ঋণ জমে যায়

ভালোবাসায় কী হয়, সে আমার সত্যিই জানা নেই।
একে কোনও পথে সংজ্ঞায়িত করে ফেলা যায় কি না, তা-ও জানি না।
তবে এটুক জানি, আপনি আমার জন্য যা করেছেন বা করে চলেছেন,
সে আমার অনেকটুকু প্রাপ্তি---না চাইতেই!
শুধু অনুরোধ, কখনও এই প্রাপ্তির বিনিময় চাইবেন না।


আমি আপনাকে কিছু দিতে পেরেছি কি না,
সেটা আমার জানা নেই। তবে যদি কিছু দিয়েও থাকি,
কোনও দিন তার দামটা মেটাতে বসবেন না যেন ভুল করেও।
ভালোবাসা দেওয়া-নেওয়া নামক নির্দয় আচারে হয়? আমি জানি না।


আমি শুধু জানি, আমি যে আপনাকে পেয়েছিলাম,
সে আপনার ভেতরে থাকে, তাকে বদলে দেওয়া যায় না কখনওই।
তাকে কোনও তুচ্ছ হিসেবে টেনে এনে ছোটো করতে আমি চাই না।
তাকে সম্মান দেখানোর যোগ্যতা আমার নেই যেমনি,
ঠিক তেমনি তাকে অসম্মান করার স্পৃহাটুকুও আমার নেই।
সে যে আমার পরম আশ্রয়ের জায়গা!


আমি জানি, এ সম্পর্কের কোনও নাম নেই।
নাম তো আমিও চাইওনি কখনও,
চাই না আজও।
শুধু চাই, এ সম্পর্কের প্রাণটা হারিয়ে না যাক।
জীবনটা একটা মিথ্যের ক্যাম্বিসে রঙের তুলিতে আঁকা হলেও
আমার অনুভূতিগুলির ভিত যথেষ্ট শক্ত এখন পর্যন্ত।


আমি পেরেছি কি না জানি না, তবে অবিরতই সাহস পেয়েছি
নিজের মধ্যে জমে-থাকা অনুভূতির একগুঁয়ে দেয়ালটা ভাঙবার।
আর সেই সাহসটুকু আপনিই আমায় জুগিয়েছেন।
আপনার নিশ্চুপ উপস্থিতি, প্রতিউত্তরহীন হয়ে পাশে থেকে যাওয়া,
আমার সকল পাগলামির প্রতি আপনার অব্যক্ত প্রশ্রয়,
আর প্রতিনিয়তই আমার ভুলগুলিকে ক্ষমার চোখে দেখে দেখে
একধরনের নীরব সম্মতিতে আমায় পাশে রেখে দেওয়া,
…এই সবকিছুর জন্যই আমি আজ পেরেছি সাহসটা দেখিয়ে ফেলতে!
পেরেছি কোনও ধরনের চাওয়া-পাওয়ার হিসেব ছাড়াই
আপনার জন্য লিখতে, বলতে…আপনার হৃদয়টাকে শুনতে।
ভীষণ কৃতজ্ঞ আমি!


আপনার কাছে আমার অনেক ঋণ জমে গেল,
যা আমি কখনওই শোধ করতে পারব না।
না-ইবা হলো দেখা, না-ইবা হলো কথা,
না-ইবা হলো গোছালো কোনও কথোপকথন,
তবু আপনার সমস্ত অগোছালো উত্তরগুলিকেও আশ্রয় করে
লোনাজলের অগুনতি বিন্দুতে বাঁচিয়ে রাখব আমার আপনাকে।
‘আমার’ শব্দটা লিখেছি…কেননা, আপনার ভেতরের মানুষটা যে
একান্তই আমার একার! ওখানেই যে পরম শান্তি!


এই পৃথিবীতে মারণাস্ত্রের ব্যবসায়ীরা কখনও কবিতা বেচবে কি না,
তা আমি জানি না।
তবে আমি আপনার জন্য, সাথে আমার নিজের জন্যই
হাজারবার হাজারভাবে আপনার সমস্ত কবিতার পাঠক হয়ে
বাঁচতে রাজি আছি, থাকব।