প্রেমিকার বীথিতে

 
প্রিয় সৌভিক, আমি খুব ভালো করেই জানি,
আমাকে ভালোবাসার জন্য আমাকেই তোমার দরকার নেই।
তুমি তো একা একাই কাকে যেন ভালোবাসো,...
চুপিচুপি গাল ছুঁয়ে, আদর দিয়ে তার মন ভরিয়ে দাও,
চুল ধরে আলতো করে টানও মারো…। আরও কত কী!


দেখি আর ভাবি, অন্ধ কেন হই না...এখনও?
আচ্ছা সৌভিক, তুমি ওকে চেনো? সত্যিই চেনো?
মনে হয় না তো! তুমি আসলে কাউকেই চেনো না, বোকা ছেলে!


অথচ দেখো, তার কথা ভাবতে ভাবতে মনটাকে যে অমন ব্যস্ত করে রাখো,
আদুরে বেড়ালটার মতো ঠিকই তো আমার কাছেই ফিরে আসো মুখ লুকোতে।
তবুও তুমি মুখ ফুটে কিচ্ছু বলবে না…তুমি এমনই পাজি!
এমন একটা ভাব…যেন আমাকে তোমার লাগেই না! কোথাকার কে আমি…!


সৌভিক, এই যে সারাক্ষণই এত মৃত্যু মৃত্যু করো, বলো তো,
তুমি চলে গেলে কে অমন করে চুপিচুপি চুমু খাবে এ চোখে?
কে হুটহাট আমার চুল ধরে টান দিয়ে গম্ভীর মুখে বসে থাকবে?


শোনো ছেলে, আমাকে একা রেখে কোত্থাও যেয়ো না যেন!
যেতে হয় তো আমাকেও সাথে নিয়ে যেয়ো, কেমন?


আমার খুব ইচ্ছে করে, তোমার বুকের মধ্যে গুটিসুটি মেরে চুপ করে শুয়ে থাকি।
জানো, একদমই সহ্য হয় না…তোমার কষ্ট হলে…আমার একটুও ভালো লাগে না তখন!


আমি তোমাকে হাসতে দেখতে চাই,
হাসিখুশি তোমার তুমিটাকে দেখতে চাই।
ফিরে এসো, সৌভিক! ফিরে এসো তোমার নিজের মাঝেই! আমি অপেক্ষা করে আছি তো!


চলো না সৌভিক, আমরা হাত ধরে হেঁটে আসি
ওই দূরের সোনালি স্বপ্নদিঘির পাড়টা থেকে?
ওঠো তো, আর আঁকতে হবে না। ওঠো না, ওঠো…!




আমি তোমার সব ক্যানভাসে জল ঢেলে দেবো কিন্তু। ওঠো, বলছি।
এখনও আঁকছ? তোমার প্রিয় টিশার্টে…দাঁড়াও, একটা ফুটো করে দিই!
দেখি, ক্ষেপেটা কেমন যাও! চেঁচাওটা কেমন করে!




খুব বকবে বুঝি? রেগে গিয়ে মারবেও নাকি?
এহহ্‌! হাতের কাছে আসো তো একবার…!
যদি বকো তো দেখবে, তোমার সবকটা শার্টই
বোতামহীন হয়ে বসে আছে একসেকেন্ডেই!
বলি, তখন অফিসে যাবেটা কেমন করে?




আমি কিচ্ছু জানি না, ওঠো! চুল আঁচড়ে নাও।
আর একটু পারফিউম মেখো। ওই পচাটা না যেন…ওই যে…ওটা,
যেটা মাখলে আমার নাক জ্বলে যায়!...আমার পছন্দেরটা মেখো, কেমন?
যেন তুমি এদিক ওদিক নড়লেই ভুরভুর করে সুগন্ধি বাতাস এসে
ভরিয়ে দিয়ে যায় আমার এই অশান্ত মনটাকে…।




মুখটা কেউ অমন করে রাখে, সৌভিক? একটু হাসো না!