জ্যোৎস্নামাখা আঁধারে

তোমায় আমি পেয়েছি সেদিন, ফেরার পথে।
আঁকড়ে ধরে জামার আস্তিনটা,
তোমার দিকে চেয়ে ছিলাম।
আমি বেড়িয়েছিলাম সেদিন
তোমার রেলপথটি ধরে,
আমার হাতটা দুটি বাহুতে জড়িয়ে
আমায় বেঁধেছিলে তুমি
কোন সে সুতোয় এই অকারণে?


ভেতর ঘরে, তানপুরাতে সুর তুলেছিলে,
গান ধরেছিলে, ভাসিয়ে ভেলা চোখের জলে!
ছুড়ে দাওনি কোনও প্রশ্ন, ধরোনি বায়না একটুও ওবেলা,
জানতেও চাওনি তখন, ভালোবাসি কি না,
নিশ্চুপ রাত্রির চুপ কিছু কথা,
আমায় নিয়ে গেঁথেছিলে শুধুই কথার মালা!


ঘন নিঃশ্বাস ধ্বনিত হয়নি ক্ষীণ শব্দেও,
একরাশ ব্যস্ততা দিয়েছিলে মুড়ে
গানে, গল্পে আর কাব্যে!
আমার ঘরে জ্বেলেছিলে বাতি,
করেছে খেলা শান্ত অনুভূতি!
ঠোঁটের পরে জমানো কথা,
মেঘের গায়ে নিয়েছিলে টেনে কাজলরেখা,
রাতের আকাশে জোনাকপোকা,
বসেছিল আসর আহা সে কী রঙ্গমেলার!


আমি হেঁটেছি অনেকটা দূর, মহাকাল, সমুদ্র,
উত্তাল ঢেউ, ভাঙা কম্পাস, বিধ্বস্ত পাল,
তুমিই সেই, যে তখন ধরেছিল হাল,
তপ্ত বুকে দিয়েছিল ঢেলে ভরা-প্রেমসুধা,
হারতে তখনও দাওনি আমায়,
বরং শিখিয়েছিলে জীবন নামের এই তাসের খেলা!


আমি খুঁজেছি সেদিন, ফেরার পথে,
আঁকড়ে ধরে জামার আস্তিনটা,
তোমার দিকে ঠায় চেয়ে ছিলাম।
আমি হারিয়েছিলাম সেদিন,
তোমার ঘন সবুজ বনে,
আমার মুখটা সেদিনও লুকিয়ে বুকে,
আমায় বেঁধেছিলে তুমি
কোন সে সুতোয় এই অকারণে?
আমি ঠিক চিনেছি তোমায়
সেদিনের সেই জ্যোৎস্নামাখা ঘোর আঁধারে।