বিসিএস ভাইভা নিয়ে

৩৫তম বিসিএস ভাইভা নিয়ে (প্রথম কিস্তি)

………………………………………………………………

৩৫তম বিসিএস ভাইভাকে মাথায় রেখে বিসিএস ভাইভা পরীক্ষার সাধারণ কিছু বিষয় নিয়ে লিখছি। তবে একটা কথা বলে নেয়া ভাল। ভাইভাতে ভাল করার অন্তত ১০০টি টেকনিক আছে, যেগুলির একটাও কাজ করে না। এটা মাথায় রেখে আমার টেকনিকগুলি পড়বেন।

১। ভাইভাতে কোনও প্রশ্ন ইংরেজিতে করলে উত্তরটাও ইংরেজিতেই দিতে হবে। অনেকসময়ই বাংলায় প্রশ্ন করে ইংরেজিতে উত্তর দিতে বলা হয়। কোনওভাবেই বাংলায় উত্তর করার জন্য অনুমতি চাইবেন না। কাজ চালানোর মতো ইংরেজিতে কথা বলার দক্ষতাবৃদ্ধি করতে এই সময়ে যা যা করতে পারেন: এক। সাবটাইটেল অন করে আমেরিকান উচ্চারণের ইংরেজি মুভি দেখতে পারেন। দুই। বিটিভির রাত ১০টার সংবাদ, আল-জাজিরার সংবাদ, টেড টকস্, ইউটিউব থেকে ইংরেজিতে কথা বলার ধরন খেয়াল করতে পারেন। তিন। ইংরেজিতে দক্ষতার বিচারে মোটামুটি আপনার সমপর্যায়ের কোনও বন্ধুর সাথে প্রতিদিন ৫ মিনিট ইংরেজিতে কথা বলতে পারেন। চার। মোবাইলের ভয়েস রেকর্ডারটা অন করে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ইংরেজিতে কথা বলার প্র্যাকটিস করতে পারেন। পরে শুনে দেখলে নিজেই বুঝতে পারবেন, আপনার কোথায়-কোথায় সমস্যা হচ্ছে। পাঁচ। আপনি ধরেই নেবেন, আপনি ভাল ইংরেজিতে কথা বলতে পারেন। এরপর একজন ইংরেজ হয়ে ইংরেজিতে কথা বলার অভিনয় করুন। ছয়। সবসময়ই আপনার আশেপাশের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ইংরেজিতে ভাবুন এবং মাঝেমাঝে সেসব নিয়ে নিজের মনেই বলতে থাকুন। নিজের সাথে নিজেই ইংরেজিতে কথা বলুন। সাত। ইংরেজিতে কথা বলার সময় আঞ্চলিকতা পরিহার করার চেষ্টা করুন। আট। ধীরেসুস্থে ইংরেজিতে কথা বলবেন। তাড়াহুড়ো করলে তালগোল পাকিয়ে ফেলার আশংকা থাকে। নয়। কোনও একটা থিমের উপর কয়েকজন মিলে ইংরেজিতে গল্প করতে পারেন। দশ। কখনওই আপনার ভুলগুলি নিয়ে মনখারাপ করবেন না। বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারেও চাকরি পেতে ইংরেজিতে কথা বলার অসাধারণ দক্ষতা থাকতে হয় না।

২। আপনার ফার্স্ট ও সেকেন্ড ক্যাডার চয়েজ, আপনার সাবজেক্ট, সাম্প্রতিক নানান ইস্যু, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ, আপনার এলাকা, বিশ্ববিদ্যালয় ও সেখানকার বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব, আপনি কেন সিভিল সার্ভিসে আসতে চাইছেন ইত্যাদি সম্পর্কে মোটামুটি ফেয়ার একটা আইডিয়া রাখুন। নিয়মিত পেপার, কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স, কারেন্ট ওয়ার্ল্ড, কারেন্ট নিউজ, আজকের বিশ্ব, অর্থনৈতিক সমীক্ষা ইত্যাদিতে চোখ রাখুন।

৩। ভাইভাতে ওপেন-এন্ডেড প্রশ্নে বেশি মার্কস বরাদ্দ থাকে। এই ধরনের প্রশ্নগুলির মধ্যে সবচাইতে কমনটা হলো: Introduce yourself. এরকম আরও অনেক প্রশ্ন ভাইভা গাইড কিংবা ইন্টারনেটে পাবেন। গুগলে সার্চ করে এমন সম্ভাব্য প্রশ্নের লিস্ট করুন। এগুলির উত্তর অন্য ১০জন যেভাবে দেয়, সেভাবে না দিয়ে একটু ভিন্নভাবে দেয়ার চেষ্টা করুন।

৪। ঢোকার সময় আর বের হয়ে যাওয়ার সময় খুবই মার্জিতভাবে সালাম/ নমস্কার/ আদাব দিন। আপনি ঢোকার সময় যে ইম্প্রেশনটা তৈরি করবেন, সেটাই আপনার ভাইভার প্রশ্ন অনেকটাই নির্ধারণ করে দেবে।

৫। নিজেকে উৎসাহী শ্রোতা হিসেবে উপস্থাপন করুন। কোনও বিষয় নিয়েই তর্কে জড়াবেন না।

৬। কোনও প্রশ্নের উত্তর জানা না থাকলে সেটি বিনীতভাবে বলুন। একটি প্রশ্নের উত্তর দেয়ার মাঝখানে অন্য একজন প্রশ্ন করলে প্রথমজনের কাছ থেকে অনুমতি নিন।

৭। আপনার নিজের সম্পর্কে, আপনার পরিবার, আগের চাকরি, বাংলাদেশের সমস্যা সহ নানান বিষয় নিয়ে ইতিবাচকভাবে বলা শিখুন।

৮। নার্ভাসনেস নিয়ে অতোটা ভাববেন না। এটা পরিস্থিতিই ঠিক করে দেবে। চাকরির পরীক্ষা নিয়ে নার্ভাস থাকাটাও একটা ভদ্রতা।

৯। আই কনট্যাক্ট ঠিক রাখুন। দৃষ্টিকটুভাবে চোখ, ঘাড়, হাত নাচাবেন না।

১০। আপনার অ্যাকাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ডের সাথে আপনার ফার্স্ট চয়েজের একটা সম্পর্ক নিয়ে প্রস্তুতি নিয়ে রাখবেন।

১১। আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং রেজাল্ট যা-ই হোক না যেন, আপনি কোনওভাবেই কোনও চাকরির জন্য অপরিহার্য নন, এটা মাথায় রেখে ভাইভার জন্য প্রস্তুতি নিন।

১২। কোনও প্রশ্নের উত্তরে কনফিউশন থাকলে সেটি যতটুকু জানেন, ততটুকুই আত্মবিশ্বাস নিয়ে বলবেন। তবে একেবারেই কোনও ধারণা না থাকলে উত্তর না করাই ভাল।

১৩। আপনার অ্যাকাডেমিক রেজাল্ট আপনার ভাইভার মার্কসে কোনও প্রভাব ফেলবে না। রেজাল্ট অতোটা ভাল না হলে ওটার পক্ষে মোটামুটিভাবে গ্রহণযোগ্য একটা কারণ তৈরি করে রাখবেন।

১৪। রাজনৈতিক বিভিন্ন বিরোধপূর্ণ ইস্যু নিয়ে প্রশ্ন কৌশলে এড়িয়ে গেলেই ভাল।

১৫। আপনার ভাইভার পোশাক হবে একেবারেই ফর্মাল এবং অফিসারসুলভ। ধর্মীয় পোশাকে কোনও বাধা নেই।

১৬। ভাইভা বোর্ডে কোনও অবস্থাতেই কোনও বিষয় নিয়েই মেজাজগরম করা যাবে না।

১৭। টেকনিক্যাল ক্যাডারের ক্ষেত্রে অবশ্যই নিজের সাবজেক্টের বেসিক বিষয়গুলি সম্পর্কে জেনে যাবেন।

১৮। একটু কনফিউসিং বানানের কিছু কমন শব্দ, সাধারণ কিছু অনুবাদ, জনপ্রিয় বই, ভূগোল ইত্যাদি সম্পর্কে জেনে যাবেন।

১৯। আপনার প্রিয় শখ যা-ই বলুন না কেন, সেটি সম্পর্কে ভাল ধারণা রাখবেন।

২০। কথা বলার সময় যদি হঠাৎ তোতলাতে থাকেন কিংবা খেই হারিয়ে ফেলেন, তাহলে একটু থেমে এরপর আবার উত্তর করা শুরু করবেন।

৩৫তম বিসিএস পরীক্ষায় যারা পাস করেছেন, তারা সত্যিই অনেক যোগ্য এবং ভাগ্যবান। আপনার প্রতিদ্বন্দ্বীর সংখ্যা অন্যান্যবারের চাইতে কম। যে করেই হোক, এই দারুণ সুযোগটাকে কাজে লাগাতেই হবে! নিয়মিত প্রার্থনা করুন আর এই দীর্ঘ ক্লান্তিকর পথের শেষটা যাতে অনেক সুন্দর হয়, আপনার সর্বোচ্চটুকু দিয়ে সে চেষ্টা করে যান। আপনি সফল হবেনই!

ভাইভা নিয়ে আরও কিছু কথা বলবো আমার পরের লেখায়। ভাল থাকবেন।

লেখাটি গত ২৯/০১/২০১৬ তারিখ প্রথম আলো’র চাকরিবাকরি পাতায় ছাপা হয়েছিলো। লিংকটা নিচে দিয়ে দিলাম:

http://www.prothom-alo.com/life-style/article/753505/%E0%A6%89%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%B0%E0%A6%9F%E0%A6%BE-%E0%A6%87%E0%A6%82%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%87%E0%A6%87-%E0%A6%A6%E0%A6%BF%E0%A6%A8

৩৫তম বিসিএস ভাইভা নিয়ে (শেষ কিস্তি)

……………………………………………………………………………

ভাইভার তারিখও দেয়া হয়ে গেছে। অনেকের জন্যই এই মুহূর্তটা হলো পরীক্ষা প্রস্তুতির শেষ মুহূর্ত। পরীক্ষা যত কাছে, চাকরি তত কাছে। গত লেখাটির পর ভাইভা নিয়ে আরও কিছু কথা বলছি:

এক। আপনার ভাইভার ডেটের আগের ৫-৬ দিনের ২টা ইংরেজি আর ২টা বাংলা পেপারে চোখ রাখবেন। ভাইভার দিন সকালে ১টা ইংরেজি ও ১টা বাংলা পেপার দেখে যাবেন।

দুই। কিছু বিব্রতকর প্রশ্নের সম্মুখীন হতে পারেন। সেগুলির প্রস্তুতি আগে থেকেই নিয়ে রাখলে ভাল হয়। যেমন, আপনার বস আপনাকে অবৈধ কাজের নির্দেশ দিলে আপনি কী করবেন? এই জাতীয়।

তিন। আপনি সিভিল সার্ভিসের জন্য অপরিহার্য নন, এটা মাথায় রেখে ভাইভা দিতে যাবেন। আপনার অ্যাকেডেমিক রেজাল্ট, আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এরকম অতীতের বিষয়গুলির গুরুত্ব অতি সামান্যই। ভাইভা বোর্ডে শুধু ‘আপনি কী’, সেটা দেখা হবে। নিজেকে চাকরির জন্য যোগ্য প্রমাণ করুন।

চার। আপনার রাজনৈতিক অবস্থান যেন কোনওভাবেই আপনার কথায় বোঝা না যায়।

পাঁচ। বোর্ডের স্যাররা যেমনই থাকুন না কেন, আপনি নিজে সবসময়ই খুব ফর্মাল থাকবেন। কোনও প্রশ্ন বুঝতে না পারলে, খুবই বিনীতভাবে ‘আই বেগ ইয়োর পার্ডন, স্যার/ ম্যাডাম’ বলে সেটি আরেকবার জিজ্ঞেস করার জন্য অনুরোধ করুন। আপনার হাঁচি দেয়ার ধরনেও আপনি কতটুকু অফিসারসুলভ ফর্মাল, সেটি প্রকাশ পায়।

ছয়। আপনার ক্যাডারের ফার্স্ট ও সেকেন্ড পছন্দ সম্পর্কে জানতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে পড়াশোনা করুন। আপনার জেলা সম্পর্কে জেলা তথ্য বাতায়ন থেকে জেনে নিন। অনলাইনে পড়াশোনা করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। দুএকটি প্রামাণ্য বই উল্টেপাল্টে দেখতে পারেন।

সাত। প্রফেশনাল ক্যাডারের ক্ষেত্রে আপনার অ্যাকাডেমিক সাবজেক্টের বেসিক নলেজ এবং কিছু প্রায়োগিক দিক সম্পর্কে ভালভাবে জেনে রাখবেন।

আট। আপনার ভাইভার ডেটের আগে বাজারে অনেক ছোটোছোটো নোট টাইপের বইপত্র পাবেন। সেগুলি নাড়াচাড়া করে দেখতে পারেন। তবে ওসব বই থেকে কমন আসে খুব কমই। আসলে ভাইভাতে কী জিজ্ঞেস করা হবে, কী জিজ্ঞেস করা হবে না, এর কোনও নিয়ম নেই।

নয়। ভাইভাতে মার্কস দেয়া হয় ওভারঅল পারফর্মেন্সের উপর, এখানে কোনও ধরনের সেগমেন্টেড মার্কিং হয় না। যারা ভাইভাতে থাকবেন, তাঁদের প্রত্যেকেই আলাদা-আলাদা মার্কস দেবেন, পরে সেগুলিকে গড় করা হবে।

দশ। আপনি কয়টা প্রশ্নের উত্তর দিতে পারলেন, কয়টা পারলেন না; আপনাকে কত সময় ওখানে রাখা হল, এসব ব্যাপার অতটা মুখ্য নয়, যতটা মনে করা হয়। আপনি কী বললেন, সেটার চাইতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল, আপনি কীভাবে বললেন, সেটা। আপনার দৃষ্টিভঙ্গি অফিসারসুলভ কি না, সেটি যাচাই করে দেখা হবে।

এগারো। ভাইবা বোর্ডে বিভিন্ন প্রশ্ন করে এবং পরিস্থিতি তৈরি করে আপনার জ্ঞান, ব্যক্তিত্ব, উপস্থিত বুদ্ধি, উপস্থাপন কৌশল, পরিস্থিতি সামলানোর দক্ষতা, ভদ্রতা, আনুগত্য, স্বচ্ছ চিন্তাভাবনার ক্ষমতা, মানসিক পরিপক্বতা এসব বিষয় নিয়ে ধারণা নেয়া হবে। আগে থেকেই এসব ব্যাপারে প্রস্তুতি রাখুন। আপনার শারীরিক ভাষার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।

বার। ‘আমি না বুঝে এরকম একটা পছন্দক্রম দিয়েছি’ এই ধরনের উত্তর আপনার সিদ্ধান্তহীনতার পরিচয় দেয়। আপনার প্রথম পছন্দ যা-ই হোক না কেন, আপনার কাজ হলো, আপনি কেন ওই ক্যাডারে চাকরি পাওয়ার উপযুক্ত ব্যক্তি, সেটি আপনার উত্তর দেয়ার ধরনে পুরোপুরি তুলে ধরা। কোনও প্রকারের হীনমন্যতা কিংবা অতি আত্মবিশ্বাস আপনার ভাইভাকে নষ্ট করে দিতে পারে।

তেরো। আপনি উত্তর দেয়ার সময় যদি দেখেন স্যাররা অন্যকোনও বিষয়ে মনোযোগী, তবে কোনওভাবেই এটা ভাববেন না যে উনারা আপনার উত্তর শুনছেন না। সাবধানে উত্তর দিন।

চৌদ্দ। ভাইভা বোর্ডে আপনার সাথে যেরকম আচরণই করা হোক না কেন, সেটিকে কোনওভাবেই পারসনালি নেবেন না। আপনাকে যাচাই করার জন্য কিছু আপাত অস্বাভাবিক আচরণ করা হতেই পারে।

পনেরো। বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আপনার যা যা জানা প্রয়োজন, সেগুলি নিয়ে ধারণা রাখবেন। বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান স্যারের ‘নাগরিকদের জানা ভাল’ বইটি পড়ে যেতে পারেন।

ষোলো। যে সকল চাকরি করলে ভাইভা বোর্ডে যাওয়ার সময় ছাড়পত্র/ অনাপত্তি পত্র সাথে নিয়ে যেতে হয়, কিন্তু সে চাকরিটির কথা ফরমে উল্লেখ করা হয়নি, সে চাকরির কথা ভাইভা বোর্ডে না বললেই ভাল। প্রাইভেট জবের কথা বোর্ডে বলা যায়।

সতেরো। যদি পরপর ২-৩টি প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারেন, তবে ওই মুহূর্তে সৃষ্টিকর্তা কিংবা আপনার প্রিয়জনের কথা মনে করুন। এটা ম্যাজিকের মতো কাজ করে।

আঠারো। ‘আপনি এতদিন কী করেছেন?’ এটির উত্তরে ‘টিউশনি করেছি আর বিসিএস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি’ কিংবা ‘কোনও স্কুলে শিক্ষকতা করছি’ এই ধরনের উত্তরে কোনও সমস্যাই নেই। আপনি যে অবস্থানেরই হোন না কেন, সেটিকেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে তুলে ধরুন।

উনিশ। আপনি যেরকম, সেটাকেই মার্জিতভাবে উপস্থাপন করুন। আত্মবিশ্বাস ভেঙে দেয় কিংবা আপনাকে আপনার মতো থাকতে দেয় না, এমন কিছু করবেন না৷

বিশ। কথা বলার সময় পারিপার্শ্বিকতার দিকে বেশি খেয়াল না রেখে আপনি কী বলছেন, সেদিকে খেয়াল রাখুন।

একুশ। আপনাকে কী প্রশ্ন করা হবে, কী করা হবে না, সেটি নির্ভর করে আপনাকে দেখে স্যারদের মনে কী ইম্প্রেশন তৈরি হলো, সেটির উপর। নিজেকে খুবই পরিশীলিতভাবে উপস্থাপন করুন।

বাইশ। আপনি আপনার কাজের প্রতি আন্তরিক, অনুগত, দায়িত্বশীল—এই ভাবটি ফুটিয়ে তুলুন।

তেইশ। ভাইভা দিতে যাওয়ার সময় কিংবা ভাইভা দিতে ঢোকার আগমুহূর্তে ভাইভা নিয়ে পড়াশোনা না করাই ভাল। এতে অনেকসময়ই অহেতুক নার্ভাসনেস বাড়ে।

চব্বিশ। আপনি কোনওভাবেই আপনার বসের চাইতে স্মার্ট নন। বসের সাথে কোনও মান-অভিমান করা যাবে না। এই দুই ব্যাপার মাথায় রেখে ভাইভা দিন।

পঁচিশ। কী জানেন না, সেটা নিয়ে কম ভাবুন। হয়তো আপনাকে সেটি জিজ্ঞেসই করা হবে না।

ছাব্বিশ। আপনার সাথে দেখা হওয়ার সময় এবং আপনি বিদায় নেয়ার সময় আপনার সম্পর্কে ধারণা জন্মে। ঢোকার সময় হাসিমুখে সালাম এবং বের হয়ে যাওয়ার সময় হাসিমুখে ধন্যবাদ এবং সালাম দিতে ভুলে যাবেন না।

লিখিত পরীক্ষায় আপনার মার্কস ভাল হলে আপনার চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। খুব অসংলগ্ন কিংবা অশোভন আচরণ না করলে আপনি ভাইভাতে অতো কম মার্কস পাবে না। ভাইভাতে কে কতটা ভাল করবেন, সেটা সম্পূর্ণই নির্ভর করে ভাইভার সেই কয়েক মিনিটের উপর। নিয়মিত প্রার্থনা করুন, চেষ্টা করে যান, নিজের সামর্থ্যের উপর বিশ্বাস রাখুন। জয় আপনার হবেই হবে! আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।

লেখাটি গত ০৫/০২/২০১৬ তারিখ প্রথম আলো’র চাকরিবাকরি পাতায় ছাপা হয়েছিলো। লিংকটা নিচে দিয়ে দিলাম:

http://www.prothom-alo.com/life-style/article/760522/%E0%A6%B9%E0%A7%80%E0%A6%A8%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%A4%E0%A6%BE-%E0%A6%AC%E0%A6%BE-%E0%A6%85%E0%A6%A4%E0%A6%BF-%E0%A6%86%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B8-%E0%A6%A8%E0%A7%9F