গোধূলি না ফুরোতেই/পাঁচ

কিছু সময় দূরত্বে রইতে চাই যে!

আমার অস্থির লাগে।

একটু অস্থির লাগাতে চাই যে!

তোর লাগে না?

লাগে তো!

আমি তোর কাছে আসি না, প্লিজ!!!!!!!! এই!

উঁহু!

কেন? অনলাইনে থেকেও রিপ্লাই দিস না কেন?

শুনো না, জানপাখি! আমার ভীষণ ঘুউম পাচ্ছে!

অনলাইনে কার সাথে কথা বলিস?

তোমার জন্যই তো এতক্ষণ রইলাম! নয়তো সেই কবেই যেতাম!

ফোন করি?

ওয়াশরুম থেকে আসি। ওয়েট। তুমি কখন ঘুমাবে?

আমি ঘুমুতে গেলাম!

কেন গো?

তুই চাইলে জেগে রইবো।

ইসসস্‌! চাইতে হবে ক্যান? এই যে আমার কপাল! খাঁখাঁ করছে! নাওওওওওও এ কপাল! খুশির বন্যা বইয়ে দাও তো, বাপু!

নিলাম। কপাল থেকে পায়ের পাতায় চলে যাক জিভ?

মমমমম্‌ মন্দ কীসে?

সোজা নিচে?

অতলে নয় আবার!

ঢুকুক না জিভ!

উঁহু! আজ গলায়গলায় মিলিয়ে দাও না, আরেকদিন পুরোটা পুষিয়ে নিয়ো।

দিলাম।

আমি শতযুগ তোমার গলার ডান ও বামে জিহ্বামুখ করে কাটিয়ে দিবো। কারণ ওটা আমার একান্ত গোপন পছন্দ ও আকাঙ্ক্ষা।

বুকের লোম পছন্দ?

হুঁ।

আমার আছে। বাবুই!

কীহ্‌?

ভালোবাসি!

অ্যাই শুনো না!

বল!

আমায় আগলে রাখবে?

রাখবো।

আমার না একাএকা খুউব ভয় হয়!

তুই একা?

পৃথিবী নামক বাস্তবতায় হাবুডুবু খাচ্ছি! প্রতিটা পা এগুতে ভয় হয়। কারো সাথে কথা বলতেও ভয় হয়। গার্ডিয়ান ছাড়া আমি যেন খোলা সিন্দুকের মতো।

আমি তো আছি পাশে।

তোমার কেমন যেন লুটেনেয়া মনোভাব! আমি বড্ড ভয় পাই।

আমি তোর গার্ডিয়ান হবো।

আমি না খুউব জড়সড় হয়ে আছি! আমি না ডানা মেলতে ভয় পাই!

আমাকে জড়িয়ে ধরে বাঁচ!

ভয় পাই যে!

আমাকেও?

তুমিও তো মানুষ! তুমিও পরিবর্তনশীল।

ঠিক আছে, তাহলে সময় নে!

আমার কষ্টগুলো ছোঁবে?

জড়িয়ে নিবো।

যদি বড্ড ভারি বোধ হয়?

ভালোবাসা সব মানিয়ে নেয়!

তুমি মানিয়ে, না মেনে নেবে?

মানিয়ে।

এতরাত জেগো না।

আচ্ছা।

ঘুমিয়ে যাও। কাল কখন অফিস?

তুই ঘুমাবি না?

আমায় ঘুম পাড়িয়ে দেবে?

কাল নয়টায় মিটিং আছে। বুকে আয়।

চুলে বিলি কাটতেকাটতে বুকের মধ্যে শুইয়ে রূপকথার গল্প বলতেবলতে ঘুম পাড়াও। আচ্ছা, তুমি ঝুঁটি বাঁধতে পারো?

হ্যাঁ।

আমার চুলে রোজ ঝুঁটি করে দিবে, আচ্ছা?

দেবো।

শুনো না!

হুঁ।

সত্যিসত্যি ভালোবাসো আমাকে?

ভালোবাসি!

আচ্ছা। চলো ঘুমাই। শুভ রাত্রি।

উঠে এসির রিমোর্ট নিয়ে এলাম।

…………………………………………..

শুভ সকাল, বাবুই।

শুভ সকাল, চড়ুই।

তুই কালকে কোথায় চলে গিয়েছিলি??? এই! ফোন ধরিস না কেন? তুই কোথায়?

কখন? ফোন তো দাওনি! খেয়েছ সকালে? বাসায় কথা বলেছো? বাসায় সবাই কেমন আছেন?

সকালে ফোন করেছি। কই! পাইনি তো!

মিটিং-এ এসেছি।

ওক্কা! কখন ফিরবে?

বিকেলের দিকে।

আইচ্ছা। বরই খাবা?

তোমার মুখ থেকে খাবো। খাওয়াবা? কইইইইইইই????

হ্যাঁ।

কোনো খোঁজ নাই!

তুমিই না আজ ব্যস্ততায় ভোগাচ্ছ আমায়!

কেন?

কী করছো?

গান শুনছি। কাল ঢাকায় আসব। সন্ধ্যায়।

কাজে?

একটু কাজ আছে।

দেখা করব।

কেন?

কেন, মানে?

দেখা না হোক।

কেন?

দূররররররই ভাল লাগছে যে!

বুঝতে পারছি না।

কীহ্‌?

দেখা করতে চাইছিস না কেন?

ভয়ে।

কীসের?

জানিনে!

দেখা করবি না?

নাহ্‌!

মানে, দেখাই করবি না কখনো?

এমনটাও নয়!

তবে?

আমি তো তোমার পরিচিত নই!

তাই আর দেখা করবি না?

আগে পরিচিত হই।

মানে?

তারপর নাহয় কোনো এক বর্ষায় দেখা করবো।

এই আইডি ফেইক?

আজব!

ফেইকই!

কেন? হায় ঈশ্বর!

বললেন তো আমরা অপরিচিত!

ঠিক প্রথম দিনের ম্যাসেজটা দ্যাখো।

ওহ্‌ ‘আপনি’! কী করে এমন করে মুখ ফিরিয়ে নেন বলুনতো!

আমরা অপরিচিত—তুমিই বললে।

আপনি বোধহয় ভুলে গেছেন, আপনি বলেছিলেন অপরিচিত কাউকে অ্যাড করেন না। সেদিক থেকে এখনো আমরা অপরিচিতই!

অ্যাড করেছি। এখন বলেন।

অস্বস্তি হলো!

দেখা হচ্ছে?

নাহ্‌!

আপনার মনে এতো সংশয়! কেন দেখা হচ্ছে না?

যদি বলি অকারণে!

মানে, তুমি আগ্রহী নও।

ঝগড়া করবেন আজ?

আমি সরাসরি জানতে চাইছি।

আমার সময় লাগবে। আমার ভয় অনেক।

কেন?

আমার আজ সত্যিই ঝগড়া করতে মন চাইছে না!

মানে, দেখা হবে না কখনো, জাস্ট ভার্চুয়াল চ্যাটিং?

এটা বলেছি আমি?

তাহলে দেখা করবে না কেন?

আমি কাল করবো না, সেটা বলেছি

পরশু? এর পরদিন?

আর আমাকে ফেইক মনে হলে ব্লক করে দিতে পারেন।………….ঈদে করতে চেয়েছিলাম।

আমি কী ভাবছি, তুমি বুঝতে চাইছ না।

আপনি বুঝালেনই তো!

আমি বলেছি, দেখা করো।

আমি কি কোনদিন দেখা করবো না, এমনটি বলেছিলাম?

মানে?

আমি কি বুঝাতে পারছি না? নাকি বুঝতে চাইছেন না?

দেখা করতে চাইছ না কেন? আমি কিছু জিজ্ঞেস করেছি।

আমি ভাল নেই, তাই।

কেন?

বলবো না।

আচ্ছা।

……………………………

ছবিটা দেখলাম। মাথায় নয়, গলায় আদর দিতে হয় বেড়ালের।

আচ্ছা। কেমন আছো?

যেমনটি রেখেছো।

আমার রাখার কী অধিকার আছে?

ওহ্‌ দুঃখিত! আমি তো ফেইক। ভুলেই গিয়েছিলাম।

তা নয়। আমাকে সে অধিকার তুমি দাওনি।

বাহ্, কী সুন্দর করে মন পড়ে ফেলতে পারেন!

নাহ্‌! তুমি যা পড়িয়েছ, তা-ই পড়েছি।

আমার পড়ানোটা তো তবে জঘন্য মনে হচ্ছে!

যা মনে হয় আরকি!

মনে হওয়ায় আর কিছু নেই, সব স্বচ্ছ তো!

স্বচ্ছ ভেবে নিচ্ছ? আচ্ছা, ঠিক আছে।

আচ্ছা।

ভার্চুয়াল সম্পর্ক নিয়ে তোমার শেয়ারটা দেখলাম। সত্যিই তো তা-ই!

হ্যাঁ।

তুমি আমাদের সম্পর্কটা ভার্চুয়াল রাখতে চেয়েছ। আমি বুঝতে পেরেছি যে তুমি জাস্ট টাইম পাস করার একটা উপায় হিসেবেই আমার সাথে কথা বল।

হায় ঈশ্বর! তুমি আমাকে কোন কাতারে দাঁড় করাচ্ছো, চড়ুই?

অনেক দুঃখ থেকে কথাগুলো বলছি।

আমার এমন কিছু ইচ্ছে রইলে তোমাকে এতদিনে ফলো দেয়ার পর বিরক্ত করে ফেলতাম। আমি এতো প্যাঁচ বুঝি না, চড়ুই!

তোমার কথা প্রতি মুহূর্তে মাথায় আসে, মনে আসে। তাই বেহায়ার মতো নক করে ফেলি।

দ্বৈতসত্তায় থেকো না। আমি তোমাকে এমন কিছু কি বলেছি যার জন্যে আমায় এভাবে অবজ্ঞা করছো?

একটা কথা বলি, শোনো। তুমি অনেক ভাল কথা বলতে পারো। তবে তার মানে এ না যে মিথ্যে আর হাল্কা কথা বললেও সেটা ভাল হয়ে যাবে।

এভাবে সত্যিই বলতে পারছো! আমি কোনো মিথ্যে বলছি না জন্যই তদন্ত করছো!

স্রেফ কথা লেখার জন্য কথা লিখো না!

আমি যেটা, আমি তো তোমাকে সেটাই লিখছি!

না। তোমার আয়নায় যা আসে, তাই লিখে ফেল তুমি। তোমার আয়নায় তোমার মনের ভুলগুলি ঘুরেফিরে আসে, সেখানেই বাঁচো তুমি।

ভুল!!

জোর করে ভাবনা চাপিয়ে দিয়ো না। তুমিই পৃথিবীর একমাত্র নির্ভুল মানুষ নও।

আমি নির্ভুল নই। তুমি কি আমার সাথে এখন বিবাদ করবে? ভালোবাসা থেকে দূরে রই!

যা-ই হোক, এ কয়দিনে বুঝলাম, ইউ জাস্ট ডোন্ট কেয়ার। আমি নক না দিলে তোমার কিছুই এসে যায় না। আমি চলে গেলাম কি থেকে গেলাম, ইউ ডোন্ট গিভ ইট অ্যা শিট!

যতবারই ভাবি, আপনা ভুলিয়া ভালোবাসবো, ততবারই বিরহে দগ্ধ হই! তোমায় নক দিলে উত্তর দাও ঠিকঠাক?

হ্যাঁ, দিই।

তুমি যেটাকে ডোন্ট কেয়ার বলছো সেটা আদৌ ডোন্ট কেয়ার কি? এমনটা কেন ভাবছো না যে সেটা তোমায় কাজের মধ্যে ডিস্টার্ব না করা?

তুমি এর মধ্যে কোনো যোগাযোগ করেছ? যা করার, আমিই করেছি। হয়ত বিরক্তই করেছি, তাও করেছি। ভালোবাসতে অনেক ভাল লাগে, তোমাকে ধন্যবাদ। (জানি, তুমি এটা নিয়েও তামাশা করবে, ভাববে, ভুয়া কথা বলছি।)

আমাকেই ভালোবাসো? তুমি কি বিদায় নিচ্ছো?

আমার এমন একতরফা ভালোবাসা আর সহ্য হচ্ছে না। মনে হচ্ছে, জোর করে থেকে যাচ্ছি, আটকে রাখছি। বিদায় নিতে কষ্ট হবে, তবে সেটা কোনো স্বীকৃতি কিংবা পারস্পরিক ইচ্ছেশূন্যতার চাইতে স্বস্তিদায়ক।

আমার কাছে এতটাই অস্বস্তি তোমার!

আবারো! নিজের মত করে ভুল ভেবে আর সেটা বলে আমাকে রক্তাক্ত করছ। খুব ভাল রকমের নিষ্ঠুর তুমি! ভালোবেসে না ফেললে নিশ্চয়ই অভিশাপ দিতাম তোমাকে।

আমায় অভিশপ্ত করে দাও………..যাতে কেউ আমার প্রেমিক নাহয়! যাতে তোমার মতো কোন প্রেমিক ছেড়ে যাবার জন্য না আসে!

তুমি ইচ্ছে করে এসব বাজে কথা বল, তাই না? ভাল লাগে লাত্থি মারতে আমার মনে?

এমন দুঃসাহস আমার কল্পনাতেও আসে না!

কেন মিথ্যা বলছ? বরাবরই করে যাচ্ছ এটা।

কী হচ্ছে বলোতো তোমার? মেজাজ খারাপ কেন? কারো উপরে রেগে আছো?

কষ্ট হচ্ছে। নিজেকে তোমার কাছে সস্তা মনে হচ্ছে। তোমাকে পেতে ইচ্ছে করছে বলে নিজের উপর রাগ হচ্ছে। দরকার হলে আমার সাথে কথা বোলো না, তাও আমাকে আহত করে কথা বোলো না।

বুকে নিবা একটু?……………চলে গেলে? আচ্ছা, আসি তাহলে। শুভ রাত্রি।

নেবো না। তোমাকে আমার অভ্যাস করে ফেলেছিলাম। পরে তুমি বুঝিয়ে দিয়েছ, আমি স্রেফ ভার্চুয়াল প্রেমিক। ভার্চুয়াল প্রেমিককে অত আশা করতে হয় না। শুভ রাত্রি।…………………………তুই তো দিব্যি ঘুমাচ্ছিস, আমি যে ঘুমাতে পারছি না, ওতে তোর কিছুই এসে যায় না!

…………………………………………

চড়ুই! শুভ সকাল! খেয়েছ? বাসায় কথা বলেছো? কেমন আছেন সবাই? রাগ কোরো না তো, জানপাখিটা! তোমায় দেবদাস লুকে ভাল লাগছে না। শেভ কোরো।

আমি ঢাকায়।

কখন এসেছো?

সকালে।

এসেই জানিয়েছি। টেক্সট চেক করো।

খেয়েছ? কই আছো এখন? মিটিং ছিলো?

খাইনি। কিছু কাজ করেছি।

কী করছো?

গুলশান ২-এ আছি। ঘুম থেকে উঠলাম।

আজই ফিরবে?

তোমার কথা বলো।

আমি আছি। কাল ফিরবো। কোথায় তুমি?

বুয়েটে।

কোনো কাজে?

হ্যাঁ।

কী কাজে?

পরীক্ষা দিলাম।

কী পরীক্ষা?

জবের।

আচ্ছা।

কী জব?

কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর-এর। এখনো খাওনি কেন? যাও, খেয়ে নাও আগে।

তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে। দুপুরে খেয়েছ?

কিছুদিন অপেক্ষা করো, কলিজা! আমি খেয়েছি।

দেখা করলে কী এমন প্রলয় হয়ে যাবে?

……………………………………………..

অ্যাই জানো!

বল, বাবুই।

তুমি একটা আকাশ। তুমি একটা জান। কী করছো?

বাইরে। বন্ধুদের সাথে।

কখন ফিরবে রুমে?

ঠিক করিনি।

আচ্ছা।

তুই দেখা করবি না?

উঁহু। ঈদে।

আমার খুব ইচ্ছা করছে।

ইচ্ছেগুলো আরো প্রকট আকার ধারণ করুক।

কষ্ট দিবি?

মমমমম্‌ একটু যাতনা দিবো।

……………………………………..

খেলা দেখছি।

জানি।

কীভাবে?

একটা মানুষকে নিয়ে সারাক্ষণ ভাবলে এইসব জানা অতীব সামান্য ব্যাপার!

আচ্ছা, বিশ্বাস করলাম।

আচ্ছা।

……………………………….

অ্যাই!

বলো।

আমি প্রতীক্ষায় আছি।

আমিও ছিলেম………….

এখন বলো।

দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পর সব চঞ্চলতার অবসান ঘটে যায়।

আচ্ছা। তোমার জন্য আমার ছটফটানি কখনোই শেষ হয়ে যায় না কেন তবে?

অবসান হয়েছে, শুধু মেনে নিতো পারছো না।

সবসময়ই তো কথা চাপিয়ে দাও। আবারও দিলে!

উঁহু! তুমি মানতে চাও না।

যা ভাবো!

ভাবলাম।

আচ্ছা।

……………………………………..

ভালোবাসি!…………………….সিনও করছ না। বাহ্‌!………………কয়েকদিন বেশ মজা নিলা! ভাল!

ঠিক তোমার মতো!

আসলেই নিয়েছ? বাহ্! পারো তুমি! ছিঃ!!

বাক্যবাণ ছুঁড়ো না!

যা সত্যি, তা-ই বললাম!

তুমি যেহেতু বলেছো, তাহলে মিথ্যে করে দেবো না!

যা তোমার মনে আছে, তা-ই বলেছি।

তাই তুমি এত খুশি!

ভালই!

তোমার মন থেকে না আসলে তো আর হবে না!

আমি খুশি!

কোন ব্যাপারে?

এই যে তোমার ইচ্ছেটা পূরণকরা আমিই সহজ করে দিলাম, তাই।

শুন, তুমি আগে নিজেকে প্রশ্ন করো। দ্যান!

প্রশ্ন করেই আমি তোমাকে বারবার নিজ থেকে নক দিই।

আর আমারও তোমার ফুটবল হয়ে যথেষ্ট খারাপ লাগছে। তোমার ইচ্ছে হয় তো কথা বল, নয়তো মেসেজ সিনই কর না। আমিও একজন মানুষ। তাও আবার একদম হৃদয়হীনা নই। তবে কী জানো তো আমার যে ভালোবাসাটা, সেটা তোমার দায়সারা করে দিতে হবে না, সেটা কেবল আমারই।

আর হ্যাঁ………আমি ক্ষতিকারক তোমার জন্য। কারন আমিও একজন অসহায় মানুষ।……….অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রধান সমস্যা হল, যেহেতু অসহায় মানুষমাত্রই বিভ্রান্ত ও হুজুগে, তারা যেকোনো সময়ই আপনার ক্ষতি করে ফেলতে পারে, কিংবা আপনার শত্রুর পাশে দাঁড়াতে পারে। সাধারণত অসহায় মানুষের কোনো নির্দিষ্ট চরিত্র থাকে না। জন্মালে মরতে হবে, এটা সত্য; আর উপকার করলে মরার আগেই কয়েকবার মরতে হবে, এটা আরো বড় সত্য। যারা কখনোই কারো উপকার করে না, তারা সবচাইতে বেশি নিরাপদ।

যাঁদের জন্য বুক পেতে দেবেন, তাঁরাই আপনার বুকে ছুরি বসাবেন সবার আগে।

—তোমারই তো কথা!…………তুমি আমার থেকে বরং দূরেই রও!

তুমি যা বলছ, নিজেও জানো, সেসব ডাহা মিথ্যা কথা। তাও বলতে ভাল লাগছে, কিংবা কোনো কারণ দেখিয়ে দূরে সরে যেতে হবে, এমন কোনো ভাবনা থেকে বানিয়েবানিয়ে মিথ্যা বলছ।

আমি একবারও যে কথাগুলো ভাবিনি, সে কথাগুলো তুমি বেশ সাজিয়ে বলছো। মনের কথা কী করে এত সুন্দর করে পড়ে ফেলতে পারছো!! কোয়ান্টাম মেথড কোর্সটা করার পরও আমার কোনো উন্নতি নাই দেখছি এ ব্যাপারে। হায় ঈশ্বর, সব চুরচুর করে দিও না!

আমি যেটা স্বপ্নেও মাথায় আনি না, সেটা অবলীলায় জোর করে চাপিয়ে দেয়ার আর্টটা কোথায় শিখলে?

এই যাহ্‌! চাপালাম কোথায়? মূল কথা হলো, তুমি জ্বালাচ্ছো, আমি জ্বলছি না কেন, এতে তুমি পুড়ছো। আমারও এমন হতো প্রথম দিকটায়। এখন তোমার অবহেলায় সামলে গিয়েছে! নক দাও সকালে, উত্তর দাও বিকেলে।

বাজে কথা বন্ধ করো!

তখন তোমার এসব কোথায় রয়!!

প্রচুর বানিয়ে কথা চাপিয়ে দাও তুমি। প্রথম থেকেই এটা কর তুমি।

তা কী কী চাপিয়েছি শুনি!

দোষ চাপানোর নেশা তোমার প্রবল!! সে দোষের অস্তিত্ব থাক বা না থাক!

কথা কইলেই তোমার এমনটা হয়, তবে মুখ বন্ধ রাখলেও একই কথা। জলে কুমির ডাঙায় বাঘ, এমন দশা আমার!

তা নয়। যদি বলতেই হয়, সত্য বলবে। তোমার মনের খুশিমত কথা বললে সেটা সত্য নাও হতে পারে। যা সত্য, সেটা যত তিক্তই হোক, নিতে আমার কোনো অসুবিধা হয় না।

একটু ভালোবাসা চাতক পাখির মতো চেয়েছি বলেই কি এমনটি করে কথা কচ্ছো? এখন আসছি। রাতে থেকো।

আবার নিজের মত করে নিষ্ঠুরভাবে কথা চাপাচ্ছ? যেটা সত্য নয়, সেটা চাপাতে বিবেকে বাধে না? লজ্জা করে না?

নাহ্‌! আমার তো চক্ষুলজ্জাও নাই। থাকলে কি আর এত কিছু বললে তুমি, এরপরও কথা বলতাম!!

তুমি কথা বলছ না, আমি জোর করে তোমায় কথা বলাচ্ছি।

আমি তোমার থেকেই শিখেছি।……………মেসেজ সিন না করা। অফলাইন হয়ে যাওয়া। দেরি করা।

মেসেজ তো আমিই পাঠাচ্ছি।

তুমি কথা বলছো কার সাথে?

মানে?

তুমি কয়দিন পাঠাওনি, মাথায় আছে?

পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া কোরো না।

সত্য বলতে শিখো!

আচ্ছা।

আচ্ছা মানে????????????????? কী হল? উত্তর দাও! যা ইচ্ছা, তা-ই করে যাচ্ছ আমার সাথে!

তুমি যা বললে, সেটাই!

মানে? কী সেটাই?

তুমিই না বললে সত্য বলতে শিখো!

যত্তসব!!!!!!!!!!!!!!!!!! মেজাজ খারাপ হয়।

কেন?

না বুঝলে না বোঝাই থাক!

আমাকে রোজ কথা বলতে হবে কেন?

বলেবলে কিছুই হয় না!

আমায় মেরে ফেলতে পারবে? আমাকে মেরে ফেলো বরং! তোমার তরে কাঁদার অনেকেই রয়েছে। আমার তরে কাঁদার কেউ নেই। তুমি বরং আমায় মেরে ফেলো!

ও আচ্ছা!!! কথার যাদুতে মেরেই ফেলবে!

বড্ড ন্যাকা!

তুমি নিজেই ন্যাকা!

উঁহু, ন্যাকাঈশ্বরী!

হুম্‌!

উমমমমমম্‌! নৈশভোজন হলো?

হ্যাঁ। তোমার?

হুঁ। আজ পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা পেয়েছি।

কেন? কীভাবে?

রক্তে পা ধুয়ে গেছে। হোঁচট খেয়েছি।

কোথায়? এত রক্ত বের হয়েছে????

ক্লাস থেকে ফেরার সময়।

কোথায়? কীভাবে?

ওখানে ধারালো কী যেন ছিলো!

কোথায় সেটা?

ধুউর আমি প্রায়ই হোঁচট খাই, পিছলে পড়ি। আজকেরটা শ্যামলীর ভেতরের রাস্তায় খেয়েছি।

একাই ছিলে?

হ্যাঁ।

তারপর? ব্যান্ডেজ বাঁধোনি?

ভেতর দিয়ে হেঁটে রুমে ফিরছিলাম।……….নাহ্‌! রুমে এসে রক্ত ধুয়ে ওয়ানটাইম ব্যান্ডেজ কয়েকটা দিয়েছি। ব্যপার নাহ্‌! সেরে যাবে।

পেইনকিলার?

একটু হোক পেইন! আমার ভাল লাগে।

মানে?

আমি কেটে গেলে লবণ আর মরিচ লাগাই। যন্ত্রণা জিইয়ে রাখতে ভাল লাগে।

ওহ্‌!

হুম্‌! কী করছো?

কিছু না। গরম লাগছে।

ফুঁউউউউউউ………

ভাবছি, গোসল করবো।

এখন তো ঠাণ্ডা লাগার কথা।

তুমি কী করছ?

তোমাকে লিখছি।

এখানে খুব বেশি গরম।

হ্যাঁ, জানি। বৃষ্টিও তো প্রচুর হয়। একটু গ্রামের দিকে তো ডুবুডুবু পানি হয়।

এখন বৃষ্টি নেই।

আচ্ছা।

এখন কেবল আগুন।

তবে গোসল দিয়ে আসো। যাও। বেশি পানি ঢালতে হবে না।

যাবো। রাতের বেলায়।

আচ্ছা।

চুল ভাল করে মুছে নিও।

তুমি ঢেলে দাও হিসেব করে।

নয়তো দেখবা গরমেও ঠাণ্ডা লেগে যাবে। চলো! এই নাও তোয়ালে।

এসব বোলো না। এলোমেলো লাগে। সত্যি।

ইসসস্‌! যাও তো!

একটা পচা জিনিস দেখি। এরপর যাবো।

কেন?

আরো গরম হবো। তুমি বুঝবে না।

তোমার না এমনিই গরম লাগছে?

হুঁ।

যাও, দ্রুত গোসল দিয়ে আসো।

হি হি হি ………..এখনো হয় নাই। হলে যাবো।

অশ্লীল একটা!

ম্যাওঁ!

ঘেউ ঘেউ!

সমুদ্র সঙ্গম দেখি।

ইয়াগগগ্‌!

হুহ্!

কী কর এখন?

দেখি।

কী? আচ্ছা, সমুদ্রের পানিটা ভিতরে যাচ্ছে না?

দ্রুত মুখে মাস্ক পরে নিচ্ছে।

আরে……..নিচের দিকে তো মাস্ক নাই!

এখন পাহাড় সঙ্গম!

আচ্ছা এরা বাহিরে করে কেন?

কী বাহিরে করে?

এমনটা। সমুদ্রের তলায়। পাহাড়ে।

এসব ফ্যান্টাসি। ওরকম পরিবেশ পেলে আমিও করতাম।

………………………………………….

অনলাইনে থেকেও সিন করছ না।

ছিলাম না।

মানে?

অনলাইনে ছিলাম না।

ও আচ্ছা!

কী করছো?

শুলাম।

খেলা হবে! ব্রাজিল বনাম আর্জেন্টিনা! খিক খিক খিক!

……………………………….

শুভ সকাল। কেমন আছো?

ভাল। তুমি কেমন আছো? খেয়েছ? বাসায় কথা বলেছো? বাসায় সবাই কেমন আছেন?

খেলাম মাত্র। তুমি খেয়েছ? সবাই ভাল আছেন। তোমার বাসায় সবাই কেমন আছেন?

হ্যাঁ, খেয়েছি। মা ভাল আছে।

আচ্ছা।

………………………………

ও হ্যালো! কী কর?

হ্যাঁ, বলো। লিখি। তুমি কী কর?

সন্ধ্যায় খেয়েছ কিছু? আমি ক্লাস থেকে আসলাম একটু আগে।

আইসক্রিম, চানাচুর ভাজি খেয়েছি। এত দেরিতে এলে ক্লাস থেকে!

হেঁটে আসতে দেরি হয়।

রিক্সায় আসলে কী হয়?

এখন একটু বের হওয়া দরকার। আমার খাবার কেনা লাগবে।

আচ্ছা।

আমি আশেপাশে থাকলে কিনে এনে দিতাম। সত্যিই দিতাম।

যদি এখানেই রইতে তবে রোজ হাঁটতাম সন্ধ্যায়। একসাথে। শুনো না, ঢাকায় একেবারে কবে আসবে?

হ্যাঁ, হাঁটতাম, যদি তুমি আদৌ দেখা করতে আরকি!

এমন একটা ঘুষি দিবো নাহ্‌!

দেখা তো করনি।

যখন করবো, পুরাই চুইংগামের মতো লেগে যাবো!

ওহ্‌!

শুনো না! একটা কথা বলি।

হুঁ।

সত্যিসত্যি ভালোবাসো আমাকে?

এটা না বুঝলে আর উত্তর দেবো না।

আমার শুনতে ভাল লাগে। রোজ বলবে।

বলব না।

রোজ উত্তর দিবা। বলবা নাতো? আচ্ছা।

না।

তা আমায় বলবে কেন? অধিক ভালোবাসার মানুষ আছে যে!

বলেছি প্রতিদিনই। পরিহাসই পেয়েছি শুধু!

আর হ্যাঁ, আমাকে মিয়াঁও লিখবা নাহ্‌! ওয়ালের লেখাটা অতদূর পড়ার পর আর পড়তে পারলাম না! পরিহাস আমায় করেছো, মাত্র বুঝলাম! তোমার লেখার নায়িকা আমাকে কোরো না।

আমার লেখার সাথে তোমাকে মিলিয়ো না।

আমার অসম্ভব রকমের খারাপ লাগছে। অনেকভাবে কষ্ট পাচ্ছি। খুব বোকার মতো আবার সেটা প্রকাশও করে ফেললাম!

বাবুই, সত্যিই আমি অন্য মানুষ হয়ে যাই লেখার সময়ে।

আমি এতো বোকা কেন? হাবাগোবা আমি!

ছিঃ বাবুই, ছিঃ!

আমার খুউব করে অসহ্য লাগছে নিজেকে!

বিশ্বাস না করলে আর কী বলব!!

নাহ্‌! আমি কেন কষ্ট পাচ্ছি! নাহ্‌! একদম পাওয়া যাবে না! একদম নাহ্‌!

……………………………………….

শুভ সকাল।

বাহ্‌! সিন করেও কোনো রিপ্লাই নেই!! সরাসরি বলো কিছু!

ইচ্ছে করছে নাহ্‌!

বাহ্! আচ্ছা।

…………………………………………..

এই!

হুঁ।

কেমন আছো?

যেভাবে যেখানে যেমনটি রেখে গিয়েছিলে, ঠিক তেমনটাই আছি। তুমি কেমন আছো?

আমিও।

……………………………………………….

শুভ সকাল।

শুভ অপরাহ্ন।

তুমি তো অনেক ছেলের সাথেই ফ্লার্ট কর। আমিও জাস্ট ওরকম একটা প্রজেক্ট ছিলাম? কিংবা একটা জয় করার চ্যালেঞ্জ?

নিজের মতোন করে ভেবে নিচ্ছো! প্রজেক্ট হিসেবে নেয়ার মনমানসিকতার মানুষই হলে তোমার দফারফা করে দিতাম। আই উইশ যদি হতাম………যদি আঙুলটা তোমার দিকে তুলি? আদৌ ভালোবাসার অর্থটায় আমাকে বেঁধেছিলে কি? পুরোটাই ক্ষণিকের ভাললাগা……..হ্যাঁ, নিছকই ভাললাগা!

……………….এখন চুপ করে আছো কেনো? ঠিক এ কারণেই তোমাকে বার্তা পাঠাতে যথেষ্ট রুচির সঞ্চার করতে হয় আমার! কখনোই মেসেজ দিয়ে সাথেসাথে পাইনি! তুমি ঠিক ততটাই বেঈমান…….আলো আঁধারকে করে যতটা অপমান! ঠিক আঁধারকে ছায়া যেভাবে করে অপমান……..আমি যখন ইনবক্সে আশায়আশায় কাটাই বেলা……..তুমি তখন ব্যস্ত ভীষণ, কর মন নিয়ে খেলা। তিক্ত কিছু কথা বলোতো……..আর সরে যাই আমি! আমার বড্ড ইচ্ছে করে আমিও খেলায় নামি!

………………………………

বাহ্ আনফ্রেন্ড!! এটার জন্য এত নাটকের প্রয়োজন ছিলো বুঝি! আমাকে বললেই তো বিব্রত করতাম নাহ্‌! অবশেষে সার্থক তুমি! আসি। বিদায়।