ঝরাপাতার অরণ্য থেকে

 একদিন এই ছন্দহীন রাত্রি ফেলে 
চলে যাবো তোমার কাছে।
কাদামাটি ছুঁইয়ে বুকে
ফুটবে ফুল থোকায়থোকায়।
 
ও আসবে হঠাৎ,
এই সে পথে এক অবেলায়
আলোর মতন দীপের গায়ে জ্বলবে এসে,
পড়বে পায়ের রাঙাচিহ্ন।
 
আহা মেয়ে! তোর চে’ বরং মাটিই ভাল!
মাটি হবো, আমি মাটিই হবো!
 
চেনা জনই
অচেনা হলে
বদলায় সব...
একটা সময়ে
কত কৌতূহল
কতকত কথা
রয়েছিল সময় অফুরান কত...
 
পাহাড়ের ঐ দূর অজানায়
জমে আছে সুখ, যতটা ভাবি।
জীবন তবে কেন অকারণ
কাঁটাভরা পথে অবিরাম ছুটে
রক্তাক্ত দেহে ক্লান্ত মনে
বাড়ায় কেবল অসীম দুখই?
 
পাথরচাপা
বোকা ঘাসমন
শেষ নিঃশ্বাসেও
তবু যেন বলে
এ-ই সুখ....এ তো সুখই!
 
শতাব্দী পরে
কোনো এক শীতে
ঠাণ্ডায় জমে গলা বসে গেলে
জানিয়ো আমায়।
ফোন দেবো।
কথা বোলো না--
অন্তত এক উছিলা থাকবে তো তোমার!
আমিও দেখো, নেবো খুব ধরে,
এ অজুহাত নয়, জ্যান্ত সত্য!
 
তোমার ইচ্ছে হয় না,
আর আমার ইচ্ছেরা
পিছু ছাড়ে না।
না তুমি বুঝ,
না আমি!
 
এমনই তোহয়!
কিংবা হয়তো হতে হয় এমনই!
 
শেষ কথার
এক বছর....
শেষ দেখার
দুই বছর....
তবু একে প্রেম বল?
 
সময়ের ব্যাপ্তি জানান দেয়,
সম্পর্কের দূরত্ব কতটা।
আর অনুভূতিহীনতার গভীরতা কত অতল!
 
শুনছ...
কবে তোমার সময় হবে?
আমি মরলে পরে?
এসো না সেদিন লাশের কাছে,
দিয়ো নাগো ফুল।
লাশের কাছে--
ফুল কি মাটি,
দুইই তো সমান!
 
কে এই তুমি?
‘তুমি’বলে কেউ নেই...
কিচ্ছুটি নেই...
 
‘তুমি’ সুতোয় বাধা গ্যাসের বেলুন--
হাত ফসকে বেরিয়ে গিয়ে
শুন্য আকাশে হারিয়েযাওয়া অন্য কেউ।
 
সুতো নও তুমি, বেলুনও তো নও,
ভেতরে থাকা গ্যাসটুকু তুমি,
যা স্পর্শের বাইরে থেকেই,
অস্পর্শে চলে যায়!
 
মনে পড়ছে খুব!
ইচ্ছেঅনিচ্ছের দ্বিধায় দুলে,
হয়তোবা স্রেফ কার্টেসির সম্মানে
বইগুলো দিলে!
সেই মোবাইলেই চোখ গুঁজে ঠাঁই রইলে পড়ে!
কত যূথী’র সাথেই তো চ্যাটিংয়ে আছো
আগের মতোই!
ফেসবুক স্ট্যাটাস,
হাসির প্রকাশ,
রয়েছে সবই আগের মতোই।
 
কয়েক চামচ খাবার খাইয়ে দিয়ে
খুব করে জানিয়ে দিলে,
ওই খাইয়ে-দেয়াটা
কী সাংঘাতিক! একেবারে দুনিয়া উল্টে যাওয়ার মতোই ব্যাপার!
 
নিজেই নিজের কাজকে এতো বড়ো কেনো ভাবো,
যখন পাশেথাকা মানুষটা জানে সবটাই, বুঝেও তো নেয়!
আর জানে বলেই, শুধু চামচের খাবারটুকই না,
যেন হাতসহই গোটা মানুষটাকেই খেয়ে নিতে ইচ্ছে করছিল তার!
 
যতটা সময় আমায় দিলে, তার চাইতে বেশি সময় দিলে রেস্টরুমকে,
বিলটা দিয়েছি তাই, “বিল কেন দিলে?” বলে
সোজা বইয়ের দোকানে!
দোকানির সাথে মাতলে অহেতুক আলাপে,
এর সিকিভাগও পাইনি আমি!
ফোন এলো! কাজের দোহাই! চলে গেলে!
 
অতোসব কিছুর মধ্যে আমি যে কোথায়, বলতে পারো?
কিছু দিলে মন থেকে দিয়ো, মানিব্যাগ থেকে নয়!
 
তোমার জানায়, তোমার বোধে
যদি আমি এমন হতাম, বাহ্যিকভাবে বিশেষ কিছু--
পরিচয়ে কিংবা গড়নে, দেখায় কিংবা ধরনে,
তবু কি তুমি করতে অমন?
মনে তো হয় না!
 
শোনো ছেলে, যতটা ছোট মানুষকে ভাবো,
ততটা ছোট, মানুষই তো নয়! কখনোই কোনো!
 
অনেক কিছু ফেলেছ জেনে,
যদি একথা মনে শুধুই আসে,
তবে জেনে রেখো, মনের সে জানা মিথ্যে খুবই!
 
ভালোবাসাটা, আমার কাছে,
উপরে সবার,
সব নিচে তার!
তাইতো ভালোবাসার দায়ে নিলাজ হতে আর লজ্জা পাই না!
 
তোমার চোখে চোখ রাখতে ইচ্ছে তো হয়!
কিন্তু উপায় কী, বলো!
তোমার দুচোখ দেখি ফোনে ব্যস্ত, সারাক্ষণই!
সেলফোনটা কেড়ে নিয়ে,
ওই হাতদুটো সারাটাক্ষণই যদি ধরে রাখি,
বকা দেবে খুব?
 
ধরো, ফেললামই ধরে!
বকছ না তুমি, তবে বিরক্ত খুবই!
যা তুমি চাইছো না আমি গ্রহণ করি,
আমার যে ভাললাগা তোমার লাগছে না ভাল,
তা নিয়েই দেখি বাঁচতে আরাম! কোনো মানে হয়?
 
প্রথম দেখার...
দুই বছর!
ইচ্ছে করে,
জাপটে ধরে মেরে ফেলি চেপে!
ধরেবেঁধে বস্তায় পুরে নিয়ে আসি বাড়ি!
এইসব শুধুই ভাবতে পারি, করতে পারি না!
ভদ্রতা বড়োই অভদ্র পোশাক!
 
যূথী’দের তো তবু
নাম থাকে কোনো,
আর কেউ তো কেবলই
সংখ্যায় বাঁচে!
বাঁচে কি আসলে? নাকি ভাসেই কেবল?
০ ৯ ৮ ১ ২ ৭-দের
কেবলই নির্দিষ্ট বিন্যাস...জানি।
ওরা এলোমেলো হলে
হারিয়েই যায়; ওদের হারিয়ে যেতে হয়।
 
তোমার নভেম্বরের আনন্দে
একদিন,
আমিও শামিল হবো!
কোনো এক নভেম্বরেই
আমি, ঠিক হারাবো তোমা থেকে!
মুখে বল না, তবু তো বুঝি,
আমার এই একান্ত উপস্থিতি
তোমায় জ্বালায় কত!
 
তাই আমার শূন্যতায়
তোমায় সুখ দেবো পূর্ণতায়।
এরপর, চলে যাবো!
 
ভালই আছি,
তবু অনেকভাবে খারাপও আছি।
আবার কিছু ভালথাকা এমনও দেখি,
যেজন্য ভাল আছি,
ঠিক সেজন্যই খারাপ আছি।
আবার কিছু ভালথাকা এরকমও হয়,
খুব করে খারাপ আছি বলে,
ভালথাকাটা বুঝতেই পারি না!
কত ভালথাকা হারিয়ে ভাসে!
কত খারাপথাকা হারিয়ে আসে!
 
উঁচু ঝর্ণার
ঝরেপড়া জল
পাথরের বাধা
পারে না আটকাতে।
ঠিক! তবুও
জলের সাথে পাথরের আছে প্রাচীন দ্বন্দ্ব।
ঝরেপড়া জলের শব্দ যত,
অসময়েই বদলায় ঠিকই!
 
অ্যাইইই....শুন না!
এই যে তোমার ‘তুমি’ এতটা,
সেখান থেকে একটু ‘তুমি,
আমার হতে পারো না কেন?
 
কে এই ‘তুমি’?
‘তুমি’ বলে কেউ নেই.....নেই কিছুই....
কেউ কখনো হয় না কারুর,
দিনের শেষে সবাই একা,
শুধুই নিজের।
একলা ঘরে নিজের সাথেই একলা শোয়া--
জীবন এটাই!
 
এ জীবনে চলার পথে,
মানুষ জানে কতটুকই-বা,
কোথায় কোন অচেনা কারুর মনের কোণে
কত গভীর রাগ জমে থাকে, কিংবা অভিমান,
কত কষ্টের কারণ হয়ে
পথ মাড়িয়ে, পথ ফুরিয়ে মানুষ বাঁচে!
 
হায়, মানুষ যাকে যত ভালোবাসে,
তাকে ঘিরে কষ্টটাও তত বেশি থাকে!
 
বোকা মন,
যার জন্যে তোমার
শুকায় নাকো
চোখের এ জল,
তোমার জন্য
তার চোখে
জমে না কখনো
এক ফোঁটা জল!
সে বাঁচে সুখের দলে,
তুমি বাঁচো জীবনের ছলে।
 
অথচ,
মরুভূমির বোঝার কথা ছিল
ঝর্ণার ক্ষরণ!
আহহ্‌ স্থির হয়ে বসো!
ভেবো না, অত বিহ্বল আমি,
নিজের মতোই নিচ্ছি ভেবে আকাশপাতাল, সমস্তটা!
 
জেনোই জেনো,
আমি ঠিকই জানি,
আমি কেউ নই।
আমি বুঝি,
কী এক একাকীত্বে
অনুভূতি ভুলে বেঁচে আছি আমি!
আর জানি, আমি ভালোবাসি!
 
শরীর রাখে না হিসেব
কয় কদম হেঁটেছে সে পথ,
অদৃষ্টের কাছে যায় শুধু হেরে
জীবনের কত অলেখা শপথ!