নিভৃত-আলাপের চিলেকোঠায়

 
আজ যদি আমি তোমাকে কিছু লিখি, কঠিন করে জবাব দেবে না তো?
আচ্ছা, আজকে থাক। তোমার সাথে কোনও একদিন দেখা হবে,
সেইদিনটার ‘অপেক্ষা’ হিসেবে এটা তোমার কাছে জমা পড়ে থাকল।


তুমি কেন সহজ করে জবাব দাও না, অনিমেষ?
বোকাদের সাথে তো সহজ করে কথা বলতে হয়।


তোমাকে বিরক্ত করতে আমার ভালো লাগে।
তোমার দিকে আমার মন টানে, তাই হয়তো!
কত মানুষ একটু বিরক্ত হবার আশায় বসে থাকে,
ওদের দিকে আমি ফিরেও তাকাই না। আমার ইচ্ছে করে না।


তোমাকে আমি যা-ই লিখি না কেন,
তোমার কাছ থেকে প্রায়ই কেবল
‘হ্যাঁ’ পাই, কিংবা ‘হুঁ’। তুমি কি সিদ্ধান্ত নিয়েছ,
এই ক্ষুদ্র বৃত্তের বাইরে তুমি কখনও যাবেই না?
বাংলা-বর্ণমালার এত অসীম শক্তিকে উপেক্ষা করে
কীভাবে বেঁচে আছ, অনিমেষ?


অনেক দিন পর আজ বাতিঘর-এ গিয়েছিলাম।
মনে হচ্ছিল, আশেপাশে তোমার ঘ্রাণ পাচ্ছি, তুমি কোথাও আছ।
দুইকাপ কফি খেয়েছি দীর্ঘসময় নিয়ে, দ্বিতীয় কাপটা তোমার।


আচ্ছা, এই যে আমি তোমাকে তুমি বলছি,
তুমি এটাকে স্বাভাবিকভাবে নিচ্ছ তো, অনিমেষ?


একটা আর্ট-কনটেস্টের রেজাল্ট হয়েছে একটু আগে।
দুই ক্যাটাগরিতে আমার দুইটা পুরস্কার আছে।
ভাবলাম, চিৎকার করে তোমার সাথে আনন্দ শেয়ার করা যায়।
তা আর হলো কোথায়, অনিমেষ! আমি খুব ছোট্ট কিছুতে
অনেক খুশি হয়ে উঠি। এসব পাগলামি তার একটু নমুনা।


আমি কেন আমার সব সুখ তোমার সাথে
ভাগ করে নিতে পারি না? তোমার জন্য অপেক্ষা করতে করতে
আমি ভীষণ অস্থির হয়ে উঠি, অনিমেষ।‌


আমি তোমাকে পড়ি। তোমার হাসি পড়ি, কান্না পড়ি, চোখ পড়ি…
তোমাকে পড়তে পড়তে তোমার জন্যে আমার মায়া ক্রমশ বাড়তেই থাকে…
তোমাকে পড়তে গিয়ে মনে হয়, তোমার ভাবনাগুলি আমারই ছিল,
তুমি কেমন করে জানি, ওসব আমার হয়ে ভেবে ফেলো!


অনিমেষ, তোমার উত্তরগুলি আরও একটু বড়ো কোরো,
আমি তোমাকে আরও একটু বেশি পড়তে চাইছি।


আচ্ছা, যদি আমি আর কখনওই তোমাকে কিছু না লিখি,
সেদিন তোমার মন খারাপ হবে না, অনিমেষ?
আমাকে খুঁজবে না? আমার কথা মনে আসবে না?
মনে হবে না, কী যেন নেই! কাকে যেন সামনে দেখছি না!