একমনের বিস্রস্ত আলাপ

এক।

গোলাপি তোমার শহরটাতে

দেখেছ কি বৃষ্টি কেমন!

থামছে, ছুটছে………মুহুর্মুহু!

আমার এই ধূসর শহর…….

এইখানেতেও বৃষ্টি নামে,

রোদ সরিয়ে মেঘ এসে যায় বোঝার আগেই,

শুধু তুমি আসো না!

ভেতর বলে,

সে তো আছে মনের মাঝেই,

তবু তাকে লাগছেটা কেন?

আমি বলি হেসে,

ঠিক সেখানে আছেই তো সে,

তাইতো আমি এখনও বেঁচে!

আকাশে মেঘ আছে জেনেও

মন তবু তো মেঘ ছুঁতে চায়!

শহর ভেজায়

জলবারতা,

এ মন ভেজায়

তুমিহীনতা।

ঝড়ো হাওয়াতে নিজেকে বেঁধে,

তার কিছুটা পাঠিয়েছি সে কবে,

পেয়েছ কি তা?

তোমার কথা ভাবার মানে………

মৃত্যু টানা, দুঃখ আনা।

কখনও-বা ইচ্ছে করে,

বৃষ্টি হয়ে তোমায় ভেজাই,

নিবিড় ছোঁয়ায় তোমায় ডাকি বুকের ভেতর………

যদিও বুঝি,

আমি যখন বৃষ্টি হবো,

ভুলেও তুমি ভিজবে না আর!

দুই।

যে প্রশ্ন আসে

মন থেকে নয়,

গলা থেকেও নয়,

মুখ থেকে আর ঠোঁট থেকে;

উত্তরটা তার

যদিও-বা আসে মন থেকেই,

গলা পেরিয়ে মুখের ডগায়

ঠিক আটকায়!

সব প্রশ্ন চায় না উত্তর,

সব উত্তর নেয় না প্রশ্ন,

প্রশ্ন কিছু উত্তর তো নয়,

হন্যে হয়ে প্রশ্ন খোঁজে!

যে কখনও বোঝে না উত্তর,

সে অবুঝটাকে উত্তর নয়গো, প্রশ্ন দিয়ো!

সবই জানে, বুঝেও সবই,

তবু কিছু উত্তর, কী এক নেশায়,

আমৃত্যুই প্রশ্ন খোঁজে!

তিন।

সুখ নেই তাই সুখে নেই আজ,

কষ্ট আছে কষ্টে বেঁচে,

বাঁচার দায়ে দিন গুনে যাই………

তবু তা ভাল সুখের চেয়ে,

যে সুখ ছিল সেই কখনও

অতীত দিনে—

সুখের ছলে।

মোলায়েম কোনও মিথ্যে যদি

মুখোশে বাঁচে সত্যি ঠেলে,

তার চাইতে কষ্ট আরাম।

এ যন্ত্রণা ভোগায় কী যে,

যে ভোগে না, সে বোঝে না!

চাইছি ভীষণ,

এলোমেলো খুব ঝড় আসুক,

মিথ্যে সরে সত্যি ফিরুক!

চার।

দোলানো চুলের ঢেউয়ের ভাঁজে

খেলে অভিমান,

রোমকূপে খেলে তীব্র মায়া………

সবই তো জানি,

ভালোবাসার দুষ্টুচাকার নিঠুর খেলা!

আমার কাছে ভালোবাসা যা,

তার কাছে তা অসুস্থতা!

হবে হয়তো, ভালোবাসাটাই মনের অসুখ!

এ মন ভাবে,

এই অসুখের অনুভূতি আর কষ্ট যদি

এমন কাঁদায়,

যেখান থেকে অসুখ আসে—ভালোবাসাটা,

না জানি সে কাঁদায় কেমন!