গোধূলি না ফুরোতেই/তিন

তোমার লেখায় শুধুই আমাকে খুঁজে পাই না, চড়ুই, আরো কেউকেউ থাকে সেখানে।……..চড়ুই! ব্যস্ততার মন্ত্রজপে মিছে কথার ঘ্রাণ,/ তোমার মিছে ব্যস্ততাটা নিচ্ছে আমার প্রাণ!

মিছে ব্যস্ততা? খেয়েছ?

খাবো না, অন্নের সাথে আড়ি করবো।

কেন?

ইচ্ছে হয়েছে, তাই। আজ ইচ্ছের প্রাধান্য দিতে চাই।

খাইয়ে দিই?

উঁহু। এবেলা খাইয়ে দিবে, আর ওবেলায় যখন পথ চেয়ে রইবো, তখন তুমি বলবে, আমি চললুম! তাই অভ্যেসটার পরিবর্তনের আবশ্যকতা নেই আমার। বাসায় সবাই কেমন আছেন?

………………………………………………………………………

বাবু, গজল শুনতেশুনতে পাগল হয়ে যাচ্ছি! গজলের তালিকা করছি। ভাল গজলের।

কেন?

ভাল লাগছে যে শুনতে, তাই।

হঠাৎ এ ভাললাগা!

রাতের খাবার খেয়েছ?

শুভ রাত্রি। খাবো।

ঘুমিয়ে পড়বে, ঘুমপরী?

আমার বড্ড রাগ হচ্ছে।

কেন, বাবুই সোনা? গান শুনো।

বলবো না। আমায় সব নামে ডাকবে নাহ্‌। শুধু যে নামে কাউকেই ডাকো না, সে নামে ডাকবে।

বাবুই, আমি কাউকে বিশেষ কোনো নামে ডাকি না। ভুল বুঝো না, বাবুই।

আমার……….কিছু হচ্ছে না।

কী হচ্ছে না?

………………………………………….

গুড মর্নিং, প্রিন্সেস। কোথায় তুমি? সত্যিই মিস করছি তো!

শুভ সকাল।

অ্যাভয়েড করছ?

অ্যাভোয়েড করা আর অভিমান করা গুলিয়ে ফেলছো বলে মনে হয় না? ওকে ফাইন!

অ্যাত্ত অভিমান!

আমার বোধহয় প্রকাশ করা ঠিক হয়নি। তবে তাই হবে! সবই হবে, শুধু কোনো বহিঃপ্রকাশ রইবে নাহ্‌!

আমি কি কিছুই বুঝতে পারি না, ভাবো? বোকা বাবুই পাখি একটা!

সত্যিই কি পারো?

হ্যাঁ। আমার নিজেরই অনেক অভিমান!

আমার অভিমানগুলো বিষাক্ত। যতবার চেষ্টা করি, ততবারই টেনেহিঁচড়ে আঁকড়ে ধরে অভিমানগুলো। অভিমানগুলো মানুষখেকোর মতো, কিংবা আরো ভয়ংকর! ওরা প্রেমখেকো!……..তুমি কোরো অভিমান। আমি তো বারণ করিনি। আমি সামলে নিতে জানি।

আচ্ছা। শুধু ছেড়ে যেয়ো না কখনো।

আমি তোমার অভ্যেস হতে চাই। ছাড়ার কথা আসছে কেন? লোকের মাথাব্যথা হলে কি লোকে মাথা কেটে ফেলে?

ইসসসসসস্‌!

আমার অভিমান হলে মিটিয়ে নেবো।

হুঁ। খেয়েছ?

তবে চলে যাওয়ার ভয়টা না পাবারও কিছু নেই, যদিও ওতে তোমার কিছুই যায় আসবে না।

মানে, যাবে?

পরে খাবো। তুমি খেয়েছ? বাসায় সবাই কেমন আছেন?

যায় আসবে বলেই যেতে বারণ করেছি! আমি খাবো।

তোমার সাথে ঝগড়া। আড়ি! তুমি সিন করতেও দেরি কর, অনলাইনে থাকো, তবুও।

আজ মিটিং আছে। রংপুরে যাবো। আমি অনলাইনে থাকি না, জাস্ট অলটাইম ডাটা অন থাকে।

আমার মনে হয়, তখন তোমাকে কোন অপ্সরা ভালোবাসার গল্প শুনাচ্ছে! কবে ফিরবে? সাবধানে যেও।

আমার কোনো অপ্সরা নেই।

নেই হয়তো, তবু সেটা কি মন মানতে চায়, বলো?

আমাকে বিশ্বাস কর না তুমি?

করি। এটা অবিশ্বাস নয়।

মানতে চায় না, বুঝি।

ভয় এটা।

আর মানুষ প্রিয় কিছু নিয়েই ভয় পায়, অপ্রিয় কিছু নিয়ে নয়।

তোমাকে ভালোবেসে ফেলছি একটুএকটু করে।……….হুম, সেটা ঠিক।

তুমি বিন্দু পরিমাণ বাসলেও আমার কাছে তা বৃত্তের আকার নেবে। বুঝে নিয়ো।

তুমি ঢাকায় কবে ফিরবে?

আমার মা অসুস্থ। কয়েকদিন পরে যাবো।

কী হয়েছে মায়ের?………বুঝে নিবো। আমি শাওয়ারে ঢুকবো। পরে নক দিচ্ছি।

তবে মাঝেমাঝে ইচ্ছে করে আমি বোকার মতো প্রশ্ন করবো, আর তুমি আমায় বলবে…….আচ্ছা।………চুল ভাল করে মুছে নিও। এই গরমে চুলে পানি রইলে সর্দি হবে।

তুমি দিলে কী হয়?

আমি দিলে আঁচল দিয়েই দিতাম। তোয়ালে রাখতুম নাহ্‌!

জানি।

এর কারণ হলো…….তুমি আঁচলে চুল বা হাত মুছার পর সে ভিজা আঁচলটা আমায় যতবার স্পর্শ করবে, ততবার তুমি না থেকেও জানান দিবে, তুমি আছো! দেরি হয়ে যাচ্ছে। যাও……….যাও……….যাও………যাও…………যাও………….যাও……..যাও!!!!!!!!

তোমার চুলের ঘ্রাণ শরীরে জড়াবো।

আমি ভেজা চুলে তোমার মুখ ও গলা ভিজিয়ে তোমায় ঘুম থেকে জাগাবো। এখন যাও তো!

ইসসসসস্‌!

দেরি হয়ে যাচ্ছে, যাওওওওওও…….

তোমাকে নিবিড় চুমু খেয়ে ফাস্টিং ভাঙবো। আর আমি তোমায়……….

এখন যাও না! কখন বেরোবে গো?

ছাড়তে ইচ্ছে করে না যে!

উঁহু! আমি রুমে তোমার কাপড় বের করি, ওকে? তুমি যেগুলো পরে বাইরে যাবে। আর তোমার চা রেডি করি।

বুকের লোমে দাঁত দিয়ে আলতো করে একটা টান দাও না!

উমমমমম্‌ নাহ্হহ্‌! যাও তো!!!! দুষ্টুমি কোরো না। নইলে কিন্তু কানে কামড় দিবো!

এই! মিটিং-এ? রংপুর এসেছ? কী কর?

হ্যাঁ। নিঃশ্বাস নেই।

মিটিংয়ে অনলাইনে কী, হুহ্‌?

তোমাকে মিস করছি তো!

ইসসস্‌!

আমার কী দোষ!

ব্যাপার নাহ্‌! থাকো। পাপকে ঘৃণা করি, পাপীকে নাহ্‌।

তোমার বুকটা দেবে?

কী করবে?

গিরিখাতের ঘ্রাণ নেবো।

বেরোতে পারবে তো তখন!

ঢুকে যাবো!

সব বরফের স্তূপের মতো থেমে যাবে যে…….

থামলে থামুক! ছোট্ট পাহাড় দুটোয় চড়ব।

ভারি দুষ্টু হয়েছো, নাহ্‌?

কেন?????

মিটিং শেষ হলো?

হুঁ। খেয়েছ, বাবুই?

নাহ্‌! তুমি খেয়েছ তো? কখন ফিরবে?

খাওনি কেন? ফিরছি। খেয়ে নাও।

সাবধানে ফিরো। সে পরে খাবো!

কেন?

অ্যাই শুনো………..

হুঁ।

একটু হাসো নাহ্‌!

হাসছি।

কতকাল দেখিনি মনে হচ্ছে হাসিটা! শব্দ করে হাসো, একেবারে অট্টহাসি যাকে বলে!

হুঁ, শব্দ করছি।

হুঁ হুঁ শব্দ করে হাসছ?

তুমি কাছে এলে সবই হবে, যা চাও!

কিচ্ছুটি চাইনে, বাপু! তুমি দূর হতে হাসলেও পাওয়ার অন্ত রইবে নাহ্‌!

ভালোবাসো না এখনো, তাই না?

সংশয় আমার রয়েছে। এরপর উত্তরে বলতেই পারো……..তবে আসি।………..আমি আটকাবোনে!

আটকানোর দায় কি তবে আমারই?

দায় ভেবে আছো তুমি! ভালোবাসা হলে সেটা দায় নয়, দায়িত্বে রূপ নেয়। তবে বুঝলুম, এ ভালোবাসা নয়! কেবলি কিছু একটা হয়তো!

যা বুঝে শান্তি পাও আরকি!

স্বস্তি দিবে না তাই বলে? যদিও এটা জোর গলায় বলতে পারবো নাহ্‌! তোমায় খুউব করে বলতে পারবো নাহ্‌!

আচ্ছা, সময় নাও।

খুউব করে যেমনি নিজের জিনিসের দখল করা যায়, তোমাকে তেমনি করে দখল করতে পারলে, তখন ভাববো। ভালোবাসাহীন প্রেমে আমার পোষাবে না। তোমায় সম্পত্তি নাহ্‌, ঠিক সম্পদের মতোন করে চাই। এ আমার অক্ষমতা। আমার মাঝে হয়তো ভালোবাসা নেই!

আমি তোমার সবটুকুই চাই—মন, শরীর।

হাহাহা……….পাগল একটা!

হাসছ যে?

প্রেমিক এমন করে বলে বুঝি?

তাচ্ছিল্য ছুঁড়ে দিচ্ছ?

নাহ্‌! লজ্জা, আমার লজ্জা।

আমার কাছেও?

বলার অপেক্ষা রাখে না। আমি ভীষণ রকমের লজ্জা পেয়ে বসি।

আচ্ছা।

আমি যদি তোমার সাথে পাগলামি করি, তখন তুমি কী করবে? আমি যদি কথা বলতেবলতে তোমায় খুউব বিরক্ত করি, তখন তুমি কী বলবে?

আদর দেবো বাবুই পাখিটাকে।

হুঁ। অ্যাই…….শুভ সন্ধ্যা। সন্ধ্যাপ্রদীপের আলোয় তোমায় কেমন দেখাবে? নিশ্চয় খুউব পবিত্র দেখাবে। মনে হবে, তোমার মাঝেই ঈশ্বরের বাস!

ইসসসসসসস্‌ শুভ বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যা! কী করছ?

কিছু করা আবশ্যক কি?

চা খেয়েছ?

কী করছো তুমি?

বসে আছি।

আর?

তোমার কথা একটু ভাবছি।

কী ভাবছো?

তুমি আমার একটা তুমি। এটা।

আমি তোমার এমন তুমি নই, যে তুমি’টায় আমি ছাড়া আর অন্য কেউ নেই।

মানে, তোমাকে অপশনাল করে রেখেছি?

আমার কথায় কি সেটা স্পষ্ট?

সরাসরি বলো।

তুমি এই কথা বললে হয়, চড়ুই? আমি ঘুরিয়েপ্যাঁচিয়ে কথা বলি না।

কথা বলবো ফোনে।

বাড়ির সবাই একসাথে বসা।

আচ্ছা।

একটু সময় দাও। আর শুনো……..

আমার বাবুইকে কখন একা পাবো? বলো।

আমি তো একা রইতেই পারছি না! এখন চড়ুই থাকে সবসময়ই।

আমিও!

তোমাকে নিয়ে ঈর্ষান্বিত ও স্বার্থপর হতে ইচ্ছে করে।

যাহ্! ছল করতে হবে না!

এদিকটায় তো আমি বরাবরই হিংসুটে! ছল করছি না, তাইতো পুড়ে! দেখি, যদি পুড়তেপুড়তে খাঁটি কিছু হতে পারি!

আমার ব্যাপারে নির্ভাবনায় থাকতে পারো।

প্রিয় জিনিস নিয়ে কি ভাবনার শেষ থাকে?

বাবুই সোনা, তোমার কণ্ঠ শুনবো!

আমার কন্ঠ তো এতোটা মধুর নয়…….তবে তোমারটায় মনে হয় বড্ড মধুর বাড়াবাড়ি।

তোমার কণ্ঠ মধুর বলে শুনতে চাইছি নাতো, কণ্ঠটা তোমার বলেই শুনতে চাইছি। বাবুই!

নৈশভোজন হলো?

স্যুপ খাবো। তুমি খেয়েছ?

হ্যাঁ, খেলাম।

কী কর?

নানীসহ বসেবসে সিরিয়াল দেখি।

আচ্ছা।

তুমি কী কর?

পিক তুলে পাঠাও, দেখবো।

খেলা দেখবে না আজ?

হ্যাঁ।

তুমি কোন দল পছন্দ কর?

ব্রা। তুমি?

আমিও। চিমটি!

উম্মাহ্‌! কোথায় কিস করবো?

কোত্থাও নাহ্‌!

কেন?

এত সহজে দেই কীকরে, বলো!

দেবে না? আচ্ছা।

অ্যাই শুনো না………

বলো, আমার বাবুই!

আমার……….দ্যাখো, কাজ নাই তাই খই ভাজ অবস্থা আমার।

কাজ করতে হবে না, আমি আছি তো!

নেট স্লো, তাই দেরি হয় যেতে কিছু পাঠালে।

গান আমার প্রথম ভালোবাসা। আমার ভালোবাসার একটা গজল পাঠালে শুনবে?

হুঁ।

ভিডিও দেয়ায় মন খারাপ কেন বাবুইয়ের?

এমনি।

বলো।

কী?

কেন কাঁদলে?

চোখের পাতা সতেজ রাখতে। এটা কী?

একটা ফানি ভিডিও। তোমাকে একটা উৎসর্গ করি?

ফানি ভিডিও কই পেলে?

১০ টুকরো ভালোবাসা শেয়ার করি, কেমন?

ফরিদা খানুমের কণ্ঠে আজ জানে কি জিদ না করো

নায়ারা নুরের কণ্ঠে আয়ে জেজব্যয়ে দিল ঘের ম্যয় চাহু

আসরারের কণ্ঠে তেরে ইশক কি ইন্তেহার চাহাতা হু

আলী জাফরের কণ্ঠে কোয়ি উম্মিদ বার নাহি আতি

সুরাইয়ার ইয়ে না থি হামারি কিসমাত

আনিতা সিংভির কণ্ঠে রাঙ্গ প্যাইরাহান কা খুশবু জুলফ রেহরানে কা নাম

আসিফ মেহদির কণ্ঠে শুনা হ্যয় লোগ উসসে আঁখ

হাবিব ওয়ালি মুহাম্মদের কণ্ঠে মারনে কি দুয়ায়ে কিঁউ মাঙ্গো

আহমেদ জাহানজেবের কণ্ঠে আপ কি ইয়াদ আতি রাহি রাতভ্যর

ফাউজিয়া আরশির কণ্ঠে হাসতি আপনি হুবাব কিসি হ্যয়

……………………………………………………………………

এই দুইদিন গজল নিয়েই আছি। কত মধুর, কত ঐশ্বরিক!

হ্যাঁ। আমিও শুনবো তবে।

হ্যাঁ, বাবুই। ভালোবাসো?

কার জন্য বানিয়েছিলে লিস্টটা?…………..না বলা রইবে নাহয় আমারটা! বলো না, কার জন্য বানিয়েছ?

কারো জন্য নয়, তবে তোমাকে উৎসর্গ করলাম।

ছলাকলা বুঝিনে, বাপু! কখন বানিয়েছ????

এইতো! কাজ নাই, আর কী করবো? ভালোবাসি!

বাসো!! কখন বানিয়েছ? অ্যাই, খেলা দেখছো?

হ্যাঁ। তোমার ওয়ালের ভিডিওটা কখন বানিয়েছ?

সময় দেখেছি?

কতদিন আগে?

৩ দিন।

আচ্ছা। কার জন্য বানিয়েছ?

কারো জন্য বানাইনি।

আচ্ছা। এই!

হ্যাঁ, বলো।

কিছু না। রাতে কথা বলবো।

মা আর আমি একসাথে শুই। আমি একা শোবো?

হ্যাঁ।

আচ্ছা।

ইউ ডোন্ট কেয়ার। শুভ রাত্রি।

অ্যাই…………আচ্ছা। আমায় সহ্য করছো নাহ্‌! শুভ রাত্রি।

বাজে বোকো না।

আমি, না তুমি বকছ বাজে?

যা ভাবো!

এখন কাঁদবো? নাকি এমন করে পাগল হয়ে যাবো?

টিকটক ভিডিওগুলি কখন কার জন্য বানিয়েছ? বয়ফ্রেন্ড?

হায় ঈশ্বর!! শুভ রাত্রি আবারো।

আমি মিথ্যা সহ্য করতে পারি না।

শুনো, আমি মিথ্যে বলি না। আর যখন এসব মনে হবে না, তখন আমায় স্মরণ কোরো। আসি।

এটা কে ভিডিও করেছে?

মা। রুমে। এগুলো একটা অ্যাপসে থাকে, সেটা থেকে গানগুলো সংগ্রহ করা যায়। মিউজিক্যাল।

আমার রাগ হচ্ছে।

কেন?

জানি না।

আহা! এমন করে না লক্ষীটি। কী করেছি আমি?

ডোন্ট প্লে উইথ মাই ইমোশনস!

বেশি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু……..

আমার কিন্তু খুউব কান্না পাচ্ছে। তোমাকে ভালোবেসে ফেলছি। বাট তুমি মজা করছ!

অ্যাই, কোনটাকে মজা বলছো? এখন যেটা করছো সেটা মজা নয়তো আবার?

আমি মিথ্যে ইমোশন দেখাই না।

আমি মিথ্যে, তাইতো?

কথা ঘোরাবে না।

আশ্চর্য! কথা ঘুরানোর কী হলো এখানে? আর তুমি এমনই-বা বলছো কেন? আমি কী করেছি?

আমি জানি না।

যদি বলি কবিরা সর্বজনীন, তখন তো বেশি খেপে যাবে!

আমার অস্থির লাগছে।

বাবা, একটু স্থির হও! কেন এমন হচ্ছে? ঠিকই তো ছিলা!

ওহ্‌!

আচ্ছা, তোমায় আর টিকটক ভিডিও দিবো না! প্রমিজ!

সরি। আবার সরি বলছো কেন? আমার দিকে তাকাও।

জানি না কেন বলছি।

কী হয়েছে, চড়ুই?

তোকে ভালোবাসি!

সত্যিসত্যি ভালোবাসো?

হ্যাঁ।

ঠিক তো?

হুঁ।

তাহলে অস্থির হচ্ছ কেন?

মজা নিচ্ছ?

আমার সাথে ঝগড়া করছো ক্যান? তুমি যদি আরেকবার বল, মজা নিচ্ছি, তবে তোমাকে খুন করে ফেলবো! অন্য কেউ তো নেই ঝগড়া করার। ফাজলামো পেয়েছ?

তোমাকে তো আর পেলাম না!

মানে?

এমন কোরো নাহ্‌, প্লিজ! আমার অস্বস্তি হচ্ছে।

আমি মিথ্যে কিছুই বলছি না। শপথ করে বলছি!

আমি একবারও বলছি নাহ্‌ তুমি মিথ্যে বলছো। আমি আসলে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গিয়েছিলাম। ধরো, তুমি যে আমার সাথে কথা বলছো, এটাই তো বিশ্বাস করতে পারছি নাহ্‌!

এটার অর্থ কী?

আমি এখনো মোচড় খাচ্ছি। তুমি আমার সাথে, মানে, তোমার সাথে কথোপকথন। এখন চুপ থেকো না।…………..কই যাচ্ছো? অ্যাই! বেশ! তুমি যা করছো, করো।

খেলা দেখি। অনলাইনেই তো ছিলাম না।

এই! নেই! আচ্ছা।

ঘুম নেই?

নাহ্‌!

ফোন করো।

কী করে?

আম্মু কেন পাশে????

আমি কার সাথে ঘুমাবো তবে?

আমার।

তুমি আমাকে বকেছো। আমি রইবো না তোমার সাথে। ঘুমাবো না।

আচ্ছা। শুভ রাত্রি।

আচ্ছা। শুভ রাত্রি!

কার সাথে কথা বলছ? তুমি ঘুমাবে কখন?

শুয়েছি। পানি পিপাসা লেগেছে।

খাও।

নাহ্‌।

মানে?

পিপাসা লেগেছে, কিন্তু যাবো আবার পানি খেতে…….

হিসু পাবে, তাই?

কেমনে বুঝলা?

মনে হল। চলো, ঘুম পাড়িয়ে দেই। বুকে আসো।

গল্প শুনাবে রাজারাণীর? তাহলে যাবো।

হুঁ।

চুলে ঝুঁটি থাকবে আমার, আর তুমি বিলি কেটে দেবে।

হুঁ।

আর গল্প বলবে…….

দেবো।

আর আমি তোমার চিবুক নাড়িয়েনাড়িয়ে তারপর……..তারপর বলতেবলতে……..ঘুমিয়ে পড়বো। ইসসস্‌ ভেবেই কী প্রশান্তি!

আমি অনেক যত্ন করে আদর দিতে পারি।

আমি বড্ড অনাদরে।

আমি দেবো।

তুমিই দেবে।

হ্যাঁ।

আচ্ছা।

আলতো থেকে গভীর আদরে যাবো।

ইহহহহহ্‌ নাহ্হহহহ্‌! পানির পিপাসা আরো বেশি লেগেছে তোমার কথা শুনে। ওয়েট, খেয়ে আসি।

আমার ঠোঁট খেয়ে তৃষ্ণা মেটাও।

তা মন্দ বলনি।

তবে?

ওটা যে নেশা!

না, ভালোবাসা।

তবে তোমার ঠোঁটে এত্ত নেশা কেন?

আমি যে তৃষ্ণার্ত!

উঁহু, সে তো আমি!

আচ্ছা, দুজন‌ই।

তবে তাই হোক!

জিভ দাও আমার মুখে।

ইহহহ্‌ লজ্জা পাচ্ছি!

লজ্জা খুলে ফেলব, তবে?

নাহ্হহহ্‌!

ওখানটায় কিস করি?

নাআআআআ!

দিই।

নাআআআআআ!

………………………….

শুভ সকাল, বাবুটা।

শুভ দুপুর।

আহা, কত ভাল গান তোমার ওয়ালে!

অ্যাই, খেয়েছ? বাসায় সবাই কেমন আছেন?

কতটা কাজের চাপে ছিলাম, ভাবতেও পারবে না, বাবু। এখন সৈয়দপুর এয়ারপোর্ট যাচ্ছি। যশোর যাবো।

খেয়েছি। তুমি খেয়েছ? কবে ফিরবে? ঘুরতে যাচ্ছ, নাকি কাজে?

রোববার। কাজে।

সাবধানে যেয়ো কিন্তু!

প্লেনে উঠে পাইলটকে ফোনে ধরিয়ে দিই?

হুহ্‌! সেটাই বরং ভাল হবে!

তুমি আমার তুই হবে?

হুঁ।

তুই’টায় বেশি মিষ্টি কেন, বলোতো?

সারাজীবন পাশে থাকবে?

তুমি ‘তুই’ বললে শিহরিত হই।

আমৃত্যু পাশে রাখবে?

তোকে কী জিজ্ঞেস করেছি, জান?

আমি মৃত্যুর পরের জন্মেও যদি কোন মানবজন্ম পাই সেই জন্মগুলোতেও তোমার ‘তুই’ হয়ে রইতে চাই।

তুই আমার সব কথা শুনবি?

কী? রাখবে আমায়?

রাখবো।

হুম।

আমাদের কখন দেখা হবে?

আমার তো এক্‌খনিই মন চাচ্ছে!

উত্তর দেবে না, এ-ই তো?

আমার কথা তোমার কাছে এমন লাপাত্তা কেন বলোতো?

কবে দেখা হচ্ছে?

আমি ঢাকায় আসি আগে।

কবে আসবা?????????

কিছুদিন দেরি হবে।

আচ্ছা।

কতদিন??????

আমি এটা জানি না। মা যেদিন বলবে, সেদিন। পুরোটা মায়ের উপর নির্ভর।

আচ্ছা। কই এখন?

অ্যাই শুনো!

হুঁ।

সত্যিসত্যি ভালোবাসো আমাকে?

হ্যাঁ।

শুধু হ্যাঁ বললে হবে নাহ্‌। পুরোটা বলতে হবে।

ভালোবাসি।

কাকে?

বাবুইকে।

আচ্ছা।

তুমি কাকে ভালোবাসো?

এটা উত্তরহীন থাক।

বলো।

যদি বলি আমার গালের এই তিলটা হবে?

হয়ে আছিই!

তবে তা-ই হও!

কাকে ভালোবাসো?

এটা বাদ দাও না!

দেবো না।

প্লিজ!

না। বলো!

………………………………………

পৌঁছেছ?

ঢাকা এয়ারপোর্টে।

যশোর কখন যাবে?

৭:৪০টায়।

কিছু খেয়ে নিও।

খেয়েছি। তুমি খেয়েছ?

হ্যাঁ।

কী খেয়েছ?

স্যান্ডউইচ আর চা।

আচ্ছা।

কী কর গো?

………………………………….

অ্যাই! কই তুমি? খেয়েছ?

বাসায়। অনেক অতিথি।

বাসায় বলতে?

তোমার না যশোরে যাওয়ার কথা?

সেখানেই আছি। সবার সাথে কথা বলছি।

যে প্রভাতে তোমার কাছ থেকে মিথ্যে করে হলেও শুভেচ্ছা আসে না, সে প্রভাত যেন অপরিপূর্ণ! জানো তো প্রিয়, হৃদয়ের পাশে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়েথাকা তুমি’টা না আজকাল বড্ড বিবাগী! তবু, সময় নেই থেমে। আসছে নতুননতুন প্রভাত ঠিক আজকেরই মতন! সুপ্রভাত……….

ওই শুভেচ্ছা মিথ্যে? শুভ সকাল, প্রিয়।

তোমাকে খুউব অস্বস্তিতে আছো দেখাচ্ছে কেন? তুমি ঠিক আছো তো?

একটু। বাসায় এসেছি, কিছু কাজ করছি।

আচ্ছা।

তুমি ঠিকঠাক আছো তো?

আলহামদুলিল্লাহ্‌!

সকালে খেয়েছ?

খেয়েছি। তুমি বিচলিত হয়ো না, ঈশ্বর সব ঠিক করে দেবেন।

তুমি ঠিক থাকলেই আমি ঠিক থাকব।

আমি ছুঁয়ে আছি তোমাকে—

কখনো সকালে, কখনো বিকেলে,

কখনোবা সন্ধ্যায়……

কখনো শয়নে, কখনো জাগরণে,

কখনোবা তন্দ্রায়……..

শরীরে, মনেতে, শিরা-ধমনীতে,

ছুঁয়ে আছি কেবলি তোমাকে তোমাকেই।

আর সেখানে ঠিক না থেকে পারি?

ছুঁয়ে থেকো,

লেপ্টে রইবো!

……….খুব সুন্দর লিখেছ!

খুউব করে এমনটা মনে হয় আজকাল! আমি তোমায় যে খুব দীর্ঘদিন ধরে ভালোবাসছি, এমনটাও নয়।

তবে?

এখন মনে হচ্ছে প্রেমে পড়তে এক ক্ষণই বোধ করি যথেষ্ট!

হয়তো শুধু তোমার প্রেম পাবো বলে…..

আমি বহু প্রেমের ঘাসফুল মাড়িয়ে এসেছি।

কত কাতর দৃষ্টি থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রেখেছি।

শুধু তোমার স্পর্শ পাবো বলে……

আমি কাশফুলের আদুরে পাপড়িগুলোকে কখনো ছুঁয়ে দেখিনি।

শুধু তোমার ওই আঁখিযুগলের গহীনে ডুববো বলে…….

অনেক দিনের খরা শেষেও আমি বৃষ্টিতে ভিজিনি।

আমি হৃদয়ঘটিত ব্যপারগুলোর প্রকাশ খুউব একটা জানিনে। তবে মনে ভুল নিও না, চড়ুই।

আমিও তোমাকে যে আগে থেকেই চিনতাম, তা নয়। প্রেমে হঠাৎ পড়েছি। ভালোবাসা পরে এসেছে।

অ্যাই ছেলেটা! অতিথিরা চলে গেছেন?

আজকে থাকবে। অ্যাই মেয়েটা!

হুঁ। কী করছ? খেয়েছ?

নিঃশ্বাস নিচ্ছি। আর যখন যখন নিঃশ্বাস নিই, তখন তখন তোমায় অনুভব করি। দেরি করে খাবো।

স্নান করেছো?

অ্যাই শুনো না………

বলো না!

একদিন তুমি আর আমি গাঙচিল হবো, পাখায়পাখায় জড়িয়ে থাকবো।

এরপর?

জলকেলিতে সাদা কুয়াশার ভোরে,

শিশিরের শীতে দুজনে নিভৃতে

ভিজবো চুপটি করে।

আমরা কবে জলকেলি করবো??

কোনো এক বসন্তের শেষে।

আহা!

অ্যাই শুনো না……..সারাটা জীবন মেঘে আর জলে ভাসবে আমার সাথে?

হ্যাঁ, যদি চাও।

চাওয়ার উপর নির্ভর! তাহলে ব্যপারটা এমন দায়সারানো দাঁড়ালো যে তুমি আমার জন্য গলাপানিতে নামো, আমি তখন জলে আঙুল স্পর্শ করবো!

………………………………………

বাবুই, তোকে ভালোবাসি!

চলো তবে হাতের উপর হাত সাজিয়ে পিরামিড হই,

তীব্র চুম্বনে তৈরি করি চীনের প্রাচীর।

চার চোখের সহবাসে তৈরি হোক আরেকটি ব্যাবিলনের ঝুলন্ত উদ্যান।

মনের ভেতর মন লুকিয়ে বাঁধি তাজমহল,

পৃথিবী হোক লালটিপ কপালে আমার।

চলো, ভালোবেসে হই অষ্টম আশ্চর্য!!

যদি হারিয়ে যাস ইচ্ছে করে?

যদি তাড়িয়ে দিস রাতদুপুরে?

দেবো কেন?

দিলেই বা! যাবো কেনো!

সত্যি?

হ্যাঁ গো!

রইবে তো বুকের ভেতর? কোথায়? কী হয়েছে? এই!

হুঁ।

আমি কষ্ট পাচ্ছি।

কেমন আছো? কেন কষ্ট পাচ্ছো?

কোথায় ছিলে? কী হয়েছিলো?

কিছুই না।

সত্যি কথাই বলো! তুমি ছিলে না।

মিথ্যে কী বললাম!

কাল থেকে ছিলে না তুমি। কাল ফিরবে ঢাকায়? কী সমস্যা?

হ্যাঁ, ছিলাম না। কার জন্য রইবো!

আমি ঢাকা থেকে সৈয়দপুর ফিরছি।

সকলেই ব্যস্ত নিজের কাজে।

একটু পর প্লেন টেক অফ করবে। তুমি ছিলে না।

সৈয়দপুরে আবার কেন?

আসার পর অনলাইন, বাট নো রিপ্লাই। সৈয়দপুরে এয়ারপোর্ট।

এখনি চলে যেতাম। লগ আউট দিবো, অমনি তোমার কল। সকালে খেয়েছ? আচ্ছা যেখানেই থাকো, নিজের যত্ন নিও আর সাবধানে থেকো। ফ্রি হয়ে নক দিও। আসছি।

………………………………………………………….

তুমি কি খুব বিজি? খুব?

নাহ্‌! তুমিই ব্যস্ত!

কাল থেকে প্রতীক্ষায় আছি। বোঝো না কিছু? এই!

তোমার প্রতীক্ষা কার তরে, সেটাই তো বোধগম্য হয় না আমার!

মানে?

চুপচাপ সারাদিন, কোলাহলপূর্ণ পরিবেশ, তবু মনে হয় কেউ নেই চারপাশে, একা আমি, নিস্তব্ধতা ছুঁয়ে আছে আমায়, অকারণে ছলছল আঁখি দুটো, তোমারও কি কখনো এমন হয়?

কার তরে মানে??

তুমি আমায় অনুভব কর?

হ্যাঁ।

নাহ্‌, একদমই নাহ্‌! আমি তোমার অভ্যেস নই। সময় নাও, তবুও কেবলই কল্পনায় রেখো না।

আচ্ছা, তোমার কেন মনে হয় আমি সব বানিয়ে বলছি???

বানিয়ে নয়। কেমন যেন ধোঁয়াটে। তুমি আমার নাহ্‌! এমন গন্ধ বাতাসে।

তুমি কি এই সম্পর্কে আগ্রহী নও?

আমি খুউব বুদ্ধিমতী নই, তবে খুব সরল। সরলতার মাঝে সবলতা টুকুনও আছে। আমি জানি না আমার কী হচ্ছে।

আমি নিজেও অনেক সহজ, খুব সরল।

কেমন অনুভূত হচ্ছে……..

তোমাকে নিয়ে যা হয় আমার মধ্যে, তা যদি জানতে!

হায়!! যদি জানাতে……..

বাবুই, তুই কোথায়, সোনা?

তোমার বুকের প্রতিটি লোমে আমি। কোনো সমস্যা?

লোমে আছিস, আমি কেন টের পাই না, বলতো?

তুমি ঘেমে গিয়েছ। তোমার লোমকূপে লবণাক্ত ঘাম। সে ঘামে পিছলা খাচ্ছি, তাই তুমি টের পাচ্ছো না। তবে আমার লবণাক্ত পানি খেতো মন্দ লাগছে নাহ্‌!

জিভ দিয়ে চেটে দে না, বাবুই!

সে কম্মো কবেই করেচি, তাও একটিবারও টের পেলে না! আমার সাথে মনেমনে কথা বলার অপশনটাও নিলে না! এত করে শুধালুম! হায়, তবুও সারা মিললো নাহ্‌!