এক মহামৃত্যুর পারে দাঁড়িয়ে

 
ঘরে থাকো, হাত ধোও।
…এইটুকু জানি। তারপর?
বেঁচে তো থাকতে হচ্ছেই!
মানুষকে মরতে দেখছি, দেখতে হচ্ছে।
আরও হবে...।


তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে,…ক্রমশই।
এ তালিকায় যেকোনও সময়ই ঢুকে যেতে পারি…
আমি, আপনি কিংবা অন্য যে কেউই।
এর মানে দাঁড়াল, আমাদের সামনের দিনগুলি হাতেগোনা,
…যদি সে তালিকাটি আমাদের জন্য অপেক্ষমাণ হয়ে থাকে।


এখন? আমরা কী করব?
খাওয়া, ঘুমানো। বইপড়া, টিভি- কিংবা সিনেমাদেখা। নয়তো আন্তরিক প্রার্থনা।
স্বামীর সাথে স্ত্রী, স্ত্রীর সাথে স্বামী! ভয়াবহ কাণ্ড! তা-ও থাকতে হচ্ছে…এতদিন!
বাবা-মায়ের সাথে গল্প, পরিবারের সাথে আড্ডা। সেখানে যার যা-কিছু জানা আছে, তার সাথে কিছু মিশিয়েটিশিয়ে অবিরাম বলতে থাকা।
ফোনে কিছু খোঁজখবর নেওয়া, দেওয়া। খবর দেখতে দেখতে প্রতিমুহূর্তেই ভয় বাড়িয়ে নেওয়া। এবং আরও কিছু ভয়ের জন্য সংরুদ্ধ-অপেক্ষা।
ঘুমাতে ঘুমাতে ক্লান্ত হওয়া, তারপর চায়ের পেয়ালা-হাতে জানালার গ্রিল ধরে অসহায় দৃষ্টি ছোটে গলি পেরিয়ে ফাঁকা রাস্তায় কিংবা আশেপাশের কিছু দালানকোঠায়।
কখনও কখনও অস্থির হয়ে…কিছুই করার নেই, এবং কিছু করার উপায়ও নেই,…এই দুইটি ব্যাপার মাথায় রেখে আবারও ফেসবুকে বসে পড়া। বিভিন্ন ওয়ালে, ইনবক্সে গিয়ে সৃষ্টিকর্তাকে স্বর উঁচু করে ডাকা কিংবা মনে যা-ই আসে, তা-ই লিখে দেওয়া।
মাঝেমধ্যে বিভিন্ন ঠিকানায় আর্থিক সহায়তা পাঠিয়ে দেওয়া, ফেসবুকে পোস্ট করে বা না করে।
ফেসবুকে মৃত্যুর মিছিল এবং তৎসম্পর্কিত খোঁজখবর নিজে জানা ও সবাইকে জানানো।
সাথে কিছু ঐশী- কিংবা সতর্কবাণী। এরপর? জীবন তখনও ঢের বাকি থেকে যায়। তখন?


দুঃসময় আরও কিছু দুঃসময়কে টেনে নিয়ে আসে। এটাই রীতি।
সামনে হয়তো আর কিছু কিনতে পাওয়া যাবে না; পয়সা দিয়েও…না।
সময় থাকতে কিছু খাবার কিনি, জমিয়ে রাখি। যারা কিনতে পারছে না,
ওদের কথা একবার হলেও মুখে আনি, এবং দ্রুত ভুলে গিয়ে কিংবা মনে রেখেই খাবার মজুত করি।


মেজাজ খারাপ? মনের মধ্যে ক্রোধ তৈরি হচ্ছে? ভাঙচুর করতে ইচ্ছে করছে?
এখুনিই ফেসবুকে যাই, এবং কারও না কারও সাথে দুর্ব্যবহার করে আবার শান্ত হয়ে থাকি,
কিংবা বাসার লোকজনকে কিছুক্ষণ ধমকাই। ওদের ধমকানো নিরাপদ, কেননা
আমাকে ব্লককরার বাটনটি ওদের হাতে নেই।
আমি ধরেই নিয়েছি, এই পৃথিবীতে এই মুহূর্তে আমার চাইতে দুঃখী আর কেউ নেই। ব্যাপারটা ভীষণ সুইট!


সরকার কিচ্ছু করছে না। ডাক্তাররা কিচ্ছু করছে না। বড়োলোকরা নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছে। প্রশাসন নির্বিকার!
আরও কিছু অভিযোগ জড়ো করি। ছুড়ে মারি একটা একটা করে। ওতে যদি কোভিড-নাইনটিন একটু পালায় আরকি!


যা যা টেক্সট পাচ্ছি, সবকটা ফরওয়ার্ড করে দিই। সাথে মনে করে লিখে দিই,
এই মেসেজটি আপনি যদি ২০ জনকে ফরওয়ার্ড না করেন, তা হলে…
হ্যাঁ, আমিই সব জানি, বাকিরা ঘাস চিবুচ্ছে। ঘাসের আবাদ হঠাৎ বেশি হচ্ছে কিনা!


ধীরে ধীরে আমি পাগল হয়ে যাই এবং সাথে সবাইকে পাগল করেই ছাড়ি!
হাত-পা ছুড়তে থাকি; বসে আছি, কিছু ব্যায়াম অন্তত হোক!
ঘরটাকে বানিয়ে ফেলি মেনটাল-অ্যাসাইলাম…! একা একা পাগল হওয়ার কোনও মানে হয়?


এত কিছু করে কোভিড-নাইনটিন একটুখানি নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছি?
পারিনি? কী বলো? পারার কথা ছিল তো!
আচ্ছা, ঠিক আছে! ব্যাপার না, অন্য কিছু ভাবা যাক!


এই মুহূর্তে যদি আমি আমার মাতৃদত্ত প্রাণটা দিয়েও দিই,
করোনা-সংক্রমণ ঠেকিয়ে রাখা যাবে? যদি না যায়,
তবে এটা নিয়ে ক্রমাগত অহেতুকই লাফানোর কী মানে?
কখনও কখনও, চুপ করে থাকতে হয়, এটা আর কবে বুঝব?


যেভাবে চলা যাবে না, যেভাবে শোনা ও বলা যাবে না,
সেসব পথ থেকে সরে আসি। সত্যি সত্যিই!
বেঁচে থাকলে, এই কয়দিনে যা করতে পারছি না,
তা হাজারগুণ করা যাবে। আগে তো বাঁচি!
মৃত্যু-মুহূর্তে ঈশ্বরকে অভিশাপ দিয়েও-বা কী হবে?


সকল বাড়তি, অকেজো, ফালতু আবেগকে ঝেঁটিয়ে বিদেয় করে দিই। দ্রুত!
প্রয়োজন হলে ঝগড়া করি, আর করতেই থাকি---স্বামীর সাথে, স্ত্রীর সাথে…অবশ্যই নিজের!
বেঁচে থাকলে পরে সময় করে ডিভোর্স দিয়ে দেওয়া যাবে! কোনও ব্যাপার না!
তবু এককাপ চা খেতে কিংবা রাস্তার মোড়ে একটু দাঁড়িয়ে সিগারেটে দুটো টান মারতে বের না হই।
পৃথিবী সুস্থ হলে সেদিন নাহয় একমগ চায়ের মধ্যে কয়েকটা সিগারেট চুবিয়ে খেয়ে নেবো!
কাউকে কষ্ট না দিই, জ্ঞান না দিই, আহত না করি।
হয়তোবা ওসবের জবাবটা পাওয়া অবধি অপেক্ষা করার সময়ই আমার হাতে নেই। কে বলতে পারে!


কীভাবে চলতে হয়, কীভাবে বলতে হয়,…এসব আর কবে শিখব?
আর কত দেরি হয়ে যাবার পর বোধোদয় হবে?
আর কবে স্রেফ মানুষের বাচ্চা থেকে মানুষ হব?
এখুনিই সময়, শুধু চেহারায় নয়, শরীরে ও মনে মানুষ হবার!
এবং, যদি বেঁচে থাকি, তবে মানুষ হয়েই বাঁচব, এমন মানসিকতায় নিজেকে প্রস্তুত করার!


হ্যাঁ, কিছু তথ্য আমাকে কিছু মানুষকে পৌঁছে দিতে হবে।
এটা আমার দায়িত্ব, এটা মানুষ হিসেবে আমার কর্তব্য।
কেমন তথ্য? গোমূত্রপান কিংবা থানকুনি-পাতাচর্বণ বিষয়ক কোনও কিছু?
না কি ওসব নিয়ে ঝগড়া ও তর্কসমৃদ্ধ একপিস আর্টিকেল?
…সত্যি আমরা পারি বটে! কোভিড-নাইনটিন বোধসম্পন্ন প্রাণী হলে
আমাদের দেখে স্তম্ভিত হয়ে দূরে পালিয়ে যেত!
নির্বোধদের বাঁচিয়ে রাখা না রাখায় কী এসে যায়?


পুলিশ অথর্ব, ডাক্তাররা কিচ্ছু করছে না, প্রশাসন ঘুমাচ্ছে, সরকার অন্ধ-বধির।
…এইসব বলেফেলা কিন্তু খুব সহজ! মানে, করোনা-মাঠে নয়, ফেসবুক-ঘাটে বসে।
বলি, আমরা কে কী করছি? কতটা? সিরিয়াসলি ভেবে বলুন তো?
এই কয়েকদিনে ফেসবুকে স্ট্যাটাস আর পোস্ট দেওয়া বাদে আর কী কী আমাদের অ্যাচিভমেন্ট?
কেন ভুলে যাচ্ছি, এই দেশটা ইয়োরোপ-আমেরিকায় নয়? যদিও, ওখানে হলেও কিছু লাভ অবশ্য হতো না!
এমন মহামারিতে কী করতে হয় বা হয় না, সেটার কোনও ইউজার-ম্যানুয়েল আমাদের হাতে নেই।
আমরা অস্থির ও অধৈর্য হয়ে যা ইচ্ছে, তা-ই বলে যাচ্ছি।
একটু ভাবিই না, যে ডাক্তার তাঁর সন্তানটিকে সেই ঘরে ফেলে এসেছেন,
যেই ঘরে আর ফিরে যেতে পারবেন কি না, উনি জানেন না!
নিরাপত্তাবাহিনি কিংবা প্রশাসনের যে সদস্যটি রাস্তায় থেকে যাচ্ছেন প্রতিদিনই…আপনার এবং আমার জন্য,
যাঁর ঘাড়ে ক্রমাগত নিঃশ্বাস ফেলছে কমিউনিটি-ট্রান্সমিশনের সমস্ত ঝুঁকি,
ফেসবুকের দেয়ালে সেই মানুষটির চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করে ফেলছি!
এই কয়েকটা দিন ইতরামিটা একটু স্থগিত রাখলে হতো না? বেঁচে থাকলে পরে নাহয় আবার…


আমাদের ঘরে চাল, ডাল, তেল, নুন…সবই তো আছে! ফুরিয়ে গেলে কিনতে পারার টাকাও আছে।
আমাদের পাশে ঘরে? দুইগলি পরের ঘরে? ওই পাড়ার রহিমচাচার ঘরে?
যাদের প্রতিদিনের রোজগারেই পেট ভরাতে হয়, ওদের ঘরে?
খোঁজ নিচ্ছি তো? না কি একা খেয়ে বেঁচে আছি, এই তো বেশ ভালো আছি!
উদ্বৃত্ত অর্থকড়ি কী কাজে লাগে…তা দিয়ে যদি মানুষই না বাঁচে?
আজ সময় এসেছে মানুষ হয়ে ওঠার, মানুষের চোখে মানুষের দিকে তাকানোর।
এই সংকটের ধাক্কা সামলাতে না পেরে মরে যদি যাই,
সেদিন, আমার লাশের দিকে তাকিয়ে নয়তো মৃত্যুসংবাদটা শুনে কেউ অন্তত বলুক, লোকটা বড়ো ভালো ছিল!


যদি মাথায় কিছু থাকে, তা যত্ন করে মাথার মধ্যেই রেখে দেবার সময় আজ নয়!
মাথা থেকে আপনার আমার সবার চমৎকার সব আইডিয়া বেরিয়ে আসুক।
কিছু মানুষ প্রাণে বেঁচে যাক, কিছু মানুষ প্রাণে বেঁচে থাকুক,
কিছু মানুষ দিনের পর দিন বন্দিত্বের মধ্যেও সামান্য আনন্দ খুঁজে পাক…
এইবেলা নাহয় লিখেই ফেলি দুই-একটা লাইন, কিংবা জ্বালাই আরও একটু সুরক্ষার বর্তিকাটুকু!
আঁকি, লিখি, গাই…যা-কিছু পারি! কিংবা সহজ করে দুটো কথা বলি, যা-কিছু কথা বাঁচতে শেখায়!


সামনে কী আছে, আমরা কেউই জানি না।
এই মহামারির শেষটা কবে, জানি না তা-ও! এই সময়শেষে,
যদি দুর্ভিক্ষ আসে, বেকারত্ব কিংবা কর্মহীনতা বেড়ে যদি যায়,
যদি পৃথিবীর হয় নতুন কোনও অসুখ, আরও বিপর্যয়ে কাঁদে যদি মানুষ,
সেদিন আমরা বাঁচব কী পথে? আজ সময় এসেছে,
শুধুই প্রার্থনা কিংবা মারণাস্ত্র নয়, পৃথিবীকে বাঁচিয়ে রাখার নতুন কোনও রাস্তা খোঁজার!


আমার গায়ে সুঁই ফুটলে যেমন লাগে, একই ব্যথা সে মানুষটিও পায়,
যাকে আমি সুঁইটা ফোটাই। খিদের জ্বালায় কাঁদতে গেলে কষ্ট যেমন,
যে খেতে পায়নি কয়েক বেলা, সে-ও তেমন কষ্টেই আছে।
প্রিয়জনের মৃত্যু হলে যতটা ব্যথায় আমার বুক ভেঙে যায়,
ঠিক ততটা ব্যথা বুকে নিয়ে বেঁচে আছে আজ, প্রিয়জন যার হারিয়ে গেছে!
নত করে মাথা, ঝুঁকিয়ে হৃদয়, খুলে প্রাণমন…আজ সময় এসেছে মানুষ বোঝার!


আমার হয়তোবা পকেট-উপচানো অর্থ নেই, দেবার মতো উদ্বৃত্ত কোনও সময় নেই।
এই আমারও তবু ইচ্ছে করে, মানবিকতার দেয়াল গড়ে মানুষ বাঁচাই, মানুষ সাজাই!
পীড়িত যারা, দুর্গত আর দুঃস্থ যারা, যদি ওদের পাশে যেতে না-ও পারি অক্ষমতায়,
তবু, থাকছে যারা ওদের পাশে,…গায়েগতরে, অর্থ কিংবা মগজ দিয়ে, ওদের দেখে
একটুখানি হাসি ছুড়ে দিই, শুভকামনায় ওদের রাখি, হৃদয় উজাড় করে ভালোবাসি!


যখন মৃত্যু সামনেই কিংবা জীবন অনিশ্চিত, যখন বেঁচেথাকার সবটুকু চেষ্টা করেও
বেঁচে আদৌ থাকব কি না, তা বলা যায় না; তখনও হতাশা কিংবা নিরাশা ছড়িয়ে
কী লাভ, বলুন? আমাদের শেষদিনগুলি আনন্দে কাটুক, স্বস্তিতে কাটুক, শান্তিতে কাটুক।
জীবিতরা যখন মৃতদের শান্তিকামনা করে, সেই কামনা তো কেবল হাওয়ায় মিলায়, কে না জানে!
এই অসুখের পরও, বেঁচে থাকি যদি,---এই কটা দিন…আমাদের যে সুখ, ছুঁয়েছে তা মানুষ…
দুর্বিষহ সময়টাতে;…কিছুটা হলেও হেসেছে, খেলেছে মুহূর্তের যত ক্লান্তি ভুলে, এ-ওবা কম কীসে?


সুসময় এলে, এই পৃথিবী অনেক দিকেই বদলে যাবে, সাথে আসবে কিছু নতুন রীতি,
মানুষের বিবেক - বোধ কিছুটা হলেও ধাক্কা খাবেই, সাথে…দেখার ধরন পাল্টে যাবে।
বাঁচতে হলে সবার আগে এসব কিছু মানতে হবে! নিজেকে অনেকটুকু বদলে ফেলে
নতুন করে ভাবতে হবে, নতুনদিনের স্বপ্ন চোখে মাখতে হবে, পাপের ভারটা কমাতে হবে!
আমাদের সন্তান বেঁচে থাকুক সুস্থতা ও স্বাভাবিকমৃত্যুর আশ্বাস নিয়ে, আমাদের অভিদোষ না দিয়ে!


যখন কোলাহল অসুখ সারাতে পারে না, তখন নীরব থাকাই শ্রেয়।
যখন অস্থিরতা মৃত্যুকে আটকে দিতে পারে না, তখন ধৈর্য রাখাই শ্রেয়।
যখন সম্পর্কের দূরত্বেও আমাদের স্বস্তি মিলে না, তখন সম্পর্ককে দূরত্বহীন রাখাই শ্রেয়।
যখন অনাসৃষ্টিতেও আগের মতো আর সুখ মিলে না, তখন সৃষ্টিতে বাঁচা আর বাঁচতে দেওয়াই শ্রেয়।
এই ভয়ংকর সৌভাগ্যের সময়ে এইসব যত শিখে নেবো, ততই ভালো থাকব,…যদি বেঁচে থাকি!


আমাদের হাতে অনন্ত সময়!
আমরা বেঁচে আছি, আমরা বেঁচে থাকব।
ভালোবাসা দেবার ও নেবার সময় আমাদের অফুরন্ত!
আমাদের হাতে এখনও অনেক সময় আছে!
যারা আমাদের ভালোবাসে, আমরা যাদের ভালোবাসি,
ওদের দেবার মতো সময় আমাদের হাতে আজও অনেক!
…এমন কিছু ভাবনা আমাদের এতদিন মৃত করে রেখে দিয়েছে!


আসুন, আজ আমরা বিশ্বাস করি,
পৃথিবীর আয়ু ফুরিয়ে এসেছে।
আজই শেষদিন, সময়ের সকল হিসেব আজ নিরর্থক।
আমাদের সমস্ত দুশ্চিন্তা ও ব্যস্ততা আজ একটি ব্যর্থবিন্দুতে স্থির।
আজ কোনও ভয় নেই, আজ আমাদের হারাবার কিছুই নেই।


যদি আজই এ পৃথিবীর শেষদিনটা হয়,
যদি সামনের হাতেগোনা কয়েকটা ঘণ্টাই হয় আমাদের নিঃশ্বাসের আয়ু,
যদি আমাদের সকলের প্রার্থনা মিলেও আমাদের আর বাঁচাতে না পারে,
‘আমাদের আরও সময় আছে।’ আজ যদি এই কথাটিই হয় পৃথিবীর সবচাইতে বড়ো মিথ্যেকথা,
…তবে ঠিক এই মুহূর্তে, যাবতীয় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও ভাবনা থেকে সরে এসে,
আমরা যেভাবে বেঁচে থাকতাম,
আমরা যেভাবে ভালোবাসতাম,
আমরা যেভাবে সুখী হতাম,
আমরা যেভাবে চোখ মেলে তাকাতাম,
…আসুন, এই ধীর - মন্থর - স্তব্ধ সময়ে আমরা ঠিক সেভাবেই বাঁচি!