বন্ধনরজ্জুটি কাঁপে জ্যোৎস্নায়

 
সেদিন। দুপুরবেলায়। হ্যান্ডশেক করার ছলে হাত ধরেছিলে।
বলেছিলে, ইস্, কী তুলোর মতন নরম!...মনে পড়ে?
সেদিন মন ধরোনি। ধরলে না আজও!
তো আর জানবে কী করে...এই মনটাও নরম ঠিক ওরকমই!


তখন শিহরণে কেঁপেছি আর ভেবেছি কেবল…
কেমন জাদুর মানুষ, কেমন জাদুর ছোঁয়া!
হঠাৎ তুমি বাধ সাধলে! মুঠোফোনের চাইলে হদিস!
ভেতরে আমি ভীষণ খুশি, বাইরে থেকে বলেছি, এ কী!


বিদেয় নিয়ে ঘরে ফিরলাম; ফিরে দেখি, উদাস-শূন্য মন!
কোথাও আমার মন বসে না, যেন হারাচ্ছে সব ক্ষণ!
অধীর হয়ে তোমায় ভাবছি তোমায়, এমন সময়,
ফোনটা হঠাৎ উঠল বেজে! ফোনটা প্রথম করলে তুমিই!
সেদিন থেকে গল্প শুরু; নতুন জীবন---তাও শুরু!
আহা, কলজেটাতে তোমার জন্য ঠেকল কেমন টান!


ভাবছ তুমি,
কী এক বিশাল কাজ করেছ,
আমার রাতের ঘুম কেড়েছ!
গাধা একটা!
তুমি তো আর জানোই না,
রাতে আমি ঘুমোই-ই না!


দিন গড়ালো, মাস ফুরাল, ঘুরল গোটা বছর,
আমার জন্য আগের মতো কোথায় তোমার প্রহর?
তোমায় ভেবে দিনে দিনে বাড়ছিল খুব তেষ্টা,
ওদিকে তুমি ব্যস্ত ভীষণ, শুধুই ওপরে ওঠার চেষ্টা!


প্রথম যেমন প্রেমিক ছিলে, থাকতে তেমন যদি,
এই দুচোখে হৃদয়ফুঁড়ে বইত কি আর নদী?
আমার কেমন মন ভাঙছে, নড়ছে ঘরের কোণ,
পৃথিবীটা দেখলে তো খুব, শুধু দেখলে না এই মন।


সেদিন তুমি মন ধরোনি, ধরলে না হায় আজও!
ঘরের কোনায় মুক্তা ফেলে, মিছেই ঝিনুক খোঁজো!
ছেলে, তুমি এমন কেন? হাত বোঝ আর মন বোঝ না!
শক্ত শক্ত অঙ্ক বোঝ, আর সহজসরল প্রেম বোঝ না!


ছোঁয়া বোঝ ভালোই দেখি, তা ভালোবাসাটা বোঝ না কেন?
এ চোখে কেবলই দৃষ্টি ছুড়েছ, আমাকেই তো দেখোনি যেন!
ঠোঁটের হাসিই দেখলে কেবল, চোখের কষ্ট…দেখেছ কি?
জ্যোৎস্না দেখ, তবু মাখো না গায়ে, সুখের ভাগটা কেবল সিকি!
চাঁদ না খুঁজে কালিমা খোঁজ, তবে শুভ্রতা তার কখন বোঝ?


এক সন্ধে। ছাদে উঠলে। টবে দেখলে, ফুটেথাকা এক হলদে গোলাপ। গন্ধও নিলে। ওই দুটি চোখ বন্ধ করে ছড়ালে আবেশ সমস্ত দেহে! মনে হলো, এই গোলাপ যেন ফুটল কেবলই তোমায় ভেবে!
বলো, ভুল বলেছি?
শুধুই ঘ্রাণটা নিলে, প্রাণে জড়ালে আবেশ। লুকিয়েথাকা মধুটুকু অবহেলায় ফেলেই এলে!


আচ্ছা, তোমার মন বলে না, সেই ক্ষণটা আবার আসুক?
…আবার দাঁড়াই সেই মুহূর্ততে!
আমি যখনই এই হাতের দিকে তাকাই, কী আলগোছে ছুঁয়েই ফেলি!
…যেন সেদিনের সেই স্বর্গ আসে হাতের মুঠোয়!
ভাবছ আমায়, পাগল একটা! ভাবলে ভাবো, কী এসে যায়! আমি পাগলই তো আছি!


আমার কিছু স্বপ্ন বলি।
আমি তোমার একটুকরো আকাশ হব।
সে আকাশে উড়বে ঘুড়ি, সাদাসাদা বকের সারি!
কখনও হব লতিয়ে-ওঠা বাসরলতা, খুব হাসব তোমার হৃদয়জুড়ে,
নাহয় হব প্রজাপতিই, রং ছড়িয়ে উড়ব চোখের পাতাছুঁয়ে!
তুমি আমার হও বা না হও, আমি তবু তোমারই রবো!