তবু বেঁচে থাক প্রবোধটুকু

বলবে তো ঠিক মনে করে?
চাইবে নিতে ইচ্ছে হলেই?
যদি কখনও দরকার পড়ে, নেবে তো চেয়ে সময়মতো যতটা লাগে…
কুণ্ঠা কি-বা দ্বিধা না রেখে? সত্যি নেবে?
যদি কখনও আবার দুঃখ পাও,
একটাও কিছু না মিলে যদি কোনও দিনও, সেদিন
দেবে তো তোমায় সামলে নেবার একটা সুযোগ?
জানাবে আমায় তোমার কষ্ট যা আছে? বলবে তোমার কী প্রয়োজন?
রাখবে আস্থা আমার উপর?


নাহয় এবার একটা দিয়োই সুযোগ,
একটা ছুতো দিয়েই দিয়ো জড়িয়ে তোমায় আঁকড়ে বাঁচার!
একটু নাহয় দিলেই সুযোগ যত্নে রাখার…
ভালোবাসার সবটা ঢেলে মায়ায় বাঁধার!
এই সুযোগে দিয়োই নাহয় দারুণ সুযোগ তোমায় চেনার, বোঝার, জানার!
এই আমায় চিনেছ যে খুব…তাই না…তুমি?
আমি যে কেমন আছি, সত্যি করে বলো তো দেখি, কী জানো তার?
নিজেই বরং দিচ্ছ আঘাত আষ্টেপৃষ্ঠে…
কতটা যে সে, জানেন আমার বিধাতাই শুধু!


দেবে তো, বলো?
বেদনাক্ষণে খুব জড়িয়ে কষ্ট ঠেলে আগলে রাখার সুযোগ দেবে?
দেবে একদিন ভীষণ করে বকে আমায়?
যদি ভুল কিছু করি, কোনও ভুলোমনে যদি বলেই ফেলি ভুল কথা কিছু,
সে-দিন আবার বলো না যেন, আমার যা-কিছু আছে, সবটাই তার ভালোবাসা তো!
ভুল তো ভুলই, ভুলের আবার জাতটা কীসের?
দেবে তো আমায় খুব করে বকে কাঁদিয়ে একাকার করে?
তারপর ফের নিয়ে নেবে বলো, কান্না থামিয়ে আবারও ওই বুকের মাঝে?


বোঝালে তো খুব,
তোমার মধ্য থেকে ভালোবাসাটুকু
করতে আদায় নখ আঁচড়েই করতে হবে!
নইলে কি আর পাব তোমাকে?
কিছু না করে অতটা বলো পেয়েছে কে কবে?
সেদিন আমায় বেড়াল যে তুমি কয়েছ বড়,
আজ এসো বাসায় সন্ধে হলে,
সারাদিনের ক্লান্তি ফেলে,
কলার থেকে টাইটা খুলে,
বাঁধব এঁটে হাত দুটো খুব শক্ত করে,
সারাসন্ধে জড়িয়ে ধরে বলব তবে…
এই যে মশাই, গতকালকের ভালোবাসাটুক দেবেন কবে?
একটু দিয়ে আধটু সেধে,
এবেলা দিই, ওবেলা দেবো…এমনি করে দিব্যি দিয়ে বেশ তো আছেন!
রোজই দেখি কত বাহানায় এই ঘরের সুখ যা আছে,
আরেক ঘরে করে দিচ্ছেন দিব্যি পাচার!
ভেবেছেন, আমি জানিই তো না কিছুটাও এই পর-সমাচার?


জমিয়ে-রাখা ভালোবাসাটুকু একটু নিয়ে, আধটু দিয়ে,
আমায় নিঃস্ব করে পথে বসিয়ে,
ভেবেছেন বুঝি ফতুর করে বনেই যাবেন একলা রাজা?
শুনুন বলি, খুব বীর যে পুরুষ, শাহাজাদা…
নেমেছেন তো গলাজলেই, তবে মাথা কেন আর ভেজাবেনই না?
এতই সোজা? সে আমি হতে দিলে তো!
আর ওই যে ওসব মিথ্যেফিকে ভালোবাসা যা,
ওসব নিয়ে দিয়ে দিন তো বসের পাতে…
পাছে কখন আবার চাকরি পালায়!


আমি এই একটা হাতে আকাশ রাখি,
অন্য হাতে মাটি,
আমি যদি বলি, ‘ভালোবাসি’,
সবটাই তার খাঁটি।
পেয়েছটা কী?
এখনও তো চেনোনি আমায়,
জানোই তো না আমি যে কী!
যা-কিছু আমার মনে ধরে যায়,
সে যা-ই হোক না, যদি হয় প্রয়োজন,
সে আমি মশাই নিয়েই ছাড়ি!
অতশত আবার শুধায় কে কারে!


ভালোবাসার পাওনাগুলো একটুও যদি
এদিক কর, ওদিক সরাও,
তবে রান্নাঘরের বাসন যত, ফেলব ছুড়ে,
হাতের কাছে যা-কিছু পাই, সবটা সুদ্ধ মারব দূরে!
দেখি, খুব শিখেছ ফাঁকিবাজি,
এঁটেছ তো খুব ঠকিয়ে দেবার যত কারসাজি!
যখনই তুমি পূর্ণতা দাও, তখনই শুধু হই পূর্ণ,
এখন আমার মাঝে এক তুমিই আছ, সেখানে এই আমিই-বা কই?


আবার যখন আনবে ঢেউ
আমারই মতো শূন্য কেউ,
পারবে কি সে আমি হতে এমনি করে?
বসবে কি আর আমার মতন ভালোবাসার এমন আসন পেতে?
ভাবছ বুঝি, কী সুখ আহা!
বলি, দিচ্ছি দাঁড়াও…আসতে অত!
রাখছি বলে, দেবো ঝেঁটিয়ে
কেউ আসে যদি আমার এ ঘরে ঘর কুড়োতে!