ঈশ্বর, এই সময়

 
ঈশ্বর এখন ব্যস্ত কিংবা শীতনিদ্রায়...


এমন করে ভাবছেন তো?
একমিনিট! আপনি ভুল ভাবছেন। ব্যাপারটা আসলে তা নয়।
আপনি যতটা রেসপনসিবল হবেন,
আপনার ঈশ্বর ঠিক ততটাই রেসপনসিবল হবেন।
আগে নিজের দায়িত্বটা নিজের ঘাড়ে নিতে শিখুন,
এরপর আসবেন ঈশ্বরকে অভিসম্পাত করতে।
আপনি যতটা, আপনার ঈশ্বর ঠিক ততটাই।


একবার ভাবুন, ইতালি, আমেরিকা, স্পেনসহ অনেক ভালো দেশের
ঈশ্বর খুব ভালোঈশ্বর ছিলেন বলেই আমরা জানতাম।
ওদের ঈশ্বরের ছায়ায় বাঁচার স্বপ্ন আমরা অনেকেই দেখেছি।
এখন কী হলো?
ওরা ভাবল, আমাদের ঈশ্বর আমাদেরকে দেখে রাখবেন।
আমাদের কিচ্ছু হবে না, আগেও হয়নি যেহেতু। এটা ভেবে
ওরা ছুটল চার্চে, বাজারে, অফিসে...আগের মতোই।
ঈশ্বর দেখলেন ওদের অন্ধত্ব, এবং
ঈশ্বর নিজেই অন্ধ হলেন।


আপনার ঈশ্বরের চোখ ততক্ষণই খোলা,
যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি আপনার চোখ খোলা রাখছেন।
ঈশ্বর ভালো এবং সব সময়ের জন্যই ভালো।
ঈশ্বর কক্ষনো খারাপ হন না। না বুঝে বাজে বকবেন না!
আপনি আমি যদি খারাপ হই, তবে
আপনার আমার ব্যক্তিগত কিংবা পারিবারিক ঈশ্বর খারাপ হতে বাধ্য!
বিবেকের কাছ থেকে শুনে দেখুন, মানুষের ঈশ্বর হন মানুষের মনের মতন।


এইটুকু তো বুঝতে হবে। আমাদের মনের বয়সটা কমছে তো আর না!
এখনও কেন বুঝতে পারছেন না,
সবার ঈশ্বর একরকমের নন!
যে ঘুমিয়ে থাকে, তার ঈশ্বর ঘুমন্ত।
যে অন্ধ, তার ঈশ্বর অন্ধ।
যে জেগে আছে, তার ঈশ্বরও জেগে।
যে শুনতে পায় না, তার ঈশ্বরও বধির।
যে খাটছে, তার ঈশ্বরও খাটছেন।


হৃদয়ের বোতামগুলি খুলে দেখুন, ঈশ্বর ওখানেই!
ঈশ্বরের দিকে তাকিয়ে আছেন যখন,
তখন নিজের চোখদুটো খোলা রাখুন।
আপনার চোখ বন্ধ থাকলে,
আপনার ঈশ্বরের চোখ বন্ধই থাকবে।
এটা মেনে নিন। এটা মেনে নেবার নামই বড়ো-হওয়া।


মিনতি করে বলছি, আপনার ঈশ্বরকে জাগান।
আর ঘুমিয়ে থাকবেন না।
আপনি ঘুমিয়ে থাকলে সেটার মাশুল দিতে হবে
আমাকে এবং আমি যাদের চিনি ও চিনি না, ওদেরকেও।
যদি আপনি ধার্মিক হন, যদি আপনি মানুষ হন,
তবে আপনি এটা করতে পারেন না।
আমাদের ধর্ম আমাদের প্রার্থনা করতে শিখিয়েছে।
আসুন, আমরা আমাদের সকল প্রার্থনায় হৃদয়ের চোখটা খুলে রাখি।


আপনি কিংবা আমি কিংবা দুজনেই যদি ঘুমিয়ে থাকি,
তবে আপনার এবং আমার ঈশ্বর, দুজনেই ঘুমিয়ে থাকবেন---
আমাদের দুজনের ঈশ্বর আজ এই সমঝোতায় এসেছেন।
আমরা ক্রুদ্ধ হই, ক্ষুব্ধ হই, আর যা-ই হই না কেন,
আজ, ঠিক এই মুহূর্তে আমাদের ঈশ্বর গৃহীত সিদ্ধান্তটিতে অনড়।


আপনি যত কিছুই বলুন না কেন, এর নামই ন্যায়বিচার।
ঈশ্বর নিশ্চয়ই ন্যায়বিচারক এবং ন্যায়বিচারক বলেই
আস্তিক কিংবা নাস্তিক কিংবা ওদের মাঝামাঝি কেউ---
এই তিন ধরনের মানুষই আজ সমভাবে নিরুপায়, মৃত্যুপথযাত্রী।
সেই যাত্রার সূচনাটা যার হাত ধরেই হোক না কেন,
সবার পথ একটাই। এখানে কোনও পক্ষপাতিত্ব নেই।
বস্তুত, এর চাইতে বেশি ন্যায়বিচার এ পৃথিবী কখনও পায়নি।


তাই আবারও মিনতি করে বলছি,
এই সংকটকালে ঘুমিয়ে থাকবেন না।
আপনি ঘুমালে আপনার ঈশ্বর ঘুমাবেন,
এবং আপনার আমার ঈশ্বরের মধ্যকার চুক্তির শর্ত অনুযায়ী,
তখন…আমাকেও জেগে জেগেই
চোখদুটো বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়তে হবে।
সাথে ঘুমিয়ে পড়বে...আমাদের সন্তান, আমাদের প্রিয় মানুষগুলো।