সত্যদর্পণ

তোমার দৃষ্টি যদি
চাইতে না-ও জানি,
তবুও মনে করে
কাছে আমায় নিয়ো টানি।


যা-কিছু গড়ে তুলে,
আমি আরামেই থাকি ভুলে,
সুখের উপাসনা
করে যাই হাওয়া-ফুলে,
সেই ধুলা-খেলাঘরে।
রেখো না গো ঘৃণাভরে,
প্রিয়, জাগায়ো দয়া করে
নাহয় বহ্নিশেল‌ই হানি।


সত্য ঘুমিয়ে আছে
দ্বিধাসমুদ্র মাঝখানে,
তাকে এক তুমি ছাড়া
জাগাতে আর কে-বা জানে!


মৃত্যুকে ভেদ করে,
অমৃত পড়ে ঝরে,
অতল দীনতায়
শূন্যতা উঠে ভরে,
পতন-ব্যথা মাঝে,
চেতনায় এসে বাজে,
বিরোধে, কোলাহলে,
গভীর তব সুধাবাণী।


আমার চিত্ত তোমারই যে নিত্য হবে,
আর শুধু সত্য রবে---
ও গো সত্য, আহা, আমার এখন সুদিন বড়ো!
তবে ঘটবে আর অলীক, সে কবে?


সত্য সত্য সত্য জপি,
সকল বুদ্ধি সত্যে সঁপি,
সীমার বাঁধন পেরিয়ে যাব
নিখিল-নিমেষ পূর্ণভবে।
সত্য, তোমার পূর্ণপ্রকাশ,
বলো, দেখব ঠিক কবে?


তোমায় দূরে সরিয়ে মরি
যেন আপন অসত্যে!
কী যে কাণ্ড করি গো সেই
ভূতের রাজত্বে!


আমার আমি ধুয়ে মুছে
তোমার মধ্যেই যাবে ঘুচে!
সত্য, তোমায় ধরে সত্য হব,
বাঁচব‌ই তো ঠিকই তবে---
তোমার মধ্যে মরণ আমার
ঠায় মরে যাবে যবে!