কুয়াশার খাম খুলে/এক

গ্রন্থিক দ্য গ্রেট! শুরুতেই সালাম নেন। নিসেন? ওকে ঠিকাসে। এইবার ভাল একখান বুদ্ধি দেন! আমি কয়দিন থেকে চরম ঝামেলায় পড়সি। আমার আর ফেসবুকিং ভাল লাগতেসে না। অবশ্য আমি অ্যাক্টিভ হইসি বেশি দিন না। এখন মনে হচ্ছে, একাই ভাল ছিলাম! অসহ্য লাগতেসে। বমি আসতেসে। আরও কেমন-কেমন যে লাগতেসে, লিখে বুঝাতে পারতেসি না। আমি কয়টা আত্মীয় আর কয়টা ফ্রেন্ড নিয়েই হিমসিম খাচ্ছি। মানুষ কত ফ্রেন্ড বানায়! এত সামলাতে পারে কীভাবে ওরা? ওরা আসলেই জ্বিন! ফেসবুক ফ্রেন্ডদের আনফ্রেন্ড করার মত বুকের পাটা আমার নাই, লিস্টের সবাই পরিচিত। জিজ্ঞেস করলে তাদের কাছে রিমুভ করার কোনও কারণ বলতে পারব না। আবার প্রোফাইল ডিঅ্যাক্টিভেট করলে তো আপনাকেও দেখতে পারব না। আপনাকে দেখাটা একটা অভ্যাস (আগে ‘বদ’ অ্যাড করে পড়েন) হয়ে গেছে। অবশ্য আমার অভ্যাস আমার কন্ট্রোলে, মানে ইচ্ছা করেই ওই অভ্যাসটা করসি। তাও কেমন জানি লাগে। আচ্ছা, আপনি আমাকে ভুলে যাবেন নাতো! আপনার সাথে কথা বলাটাও অভ্যাস হইসে। আমি একাএকা কথা বলায় অভ্যস্ত। আমি যে মনের মধ্যে এতই বকবক করি, আপনি তা ভাবতেও পারবেন না। স্রষ্টার সাথে বলি। আর আপনার সাথে যে বলি, তা তো আপনি দেখতেই পান, যদিও কিছুই শুনতে পান না, কিছু বলেনও না। নীরব শ্রোতা আমার খুউউব পছন্দ, আমি বেশি কথা বলি তো, তাই। আচ্ছা, এক কাজ করি, প্রোফাইল ডিঅ্যাক্টিভেট করে রাখি, আর মাঝেমাঝে এসে আপনাকে চুপিচুপি দেখে যাই? আমি অবশ্য সৌভিক স্বস্তিকা নামে একটা অ্যাকাউন্ট খুলসি, কিন্তু ছাতার মাথা পাসওয়ার্ডটাই মনে নাই। দেখি ওইটা বের করতে পারলে ওটাও বন্ধ করে দিব। আর শোনেন, এর মধ্যে বিয়েশাদি করে ফেললে, ঢং করে আমার সব কথা আপনার কাউকে বলবেন না যেন! যত প্রিয় মানুষই হোক, বইলেন না। এক মেয়েমানুষ অন্য মেয়েমানুষকে সহ্যই করতে পারে না। মেয়েদের জন্য, এমনকি, অফিসের বসও ছেলেই ভাল। মেয়েদের মধ্যে কুকুরের স্বভাব আছে। এক মেয়ে তার মনের এলাকায় অন্য মেয়েকে দেখলেই ঘেউঘেউ চিল্লানো শুরু করে। আর আপনি ওকে আমার কথা না বলে যদি একেবারেই থাকতে না পারেন তো এমনি একটু করে বলতে পারেন, তবে একটু রাখঢাক করে অন্য নামে বলবেন। আমাকে নিয়ে কক্ষনো হাসাহাসি করবেন না। হাসাহাসি করতে যদি মন চায় তো আপনার আজকের স্ট্যাটাসের শেষ দুই লাইন আওড়ায়ে নিবেন। What goes around comes around. Every man is paid back in his own coin. এটা কিন্তু থ্রেট না, এটা একটা সত্যি কথা। পরে মিলায়ে নিয়েন। আমাকে নিয়ে কেউ হাসাহাসি করুক, এটা আমি চাই না।

দ্য গ্রন্থিক, আপনি এত ভাল মানুষ হয়ে গেলেন কীভাবে? ইসস্‌! দেখতে-দেখতে ছেলেটা কত্ত বড় হয়ে গেল! দুই মাস আগেও কত্ত ছোট্ট ছিল! একটা সত্যি প্যাঁচাল শুনবেন? আপনাকে যে আমি কী ভাবি, যদি রোজ সেই বিতং করে আপনাকে মেসেজ দিতাম, তবে আপনার সব না হলেও কয়েকটা লেখা নিশ্চয়ই বন্ধ হয়ে যেত। কারণ? মিলে যেত যে! আপনার ভাবনা অন্য কেউ বলে দিচ্ছে, এমন অবস্থায় সেটা আপনি তা লিখতেন কেমন করে? আপনি হঠাৎ এত লক্ষ্মী হলেন কীভাবে? কিছুদিন আগেও আপনি যেসব লিখতেন, বা আমার সাথে যে দু-একটা ফাউল কথা বলসিলেন, তাতে আপনাকে অনায়াসেই একটা বাজে ছেলে বলে চালায়ে দেওয়া যেত! আর আপনি যে একখান ফ্লার্টিং মাস্টার, তা তো একটা বাচ্চাও ধরে ফেলতে পারবে! কিন্তু ব্যাপার কী জানেন, আপনার মধ্যে কিছু একটা আছে। আপনাকে ভাল মানুষ হিসেবে বিশ্বাস করতে ইচ্ছা হত। কারণ, আপনাকে আমার নিজের মত মনে হয়। তার মানে আমি নিজেকে ভাল ভাবি! এই রে! গ্রন্থিকের মত কথা বলা শুরু করলাম! আপনি শানায়ার বিশাল বড় একটা ভার্সন। (ভাল কথা, শানায়া আমার ডাকনাম, দাদি রাখসে। এই সেক্সি নামটা রাখার জন্য আমি ওই বদবুড়ির অনেক অপরাধ কাষ্ঠহাসিমুখে ক্ষমা করে দিসি।) আমি আপনার মতন সুযোগ পেলে আর জ্ঞানের হাতি হলে হয়তো বলতে পারতাম, আমি পুরাই আপনার মতন। (যারা আমার মতন সাধারণ কিসিমের পাবলিক, তাদের ক্ষেত্রে বড় হতে হলে কিছু সুযোগ লাগেই। আমার সারাজীবনই কাটসে প্রতিবন্ধকতার সাথে ফাইট করতে-করতেই। আমি বড় আর কেমনে হবো, আপনিই বলেন!) তবে আপনার কিছু মানসিক প্রব আছে, ভাই! রাগ করলে করেন, তবু এটা সত্যি। আমার আগের মেইলটা আপনার ভাল করে পড়া হয়নি শুনে স্বস্তি পাইসি। দরকারও নাই পড়ার। ওটা পাঠানোই একটা ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। ওইখানে ব্যাপক দুঃখের প্যাঁচাল আছে। আমার দুঃখের গল্প ভাল লাগে না। সুখের গল্প ভাল লাগে। আপনি মাঝেমধ্যে সুখের গল্প লিখবেন তো! টুক করে এসে পড়েটড়ে চলে যাব।

আরেকটা কথা। ছেলেদেরকে পচায়ে একটু লিখবেন তো! ছেলেদের পচালে কী হয়? ভক্তের সংখ্যা কমে যায়? ভক্ত কমে গেলে মরে যাবেন? একটা কথা মাথায় রাইখেন, আপনার ভক্তরা সব অসহায় গোত্রের প্রাণী। আপনি কখনও বিপদে পড়লে ওরা আপনার জন্য দোয়া ছাড়া আর কিছুই করতে পারবে না। অবশ্য, আপনার বিপদের সময় ওইটুকু করার কথাও কারও মাথায় থাকবে কি না, সন্দেহ! বাঙালি অকৃতজ্ঞ আর কৃতঘ্ন কিসিমের চিজ রে ভাই! মিলায়ে দেইখেন! যাকে কাজের সময় কোনও কাজেই লাগবে না, তার পেছনে সবটুকু সময় দিয়ে দেয়ার কী মানে? আপনার সারাজীবনে কাউকে সবচাইতে মূল্যবান যে জিনিসটা আপনি দেন, তা হচ্ছে সময়। ভুল লোককে এই মহামূল্যবান সম্পদটা দেয়ার মত বোকামি আর হয় না। ভার্চুয়াল ফেসবুকের পাবলিক আর রিয়েল লাইফের পাবলিক, দুইটা ভিন্ন জিনিস। ভার্চুয়াল ফেসবুক ফ্রেন্ড-ফলোয়ারের চাইতে ভুয়া মাল আর হয় না। এই জিনিস আসলেই তেমন কোনও কামে লাগে না, পুরাই মাকাল ফল—দেখতে ভাল, বাট ফাউল ফালতু জিনিস। মাইনকা চিপায় পড়লে দেখবেন, সব হাওয়া, ইভেন, পাশে পাবেন না একখান কাউয়া! ফেসবুক ফাটায়ে কাকা-করা পাবলিক রিয়েল লাইফে ভয়ে সাউন্ড করে একটা পাদও মারে না। কিছু পাওয়ারফুল আর সিনসিয়ার ভক্ত প্লাস বন্ধু বানান, সময়ে কাজে লাগবে।

শোনেন, আপনার আগের গল্প, মানে নোটগুলা রেখে দিবেন। আমার সবকটা এখনও পড়া হয়নি। আমি আবার আয়েস করে ঘটা করে আপনার লেখা পড়তে ভালোবাসি। (আবার ভাইবেন না, বেশি ভালটাল লিখেন। ওইরকম করে পড়ি আরকি!) ব্যস্ত অবস্থায় পড়ি না। অভ্যাসটা আগে এমন ছিল না অবশ্য। আর আগে তো ফেসবুকে বসতামই না। আমার নিজেকে মোটামুটিভাবে প্রকাশ করার আসল বয়স খুবজোর তিন বা সাড়ে তিন মাস। কিন্তু না—এটাও আর ভাল লাগতেসে না! বিচ্ছিরি লাগতেসে ফেসবুক ব্যবহার করতে। এদ্দিনে অ্যাকাউন্ট বন্ধই করে ফেলতাম। কেন যে আপনার সাথে সেদিন কথা বলতে গেলাম! বললাম তো বললাম! ঠিকাসে। এরপর ওই ম্যাজিক অ্যাপসটা কেন যে খেলতে গেলাম! যেটাই খেলি সব কিছুতেই আমার সাথে আপনাকে দেখায়! কেন রে বাপ! দুনিয়ায় আর কোনও পুরুষমানুষ নাই? সেদিন আপনি ওরকম করসিলেন ক্যান? মেয়ে-মেয়েতে ওরকম ঝগড়া হয়। আপনি কি মেয়ে? ছেলে আর মেয়েতে যে নিজেদের চেহারা নিয়ে ঝগড়া হয় জীবনেও শুনি নাই! তাও আবার একজন লেখক আর একজন পাঠক! লেখক আর পাঠক, এই দুইটা শব্দেই তো পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে কার অবস্থান কোথায়! তো! তর্ক করলেন কেন আমার সাথে? লেখক কেন পাঠককে এতটা স্পেস দেবে? আজব! আপনি অবশ্য কম করসেন, আমি বেশি করসি, কারণ দোষ আপনার ছিল। কিন্তু আপনি একটু হলেও তো উত্তর করসেন! আমি বললেই আপনাকে বলতে হবে? আপনার মধ্যে ম্যাচুরিটি আসে নাই? আমি সেদিন রাগেদুঃখে অসুস্থ হয়ে গেসিলাম! আপনি কি সবার সঙ্গেই এমন করেন? আপনি মিয়া একটু খারাপ আছেন। সরি। মানে, ছিলেন।

দ্য গ্রেট গ্রন্থিক, আপনি রাজশাহী আসতে চাইলেন, আর আমি গ্রিন সিগনাল দিতে পারি নাই! আমাকে মাফটাফ করে দিয়েন। একবার কিন্তু আসবেন, প্লিজ। রাজশাহীর মতন সুন্দর গোছানো শহর বাংলাদেশে আরেক পিস নাই। মেইন শহরটা পুরাটাই লম্বা হয়ে পদ্মার সাথে সমান্তরাল। সুন্দর না ব্যাপারটা? সৌভাগ্যক্রমে আমার বাড়িও সমান্তরাল রাস্তার কোনও এক জায়গায়। আপনাকে বাসায় আনতে পারব না, তবে নদী দেখাতে পারব। দুঃখ যে বর্ষাকালে না আসলে নদী দেখে মজা পাবেন না, ভারতের দাদাদিদিরা জলটল নিয়ে নিয়েচে শুনেচি! একটা কথা, আমাদের সূর্যাস্ত কিন্তু কক্সবাজারের সূর্যাস্তের চেয়েও সুন্দর। আর আমাদের পাঁচ বর্গকিলোমিটারের সাজানোগুছানো ক্যাম্পাসটা যার সাথে খুশি দেখে নিয়েন। একাএকা দেখে মজা কম পাবেন। কোনও সুন্দরীর সাথে ক্যাম্পাস দেখতে পারলে বেশি ভাল হয়। এক সুন্দরীর হাত ধরে ঘুরেঘুরে ল্যাট্রিন দেখতেও সেই লেভেলের শান্তি! আমি পচা চেহারার গরিব মানুষ, আপনাকে বড়জোর রাস্তার ধারের খালাদের হাতের কালাই রুটি খাওয়াতে পারব। ও সরি, আপনি তো আবার আলালের ঘরের দুলাল! ওসব খেতে পারবেন না! কী আর করা! না খেয়েই থাইকেন! আমি আবার একটু শয়তান আছি! আমি বড়লোকদের পিছে (হিংসা করে) পয়সা খরচ করি না। (আপনি এক কম ছয় ফিট ‘বড়’লোক না?) অতএব, আমি খাবারটাবার বেন্ধে আনতে পারব না। খাবার হোক আর যা-ই হোক, বান্ধা-বুন্ধিতে আমি নাই, ওসব আমি পারি না। আমি মানুষও বান্ধি না, খাইদ্যও বান্ধি না। খালিহাতে ঘুরেই আমার অভ্যাস। আপনি বলসিলেন না আমি ছোটদের মতন করি কেন? ঘটনা হইসে কী জানেন, আমি আসলে ছোট না, আমাকে ছোট বানায়ে রাখা হয়। কোথাও যেতে দেয় না, কিছু করতে দেয় না। আমি কিছু কিনতেও পারি না। এই ধরেন, ৪০০ টাকা গজের কাপড়, আর আমি দোকানদারকে বলি, ৭০০ টাকাতে হবে না? বুঝেন, আমি কত ইশমার্ট! একবার দোকানে গিয়ে ২ কেজি হাঁসের ডিম দিতে বলসিলাম। এইটা কিন্তু সত্যি কথা। রাজশাহীর লোকেরা ভাল মানুষ বলে রক্ষা! তারপরও জানেন, আমি একবার নানাবাড়িতে গিয়ে সাতবার হারায়ে গেসি? একটা গল্প বলি আপনাকে। আমার সাহসের গল্প। আমি একদিন কাউকে কিছু না বলে, ৭০০ আর কিছু খুচরা টাকা সম্বল করে রওনা দিসিলাম কোথায় জানি না! ২০১৩ বা ১২ হবে, মনে নাই। আমার কিন্তু সত্যিই কিছু মনে থাকে না। অনেকে টিটকারি মেরে বলে, ভাত খেতে ভুলিস না? কীভাবে ওদের বলি! আমি যে খেতেও ভুলে যাই! (সত্যি-সত্যি ভুলে যাই কিন্তু! দেখা গেল, দেড়টায় ভাত খেয়ে আবার তিনটায় আম্মাকে বলসি, খেতে দিবা না? কত বেলা হয়ে গেসে!) যেটা বলতেসিলাম, একটা শুয়োরের ভয়ে, আমি কী করব, কোথায় লুকাব, বুঝতে পারতেসিলাম না। বাসা থেকে বের হইসি, কোথায় যাব জানি না, দুম করে একটা বাসে উঠে গেসিলাম। কী হবে? কী করব? এইসব আমি কখনও ভাবি না। তখনও ভাবি নাই। ওই সময় একটা মহিলা ফেরেশতার সাথে পরিচয় হল। ইয়ে মানে, আমি দেখতে একটু সুন্দর তো………খাইসে রে!! আবারও গ্রন্থিক হয়ে যাচ্ছি! নিজেকে সারাক্ষণই সুন্দর-সুন্দর করা তো আমার ডিপার্টমেন্টের কাজ না, ওইটা আপনার ডিপার্টমেন্ট অধিভুক্ত। আপনার কাজ আমি করে ফেলতেসি বলে কি আপনি হাল্কা মাইন্ড খাইসেন?

তো যেই কাহিনিতে ছিলাম। তখন আমি দেখতে হয়তো সুন্দর ছিলাম কিংবা আমি একাকি বাসে বসেবসে কাঁদতেসিলাম, বা কী কারণে আমি ঠিক জানি না, একটা পরীর মত সুন্দর মেয়ে আমার সাথে নিজ থেকে বকরবকর কথা বলা শুরু করল। মেয়েটা আসলেই খুব্বি সুন্দর ছিল। এক মেয়ে আরেক মেয়েকে সহজে সুন্দর বলে না, আমি বলতেসি, এর মানে, সেই মেয়ে এতই সুন্দর যে অস্বীকার করার কোনও উপায় নাই। আমার মতন এমন ভূতের সাইজের লম্বা না, ৫ ফিট ৫ বা সাড়ে ৫ ইঞ্চি হবেটবে। চিকনাপটাশ স্বাস্থ্য, পোশাকও সুন্দর, কথাও সুন্দর, আপনার চাইতে অনেক বেশি ফর্সা। আমার চেয়ে অনেক বড় ছিল আপুটা। রাস্তায় কথা বলতে-বলতে গেল, আমাকে প্রায় জোর করে উনার সাথে নাটোরে নামাল। ভয় লাগতেসিল, মেয়েটা আবার খারাপটারাপ নাকি? অচেনার প্রতি কীসের এত আগ্রহ? এত দরদ দেখায় কেন? সিনেমা-সিনেমা লাগতেসিল। আবার যাবই বা কোথায়? সারাক্ষণ মনেমনে দু’আ ইউনুস পড়তেসিলাম। আমি আবার জব্বর আস্তিক! বিপদে যাঁকে ডাকি, তাঁর সাথেই ঝগড়া করি, আবার মাফও চাই, আবার খুঁতও ধরি, আবার প্রতিবাদও করি, আবার গল্পটল্পও করি। সবই করি তাঁর সাথে। আমার যে আর কেউ নাই। তো সেদিন ভয়ের সাথে আবার লজ্জাও করতেসিল। কারন, আমি বাসায় পরা কাপড় পরেই বের হয়ে গেসিলাম। ভাবতেসিলাম, আমাকে কী যে ভাবতেসে! না জানি কত খ্যাত ফকিন্নি ভাবতেসে! তো সেই আপু যার নাম বিনু, মানে বন্যা আহমেদ থেকে বিনু, সে আপু আমাকে কোনদিক দিয়ে, কোনদিক দিয়ে কোথায় যে নিয়ে গেল, ওর বরের সাথে পরিচয় করালো আর আমাকে নিয়ে বেশ ঘুরে বেড়াল। আমার বারণ উপেক্ষা করে আমার মাকে ফোন করে বোঝালো, আর আমাকে অবাক করে দিয়ে মাকে ম্যানেজ করে ফেলল! আমার বাপ জানলে জবাইই করে ফেলত, আমি জানি; তাই অনেক চেষ্টা করেও আপু আব্বার নাম্বারটা আমার কাছ থেকে খসাতে পারে নাই। সেদিন আপু আমাকে জোর করে খাওয়াল, ওর বোনের কাছে পিটিআই-র হোস্টেলে দুপুরে রেস্ট নিতে রেখে আসলো, আর বিকাল পাঁচটায় ওর বরের একটা মহিলা বসের সাথে আমাকে বাসে উঠায়ে দিল। ওই বস মহিলা রাস্তায় আমাকে নামায়ে দিয়ে নবাবগঞ্জ যাবে। আর আমার বাসভাড়া থেকে শুরু করে একটা জায়গাতেও আমার কাছ থেকে এক টাকাও খরচ করতে দেয় নাই। কী অবাককরা ঘটনা না? কেউ বিশ্বাস করবে যে দুনিয়াতে এমন মানুষও থাকে? আপুটার কী স্বার্থ ছিল, বলেন? আমি ভাবি আর অবাক হই, বিনু আপুটার জায়গায় থাকলে আমি কী করতাম? পাশ কাটায়ে চলে যেতাম না? যদি তা নাও করতাম, সর্ব্বোচ্চ একটু বোঝায়েসোঝায়ে দেখতাম, শুনলে শুনত, না শুনলে নাই, বলার কাম বলসি, এটা ভেবে নিজেকে ডিফেন্ড করতাম না? আর কিছু ভাবার প্রয়োজনও বোধ করতাম না হয়তো। আর টাকা খরচ? নাতো! ওই কাজ করতামই না! যদি বা কিছু করতামও, শুধু তখনই, যখন জিজ্ঞেস করে উত্তর পেতাম যে ওর কাছে টাকা নাই। সবচেয়ে বড় কথা, যেচে পড়ে তো এত কথা জীবনেও বলতাম না। আপনার কিসু হইসে? এর বাইরে আর কি কথা আগাতো? বিনু আপু সেদিন আমাকে অনেক সান্ত্বনাপান্ত্বনা দিসিল, যার সবই আমি উনার চেয়ে অন্নেএএএক ভাল জানি, আর ওই শুয়োরটার এই করা হবে, সেই করা হবে, এইসব বলছিল বিনু আপু। আর্‌রে! কিছু করতে তো আমরা আপনার চেয়ে ভাল পারি, কিন্তু আমি যে কাউকে কিছু বলতেই পারতেসিলাম না! আমি কেন যে এত গাধা আর ভীতু ছিলাম, এখন ভাবলেই নিজেকে লাত্থি মারতে ইচ্ছা করে। আচ্ছা, আপনি কোনওদিন এভাবে বের হইসেন বাসা থেকে? আপনার অতো সাহস কখনও ছিল?

ওইটাই ছিল আমার জীবনের প্রথম এবং পরের দয়ায় একাকি ভ্রমণ। অন্নঋণ আর ভাড়াঋন আমাকে এখনও তাড়ায়ে বেড়ায়। কোনও একভাবে কোনও একদিন তা শোধ করে আসতে হবে। কিছু না হলেও অন্তত একবার দেখা তো করে আসা উচিৎ, তাই না? বাকি ঋণগুলা তো আর শোধ করা সম্ভব না। তখনকার কথা ভাবলেই গায়ে কাঁটা দেয়। অল্প বয়সে মেয়েদের মাথায় কেমন ছিটফিট থাকে, না? তখন আমার মধ্যে বস্তাবস্তা ঘিন্যা ছিল। আমি অবশ্য এখন কাউকেই ঘিন্যা করি না। বোধবুদ্ধি পাকলে ঘিন্যা কমে যায়। কাউকে ঘিন্যা করতে হলেও কিছু কথা ভাবতে হয়। আমি আর ভাবি না কিছুই। আমি কাকে নিয়ে ভাবব, সেটাও আমার কন্ট্রোলে। দেখি, চাকরিটা হোক, নাটোরে যেয়ে আপুর সাথে দেখা করে আসব। (আমি কিন্তু এখন বেকার না। বাট, আমারটারে কেউ চাকরি বলে না। আমি নাকি আরও ভদ্রলোকের চাকরি পাওয়ার যোগ্যতা রাখি। ব্যাপক বিনোদন না? হেহেহে………) আর একবার, আমাকে একা ঢাকাতে আমার বোনের কাছে যেতে হইসিল কিছুদিন আগে, একা মানে শুধু বাসে বসে থাকাটুকুই। তাও বাসে ড্রাইভারকে আর সুপারভাইজারকে বোধহয় পঞ্চাশবার ফোন করসিল আব্বা। জানেন, আমি সেদিন বাসের মধ্যে খ্যাতের মত ঘুমায়ে গেসিলাম! আমার পাশের সিটে কেউ ছিল না, আর আমার কানে হেডফোন ছিল, তাই আমাকে ডেকেটেকে ওঠাতে না পেরে সুপারভাইজার বাধ্য হয়ে আমার হাতে টোকা মেরে ঘুম ভাঙ্গায়সে! আমি জেগে থাকার সময় দেখসি, ওই ব্যাটা নাকের মধ্যে আঙুল ঢুকায়ে তার নিজের সৃষ্টিকর্ম টেনেটেনে বাইর করে গোলগোল দলা পাকায়ে জানালা দিয়ে বাইরে মার্বেল খেলার স্টাইলে থ্রো করতেসিল। আর সেই আঙুল দিয়ে কিনা আমারে…….ইয়াক! ছিঃ! অবশ্য, দোষ তো আমারই! সেদিন থেকে কান ধরসি, জীবনেও আর কোনওদিনই একাএকা ঢাকা যাব না। গেলেও ওইরকম খ্যাতমার্কা ঘুম দিব না। মরে গেলেও না!

আচ্ছা, কালাই রুটির বর্ণনা তো দেওয়া হল না। চিনেন, ওইটা কী জিনিস? কালাই নামে একটা ডাল আছে। এখানকার লোকেরা ডাল হিসেবেই ওইটা খায়। ওই জিনিসের নাম শুনসেন জীবনে? আচ্ছা, সহজ করে দিই। মাসকলাই/ মাষকলাই ডাল তো চিনেন। ওইটাই কালাই ডাল। তো, ওই ডালটা গুঁড়া করে আটার মতন করে আরও কী কী জানি মিশায়ে রুটির মতন করে বানায়। ইয়া মোটা একখান রুটি। ধরেন, ৪০-৫০ মিলিমিটার পুরু হবে। মজার ব্যাপার, সেইটা বানাতে হয় দুই হাত দিয়ে, কিন্তু কোনও বেলনপিড়ার সাহায্য না নিয়ে। এটা অবশ্য রাজশাহীর কালচার না, নবাবগঞ্জের। পাশের জেলা। রাজশাহীর মানুষ পারে না কিন্তু এই জিনিস বানাতে! আর এটা খেতে হয় মরিচবাটা, মানে মরিচ ভর্তা করে তার মধ্যে পেঁয়াজকুচি আর সরিষার তেল দিয়ে। ঝালঝাল করে বেগুনভর্তা দিয়েও এই জিনিস খাওয়া হয়। এটার একটা জাদুকরি ক্ষমতা আছে। এটা খেলে নাকি অনেকক্ষণ কিছু খেতে হয় না। তাই রিক্সাওয়ালা-টিক্সাওয়ালা, মানে মূলত লেবার শ্রেণীর গরীব লোকেরা দুপুরে এইটাই খায়। ওদের জন্যে এটা খুবই ইকনমিকাল। (আকার ভেদে এটার দাম ১৫ থেকে ২০ টাকা।) আর এমনিতে খাবার হিসেবে পুষ্টিগুণফুন কী কীসব জানি বলে, ওইসবও আরকি আছে। ভদ্রলোকেরা, যারা বেশি ঝাল খেতে পারে না, তারা খায় বেগুন পুড়ায়ে ভর্তা করে। চিটাগাং-এর মানুষ তো অনেক ঝাল খায়! ও সরি! কাকে কী বলতেসি! আপনি তো আবার আলালের ঘরের দুলাল। কী কীসব চকোলেট আইসক্রিম যে গার্লফ্রেন্ডদের খাওয়ান, তার নামই তো উচ্চারণ করতে পারি না! হার্শে’স, ক্যাডবেরি, স্নিকার্স, কিটক্যাট………আম্মাগো! দাঁত লইড়া গ্যাসেগা! আচ্ছা, কিউরিয়াস মাইন্ড ওয়ান্টস টু নৌ, আপনি এইরকম লুতুপুতু মার্কা মাম্মিড্যাডি গার্লফ্রেন্ডগুলারে কোত্থেকে যোগাড় করসেন?

বলেন তো, আপনি একবার বিসিএস দিয়েই বিসিএস বিশেষজ্ঞ হয়ে গেছেন, না? (আমি তো শুনসি, আপনি প্রথম দুইবার প্রিলিতে ফেইল মারসেন। কাহিনি কি সইত্য?) সেদিন আমার প্রশ্নের উত্তর দেবার টাইম পেলেন না কেন? কেউ ফোন করলে ভাব বাড়ে, না? জানেন, আমি খাতাকলম নিয়ে আপনাকে ফোন করসিলাম। আনতাবড়ি মাত্র দুইটা চয়েস দিয়ে ফর্ম ফিলআপ করসি। হলে হবে, না হলে নাই। আমার বাসায় তো আমি যে চাকরি পাইসি, তাতেই ওরা সবাই মহাখুশি। তাদের মতে, আমার আর বিসিএস দেবার দরকারই নাই। গ্রামেগঞ্জে নাকি পোস্টিং হবে। আমার কারেন্ট চাকরিটাই নাকি ভাল। আমার অবশ্য বাথরুম বাদে গ্রামে কোনও প্রব নাই। (আমি কেবল হাগতে গেলে শহরকে মিস করি।) বরং আরও ভাল। গ্রামের মানুষ আমাকে কেন জ়ানি খুব পছন্দ করে, আর খুব খুব খুব ভালোবাসে। গ্রাম একখান কুউল জিনিস রে ভাই! গ্রামে গেসেন কখনও দ্য গ্রেট আলালের ইজি-কামে-বিজি দুলাল? আচ্ছা, আমি কোথায় চাকরি পাইসি বলি নাই, না? জিওলজিক্যাল সার্ভে অব বাংলাদেশ, সংক্ষেপে জ়িএসবি। আপনার মতন বিদেশে যেতে পারব! কিংবা হয়তোওওওওও আপনার চেয়ে একটু বেশিই যেতে পারব। আপনি তো যান বাটকুদের দেশে! আমি যাব লম্বুদের দেশে! যেয়ে শ্মশ্রুমণ্ডিত ড্যাশিং লম্বুদের সাথে ছবি তুলে আপনাকে পাঠাব। দাড়ি রাখলে যে আপনাকে কত বিচ্ছিরি দেখাবে, তা আপনার ভাব দেখেই বুঝে গেসি। আপনার চুলে উকুন আছে না? দাড়িতেও হবে! মাস্ট মাস্ট মাস্ট! দেইখেন! আচ্ছা, ১ম শ্রেণীর ক্যাডার আর ননক্যাডারের মধ্যে কী কী পার্থক্য, একটু বলেন তো! আমার অবশ্য পড়া নিয়েও একটা প্রশ্ন ছিল। কিন্তু যে ভাবের পাহাড় দেখাইসেন! গা জ্বলেপুড়ে ছারখার হয়ে গেসে! এত ভাব কেন থাকবে পুরুষমানুষের? সুন্দরী মেয়েমানুষ ফোন করসে, কোথায় একটু ইনিয়েবিনিয়ে প্রেমময় আলাপ করবে, তা না! হুহ্‌! ব্যাডা ভাবের ডিব্বা! ব্যাপার নাহ্‌! কোনও তাড়া নাই আমার, যখন পড়া শুরু করব, তখন ওইটা জানা দরকার। ওইসময়ে যে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই হবে।

আচ্ছা সরি, আপনাকে তো আবার রাজনীতিকদের মতন ব্যস্ত থাকতে হয়। অনেক বকবক করে ফেলতেসি? একটা কথা বলে ফেলি, নাহলে বলতে ভুলে যাব। আপনি আমাকে বলসেন না, সাবধানে থাকতে, রাজশাহীতে বেশি শীত পড়ে……হ্যানত্যান ব্লাব্লা……আপনি ঢাকায় না? দুনিয়ার আজব কিসিমের পাবলিকের মধ্যে আছেন আপনি। আপনি বেশি সাবধানে থাইকেন। মানুষ শীতের চাইতে ভয়ংকর চিজ! আর শোনেন, আপনার সাথে গাড়িতে ঘোরাঘুরি করার স্মৃতি মাথায় গেঁথে আছে, জানেন তো, না? Flashback is even hotter………একটুও ঠাণ্ডা লাগে না। হিহিহি………(মেয়েদের মত করে হাসলাম কিন্তু!)

আজকে দারুণ ফুর্তি করো, কালকে নাহয় খেটে মরো!

বাঁচবেই কাল—গ্যারান্টি কী তার? বাঁচার যেটুক, আজই বাঁচো!

কাল যদি সত্যি মরো, জিতবে তুমি, হারবে জীবন!

আর যদি বেঁচেই থাকো, জিতবে জীবন, হারবে তুমি!

থাকলে হায়াত মরবে তুমি, ফুরোলে হায়াত বাঁচবে তুমিই!

হায়াতের খোঁজ—কে জানে তা! খেললে জুয়া হায়াত নিয়ে—হয় কেঁদে বাঁচবে সারাজীবন, নয় হেসে মরবে এই এক্ষণ!

নিয়তির দায় হায়াতে মেটায়—জ্ঞানী সেজন!

হায়াতের দায় নিয়তিতে মেটায়—মূর্খ কেমন!

পড়লাম।………………এই যে জ্বিন মানব! এই জিনিস কেমনে লিখে ফেলসেন!!! এইসব তো আমার নিজের জীবনের কথা! আপনি কি আয়না-পড়া জানেন?

একটা সত্যি কথা বলি? আপনাকে লিখতে-লিখতে বা জ্বালাতে-জ্বালাতে আপনি না………কেমন জানি আপন-আপন হয়ে গেসিলেন। এটা আপনার দোষ না, আমার দোষ। ফেসবুক বন্ধ করতে যদি এক চিমটিও খারাপ লাগে, তো সেই এক চিমটির ৮০%, আচ্ছা যান, ৯৯%ই আপনার জন্য, মানে আপনাকে দেখতে পাব না, তাই। যদিও কাছে ছিলাম না কখনওই, তবু মনে হচ্ছে, কোথায় যেন দূরে চলে যাচ্ছি। অবশ্য চিন্তা নাই, মাঝেমাঝেই অ্যাকাউন্ট অ্যাক্টিভ করব। আপনি প্লিজ সবাইকে হাসাবেন। আর কাউকে আঘাত না করে, মজারমজার কমেন্ট লিখবেন, আচ্ছা? নিজের মন সবসময় খারাপ থাকে বলে হিংসা করে অন্যের মন খারাপ করাবেন না। কেউ না জানুক, আমি তো জানি, সেলিব্রিটিরা কত বেশি একা! যারা খুব একা, তাদের আসলে সেলিব্রিটি হওয়া ভিন্ন আর কোনও উপায় থাকে না। ওরা যে একা, তার উপর ইন্ট্রোভার্ট, কারও সাথে মেশে না, ওদের তেমন কোনও বন্ধুটন্ধুও নাই, ওদের আশেপাশে যারা আছে, ওরা সব ধান্দাবাজ। কিন্তু ওরাও বিশেষ কিছু হতে চায়। সমাজের চোখে কেউ একজন হিসেবে নিজেকে দেখতে চায়। তখন নিজের সকল অসহায়ত্ব আর কান্নাকে লুকিয়ে ফেলে টুক করে সেলিব্রিটি হয়ে যায়! তিনখান R দুনিয়ার সব সুখ নষ্ট কইরা দেয়—Reputation, Recognition, Restriction. যাদের লাইফে এইগুলা আছে, তাদের লাইফ পুরাই ত্যানাত্যানা। আর সেলিব্রিটির লাইফ তো ওই থ্রি-আর’স-ময়! পৃথিবীতে সেরা হয়ে বাঁচাটা খুব কষ্টের। কেউ সেরা হওয়ামাত্রই সে হুদাবেহুদাই পাবলিকের শত্রু হয়ে যায়। আমি দেখসি, নাম্বার ওয়ান হয়ে গেলে লোকে কতটা একলা হয়ে যায়! মিঠুন চক্রবর্তীর ‘ড্যান্স ড্যান্স’ দেইখেন। ওইখানে নায়িকাকে বেশিবেশি শো করায়ে ওকে টপে তুলে দেয়ার ব্যাপারে নায়িকার বাবা পার্শিয়ালিটি করার একটা সিকোয়েন্সে মিঠুন বলে, “ইকবার স্টার হোকে দেখো, লোগ কিতনে আকেলে বাঞ্জাতে হ্যায়!” মিঠুন ইনজুরড্‌ ছিল। (আপনি তো আবার হিন্দি বুঝেন না, বুঝায়ে দিই। একবার স্টার হয়ে দেখো, লোকে স্টার হলে কতটা একা হয়ে যায়!) ওইটা অতো ভাল মুভি না, তবে অল্প বয়সে কথাটা দাগ কাটসিল মনে। আজও ভাবি, কত সত্য ওই কথাটা! বাদ দেন এইসব কাহিনি। আর হ্যাঁ, জন্মদিনের ছবিগুলা সুন্দর হইসে। এত চকচকা কাপড় পরেন কেন? সুতি কাপড় পরতে পারেন না? কাপড়ে আলো রিফ্লেক্ট করে চোখে এসে লাগতেসে! আমি ভাই অন্ধকারের বান্দা, তাই ব্যাপক পেইনিত হই চোখে আলো এসে ধাক্কা মারলে। বাতিঘর’টা সুন্দর। আপনি যে এত বাতিঘর-বাতিঘর করেন! খুব দেখতে ইচ্ছা করে ওই দোকানটাকে! আচ্ছা দেখি, এরপর চিটাগাং গেলে ওখানে যেতেই হবে। আপনি ওখানে রাতে যান, তাই না? তার মানে, আমাকে দুপুরে বা বিকালে যেতে হবে। হাহাহা…… সবসময় খোলা থাকে? ঠিকানার স্ট্যাটাসটা রেখে দিয়েন তো! ডিলিট মাইরেন না। আচ্ছা থাকগা! সেই কবে বড় চাকরি পাব! হাতে বইকেনার টাকা আসবে। আদৌ যাওয়া হবে কিনা! তার আবার ঠিকানা! অ্যাত্তো বড় একটা বইয়ের দোকানের ঠিকানা জোগাড় করা কোনও ব্যাপার?

দ্য গ্রন্থিক,

আমি আপনাকে এতএত লিখি বলে আপনি ধরে নিসেন যে আমি সিইরাম ধৈর্যশালী? আমার ধৈর্য আছে, জীবনে প্রথম শুনলাম। কেউ বলে না এটা। এটা শুধু আমি জানি। আমি আমার সব ধৈর্য গোপন রাখি। কিন্তু………আপনি কীভাবে জানলেন এই কাহিনি? আসলে আন্দাজে বলসেন, কিন্তু লেগে গেসে! ঠিক না, বলেন? কিন্তু যে কারণে এটা বলসেন, তা ঠিক না। আমার লিখতে ভাল্লাগে, তাই লিখসি। ধৈর্যের কোনও ব্যাপার নাই এখানে। কেন, আপনি কি ভাল না লাগায়ে লিখেন? আমি লেখার মতন মানুষই তো পাই না। যাকেই লিখব, মানে পরিচিতরা, তারা পাল্টা লিখবে, নয়তো পচাবে, তাই ওদের কিছু বলি না। আর অপরিচিতদের তো বিশ্বাসই করি না। কেউ লিখে, এর মানে যদি বোঝায় তার অনেক সময়, তাইলে তো আপনার চেয়ে বেশি সময় কারও নাই! আমি তো আপনাকে লিখি, আর আপনি যে হাজার-হাজার জনকে লিখেন? তাই বলে কি আপনাকে আমি বলব যে আপনার অনেক ধৈর্য, অতএব এখন আপনি আমার মাথার চুল গুনে দেন? এহহহ্‌! আপনি তো মিয়া মানুষ সুবিধার না! অন্যকে পাম মেরে কাম করানোর ধান্দায় থাকেন, না?

আমি অনেক শয়তান আছি, এখনও বুঝেন নাই? যাদের হেল্প করার লোক আছে বা নিজেরাই কাজটা পারবে, তাদের আমি হেল্প জীবনেও করব না। আমি হেল্পলেসদের জন্য। তারপরও আপনার কাজটা করতে ইচ্ছা হইসিল আমার নিজের জন্য, তাইলে আপনার ইংলিশ পুটুসপাটুস একটু দেখতে পারতাম, শিখতে পারতাম, কিন্তু নাহ্‌! না ভাই, হচ্ছে না! সরি! সেগুলা বরং আমি সময় করে পড়ে নিবনি। আপনার মতন উচ্চ ফলনশীল প্রাণীর ফেসবুকের সব পোস্ট এক ফাইলে জড়ো করে দেয়া! বোঝেন কী পরিমাণ বলদখাটনির কাম এইটা! আর আপনি বুঝে গেলেন কীভাবে যে আমি কত গাধা? চায়ের লোভ দেখায়ে কিংবা মিষ্টি করে কথা বলে আমাকে যে খাটানো সহজ, তা বুঝলেন কীভাবে? সবাই এটা বুঝে কেমনে? আমি তো কাউকেই গায়ে পড়ে বলে দিই নাই যে আমি গাধা! সবাই আমারে কী যে পায়! তবুও, এখন ভক্ত বলে কথা! আমি খুশি হতাম আপনার কাজটা করতে পারলে, কিন্তু বিশ্বাস করেন, আমি নিজের জন্য একটুও সময় পাচ্ছি না। আমার অনেক কাজ পড়ে আছে, সেগুলাই সারতে পারতেসি না। আমি যে টেবিল গুছাবো, সেটাই হচ্ছে না। আমার সবচেয়ে প্রিয় কাজ, আর যে কাজে আমি সবচেয়ে এক্সপার্ট, মানে রুটিন করা, সেটাও করা হচ্ছে না। আমি শিওর, আমার মতন, বিনা আলসেমিতে আর প্রতিদিন নতুন উদ্যমে রুটিন করার ক্ষমতা কারও নাই। এটাতে আমি কখনওই ক্লান্ত হই না। অথচ সেটা করবারও সময় পাচ্ছি না! তার উপর শুরু হইসে নতুন ফেসবুক ভূতের অত্যাচার! এ কারণেই তো এই ভার্চুয়াল কারাগার থেকে বের হয়ে আসতে চাই! তাও তো পারি না! আমি জেনেশুনে বিষ চিবায়ে খাই! মেজাজ খারাপ হয়! এমন স্বেচ্ছা-কারাবরণ আর কি আছে?

যে-ই আমি ফেসবুকের ভূতকে কানে ধরে ঘাড় থেকে নামাতে চাইলাম, আর অমনিই আপনি আসলেন। কেন রে বাপ? আবার আপনি বলে ফেললেন যেন ফেসবুক অফ না করি। আমার মনের জোর কম। আর আমি বোধহয় বিনা কারণে আপনার প্রতি একটুএকটু দুর্বল হয়ে যাচ্ছি। (বোধহয় বলসি কিন্তু!) আপনি মানা করলে সত্যি আমি হয়তো আর ফেবু বন্ধ করতে পারব না। আর যদি করেও ফেলি, তাও মনের মধ্যে খুঁতখুঁত করবে। আপনি প্লিজ বলেন যে, হ্যাঁ, তুমি অ্যাকাউন্টটা বন্ধ করতে পার। আমার সত্যি খুব বিচ্ছিরি লাগতেসে এটা ইউজ করতে। দুইদিন ফ্রেন্ডদের সাথে ছ্যাবলামো করেই ক্লান্ত হয়ে গেছি। আর ওদের কোনও কিছুতে লাইক মারলেই নক করে, আমি তাদের কথার উত্তর না দিলে ওরা কষ্ট পাবে, তাই কথা চালায়ে যেতে হয়। আবার এও শুনি, আমি জানি তুই অনলাইন, ভাব নিস কেন? আমার আসলেই রেস্ট দরকার। আপনি একবার বলেন, এইখান থেকে দূরে সরে যেতে, মানে বন্ধ করার অনুমতি দেন। আর দুইদিন পর আমি আবার আসব তো! এখন একটু পড়াশোনা করতে চাই। আমি ভাই আপনার মতন জিনিয়াস না। একসাথে দুইদিক সামলাতে পারি না। ফেসবুক আমাকে খালি টানতে-টানতে ওর বাড়িতে নিয়ে আসে। আমি একটু অটিস্টিক আছি। আর ওই যে ‘তারে জামিন পার’ সিনেমায় বাচ্চাটার যে অসুখটা ছিল না, সেটা আমারও আছে। ডিসলেক্সিয়া না কী জানি বলে ওটাকে। ঢং করে বলছি না, সত্যিসত্যি। অসুখটা আছে, তবে মাইল্ড। আরও ভেবে দেখসি, বুড়াদের একটা অসুখ হয় না, অ্যালজেইমার না কী একটা বলে……যেটা আমার দাদুর আছে? সেটা তো………ওপেন সিক্রেট—জন্ম থেকেই আমার আছে! মানুষ নিজের নামের বানান ভুলে যায়, জীবনে শুনসেন? ফাজলামো করতেসি না কিন্তু, খোদার কিরা, এটা আমার কয়েকবার হইসে। আর জিনিসপাতি খুঁজে না পাওয়া বা কোথায় রাখসি ভুলে যাওয়া, আর গালি খাওয়া তো রোজকার পান্তাভাত টাইপের ব্যাপার। এই রোগ নাকি কেবল অতি-মেধাবীদেরই বুড়া হওয়ার আগেই হয়? তাহলে আমিও কি…………? হিহিহি

আচ্ছা, আমি আর আপনাকে জ্বালাতে পারব না? অন্তত চাকরি পাওয়া পর্যন্ত? তাই বলে আমাকে অতটাই বেহায়া টাইপের ভাববেন না যে আপনি বউ বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে ঘুরে বেড়ালেও জ্বালায়ে বেড়াব। তখন আর কী! স্রষ্টাকেই জ্বালাব! কিংবা………জানি না কাকে! কিংবা, আপনাকে জ্বালানোর আগে যেভাবে থাকতাম সেভাবে থাকব! যাদের জ্বালানোর কোনও মানুষ নাই, ওদের অনেক দুঃখ, ওরা আসলেই খুব অসহায়। আমি এইটা জানি। আবার ধরেন, জ্বালানোর মানুষ হইসে, এরপর আবার সেই মানুষটা কেমনে জানি হাওয়া হয়ে গেসে, এইটা আরও বেশি পেইনফুল! তার চাইতে জ্বালানোর মানুষ ছাড়াই লাইফ ভালই কেটে যায়। বুঝলেন ভাই, লাইফ একখান আজব চিজ—কোনও না কোনওভাবে সে নিজের রাস্তা ঠিকই খুঁজে নেয়! আপনি সফল, পপুলার আর বয়স এখন তিনের ঘরে, মানে আপনি বিয়ের জন্য পারফেক্ট। আপনার বাসাতেও তো এটা বলে! কী? বলে না? বিয়ে করে ফেলতেসেন না কেন? বিয়ে করেন, টুকটুকে একটা বউ নিয়ে আসেন, এরপর ফুলের মতন ফুটফুটে একটা বাবু আসবে………ওঁয়া ওঁয়া ওঁয়া! এইইইই………ইশটপ ইশটপ ইশটপ! আমার মন খারাপ হয়ে যাচ্ছে!!! কান্না পাচ্ছে!!! কেন? হাহাহা………ভুল বুঝলেন, স্যার! জানেন না আমি দয়ার সাগর? কান্না পাচ্ছে আপনার ভবিষ্যৎ জীবনে চলার সাথী, মানে ওই বেচারির দুঃখের কপালের কথা ভেবে!

আচ্ছা শুনেন, আপনি না আমার জন্যে একটু কুফা হইসেন! আপনি আমার ফ্রেন্ড হইলেন আর এরপর ফেসবুকে আমার অ্যাকাউন্টে ঢুকতেই পারলাম না। আরেকটা ইম্পরট্যান্ট আলাপ করি। পাঁচ-এগারো খুউউউব লম্বা কিন্তু না। এত লম্বার ভাব নিয়েন না। আমার বাপ-চাচারা অবশ্য বেশি লম্বা না! তবে আমার নানার ফ্যামিলির কথা আলাদা। ওরা কেমন, বলি। যে মামাটাকে নানার বাসায় গুড্ডু হিসেবে ডাকা হয় তার উচ্চতা পাঁচ-এগারো। হইসে? বাকিরা সব ছয় ফিটের উপরে। আর আপনি মেয়েদেরকে যে মানুষ বলে মনেই করেন না, গডেস বলে মনে করেন তার জন্য ধন্যবাদ। এতটা ভাবি নাই। কিন্তু শুধুশুধু মেয়েদের এত উপরে উঠানোর দরকার নাই, ভাই। ঠকবেন যখন তখন বুঝবেন মেয়েরা যে কী চিজ!

আমি কালকে আমার বোনের সেবা করতে ঢাকা যাচ্ছি। আবার আপনাকে মিস করব। টিউশনির কথায় আসি, আপনি এখন বস মানুষ, ছেলেপেলেদের আইডল না কী জানি বলে ওইটা; তারপরও কেন আগেকার কথা ভুলে যান না? হুঁউউউ? আপনাকে জ্বালানোর জন্য আবারও সরি। আমি জানতাম না গল্পটা। সরি সরি সরি। আমি কিন্তু জানতাম না যে আপনি আইবিএ-তে ফার্স্ট। সেদিন গাড়িতে জানলাম। আপনি দেখছি একটা সত্যিকারের ইয়া, মানে ইয়ে……! যদিও আইবিএ-র প্রতি আমার একটুও ফ্যাসিনেশন নাই, তাও মুগ্ধ হইসি। (আবার ভাইবেন না যে আইবিএ অ্যাডমিশন টেস্টের কঠিন-কঠিন প্রশ্ন দেখে বানায়ে-বানায়ে বলসি, ফ্যাসিনেশন নাই।) আমি ফার্স্টবয় বলেবলে মুখে ফেনা তুললেও সত্যি যদি বলি, এগুলা কিন্তু আমাকে টানে নাই। আসলেই টানে নাই। কী যে টানসে! স্রষ্টাই জানে! আমার কোনও ফার্স্ট-বয়টয়দের প্রতি কোনওদিনই কোনও মোহ ছিল না। ওদের দেখলেই আমার কেন জানি হাসি পায়, ওদের ধরে কাতুকুতু দিতে ইচ্ছা করে! আমি জানি, এটা বিশ্বাসযোগ্য কথা না। বিশ্বাস করবেনও না। আমার কথা বাদ দেই, আপনি এখন তো সবার নায়ক রে, ভাই! সবাই আপনার মত হতে চায়, এসব ভাববেন। পুরাতন কথা ভাবেন কেন? আর, আচ্ছা আপনি কি শুধুই পড়াইসেন? ওই স্টুডেন্টকে শিখান নাই ক্যান শিক্ষককে কীভাবে সম্মান করতে হয়? আর একটা পুচকি ছেলেকে এত প্রাধান্য দিসিলেনই বা কেন? এখনকার কথা ভাবেন। বিন্দাস থাকেন। আমার দিকে তাকান, বস, আমিও একটু আইডল আছি, তবে উল্টা দিক থেকে। আমার চাচি-মামিরা ওদের মেয়েদের বকার সময় আমার উদাহরণ দেয় যেন আমার মত না হয়, আমি নেগেটিভ উদাহরণের জন্যে ইউজড্‌ হই, ভাই। আমার কানে খালি আমার সম্পর্কে উল্টাপাল্টা কথাবার্তা আসে। মামির কথা আগেই শুনসিলাম, চাচিরটা শুনলাম এইবার, ঢাকায় যেয়ে। একটা ছোট্ট বোন আছে, সে না জেনেবুঝেই ভ্যারভ্যার করে অনেক কিছুই বলে দিল আমার কাছে যে ওর বড় বোনকে কী কী বলে বকে ওর মা। কই? আমি কি কান্দি আপনার মত? আমি জানি যে, ওদের সাথে আমার একসময় আর দেখা হবে না, তো যা বলে বলুক গিয়ে! আমি যৌথ পরিবারে বড় হইসি সবাইকে ভালোবেসে, এখনও বাসি। আমি নিজের প্রেমে পাগল তবে নিজেকে যে অতো ভালোটালোবাসি, তা কিন্তু না, তাই কারও কথায় রাগও হয় না। আমি সত্যি একাই থাকব, এইটা ভাবি। এই ভাবনার পিছে কিন্তু কোনও ছেলের হাত নাই। কী হবে জানি না, পারব কি না, তাও জানি না, তবে ওইটাই আমার প্লান।

আমি শুধু আকাশের দিক তাকায়ে থেকেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটায়ে দিতে পারি খুশিমনে। এটা শুনে বা দেখে সবাই আমার দিকে একটু দুক্কদুক্ক টাইপ লুক দেয়, কিন্তু আমি যে খুশিমনে একা থাকতে চাই, সেটা কেউ বুঝে না। ভাবে, আহারে! কেউ বিশ্বাস করে না যে আমি তাতেই সুখী! ছেলেদেরকে আমার কার্টুন-কার্টুন লাগে! আপনার ডায়লগ মেরে দিলাম আরকি! অতিরিক্ত হচ্ছে এই যে, আমার মেয়েদেরকেও তা-ই লাগে! আর নিজেকে তো সবচেয়ে বড় কার্টুন লাগে! আর আপনি আমার সম্পর্কে একটা ভুল জানেন। আমি যেমন ভালোবাসতেও পারি, তেমন ঘিন্যা করতেও পারি। আমি যেমন একটুতেই গলে যাই—আমার চোখের পানি বেশ সস্তা, তেমন আমার মত নিষ্ঠুরও কেউ নাই। আমি মিথ্যা ভালোবাসার ট্র্যাপে পড়সিলাম, তবে সেটা দুমড়েমুচড়ে চলে আসতে পারতাম ঠিকই, ইচ্ছা করেই আসি নাই। নাহ্‌, ভুল বুইঝেন না, ওইসব সতীত্বফতীত্ব আমার কাছে অত বড় কিছু না, অন্তত জীবনের চেয়ে বা আমার নিজের চেয়ে বড় তো নয়ই। কারও সাথে শুইসি মানেই এই না যে সারাজীবনই মরে গেলেও তার সাথেই শুয়ে কাটাতে হবে! মাইয়াগুলা ওইসব বালের ফিলসফি পাইসে কই? ওইগুলারে ধইরা থাবড়াইতে পারলে শান্তি লাগত! আসলে মনের মধ্যে মরার ইচ্ছা নিয়ে আর অসীম ঘিন্যা নিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে আটকে ছিলাম অন্য একটা ট্র্যাপে, তাই প্রথম লাভট্র্যাপ থেকে ইচ্ছা করেই বের হয়ে আসি নাই। যা-ই হোক, এইসব কিছু না। আপনার লেখাটা পড়ে আবার কেমন জানি হয়ে গেসিলাম। আমি জানি, অন্যের জায়গায় না থেকে কারও অনুভূতি কখনও বোঝা যায় না, কিন্তু বিশ্বাস করেন, কল্পনা করেকরে পড়তেসিলাম তো, তাই আমার মনে হল চড়টা আপনি খান নাই, আমি খাইসি। আমি অন্যের চোখ আর মন দিয়ে দেখতে পারি। এই অদ্ভুত ক্ষমতা আমার আছে। সত্যি! আপনি আমার কেউ না, তাও আমি যদি চাই, তবে আপনার মন খারাপ হলে আমারও খারাপ লাগবে। এইরকম! সেলিব্রেটিরা কতরকম ভক্তই তো পায়, মনে করেন, আমার মত একটা গাঁইয়া, খ্যাত, অত্যাচারী, ফালতু আর বিচ্ছিরি মানুষ টাইপের একটা ভক্ত আপনি পাইসেন। কী আর করা যাবে! মেনে নেন! আমি তো আপনার মত বড় কিছু না, কিন্তু আপনার সাথে আমার নিজের বানানো কী কী জানি মিল আছে। হয়তো নাইই কোনও মিলটিল! সবই ফাঁকি! এসবই আমারররররর………বানানো! যা-ই হোক, আমি নিজের প্রয়োজনেই চাই, আপনি হাসিখুশি থাকেন। পুরাতন কথা ভেবে কষ্ট পাবেন না। আপনার তো সুন্দর একটা বর্তমান আছে। এসব নিয়ে থাকা যায় না? খারাপ কথাগুলা না ভাবলেই তো হয়! আমি ভাই দুক্কের ব্যাপারস্যাপার এড়ায়ে চলি! ছোট্ট একটা জীবন—তাও আবার তেমন কোনও কামের জীবনও না! এত দুক্কটুক্ক পেয়ে কী হবে গো, বাছা? আচ্ছা, আমি কিন্তু ল্যাপটপ সঙ্গে নিয়ে গেলে হয়তো আমার আরেকটা অ্যাকাউন্ট থেকে আপনার লেখা পড়ব। দয়া করে বড়বড় স্ট্যাটাস দিবেন। এইরে! বলে ফেললাম! কোনও কাজ করার আগে কাউকে ওইটা সম্পর্কে বলে ফেললে আমি আর সে কাজটা করতে পারি না। আর হইসে পড়া! আচ্ছা, পড়ব না। ধুউররর্‌!