁদে ফেলেছিলাম। যাঁকে এত পছন্দ করি ও শ্রদ্ধা করি, তাঁর কাছ থেকে এমন অনুমাননির্ভর বক্তব্য হজম করতে অনেক কষ্ট হয়েছিল।...এর পর ভাবলাম, তিনিও তো মানুষ, হয়তো আমি যেমন ভাবতাম, তেমন মানুষ তিনি নন। কী আর করা যাবে মেনে নেওয়া ছাড়া! তবুও তাঁকে ভালোবাসি, তাঁর ভালো হোক, এমন চাই। যাকে ভুল বুঝতে ইচ্ছে করে না, তাঁর কাছে অহেতুক ভুল ব্যাখ্যায় বেঁচে থাকতে খুব কষ্ট হয়।...প্রকৃতি তাঁকে অনেক বড় একটা জবাব দিয়ে দিয়েছে। এ জীবনে আমি কখনও কারও অমঙ্গল চাইনি, তাঁর জন্যও চাইনি, কেউই তা চায়নি, তবু তিনি একটা জবাব পেয়েছেন।
...কাউকে কষ্ট দিতে হয় না, প্রকৃতি তা বহুগুণে ফেরত দেয়।
ভাবনা: ছয়শো বিরানব্বই
...............................................................
এক। আমি বলি কী, বড় বড় মানুষকে ভালোবাসুন। একেবারে অন্ধের মতো ভালোবাসুন। তবে তাঁদের ধারেকাছে যাবেন না। বড় মানুষগুলো কাছ থেকে সাধারণত বড় নন। তাই দূর থেকে তাঁদের দেখুন, তাঁদের কাজগুলো দেখুন। তাঁদের কথা শুনুন, তাঁদের লেখা পড়ুন। তাঁদের জীবনটা জানুন। সেখানে আলো আছে, আঁধার‌ও আছে। আলোটাকে নিন, আঁধারটাকে নয়। নিজের মধ্যে সে আলোকে ধারণ করুন। কেবল আঁধারটাকে মাথায় রেখে কাউকে জাজ করবেন না। আমরা যত জাজ করতে থাকি, আমরা তত‌ই অর্ডিনারি হতে থাকি। Greatness fears judgemental attitude.
তাঁদের ভালোবাসুন, শ্রদ্ধা করুন। তাঁদের ঈর্ষা করবেন না, ঘৃণা করবেন না। বড় মানুষের প্রতি ঈর্ষা বা ঘৃণা পুষে রেখে পৃথিবীতে কেউ কখনও বড় হয়নি। দিনের শেষে তাঁরাও আপনার আমার মতোই মানুষ। আর মানুষ বলেই তাঁরা এমন কিছু আঁধারের কাজ করেন বা করেছেন, যা আপনি আমিও করি, তবে তাঁদেরটাই চোখে বেশি পড়ে। তাঁদের আলোর কাছাকাছিও যেতে পারছি না যখন, তখন তাঁদের আঁধার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে থাকার কী মানে? আপনার বাথরুম পায় না? তো বড় মানুষের বাথরুম পেলে হাঁ করে তাকিয়ে থাকেন কেন?
আবারও বলছি, বড় মানুষের কাছে যেতে নেই। ওঁদের প্রণাম করতে হয় দূর থেকে, পা স্পর্শ করে নয়। ওঁদের পায়ে অনেক ময়লা থাকে, আপনার আমার যেমন আছে, তেমন‌ই। সে ময়লাকে সহজভাবে নেওয়ার মতো পরিপক্ব হয়ে উঠুন। এর আগ পর্যন্ত দূর থেকে বড়দের বড়ত্ব উপভোগ করুন। পৃথিবীতে এমন কিছু জীবন আছে, যে জীবনগুলোর মতো করে নিজের জীবনটা সাজিয়ে নিলে বড় ভালো হয়। সাজাতে গিয়ে দেখবেন, সে জীবনগুলো তৈরি হয়েছে মূলত অসীম শ্রম, সততা, আন্তরিকতা ও একাগ্রতা দিয়ে। আর একটা এলিমেন্ট পাবেন, তা হলো: বিশ্বাস। নিজের সামর্থ্যের প্রতি অগাধ বিশ্বাস। যার বিশ্বাস যত বড়, তার গন্তব্য তত বড়।
তাঁদের কাজ দেখুন, তাঁদের ভাবনা বুঝুন। বড় মানুষের সামনে কখনও মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে নেই, তাঁদের পায়ের কাছে বসে পড়তে জানতে হয়। আমরা কেন তাঁরা ন‌ই, চাইলেও হতে পারছি না, বোঝার চেষ্টা করুন---শান্ত ও সংস্কারশূন্য মন নিয়ে। ইগো রেখে বড় হ‌ওয়া যাবে না কখনওই। বড় হ‌ওয়ার প্রথম ধাপ: আগে ছোট হতে হবে, মেনে নিতে হবে--- আমি যা হতে চাইছি আমি এখনও তা ন‌ই। নিজেকে শূন্যে নিয়ে যান। যে শূন্যে যেতে পারে না, সে কখনও দশেই উঠতে পারে না, একশো তো অনেক দূরের কথা!
দুই। আমি একটা স্বপ্ন দেখি। স্বপ্নটা হলো, একদিন আমি সকালে উঠব। সেদিনের পর থেকে প্রতিদিনই আমি সকালে উঠব। আমি যখন ঘুম থেকে উঠব, মানে আমার যখন ঘুম ভাঙবে, সে সময়টার নাম হবে সকাল। আমার জন্য সকাল। আমার সকালগুলি হবে আমার মতো, আমার ইচ্ছেমাফিক। সকাল হবার ব্যাকরণ আমাকে আর মানতে হবে না সেদিন থেকে।
আমি যদি সকালে উঠি, সেটাই আমার জন্য সকাল। দুপুরে উঠলে সেটাই সকাল। বিকেলে উঠলে তাও সকাল। আমার সকাল হবে আমার নিয়মে, আমার মতো করে। কোনও বাঁধাধরা নিয়ম শৃঙ্খল থাকবে না। আমি ঘুমিয়ে থাকতে পারব আমার যতক্ষণ ঘুমিয়ে থাকতে বা বিছানায় গড়াগড়ি খেতে ইচ্ছে করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত। সেই দিনটার স্বপ্ন আমি দেখি।
লোকে বলে ঘুম অর্থ নাকি মৃত্যু। আমার তো মনে হয়, ঘুম মানেই আনন্দ, অনাবিল আনন্দ। ঘুমিয়ে থাকলে মনে হয়, পৃথিবী সুন্দর, জীবন সুন্দর। বিছানার সাথে প্রেম, এর চাইতে মহৎ প্রেম আর নেই। পৃথিবীতে দুজন মানুষ পরস্পরকে যদি ঘুমের মতো ভালোবাসতে পারত, তবে তাদের মধ্যে কখনও ছাড়াছাড়ি হতো না।
আমি এই স্বপ্নটা দেখি, আমি আমার খুশিমতো সকাল দেখব। কোনও পিছুটান বা শেকল আমাকে ঘুমিয়ে থাকতে বাধা দেবে না, তেমন একটা জীবন পেতে আমার ইচ্ছে করে।
একদিন খুব ঘুমাব, সেদিন কেউ ডাকলেও আর উঠব না।
ভাবনা: ছয়শো তিরানব্বই
...............................................................
ক্যারিয়ার আড্ডা ও জীবনমুখী ফিল্ম --------------------------------------------------
এক।
চাঁদপুরে গিয়েছি বেড়াতে। রূপসা জমিদারবাড়ি দেখে ফিরছি অটোতে। গ্রামের মেঠো পথধরে তিনচাকা ছুটছে। হঠাৎ করেই রাস্তার ঠিক মাঝখানে একটা কুকুর এসে দাঁড়াল। কুকুরটা তার মুখ আকাশের দিকে নেকড়ের মতো উঁচু করে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে তো দাঁড়িয়েই আছে। একটুও নড়ছে না। অটোর হর্ন বাজছে। কুকুরটা থেকে একটু দূরে অটো দাঁড়িয়ে। কুকুরের সেদিকে কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই। পাত্তাই দিচ্ছে না সে আমাদের! স্থিরদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে। চোখেমুখে তাচ্ছিল্যের ভাব…যাহ্‌ ব্যাটা, গুনলাম না তোরে! কী হইসে?...পরে আমাদের ড্রাইভার হর্নবাজানো বন্ধ করে রাস্তায় নেমে কুকুরটাকে সরিয়ে দিলেন।
ব্যাপারটা আজব না? কেন কুকুরটা এমন করল? সম্ভাব্য কয়েকটা কারণ দাঁড় করানো যায় এর পেছনে। হয়তো সে প্রেমে হতাশ। হয়তো তার ক্রাশ তার মেসেজ সিনই করছে না অনেক দিন ধরে। হয়তো সে ফেসবুকে লাইক পায় না ঠিকমতো। হয়তো তার ভুঁড়ির কারণে তার ছয় নাম্বার গার্লফ্রেন্ড তার চার নাম্বার এক্সের পাঁচ নাম্বার এক্সের হাত ধরে কক্সবাজার পালিয়ে গেছে। হয়তো সে অঙ্কে কিংবা ইংরেজিতে দুর্বল। হয়তো তার মন বসে না পড়ার টেবিলে। হয়তো সামনের ভালোবাসা দিবসটাও তার একা একা কাটবে। হয়তো সে পৃথিবীর অনেক রহস্যের কোনও কূলকিনারা করতে পারছে না। হয়তো তার বউ অনেক দিন ধরেই রাগ করে না, তাই বাপের বাড়ি যায় না। হয়তো তার প্রেমিকার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে অন্য ঘরে। হয়তো সে ড্রাগ-অ্যাডিক্টেড কিংবা ড্রিংক করে এসেছে। হয়তো সে আবিষ্কার করেছে ফেসবুকে যার সাথে এত দিন ধরে সে প্রেম করে আসছে সে আসলে একটা ছেলে-কুকুর। হয়তো এমন কেউ তাকে ভাইয়া ডেকেছে যাকে সে বোন বলে মানতেই পারছে না। হয়তো এসবের কিছুই না, সে হুদাই রাস্তায় দাঁড়িয়ে পার্ট নিচ্ছিল!
বুঝলাম, তার কয়েক ছটাক মোটিভেশন দরকার। তারে বলে দিয়ো সে যেন এসে যায় সময়মতো নেক্সট ক্যারিয়ার আড্ডা-য়…আগামী শনিবার সকাল ৯টায় কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় অডিটোরিয়ামে।
দুই।
সম্প্রতি ভাইরাল-হওয়া একটা জীবনমুখী স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের ভিডিও (লিংক) আমার কাছে আছে। তো এটা জোগাড় করার জন্য আমি বেশ কিছু দিন ধরেই বিশেষ উদগ্রীব হয়ে ছিলাম, এবং অবশেষে…আমি পাইলাম, ‘আমি ইহাকে পাইলাম।’ কাহাকে পাইলাম। এ যে দুর্লভ, এ যে মানবী, ইহার রহস্যের কি অন্ত আছে?...সে মানবী আবার আমার অন্যতম ক্রাশ, বয়সে আমার চেয়ে মাত্র কয়েক বছরের বড়। দেখলেই বুকের মধ্যে উথালপাথাল ঝড় ওঠে, ‘সে আমার নয়’ এটা বলেও নিজেকে সামলে নিতে কষ্ট হয়। তাকে নিজের করে পেয়ে খুব যত্নে রেখে দিলাম নানান জায়গায়। লিংক চাহিয়া যাদের লজ্জা দিয়েছি, তাদের মধ্যে একজনের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই, কেননা সে না থাকলে জীবনটা এত মিষ্টি হতো না! এমন জীবনঘনিষ্ঠ ভিডিওচিত্র শুধু দেখতেই ইচ্ছে করে দেখতেই ইচ্ছে করে…বাঁচতে হলে তো দেখতে হবে। আর আমার মধ্যে তো কোনও ঈর্ষা নেই, শুধুই বুকভরা ভালোবাসা আছে---তাই অন্যের সুখ দেখলে আমি হাসিমুখেই তা সহ্য করতে পারি!
তো সেদিন কিছু কলিগের সাথে গল্প করার একফাঁকে একজন লাজুক হাসি দিয়ে বললেন, ভাই, তুমি এটা কোথায় পেলে? আমিও তো মনে মনে খুঁজছিলাম এটা। আমাকেও একটু ফরওয়ার্ড করে দাও না কষ্ট করে।…সাথে সাথেই দিলাম। এসব জিনিস দিতেও শান্তি। কবিগুরু বলেছেন, শেয়ারিং ইজ কেয়ারিং। মুখে যা-ই থাকুক না কেন, সব ছেলেরই মনে এক! জনসেবায় কার্পণ্য আমার কোনও কালেই ছিল না, এখনও নেই। তার উপর এমন উপাদেয় জিনিস একা একাই দেখলে পাপ হবে…পাপ! দেখলাম, অন্যরা বলছেন, ভাই, তুমিও এসব রাখ? তুমি এরকম! ছিঃ ছিঃ! আমি মনে মনে বললাম, আমি তো ভালা না, ভালা লইয়াই থাকো।…সক্রেটিস বলে গেছেন, চৌধুরী সাহেব, মনে রাখবেন, খাপে ভরে রাখলে বন্দুক অদৃশ্য হয় বটে, কিন্তু অচল হয়ে যায় না!
আমার সেই কলিগটি কেমন জানি সংকোচে কুঁকড়ে গেলেন, ‘না মানে, ইয়ে মানে, আসলে আমি এগুলো…’ জাতীয় কথাবার্তা বলে নিজেকে ‘ভালো ছেলে’ প্রমাণ করার আপ্রাণ চেষ্টা করতে লাগলেন।…যাদের সাথে আছি তাদের সবাই খারাপ, আমিও খারাপ, এটা মানা যায়। কিন্তু সবার মধ্যে আমি একাই খারাপ, এটা মানতে কষ্ট হয়। ‘তুমি একাই ভালো’ এটা মানা যত আনন্দের, ‘তুমি একাই খারাপ’ এটা মানা ততই কষ্টের। খারাপ হতে হয় সবাই মিলে, আর ভালো হতে হয় একা একা।
…যা-ই হোক, আমাকে একটুও বিস্মিত করে না দিয়ে ওঁরাও মিনিট দশেকের মধ্যে আমাকে আমতা আমতা করে বললেন, ভাই, তোমার কাছে আছেই যখন, ইয়ে মানে, আমাদেরও একটু ফরওয়ার্ড করে দাও মেসেঞ্জারে।…বুঝলাম, আহা, বিনেপয়সার মহাপ্রসাদ থেকে কে বঞ্চিত হতে চায়! তার উপর এমন অনিন্দ্যসুন্দরীর দেহপল্লব দেখে মরে গেলেও তো চোখের শান্তি, মনের শান্তি, আত্মার শান্তি। হিংসাই তো সব কিছু নয়। শান্তি এবং একমাত্র শান্তিই তো বেঁচে-থাকার শেষকথা! কবির কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে আমার দুষ্টু দুষ্টু মন গেয়ে উঠতে চাইল…রসের ‘গোলক’, এত রস তুমি কেন ধরেছিলে হায়! গুডবয়ের দল ধর্ম ভুলিয়া লুটাইল তব পায়!
…ভাইলোগ, এক মিনিট! এখনই সিট ছেড়ে উঠে যাবেন না! সবাই শান্ত হয়ে বসুন, পিকচার আভি বাকি হ্যায়! আমার কলিগদের মধ্যে প্রথম যিনি প্রসাদ নিয়েছিলেন, তিনি খুবই শান্তসৌম্য প্রকৃতির। একেবারে নিপাট ভদ্রলোক যাকে বলে, তিনি ওরকমই। তাঁর স্ত্রী আমাকে চেনেন, মানে সবাই দূর থেকে যেমন চেনে তেমন আরকি। বাসায় ফিরে যখন স্ত্রীকে বললেন, জানো, আজকে একটা জিনিস পেলাম, এই দেখো, অমুকের ক্লিপটা। সেইরকম না?...চোখের সামনে দুইজন সুপরিচিত মুখের এমন জীবনমুখী অকপট আন্তরিক দৃশ্য দেখে ভাবি আঁতকে উঠলেন। বললেন, ছিঃ ছিঃ! এসব কী! লজ্জা করে না তোমার এসব দেখতে? তুমি তো অলরেডি মিচকা শয়তান, কেউ না জানলেও আমি তো জানি! কিন্তু সুশান্ত ভাইকে তো ভালো মনে করতাম, উনিও তো দেখি এই লাইনের! ছিঃ তোমরা ছেলেরা এরকম! শালার সব ছেলেই খারাপ!...বউয়ের এমন রিঅ্যাকশন দেখে অপ্রস্তুত হয়ে উনি অতিদ্রুত চলমান খেলাধুলা সাঙ্গ করে মুঠোফোনটি অন্য দিকে সরিয়ে রাখলেন। তখন ভাবি বললেন, এহহ্‌! এখন ভালো সাজো, না? ওটা বন্ধ করলে কেন? ছাড়ো!...স্বল্পবিরতির পর খেলা আবারও চলছে, ধারাভাষ্যে ভাবি স্বয়ং। একপর্যায়ে গোবেচারা-দর্শন স্বামীটিকে আবেগে বলেই ফেললেন…আচ্ছা, আমাকেও লিংকটা দিয়ে রাইখো তো একটু! ভুলে যাইয়ো না যেন আবার!
তাই তো আইনস্টাইন বলেছেন, বন্দে মায়া লাগাইছে…পিরিতি শিখাইছে…দেওয়ানা বানাইছে…কী জাদু করিয়া বন্দে মায়া লাগাইছে… …চেতনে, অচেতনে ও অবচেতনে নির্মিত সকল জীবনমুখী লিংকের ‘ঘর্মাক্ত শ্রমিক’রা দীর্ঘজীবী হউক!