নিজেকে ভালোবাসতে গিয়ে

 
তোমাকে ভালোবেসে ফেলার পর বুঝলাম,
তোমার একজনও ভালোবাসার মানুষের দরকার নেই।
তোমার দরকার শুধু কিছু কাল্পনিক চরিত্রের, আর দরকার কবিতালেখা।


আমি এরকম চেয়ে চেয়ে তোমার কাছ থেকে ভালোবাসা আর নেবো না,
আমি একদিন একদম নেই হয়ে যাব। এর বাইরে করার কিছু দেখছি না।


আমার মন খারাপ হলে লিখে রাখব শুধুই ডায়রিতে।
তোমার কাছে আসব না, তোমাকে কিছু বলব না।
তোমার একটাসেকেন্ডও নষ্ট করব না আর।


আমার কপালে অনেক দুঃখ আছে, আমি বুঝতে পারছি।
আমি যত বেশি তুমিকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছি,
তত বেশি কষ্ট অপেক্ষমাণ আমার জন্য…


এখানে মজার ব্যাপার হচ্ছে, তুমি কিন্তু কিছুই করবে না।
না কোনও কষ্ট দেবে, না কোনও দুঃখ।
কোনও দুর্ব্যবহার কিংবা রূঢ় আচরণ, করবে না তা-ও।
আমি নিজে নিজেই যন্ত্রণা কুড়োবো, নিজের মতো করে।


ঘড়ির কাঁটা একটু পর তিন ছোঁবে। আমি এখনও ঘুমোচ্ছি না।
জেগে থাকার কোনও কারণ নেই, তবুও জেগে আছি‌।
এই জেগেথাকার পুরোটা সময় তুমি ছাড়া আর কিছুই ভাবছি না।‌
আমি জানি না কী হচ্ছে, তবে তোমাকে ভালোবাসি, এটা জানি।


এমন নয় যে তুমি আমাকে থাকতে বলছ কিংবা আটকে রাখছ।
তবু আমার তোমাকে ছেড়ে যেতে মন চাইছে না। আমি কী করব‌?


‘ঠিক আছে, আর জ্বালাব না তোমাকে। তুমি লিখো, আমি যাচ্ছি।’
…এই কথাটা গত একঘণ্টায় তোমার নাম্বারে ছয়বার পাঠানো হয়ে গেছে।


এরপর কী লিখে পাঠাতে হয়, আমি জানি না। শুধু এইটুক বুঝি,
যে‌ কবি কবিতা লেখার ছলে প্রেমিকার ঠোঁটে চুমু খেতে ভুলে যায়,
সেই কবিতে কেবল মুগ্ধতাই রয়, ভালোবাসা নয়।
হ্যাঁ, কবিতা আমার এখনও চাই, তবে কবিকে আর নয়।


ভাবছি, আমি অন্য কারও সাথে প্রেম করব,
তুমি আজ থেকে বাদ কিংবা সেকেন্ডারি।


আমার শরীরের রক্ষাকবচ তোমার আদর, তোমার প্রেম, তোমার ভালোবাসা।
অনাদর যা-কিছু, তা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই প্রত্যাখ্যান করে এ শরীর,
এটা তুমি আর কতদিনে বুঝবে?


আমার সমস্ত ভাবনা ভিড় জমাচ্ছে তোমার দিকে,
আমি থেমে আছি তোমার খুব কাছে,
অথচ তোমার ভাবনারা ভিড় করছে শুধুই কবিতায়!


আমি তৃষ্ণার্ত চোখে তাকিয়ে আছি তোমার চোখে,
আর তোমার সমস্ত মনোযোগ ধবধবে সাদা একটুকরো কাগজের বুকে!
কবিরা বুঝি ঠিক তোমার মতো হয়? সৃষ্টির নেশায় ভালোবাসতেও ভুলে যায় এমন!


তবে আমি কাকে ভালোবাসব‌? কবিকে, না কি তাঁর সৃষ্টিকে?
যদি আমায় বলো, এই দুইকে ছেড়ে ভালোবাসো শুধু নিজের নিজেকে, তবে বলব,
নিজেকে ভালোবাসতে গিয়েই আমি বারবার কেবল কবির কাছেই এসেছি ফিরে!


আমার আর কোনও কিছুই নেই আমার নিজের,
ঘুমের একান্ত সময়টুকুও তোমার হয়ে গেছে!