না-পারার কয়েকটি আর্তনাদ

  
 শুরু থেকে ঠিক এই মুহূর্ত পর্যন্ত…
 তোমাকে আমি যা ভাবি কিংবা ভাবি না,
 তোমাকে নিয়ে যা ভাবি কিংবা ভাবি না,
 মানে, তোমার প্রতি আমার অনুভূতি...
 ঠিক একই রকম।
 এর কোনও বিবর্তন নেই, তাই
 আমার আবেগপ্রকাশের ভাষা কখনও খুব একটা পালটায় না।
  
 তোমাকে ভালোবেসে বেসে আমি রোজ নিজেকে ধন্য করি,
 তোমাকে ভালোবাসতে পারার গর্বে
 কোনও উঁচু মিনার জয় করার অনুভূতি হয় আমার।
  
 নিজেকে এখন আর নিজের কাছে বেঁধে রাখতে ইচ্ছে করে না
 তোমার সাথে বেঁচেথাকার স্বপ্ন দেখি বলে।
  
 আমি প্রায়ই রক্তাক্ত হয়ে থাকি ভেতরে ও বাইরে।
 এর মধ্যেও, কেমন করে জানি তোমার সৃষ্টিকে ছুঁয়ে দিয়েছি।
 সাথে ছুঁয়েছি তোমার আত্মাটাকেও।
  
 যখন হৃদয় থেকে লেখা তোমার কোনও কবিতা
 আমি হৃদয় দিয়ে পড়ি, তখন দেখি,
 ধীরে ধীরে আমার সমস্ত ক্ষতে ভালোবাসার আবরণ ছড়িয়ে যাচ্ছে!
  
 তোমাকে ছাড়া এখন বড্ড ছন্নছাড়া নিঃসঙ্গ লাগে নিজেকে।
 একটিবার পাশে এসে বসো। নির্জনতা বুঝে
 আমার কিছু দুঃখ দেবার আছে তোমাকে।
  
 তোমার ছায়ার সঙ্গ পাবার জন্য বসে আছি,
 অনেক আগ্রহ নিয়ে।
 কিছু না নিয়ে খালিহৃদয়ে ঘরে যাব না আজ,
 এবার আমি তোমাকে পেতে চাই খুব করে।
  
 কোনও সুখ দিতে যদি না-ও পারো,
 দুঃখ দিতে আপত্তি কোরো না, মিনতি রইল।
 তুমি মনে করে এসো কিন্তু! আমি অপেক্ষায় আছি।
  
 জানো, কোনও একদিন তুমি আমাকে ভীষণ ভালোবাসবে,
 এই প্রত্যাশায় বাঁচতে ইচ্ছে করছে।
  
 তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে, জাদু। খুউব!
 ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছে করছে তোমার চুল, তোমার গাল, তোমার ঠোঁট…
 তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করছে তোমার অসহ্য সুন্দর দুটি চোখের দিকে।
 তোমার বুকের ঘ্রাণ নিতে ইচ্ছে করছে।
 একটু তোমার কাছে আসি? কাছে টানবে? ফিরিয়ে দেবে না তো?
  
 …একটু স্পর্শ দাও, একটু আদর।
 তারপর, শান্ত স্নিগ্ধ জলে স্নান করিয়ে দাও…
 আমি তোমার ওই মায়াবী চোখদুটির ঘুম হতে চাই।
  
 তুমি আমার সমস্ত আনন্দের, সমস্ত বিষাদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়।
 তুমি কাছে না এলে আমার ভেবে-রাখা সমস্ত ভাবনা,
 যত্নে-সাজানো প্রেমগল্পগুলি অগোছালো হয়ে যায়।
 ক্রমেই, জলপাই-রঙের একধরনের অমোঘ শূন্যতা নেমে আসে।
  
 তুমি আমার ব্যক্তিগত অন্ধকার দেখেছ কিছুটা,
 আমার যে নিজস্ব একটা সমাজবিচ্ছিন্ন নদীর কান্না আছে, তার নামও জেনেছ।
  
 আবার তোমার‌ও একটি শর্তবন্দি জীবন, যেখানে ভালোবাসার নামে অনেকের প্রবেশ!
  
 তাই, আমি চাইলেও সব ছেড়েছুড়ে একেবারের জন্য
 তোমার বুকে মিশে যেতে পারি না, হয়ে উঠতে পারি না একান্ত তোমার,
 যেমন পারো না তুমি নিজেও!
  
 আমি খুব চাইলেও প্রকাশ্য দিবালোকে
 তোমার কপালে একটা চুমুর চিহ্ন এঁকে দিতে পারি না!
  
 এই যে আমার না-পারার কয়েকটি আর্তনাদ, এটা তুমি বুঝবে না কখনও!
 তাই, তোমার প্রতি আকাঙ্ক্ষা বেড়ে গেলে আমার চোখ ফেটে কান্না আসে!