পুরুষশাসিত সমাজ

রক্তজবার লাল দেখে ভয় পেয়েছ?
সোনার কন্যার আলতা-পায়ের লালটা দেখে ভয় পেয়েছ?


তখন আমার দেহে কালশিটে দেখোনি…রক্ত জমাট হয়েছিল যখন?
কই, সেসময় তো তোমরা ভয় পাওনি!
ভয় পেয়ে তোমাদের পশুত্ব তখন দাওনি তো বলি!
তবে আজ এটুকুতেই এত ভয় পেলে কেন?


মেয়ে ঘর ছাড়লেই আপত্তি খুব, তাই না, বলো?
আর তোমরা যখন ভালোবাসার লোভ দেখিয়ে
সহজ সরল বোকা মেয়েটিকে ঘর ছাড়তেই বাধ্য করো, তখন…
তখন থাকে কই তোমাদের ওতে বাছবিচারটা?
ঘরের মেয়ে ঘর ছাড়লেই খুব দোষ হয়ে যায়?
আর তোমাদের যে নিত্যবসবাস শুধু প্রতারণায়, তার বেলাতে?
তখন বুঝি সবই আধুনিকতা? না কি অন্য কিছু?


নিষ্পাপ কোনও মেয়েকে নিয়ে খুনোখুনি করে লাল করো হাত,
আবার সে হাত তোলো স্রষ্টার দ্বারে!
সত্যিই তোমাদের লজ্জা করে না, তাই না?
কোনও একলা ক্ষণে, মনে অনুশোচনাটুকু আসে কি কখনও?


এ কোন পাপের খেলায় মেতেছ তোমরা?
---এমন কোনও প্রশ্ন এলেই তোমরা আবার জড়িয়ে পড়ো নারী-বিবাদে!
বাহ্‌ একি সমাজ!
তোমরা এর নামটা যেন কী দিয়েছ? ওহ্‌, এ সমাজ পুরুষশাসিত!


এসব যখনই তুলে ধরবে, ঠিক তখনই
তোমাদের চোখে ঘরের বউটা বড্ড বেপরোয়া হবে!
ওরকমই তো?


তোমাদের চিরচেনা শান্ত মেয়েটির ঔদ্ধত্য দেখে
তোমরা নিজেরাই তখন ভীষণ লজ্জা পাবে!
সাত চড়েও রা কাটে না যে মেয়েটি,
তাকে হারাবে যখন, দেখবে তখন, মনে হাহাকারটা জাগবে ঠিকই!


জানো তো, তখন কী হবে?
ঠিক তখনই, তোমাদের সর্বদ্বারে সেই সর্বগ্রাহ্য কন্যাটিকেই
বীরদর্পেই পরিত্যক্তা পরিত্যাজ্যা ঘোষণা করবে!
ঠিক তখনই, দগদগে এক ঘায়ের মতোই বেরিয়ে আসবে
তোমাদের মনুষ্যত্বের ছদ্মবেশে মেয়েদের বলি দেবার কসাইবৃত্তি!
তোমরা বানিয়েছ যে সমাজ, যার নাম দিয়েছ পুরুষশাসিত,
তার আসল চেহারাটা ঠিক এমনই!