ভাবনাদেয়ালের পলেস্তারা (২২শ অংশ)

ভাবনা: একশো আটচল্লিশ।

……………………………………..

ভাল না লাগাটাও একটা ভাল ব্যাপার। সব কিছু ভাল লাগলে ‘ভাললাগা’ ব্যাপারটাই অর্থহীন হয়ে যায়। আমার মাথায় কত কী যে ইচ্ছে চাপে! আমার ইচ্ছেগুলির বেশিরভাগই উদ্ভট। এই যেমন, ঠিক এই মুহূর্তে আপনাকে সেভ করে দিতে ইচ্ছে করছে! দুনিয়ায় কি আর কোনও ইচ্ছে ছিল না? আছে তো! তবে আমার এটাই ইচ্ছে করছে, আমার কী দোষ? সব ইচ্ছের কথা বলা যায়, নাকি উচিত? কখনও, না বলাটাই মানায়, না বলাটা উচিৎ। যা কিছু মনে আসে সব যাকে অকপটে বলা যায়, তেমন মানুষ কেন পাই না? আপনি একটা মানুষ, তবে তেমন মানুষ নন। আপনি কেন তেমন মানুষ নন? আপনাকে নিয়ে যা ভাবি, যা কিছু কল্পনায় গড়ি, অনুভবে গাঁথি—জানি, সবই ভুল প্রবৃত্তির কারণেই করি। সে প্রবৃত্তিকে প্রশ্রয় দেওয়া একদমই চলে না। তবু সেই স্বপ্নেই যে বাঁচি, কী করব, বলেন? মরীচিকাকে ভালোবেসে কী লাভ? কী লাভ হঠাৎ বৃষ্টির সুবাদে আসা ক্ষণিকের রংধনুকে ভালোবেসে? কিংবা, অদ্ভুত সুন্দর নীল কুরিঞ্জি ফুলের প্রেমে মাতাল হয়ে, যা বার বছরে কেবল একবার ফোটে? লাভ নেই তো ক্ষণিকের এই অতিথিদের ভালোবেসে। কিন্তু আমি এদেরই ভালোবাসি। হোক ক্ষণিকের, তবুও তো তা প্রকাশিত—প্রতীক্ষায় ধরা দেবেই, ছলনার মধ্যে বাঁচে না ওরা, মুখোশ পরেও ভোলায় না। মিথ্যেও যদি হয় ওদের অস্তিত্ব, তবুও তো এটা জেনে ভালোবাসছি, আমি যা ভালোবাসছি, তা মিথ্যে। জানা মিথ্যে তো অনেক ভাল অজানা মিথ্যের চেয়ে! মিথ্যে ‘আশা’র চেয়ে সত্য ‘অপেক্ষা’ ভাল, হোক তা অনেক ধৈর্যের। জানা ‘সত্যি খারাপ’ ভাল অজানা ‘মিথ্যে ভাল’র চেয়ে। প্রতিদিনের আশা নিরাশায় পরিণত হওয়ার চেয়ে এক যুগও নিশ্চিত আশার জন্য অপেক্ষা ঢের ভাল।

হুমমম্‌! কী হল আজ? কারও, মানে প্রিয় কারও বিয়ে হয়ে যাচ্ছে বুঝি? নীলিতা, হয়, এমন হয়! শান্ত হ। এত বকছিস কেন রে?

কখনও-কখনও মনের ভেতর কী কী জানি খুব তোলপাড় করে; সেটা যে ঠিক কী, তা বলা যায় না, বোঝানোও যায় না—কেবল ভেতরে-ভেতরে অনুভব করা যায়, মনে হতে থাকে, একটা তীব্র কষ্ট দলা পাকিয়ে বুকের কাছে এসে আটকে আছে।

অ্যাঅ্যাইইই…….কোথায় তুমি? কী করতেসো? এই নাও তোমার নুডলস্! কাজ কর? তুমি খাবা, নাকি আমি খাওয়াই দিব? (কল্পনার মতো সুন্দর একটা জীবন হোক সবার!)

কিছু মানুষ যে কেন কেবল শরীরের মোহে এত আচ্ছন্ন, জানি না। শুধুই শরীরের আকর্ষণ কেমন, জানা নেই—তবে যে আকর্ষণ মন হয়ে শরীরে যায়, তার তীব্রতা আর অনুভূতি কতটা, তা তারা কখনওই উপলদ্ধি করতে পারবে না।

জীবনে যেসব ভয়াবহ অপারগতা আছে, তার অন্যতম হল, চাইলেই কোনও কিছু ভুলতে না পারা। যার স্মৃতিশক্তি যতো বেশি প্রখর, সে ততো বেশি অসুখী। প্রিয় কিছু, যা অস্তিত্বে মিশে যায়, তা যায় কি ভোলা? বড়জোর প্রয়োজনে ভুলে থাকার অভিনয় করা যায়। জীবন কাটে এমন অভিনয়ে। হোক নিঃস্বার্থ, তবুও কেউ যেন মিথ্যে অভিনয় করতে কখনও বাধ্য না করে। নিঃস্বার্থ মিথ্যে অভিনয়ের চাইতে স্বার্থপর বাস্তব অনেক সুন্দর, সুখদায়ক। সবাই বাঁচুক সত্যে, সে সত্য যতোই তিক্ত হোক না কেন—এটাই প্রার্থনা।

বলে ফেললাম মনে যা এল। কাল যে বেঁচে থাকব, তার তো কোনও নিশ্চয়তা নেই। ইচ্ছেগুলো নাহয় ‘অজানা’ নয়, ‘জানা’ কল্পনায়ই বাঁচুক।

সব কষ্ট‌ই মনে থাকে…….
তবু ভুলে যাওয়ার অভিনয় করতে দোষ কী?
ওতে আর কিছু হোক না হোক, জীবন তো বাঁচে!

কারও যাচ্ছেতাই বলেফেলা…….কারও সবকিছুই নির্দ্বিধায় গিলেফেলা—এইতো জীবন!

সবশেষে শূন্যতাতেই পূর্ণ হব, শুকনো ফুলের ঘ্রাণটা নেবো, অমাবস্যায় আকাশ ছোঁব, ভেজা চোখেও বলব হেসে, সত্যি বলছি, দারুণ আছি!

একজন ‘সে’ থাকলে ফোন করে ওর হাতের একটা ছবি চাইতাম। সাথে চুলের, মানে, মাথাসহ চুল। ওর হাত দুটো তো আমার, তাই আমার কাছেই রেখে দিতাম।

চল না আজ রাতে আমরা সারারাত না ঘুমাই! সারারাত দুজন মিলে বই পড়ব, তুমি অর্ধেক পড়ে শোনাবে, বাকি অর্ধেকটা আমি। কফি কিন্তু তুমি বানাবে, আর খাইয়ে দেবো আমি। রাত জাগলে কি কাল অফিস করতে খুব কষ্ট হবে? আহারে বাবুটা! থাক্‌ ঘুমাও।…….একজন ‘সে’ থাকলে কত সুখ হত! সত্যিটাই বলি। আসলে সে নেই বলে আমার কোনও অ-সুখ নেই, বরং সে না থাকায় আমার মধ্যে যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে, তা-ই আমাকে অসুখী করে দিচ্ছে। সে থাকলে যদি সুখীও হতাম, তবে ওতে তার কৃতিত্ব যতখানি, তার চাইতে বেশি কৃতিত্ব থাকত সে থাকার কারণে আমার মনে যে সুখের অনুভূতির সৃষ্টি হত, সেটার। কোনও ঘটনা আমাদের সুখী করে না, কোনও ঘটনা আমাদের ব্যথিত করে না, বরং আমাদের সুখ বা ব্যথার জন্য আমাদের মনের উপর সে ঘটনার প্রতিক্রিয়াই দায়ী।

ভালোবাসা না পাওয়াটা কখনও-কখনও মানুষের ভেতর হাহাকারের (বা শূন্যতার) সৃষ্টি করে, আবার অনেক ভালোবাসা পেয়ে গেলেও মানুষ একটা অদ্ভুত হাহাকারের মধ্যে থাকে। কম ভালোবাসায় যে মানুষের মধ্যে অনাদরের অভিমান জন্মায়, বেশি ভালোবাসা প্রায়ই সে মানুষটিকেই কেমন জানি ভয় পাইয়ে দেয়। এ দুইয়ের মধ্যে কোনটা শ্রেয় জানি না, তবে আমার মনে হয়, পেয়ে হাহাকারের চেয়ে না পাওয়ার হাহাকার অনেক ভাল।

ভাবনা: একশো ঊনপঞ্চাশ।

……………………………………..

মেয়েটি অজন্তা পৌঁছে জানতে পারল, তার গন্তব্য হওয়া দরকার ছিল ইলোরা। হায়! নিয়তির রসিকতা জীবনে বহু দেখা আছে, তাই নতুন করে অবাক হবার হয়তো কিছু নেই—মেয়েটি অবাক হয়ওনি। একলা, অজানা অচেনা নতুন শহরে অদ্ভুত সব অচেনা মানুষের ভিড়ে অসহায় মেয়েটির উপর যে রাগ করা যায় না—এইটুকুও কারও মাথায় থাকে না। মেয়েটির আসার কথা ছিল, ছেলেটির মনে নেই, তাই চলে গেছে; মেয়েটি কোনও সরি শোনা দূরে থাক, ফোনে উল্টো বকা খায়—ক্লান্ত শরীর, হতাশ মন আর অজানা ভয় মেয়েটির মাথা ফাঁকা করে দেয়। কিছুই করার নেই, কেবলই নিয়তির নতুন কোনও রসিকতার অপেক্ষায়……মেয়েটি নিজেকে বিশ্বাস করানোর নিরন্তর ব্যর্থ সংগ্রামে আবারও ব্যস্ত হয়ে পড়ে বরাবরের মতো—কাউকে ভালোবাসি না। সবাই ভাল থাকুক। ভালোবাসা মিথ্যে, কেবল ভালোবাসার গানগুলি সত্য। ওর হেডফোনে বাজছে: খবর দিয়ো হঠাৎ কান্না পেলে…….

এই যে এই মুহূর্তের এত কষ্ট, এত যন্ত্রণা, এত ক্ষোভ, এত অভিমান, এত জ্বালা—সকাল হতেই মেয়েটি সব ভুলে যাবে। কষ্টটা ভেতরে থাকবে, কিন্তু বাইরে থেকে একেবারে স্বাভাবিক হয়ে যাবে সে, যেন কিছুই হয়নি। সবার আড়ালে সাগরতলে কত কী যে ঘটে নীরবে, কেউ জানে না; তাই বলে কি সাগরের কিছু যায় এসে? সাগর বাইরে শান্ত আবার ভেতরে উত্তাল। বাইরের অবয়বে ভেতরটা কে-ই বা বোঝে? কিংবা অতোটা বোঝার দায়ই বা কে নেবে? কেন নেবে? দায় নেয়ার কীসের দায়?

কাউকে মনভরে দেখার উত্তম সময় হচ্ছে ঘুম! মাকে তো সারাক্ষণই দেখি, কিন্তু মা যখন ঘুমিয়ে থাকে, তখন মায়ের পাশে বসে-বসে চুপি-চুপি মাকে খুব করে দেখি। ঘুমন্ত মানুষকে বড় সুন্দর আর মায়াবী লাগে। মাঝে-মাঝে ইচ্ছে করে, ক্যামেরা সেট করে রেখে ঘুমন্ত আমাকে একটু দেখি! সুন্দর লাগবে না ছাই—ভূত তো ঘুমের মধ্যেও ভূত, বড়োজোর, ঘুমন্ত ভূত—এ-ই তো! ঘুমোলেও ভূতকে ভূতের মতোই লাগে। জানি…….হুহহহ্‌! একজন ‘সে’, যাকে আমি কখনওই পাব না, তাকে বিয়ের পর ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে যে কত রাত জেগে থাকবে সেই সৌভাগ্যবতী! আহা! ভাবলেও খুশিতে নিজের মাথার সব চুল ছিঁড়ে ফেলতে বড় ইচ্ছে করে। সত্যি বলছি, তুমি আমায় ভালোবাসো না, এমন ভাবতেও বড় কষ্ট হয়। তবু মেনে নিয়েছি। ভালোবাসা একরৈখিক তালে চলুক। দুটো জীবন না সাজুক, একটা জীবন অন্তত বাঁচুক, আরেকটা সাজুক—এটাই প্রার্থনা। আর শোনো, তুমি মাঝে-মাঝে ঘুমের ভান করে থেকো। তবেই আমার কথার প্রমাণ পেয়ে যাবে। যখন ভরা পূর্ণিমায় জ্যোৎস্না এসে তোমার নরম গালে চুমু খাবে, তোমার সমস্ত শরীর জুড়ে রাতের আবেশ ভর করে তোমায় ভাসিয়ে নেবে ওই দূরের তারার রাজ্যে, তখন সে বেচারি না ঘুমিয়ে তোমার চোখ দেখবে, মুখ ছোঁবে সারামন দিয়ে। কী আর করবে সে, বলো? এত ব্যস্ত তুমি—তোমায় যে একটু মনভরে দেখবে, সে সময়ই কোথায়? সে নিশ্চয়ই অতোটা বোকা হবে না যে রাতটাকে মিস্‌ করবে।

যে মানুষ আমার নিঃস্বার্থ অনুভবে আছে, তার সমস্ত কিছু আমার—একটু বেশিই আমার। জীবনটা আসলে চোখটার মতো, কিন্তু ওকে থাকতে হয় মুখটার মতো করে। যদি চোখের মতোই থাকা যেত, শুধুই দেখে যাচ্ছি, কিছুই বলছি না, চোখের কোণায় সমস্ত অভিমান আর অনুযোগ জমে যাচ্ছে নীরবে—যেমনি করে ভরা বর্ষায় আকাশকোণে মেঘ জমে, চোখের ভাষায় কিছু একটা বলছি যা বোঝানোর কিংবা বুঝে নেয়ার দায় কারও নেই, তবে বড় বেঁচে যেতাম। কিন্তু চোখের অমন নিভৃত তপস্যায় জীবন আর কাটছে কই, বলো? জীবন আসলে কিছুর মতোই নয়, জীবনটা স্রেফ জীবনের মতো। জীবন ভাল নয়, জীবন মন্দ নয়, জীবন সুখের নয়, জীবন দুঃখের নয়—জীবন…….যেমন, তেমনই।

It’s fun time! যখন মা ভূত সেজে বলে, “দেখ তো আমাকে কেমন দেখাচ্ছে?” “আপনাকে পুরাই ভূতের নানির মত লাগছে! হি হি হি……” কী গো! কী হল? মজার কথা বললে হাসতে হয়। সেও ভুলে গেছ, না? হাসো না একটু! জানো না, হাসলে তোমাকে…….ঘোড়ার ডিমের মত দেখায়! (কত কল্পনা তাকে ঘিরে! সে যদি একবার জানত!)

ফোন দিলে কি ঝুউউউউম্‌ বকা খাব, বৃষ্টির মত বকা? তাহলে, একটা সেলফি দিন না! কেন অকারণে এমন করেন? আমার টেক্সট কোথায় যায়? আদার্সে পড়ে থাকে, হুঁ? সেটাও তো বুঝতে পারছি না! অ্যাই ছেলে! একটু আসো না! ইনবক্সে একা-একা বকতে কার ভাল লাগে, বলো?

সেদিন আপনাকে এত কিছু খাওয়ানোর জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে মেসেজ দিয়েছিলাম না? এজন্য দিয়েছিলাম, কারণ আমি ফ্রুট্‌স, সালাদ, দুধ এসব একদমই পছন্দ করি না, খাইও না। কিন্তু আপনাকে আর ভাইয়াকে রোজ খেতে বলি বলে আমাকেও খেতে হয়। যেটা নিজে করি না সেটা তো আর অন্যকেও করতে বলতে পারি না। কিন্তু যাদের বলি তাদেরই খাওয়ার নাম নেই, আমিই খেয়ে যাই। সেদিন আপনি আমার সামনে বসে ওগুলি খাচ্ছিলেন দেখে বড় শান্তি পেয়েছি।

দেখি বলুন তো, কী করছি? যদি বলতে পারেন, তবে যা চাইবেন, তা-ই দেবো। পারছেন না তো? আচ্ছা বলে দিই। বই পড়ছি। কার বই, জানেন? আচ্ছা, এটাও বলে দিই: সতীনাথের। না, আপনার প্রিয় ‘জাগরী’ পড়ছি না, ‘সত্যি ভ্রমণ কাহিনী’ও নয়। কোন বইটা, বলতে পারবেন? বলতে পারলে…….বিছানায় উপুড় হয়ে বইয়ের উপর ঝুঁকে আমি বই পড়ি—এটা হল আমার বইপড়ার পচা স্টাইল…….বলতে পারলে…….আমার এই শৈশবের পুরনো আরামের স্টাইলটা আপনার জন্য বদলে ফেলব। একদম প্রমিজ!

একটা সময় শেষে ঠিকই বোঝা যায়, ঠিক কতটা লোনাজল ছিল অহেতুক অবান্তর। স্তব্ধ নিঃশ্বাসগুলির হিসেব কেউ দেবে না, ক্ষণিকের আবেগ জীবন থেকে কতটা সময় কেড়ে নিয়ে পালিয়ে গেছে কোথায় যেন। জীবনের শেষ দিনে এসে এ বোঝার পরিধিটা হয়তো আরও বিস্তৃত হবে। ওপারেই মিলবে হয়তো জীবনের শেষ অংকটা। সরল অংকের মতো জীবন—যখন মিলে যায়, তখন পরীক্ষার সময়ই শেষ—আর কিচ্ছু করার থাকে না!

“পাত্তাই দেও না মনে হয়? যা বলি তা শুন না। যা করতে বলি তা কর না। হুহ্‌! এখন আর পাত্তাই দেও না মনে হয়?”

টেক্সটটা পড়ে অনেকক্ষণ হাসলাম শব্দ করে। ঠিকই ধরেছেন আপনি। সত্যিই আমি আপনাকে পাত্তা দিই না, জনাব। একদমই না! কারণ, যাকে নিয়ে বেঁচে আছি সত্য সৎ অনুভবে, তাকে পাত্তা দেয়ার কথা কেন আসবে? যেখানে আমার অস্তিত্বই বিপন্ন আপনাকে ছাড়া, সেখানে পাত্তা ব্যাপারটা অতি তুচ্ছ, অতি বিচ্ছিরি। আপনাকে পাত্তা দিতে হবে—এতটা নগণ্য করে ভাবা হয়ে ওঠেনি কখনও।

ভাবনা: একশো পঞ্চাশ।

……………………………………..

অনেক কাঁদিয়েছেন। (যদিও এতে আপনার কোনও দোষ নেই।) তবুও, আপনার শাস্তি হল, একটা মুহূর্তের জন্য হলেও দেখা না করে আপনি নালন্দা ছাড়বেন না। এক্কেবারে নগদে খুন করে ফেলব! সত্যিই করে ফেলতে পারব কিন্তু! জানি, করবেন না। আপনি ভাল থাকুন, নিরাপদে থাকুন। আসার সময় পাইলটকে বলবেন প্নেনটা যেন একটু তাড়াতাড়ি চালায়! তা না হলে, ওই ব্যাটাকেও খুন করে ফেলব!

“জ্ঞাতৃকা হোটেলের এইট-ও-এইট নম্বর রুমেই থাকব!” বাহ্‌ কী সুন্দর কথা! এটা বলার কী আছে? কেউ যদি হোটেলের রুমে ঢুকে আপনাকে খুন করে ফেলে, তখন? যখন বৈশালী যাব, ওই হোটেলেই উঠব। ৮০৮ রুম পাওয়া না গেলেও নো সমস্যা, ওখানে যে থাকবে, তার সাথেই উঠে যাব। উঠতে না দিলে সোজা নাকের উপর ঘুষি মেরে জোর করে উঠে যাব। তবু আমার ওই রুমেই থাকতে হবে। যদি সে ছেলে হয়, তাতেও কোনও সমস্যা নেই। সে যেখানে খুশি সেখানে থাকুক, প্রয়োজনে বাথরুমে! কিন্তু বেডের ব্যাপারে—আই অ্যাম সরি! শেয়ার করা যাবে না! বেডে আমি থাকব, সে থাকবে বেডের বাইরে যে কোনও জায়গায়। শুনুন না, আপনি এক কাজ করতে পারবেন না? ওই রুমের কোথাও লুকিয়ে কিছু একটা লিখে রাখবেন প্লিজ! আমি যখন যাব, তখন সেটা খুঁজে বের করব! লিখবেন অবশ্যই আমাকে উদ্দেশ্য করে—মাই সুইটহার্ট, হ্যাভ অ্যা নাইস স্টে! টাইপ কোনও কিছু আরকি! কারণ, আপনার কোনও অন্যতম প্রিয় প্রেয়সীকে লেখা কোন প্রেমকথা দেখতে তো আর আমি বাংলাদেশ থেকে ‘অদূর’ বৈশালী যাব না, তাই না? স্যার, অবশ্যই কিছু লিখবেন কিন্তু! তাই বলে আবার এটা লিইখেন না যে, তুলে আছাড় মারবেন! হতেও তো পারে, শুধু কী লিখেছেন—এটা দেখতে যে কোনও দিন বৈশালী ছুটতে পারি। (আপনার রুমের একটা ছবি দিন না—ছবিতে আপনিও অবশ্যই থাকবেন!)

আপনাকে দেখতে ইচ্ছে করছে অনেক বেশি। আরেকটা ইচ্ছেও করছে—সেটা বলা যাবে না। (আসলে দ্বিতীয় কোনও ইচ্ছে করছে না, আপনাকে এটা নিয়ে ভাবিয়ে জ্বালানোর জন্য বলেছি।)

আমার বালিশটা সাথে নিয়ে চলে আসি, কী বলেন? রুমে ইকটুস্‌খানি জায়গা হবে? নিচেটিচে থাকতে পারব না কিন্তু, মনের তেলাপোকাগুলি বড্ড জ্বালায়। আপনার বেডের মাত্র তিনভাগের দুভাগ জায়গা দিলেই চলবে, এর একটুও বেশি লাগবে না। হিহিহি…….ঘুমের মধ্যে একদম জ্বালাব না। মাঝে-মাঝে হয়তো আপনি নিজেকে ফুটবল হিসেবে আবিষ্কার করতে পারেন মেঝেতে! কথা দিচ্ছি, এর বেশি কিছু নয়। যদি টের পান, চুলে কেউ সজোরে বিনি কাটছে, ধরে নেবেন, ওটা নিতান্তই ঘুমের ঘোরে। আর যদি একেবারেই নিজেকে সামলানো না যায়, তবে হয়তো কেউ পেছন থেকে খুব আদর করে জড়িয়ে ধরে ফেলতে পারে। এর বেশি একদমই জ্বালাবে না কেউ। আরও অনেক-অনেক কিছু আছে—ওসব কিচ্ছু কেউ করবে না। সব ইচ্ছেকে খড়ের শেকল দিয়ে বেঁধে রাখব! প্রমিজ! অ্যাই মানুষ! আসি না…….আসি?

কিচ্ছু বলে না! সত্যি-সত্যি একবস্তা পচা আপনি। হাত-পা বেঁধে একদম কলসির মধ্যে ফেলে দিব। হুউমমম্‌…….

আপনার ড্রেসআপ বেশি পছন্দ হয়েছে। ইয়ে মানে, আমিও ওগুলি পরব। ইএএএএ…..!! জুতোজোড়া ছাড়া বাকিগুলো একটু পরতে দেবেন? না মানে, একবার পরেই ফেরত দিয়ে দিব আরকি! (যদি রেগুলারলি গোসল করেন, তবে সাথে আন্ডারওয়্যারটাও দিয়েন।) আর ভাল কথা, আপনার ড্রেস না ধুয়ে দিলেও চলবে! অ্যাকচ্যুয়েলি, আমি সেটাই চাই, মানে, নাধোয়া ড্রেস চাই—একটু গায়ের ঘ্রাণ নেবো। আপনার একটা টিশার্ট রেখে বাকিগুলো ধুয়ে ফেরত দিয়ে দেবো। টিশার্টটা আর ফেরত পাবেন না, ওটা আমার। আমি প্রতিদিন ওটার ঘ্রাণ নেবো। আর হ্যাঁ, রিস্ট-ওয়াচটাও লাগবে, এটা ফেরত নাও দিতে পারি, ফেরত দিলে ঘণ্টার কাঁটাটা আমার কাছে রেখে ফেরত দেবো। আপনার হাত দুটো যেহেতু আমার, কাজেই ওটাও আমার! আপনি ঢাকায় নেমেই নালন্দার ঠিকানায় ক্যুরিয়ার করবেন কিন্তু! প্রিয়, আমাকে একটা তিন-ইয়ে-ছয় গিফট করবেন? আপনাকে বুকে জড়িয়ে রাখতে ইচ্ছে করে, সেটা তো আর হবে না, তাই অন্তত আপনার দেয়া ইয়েটা ইয়েতে জড়িয়ে ইয়ে…….; বিনিময়ে আমি আপনাকে পুরো বৈশালী গিফট করে দিব! যান, বৈশালী আপনার! শুধু ওখানকার মেয়েগুলো ছাড়া! (আবার বলবেন না যেন, এ বৈশালী লইয়া আমি কী করিব?)

মেসেজটা দেখেন না কেন? আমার 3-ইয়ে-6 পাওয়া তো মিস্‌ হয়ে যাবে তো আপনি মেসেজ না দেখলে!

আপনার ডাস্টবক্সে ফেলার জন্য আপনাকে আমার একটা অটোগ্রাফ দিতে ইচ্ছে করছে। বিশ্বাস করুন, খুব সুন্দর করে সিগনেচার করব। হাতের লেখা বিশ্রী হলেও সুন্দর লেখা বেরোবে—এমনই একটা কলম চাই! আসার সময় মনে করে কিনে নিয়ে আসবেন, কেমন?

এয়ারপোর্টে গিয়ে এখনই বসে থাকি? কাল কয়টার ফ্লাইটে আসছেন? একটা সেলফি প্লিজ…….ব্রাশ না-করা দাঁতে হেসে তুললেও চলবে। আপনার ভয়েস শুনতে ইচ্ছে করছে, ফোন দিতেও পারছি না। ফোন বিজি বিজি বিজি…….এত কীসের বিজি আপনি? বৈশালীর কোন বুড়ির সাথে প্রেম করছেন, হুঁ? থলে পাওয়া যায় ঢং রাখার, বৈশালীতে? আমার ‘ওইটা’ কেনা হয়েছে তো? সেলফি দিতে হবে না হুহহহ্‌, ঢংমাস্টার একটা! আমি এখানে তোমাকে ৩-ইয়ে-৬ পরে সেলফি দেয়ার জন্য বসে আছি না? আহ্‌, জানি তো, মাথায় তো শুধু ও-ই ঘোরে!

যান, কিচ্ছু লাগবে না। শুধু সেইফলি আসেন! (এটাও সিন হবে না, জানি!…….আর কিছু না হোক, অন্তত আমাকে বোকা বানাতেও তো কখনও মেসেজ সিন করতে পারেন!)

টিনের চালের ফুটো দিয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে, তাই প্রথমে দেওয়া হল একটা ছোট বাটি, তারপর একটা বড় কটোরা, এরপর একটা বালতি, ওতেও হল না বলে ড্রাম…….অবশেষে নাহয় একটা পুকুরই! বৃষ্টির পানি রুখতে কাজ তো করা হচ্ছে, না? পারলে নাহয় আরও বড় কিছু দেয়া যাবে। কিন্তু কেন জানি চালের ছিদ্রটা বন্ধ করার কোনও উদ্যোগ নেই। এক শ্রেণীর মানুষ ছিদ্রটা যে বন্ধ করতে হবে সেটাই বোঝে না, আর আরেক শ্রেণীর মানুষ কী জানি এক অদ্ভুত কারণে ফুটোটাকে পুষে রাখে। দরকার হয় পুকুরের বদলে সাগর দেবে, তবুও ফুটোটাকে রেখেই বাঁচবে!

ভাবনা: একশো একান্ন।

……………………………………..

মমতাময়ী মাকে মা দিবসের শুভেচ্ছা। স্যার, কী গিফ্‌ট কিনেছেন মায়ের জন্য? দেখাবেন একটু? আপনি কোথায়? কুন্দপুর চলে যাচ্ছেন না তো আবার? বাসার অ্যাড্রেসটা দিচ্ছেন না কেন? আমি আপনার বাসায় আসতে চাই। শুধু একটা শর্তে রাজি হচ্ছি না বলে আপনি আমার সাথে দেখা না করে আমাকে এতটা অপমান করতে পারেন, কষ্ট দিতে পারেন! এটা যদি আপনার মানবধর্মে কুলোয়, তবে সত্যিই আমার আর কিছু বলার নেই।

ফোনটা রিসিভ করুন প্লিজ। মা দিবস উপলক্ষে আমাকে ছাড় দিন। প্লিজ আসতে দিন আপনার কাছে। একটু দেখব আপনাকে। আর কিছুই চাই না। কী হল? আরে বাবা আমাকে তো ইক্ষাকু থেকে আসতে হবে। কেন বুঝতে পারছেন না আমার এখনই রওয়ানা দেয়া উচিত? এত দেরি করছেন কেন? কী হল?

রাগে দুঃখে কষ্টে আপনাকে শান্তি মত খুন করে ফেলতে ইচ্ছে করছে। দাঁত একদম বুলডোজারের নিচে ফেলে পিষে ফেলব। জানেন, আমি আপনাকে কী করতে পারি?……….আমি আপনাকে কিছুই করতে পারি না।—আর আপনি এটা খুব ভাল করেই জানেন। সমস্যাটা ওখানেই! ভাল্লাগেনা যত্তোসব ফালতু!

একটা ধর্মীয় প্রোগ্রামে এসেছি। অনেক অনেক অনেক মানুষ। মানুষগুলাকে অকারণেই কিলাইতে ইচ্ছে করতেসে। আপনার একার সব কিল ওরা সবাই মিলে খাবে। অসুবিধা কী?

একটা বাসে একা আমি। আপনার ওখানে চলে যাচ্ছি। বাসে ড্রাইভারও নেই, কিন্তু বাস চলছে। আমার কী নেমে যাওয়া উচিত? কল্পনার ভূত কি কামড়ায়?

এখনও কিছু খাইনি। শুধু পানি ‘পান’ করেছি।

: আজব! তুমি না খেলে আমার কী?

: এহহহ্‌ আমি না খেলে আমার কী? হুহহহ্‌!

ভালয় ভালয় বলে ফেলেন তো কবে নালন্দা আসছেন! বাইরে দেখা করা তো বেশ ঝামেলার! দেখা যাবে, আপনাকে খুন করার মহৎ উদ্দেশ্যে গলাচিপা দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি, ঠিক সে সময় কেউ বলে বসবে: “আরে পিয়াস ভাইয়া না?” কিছুদিন পর বাসায়ও দেখা করা যাবে না। হঠাৎ বাসার কোনও একটা ফার্নিচার দাঁত কেলিয়ে বলে বসবে: “হ্যালুউউউ পিয়াসসস্‌…….!” হুহহহ্‌!

অ্যাই পি…….অ্যাই! একটা ফি’র ক্ষিধে পেয়েছে। হবে? সাথে পি’ও পেয়েছে। অ্যাই পি, আই পি! (সিরিয়াসলি) আপনি একটা পিইইই…….(সত্যিই তো ‘পি’!)

আমার কাছে নতুন কোনও বই নেই পড়ার, টাকাও নেই নতুন কোনও বই কেনার। আপনার বাসাটা একটু ধার দেবেন প্লিজ? বাসাটা একটু ধার দিলে কী এমন হয়? বইগুলোর সাথে একটু থাকতাম! হুহ্‌!

বৃষ্টিভেজা লালবাগ কেল্লায়

আকাশটাকে সঙ্গে নিয়ে

মাটিকে স্পর্শে রেখে

চলো ভিজি!

বৃষ্টিজলে

শুদ্ধ হই।

………..ভিজবে?

শান্ত সুন্দর স্নিগ্ধ বৃষ্টিদুপুর…….

খুব করে যে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করে—এই ‘ইচ্ছে’টা বলে ফেলতেও ইচ্ছে করে।

জানেন, সেদিন এক দোকানদার আমাকে ১৫ টাকা ঠকিয়ে পরদিন সেটা ফেরত দিয়ে সরি বলেছে। অবশ্য সব ঠকবাজ আবার এক নয় যে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে পরে অনুশোচনায় মরবে। কিছু মানুষের জন্মই হয় অন্যকে ঠকিয়ে হাসিমুখে বাঁচার জন্য। আর কিছু মানুষ জন্মে সব বুঝেও হাসিমুখে ঠকে বাঁচার জন্য।

শতাব্দীর সমাহার

পাথুরে চূর্ণ মন

নিঃশব্দের কোলাহল

ক্লান্ত মায়াময় ছায়া

সময়ের দুরন্ত ছুটেচলা

অবশেষে……

কেবলই একটা দীর্ঘশ্বাস—জীবন!

সভ্যতার বেড়াজালে আটকে পড়া

অসভ্যতার উন্মাদ উচ্ছলতা

খোলা চোখেও বদ্ধ অনুভূতি

কেবল কাগজে আটকে থাকা—বিবেক!

বইয়ের সাথে সংসার। সে সংসারে দৃশ্যমান আপন কমে, অদৃশ্য আপন বাড়ে। সে আপনদের সময় দিই। হোক তারা মৃত কিংবা জীবিত, কাল্পনিক কিংবা বাস্তব; ওদের বড় আপন ভাবি, ওদের দুঃখে ওরা নিজেরা কাঁদুক কিংবা ভীষণ হাসুক—আমি কাঁদি, প্রায়ই কাঁদি, ডুকরে কাঁদি। আমার দুঃখে, মৃত্যুতেও ওরা কেউ কাঁদবে না। অথর্ব বই নিঠুর প্রিয়ার ঘোর প্রতিদ্বন্দ্বী সাজে কোন যাদুতে! আহ্‌! কী বিশ্রী শান্তি! ভালোবাসার প্রত্যুত্তরহীন ভালোবাসায় ওদের বাঁচিয়ে রেখেছি, নিজে বেঁচে আছি।

প্রাপ্তি? হয়তো কেবলই অসহ্য যন্ত্রণা—যে যন্ত্রণা নিবারণের কোনও উপায় নেই—সে যন্ত্রণা বুকে আটকে বেঁচেথাকা; বুঝে গেছি, ভালোবাসা বাঁচিয়ে রাখতে মানুষ বড্ড কষ্ট সহ্য করতে ভালোবাসে—যার নিবারণের উপায় কোনওদিন জন্মায়ইনি, সে যন্ত্রণার মৃত্যুর প্রশ্নও নেই; তবু তা নিয়েই হাসিমুখে জীবনযাপনের নিপুণ অভিনয়—কেউ ধরতে পারে না, বইয়ের পাতায়-পাতায় কাগুজে মানুষ কিছু বুঝে মুচকি হাসে হয়তো; তবু লাভ নেই—হাজার বছরের পুরনো কিংবা অধুনাতন গল্পে আটকেপড়া চরিত্র তো আর আমার জন্য জীবন্ত হয়ে উঠবে না!

কথোপকথন নেই, ভালোবাসা নেই, সহানুভূতির লেশটুকুও নেই; তবু ওই নির্দয় বইয়ের সাথেই অসহায় বাঁচা—শুধুই কাঁদতে বাঁচা!

ভাবি, তবু………বইই ভাল!

ভাবনা: একশো বায়ান্ন।

……………………………………..

সিক্সটিনাইন। আপনার প্রিয় সংখ্যা। আমারও প্রিয় সংখ্যা সিক্সটিনাইন। 69…….৬৯…….ছয়নয়…….উল্টো করে, নয়ছয়। আমার প্রিয় নয়ছয়। এলোমেলো জীবনই আমি, আমিই এলোমেলো জীবন। আমি জানি, আপনি কেন আমাকে আপনি 69 পছন্দ করেন বলেছেন। (আমাকে যতোটা বোকা ভাবেন, ততোটা বোকা আমি নই। আমি আসলে—তার চেয়েও বোকা!) আপনার যা পছন্দ, আমারও তা-ই পছন্দ। অথচ দেখুন, দুজনের একই পছন্দের কারণে কত তফাৎ!

লাভ নেই বলে আমার কাছে ঘেঁষেন না। ইসসস্‌ লাভ-লাভ করে ছেলেটার জীবনটা গেল! আপনি ভাল হয়ে যান না! আপনি কী কী সব বলেন আমাকে! আমি শুনি আর আমার কান গরম হয়ে ওঠে। আপনার বাসার শোকেসের যে কোনও একটা পুতুল জীবন্ত হয়ে একদিন আপনাকে তুলে আছাড় দিবে, দেইখেন!

হয়তো আমিই গাধা—যেদিকে বৃষ্টি, ছাতাটা ধরি তার উল্টো দিকে, কেবল বৃষ্টিতে ভিজি। ভাল্লাগছে না কিছু, নিজের উপরেই বিরক্ত লাগছে।

একজনকে জাস্ট ব্লেন্ড করে ফেলতে ইচ্ছে করছে। যদি না করেছি! হুমম্‌! সামনে আসুন না প্লিজ, আপনাকে একটু ব্লেন্ড করি। বেশি ব্লেন্ড করব না, একটু করে। প্লিইইইজ্‌!

আপনার ‘সে’ আপনাকে কোন কথাটা সবচেয়ে বেশি বলবে, জানেন? “এত কেন যন্ত্রণা কর?” সত্যিই গো পি, ওই বেচারির অনেক কষ্ট হবে। সবচেয়ে বেশি কষ্টটা কোথায় পাবে, জানেন? যে ব্যাপারটা তাকে প্রায় মেরে ফেলার মতো অবস্থা করবে, অথচ সে একই ব্যাপারটা আপনি ঠিক তুড়িতেই উড়িয়ে দেবেন, তা হল…….তার কষ্টটা যে ঠিক কোথায়, আপনি কখনও সেটা খুঁজেই পাবেন না। আমার কথার সাথে আপনার জীবন পরে মিলিয়ে নেবেন।

এই যে এত মানুষের সাথে মেশা, এত-এত অভিজ্ঞতা—এসব না সত্যিই বাস্তব জীবনে খুব কমই কাজে লাগবে।

এই গাধার যা মনে হল তা-ই বললাম গো! শুধু বলতে পারছি না…….রাগ করো না, কারণ আমার সাথে তো কেবল রাগই করা যায়, না? আমিও যে রাগ করি, কেউ যে আমার রাগ‘মোচন’ করে দেয় না, তার বেলা?

আপনার কথা ভাবতে-ভাবতে মাথা ব্যথা করছে। বমি চলে আসছে মাথাব্যথায়। প্লিজ দিয়ে দেন না একটা সেলফি! আপনাকে দেখব। আপনাকে দেখলে আমি স্বর্গে যাবার পাসপোর্ট পেয়ে যাব!

এত পাপ করেন আপনি, এটা মাথায় এলে আর স্থির থাকতে পারি না। আপনাকে একবিন্দুও পাপ করতে দিতে ইচ্ছে করে না যে। “নিজেকে সামলাতে পারি না; যা করি তা হয়তো পাপ, তবু করে ফেলি”—এমন আর বলবেন না প্লিজ, ‘হয়তো’টা বাদ দিয়ে বলেন। পাপ আমরা করতে পারি, কিন্তু তাই বলে পাপকে পাপ মানব না, তা তো হয় না। মাথাব্যথাটা বানিয়েছেন আপনি, এখন এটা কমিয়ে দেন। কীভাবে দেবেন, জানি না। যেমনে পারেন দেন!

আমাদের দুজনের ইচ্ছেগুলো এক, চাওয়াগুলো এক—অথচ, কারণগুলোতে…….দুজনের মধ্যে আকাশপাতাল পার্থক্য।

আমার মধ্যে সত্যিই কি তবে কিছুই নেই? আচ্ছা, আপনার বিয়ের পর কি আপনাকে মেসেজ দেওয়া নিষিদ্ধ? সবসময়ই যা মনে আসে, বলা যাবে, এখন যেমনি বলি? যে কোনও মেসেজ দেয়া যাবে? বলেন না পি!

কিছুই বলেন না কখনও। সত্যিই তবে কিছুই নেই আমার মধ্যে। ঘাসের দড়ি ঝুলাতে হবে যে আমার! ঝুলে পড়ব, পি?

বুঝতে পেরেছেন আমি কী বলছি?

চুপ হয়ে যান কেন, পি?

আমার কথাটার উত্তর দিন। একেবারে সৎ উত্তর চাই।

আমার খুব ভাল লাগবে, আপনি যদি স্পষ্ট করে আমাকে উত্তরটা দেন। আমি এটা অনেকদিন ধরে আপনার কাছে জানতে চাচ্ছি। বলুন না প্লিজ!

আমার মধ্যে কি শরীর ছাড়া সত্যিই আর কিছু দেখতে পান না আপনি?

“তোমার বাইরের সৌন্দর্যের চাইতে ভেতরের সৌন্দর্যটাই আমাকে বেশি টেনে নিয়ে যায় তোমার কাছে।”

অনেক বেশি খুশি হলাম! খুব খুব খুব বেশি। খুশিতে আপনাকে জড়িয়ে ধরে ফেলতে ইচ্ছে করছে। একবার মন থেকে জড়িয়ে ধরা—অনেকবার শারীরিক মিলনের চেয়েও অনেক অনেক অনেক বেশি কিছু। অনেকদিনের একটা চাপাকষ্ট থেকে মুক্তি পেলাম। চোখের পানি সেটার জানান দিচ্ছে।

আপনার কাছ থেকে আসা একটা কাল্পনিক উত্তরও চোখে পানি এনে দিল। অবশ্য আপনার বাস্তব উত্তরও চোখে পানি আনে, তবে সে পানির উপলক্ষ ভিন্ন। আচ্ছা, আপনি এমন কেন?

উৎকট গন্ধে প্রায় বমি চলে আসার উপক্রম—চুলে অতি অল্প একটু ক্যাস্টর অয়েল দিয়েছিলাম, তাতেই! অথচ, এই গন্ধযুক্ত ক্যাস্টর অয়েলই একবারে এক বোতল করে তিন বোতল খেতে হয়েছিল অসুস্থতার জন্য। ওহ্‌! কী বিশ্রী অভিজ্ঞতা! আল্লাহ্‌, মাফ কর। পরিস্থিতির চাপে মানুষ অনেক সময় যে কোনও কিছু করতেই বাধ্য থাকে। জীবনও এমন। যে পথে কেউ কখনও একটাও পা ফেলবে না বলে ধরে নেয়, জীবনটা তার শেষই হয় সে পথে হেঁটে-হেঁটে—হয়তো নিজের দোষে বা গুণে, কিংবা কখনও, নিয়তির ফাঁদে পড়ে। কেউ অপরাধ করেছে বলে সাজা পায়, কেউ অপরাধ করেছে বলেই পুরস্কার পায়। এ জীবনে তো আর কম অপরাধীকে তাদের কৃতকর্মের জন্য পুরস্কৃত হতে দেখলাম না! মানুষ নিজের পছন্দের পথে হাঁটতে পারুক, অথবা বাধ্য হয়ে অনিচ্ছার পথটার সাথে নিজেকে দ্রুত মানিয়ে নেয়ার শক্তিটুকু অর্জন করতে পারুক—একটা ভেজা প্রার্থনা রইল তাদের জন্য।

রাতের গভীরতা বাড়ে, সাথে নৈঃশব্দ্য। সব শব্দ নিঃশব্দে পরিণত হয়। কিন্তু সত্যিই কি তা হয়? কিছু কান্নার শব্দ থাকেই, কিংবা কিছু হাসির; কিছু শব্দ কেবলই অনুভূতির, কিছু রাগ কিংবা অভিমানের। শব্দরা থেকে যায় নিঃশব্দের নাম করে—সবাইকে ফাঁকি দিয়ে নিজের সাথে নিজেকে একা রেখে দিতে।

ক্রাশ খাই শুধু। ক্রাশে-ক্রাশে পিএইচডি করে ফেলছি!

: ও ক্রাশছুঁড়ি! পোস্টডকের আর কত দেরি?

My heart has broken into billion billion billion pieces seeing my handsome rickshaw wala!

এখন হামাগুড়ি দিয়ে হার্টের টুকরাগুলারে টুকাচ্ছি।

নিজের সমস্তটা দিয়ে একটা ভালোবাসাময় জীবন প্রত্যাশা করে সেখান থেকে কষ্ট পাওয়ার চেয়ে জীবনটা কষ্টের হবে—এমন জেনে বাঁচার সত্যকষ্ট ঢের ভাল।

আপনার ছবি দেখলে যেমন একরাশ ভাললাগা কাজ করে, ঠিক একই সাথে বুকের মাঝে চিনচিনে এক ব্যথা শুরু হয়ে যায়। কেন এমন হয়? আনন্দ আর বেদনার রেখাটা কি তবে এক দাগেই টানা?

ভাবনা: একশো তিপান্ন।

……………………………………..

এই বৃষ্টি, এই!

একটু ছুঁয়ে আয় না ওকে!

দেখব ছুঁয়ে ভীষণ তোকে,

সে ছোঁয়াতেই ওকেও ছোঁব।

শুভ বৃষ্টিদুপুর।

এই যে, ইগোর ডিব্বা! মাঝেমধ্যে ইগোফিগো একটু শিকেয় তুলে রাখলে হয় না? হুহহ্‌! তাহলে তো এই বেচারি একটু নিঃশ্বাস নিতে পারে। মৌসুমী ফলটল খাওয়া হচ্ছে তো? নাকি একা-একা থাকা হয় বলে কিছুই না খেয়ে বাসার লোকজনকে কষ্ট দেয়া হয়? হুমম্‌? ঠিক মত খাওয়া হয় তো? নাকি অফিসে যাওয়ার আগে মনেই থাকে না ব্রেকফাস্ট করার কথা?

এই যে মিস্টার! আপনাকে বাত্তি দিয়ে খুঁজি, বোঝেন? বাত্তি দিয়ে খোঁজা মানে, ফোন দেয়া। বাতির কুপি হচ্ছে সম্পর্ক আর কেরোসিন হচ্ছে অধিকার। বাতি আছে, কুপি আছে, বাতি জ্বালানোর ইচ্ছে আছে…….হায় শুধু কেরোসিনটাই নেই! তাই আমার বাতি জ্বলে না, আলো ছড়ায় না, আমার এ ঘর অন্ধকারই থাকে।

সুন্দরের প্রতি মানুষের অসুস্থ আকর্ষণ (সুস্থ আকর্ষণে সমস্যা নেই), সুন্দর হয়ে ওঠার এক ধরনের প্রবল আহত ইচ্ছে, “কেন আমি সুন্দর নই?” এ নিয়ে মনে সবিশেষ যন্ত্রণা পুষে রাখা, “কেন অন্যরা এত সুন্দর?” তা নিয়ে বিশেষ কাতরতা, কেবল ‘সুন্দর’ বা ‘সুন্দরী’দের নিয়ে মানুষের বিশেষ মাতামাতি দেখে নিজে অসুন্দর বলে কষ্ট পাওয়া, নিজেকে মেকি সৌন্দর্য দিতে যা নয় তা করা, শেষমেশ অন্তত ভার্চুয়ালি সুন্দর হয়ে উঠতে পেরে “আমি সুন্দর! আমি সুন্দর!” এমন ভেবে শান্তি পাওয়া, এবং সত্যি সত্যিই সত্যিকারের সৌন্দর্যে নয়, বরং প্রলেপযুক্ত এবং ইফেক্টযুক্ত সৌন্দর্যে অন্যদের মুগ্ধ করতে পারা!—এসব দেখলে মনের ভেতর তাদের জন্য একটা মায়াহীন কষ্ট অনুভব করি। কেন মানুষ ভুলে যায় পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর এবং সবচেয়ে অসুন্দর মানুষটিকে একই সৃষ্টিকর্তা সৃষ্টি করেছেন, তিনি নিশ্চয়ই এমন কিছু করেন না যা অনর্থক এবং অসুন্দর, মানুষের মনের সৌন্দর্যটাই মানুষের অর্জন—তা দিয়ে মানুষ পৃথিবী জয় করতে পারে!

সুন্দরের প্রতি অবশ্যই আমারও আকর্ষণ আছে। সৌন্দর্যের চর্চা করতে আমিও পছন্দ করি। আমি শুধু প্রলেপযুক্ত মেকি সৌন্দর্যের বিপক্ষে যার চর্চা করতে-করতে মানুষ ভেতরের আসল সৌন্দর্যের যত্ন নিতে ভুলে যায় আর কখনও-কখনও অন্যদেরও ভুলিয়ে দেয়। আমি আমার ভেতরটাকে যত্নে রাখি, ওতে বাইরেরটা আপনিই যত্নে থাকে।

মাকে নিয়ে একা থাকি। ঢাকায় একজন মা আর একটা মেয়ের একা ভাড়াবাসায় থাকাটা খুব একটা সহজ নয়। মেয়েরা এ সমাজে সবার চোখে পাবলিক প্রপার্টি হয়ে বাঁচে। যে মেয়ের বাবা নেই, ভাই নেই, তার অবস্থা আরও ভয়াবহ। সমাজের এক অংশ অসহায় মেয়ে পেলে বড় খুশি হয়, আরেক অংশ স্বাধীনচেতা মেয়ে পেলে বড় খুশি হয়—কারণ, এ দুই ধরনের মেয়েকেই ভোগ করা সহজ। নারী স্বাধীনতাই বলি, আর নারী পরাধীনতাই বলি, দুটোই নারীকে বুঝিয়েশুনিয়ে ভোগ করার বুদ্ধি ছাড়া আর কিছু নয়। নিজেকে আরও কতটা নির্দিষ্ট গণ্ডিতে আটকে রাখা যায়, আমার জানা নেই। সমস্ত ক্রোধ যেন একেবারে আছড়ে-আছড়ে পড়ে নিজের উপর। বাইরে বের হলে ফেরার ভয় হয়। তবুও অনেক ভাল আছি। শরীরে কোনও রোগ নেই, খাওয়ার কষ্ট নেই। সৃষ্টিকর্তা অনেক ভাল রেখেছেন। সবাই ভাল থাকুক।

আচ্ছা, আপনি কি দিনদিন যন্ত্র থেকে অধিকতর যন্ত্র হয়ে যাচ্ছেন? কেন বললাম, পরে বলব। আপনার প্রিয় ‘সে’ কেমন আছেন? মা, বাবা, ছোট, ছুট্টি, আপনি আর ‘সে’…….ইসসস্‌ কী সুন্দর! ভাবতেও বড় ভাল লাগে। খুব ভাললাগায় চোখে পানি এসে যায়। চোখের পানিকে বেঁধে রাখার খুব শক্ত দড়ি হয় না, তাই না?

কখনও পূরণ হবে না—এমন আভাস পেলেই যেন ইচ্ছেগুলো আরও খ্যাপাটে হয়ে ওঠে…….

“চলে আসো তো পি, প্লিজ চলে আসো। এক্ষুনি আমার চোখের সামনে চলে আসো।” (আপনাকে ফোন করে ঠিক এই মুহূর্তে ঠিক এমনি করে বলতে ইচ্ছে করছে।)

পি, একটা ইচ্ছের কথা বলি? ভাত মাখিয়ে নিজ হাতে আপনাকে খাওয়াব। আপনাকে ধরে জোর করে তিন প্লেট ভাত ঘন মসুরির ডাল, আলুভর্তা আর ডিম-বেগুনভাজি দিয়ে মেখে খাইয়ে দিতে ইচ্ছে করছে! আমার হাতের লোকমা খেতে আপত্তি আছে আপনার? না থাকলে একদিন খাওয়াব। আপত্তি থাকলেও সমস্যা নেই—তাও খাওয়াব! অবশ্য, আপনার সাথে দেখা হবার আগেই আমি মরে পেত্নী হয়ে যেতে পারি! কিংবা আপনিই মরে ভূত হয়ে যেতে পারেন! (সুন্দর অসুন্দর—দুই ধরনের মানুষই মরার পর ভূত হয়, প্রিন্স হয় না।) না না, আপনি আগে মরবেন কেন? তাহলে আমি কী নিয়ে বাঁচব? আপনার প্রিয় ‘সে’কে ভালোবাসবে কে? আপনার ফ্যামিলির কী হবে? আপনি বরং বেঁচে থাকুন।

স্নিগ্ধশান্ত কিংবা উত্তালমাতাল, বর্ণহীন বা নীল সাগর ভালোবেসে, তোমার তীর ঘেঁষে, রোজ তোমাতে ভিজি বলে আমায় তুচ্ছ করো না।

তোমার জানা নেই, তোমার চেয়ে আরও বিশাল এক সাগর আমি আমার ভেতরে বহুকাল ধরে লালন করে আসছি; তোমার উন্মাদ ঢেউয়ের যন্ত্রণার মাদকতা আমি বুঝি।

সে সাগর ঢেউ তোলে না, সে সাগরের দিকে তাকিয়ে যদি ভেবে নাও, এ সাগর ঢেউ তুলতে জানে না—খুব ভুল করবে।

একদিন সুতোয় বেঁধে মেসেজ দিব। সবসময় তো আর মনটা সব কিছু বুঝতে চায় না; হয় না অনেকসময়—অসহায় মেসেজটাকে দেখলে মনটা খারাপ হয়ে থাকে, বুঝিয়েও ভাল করা যায় না?…….তখন সুতো ধরে মেসেজটাকে আমার উল্টোদিকে হ্যাঁচকা এক টান মেরে দূউউউউরে পাঠিয়ে দেবো!

আপাতত, আর বকব না। পিরিয়ডের ব্যথায় চোখে হলুদ সর্ষেফুলের পরিবর্তে লাল গোলাপ দেখছি। মনে হচ্ছে, গোলাপের বাগানে বসে-বসে প্রলাপ বকছি।

ভাবনা: একশো চুয়ান্ন।

……………………………………..

যারা ভণ্ড নয়, তাদের কাছে ভণ্ডরা ভণ্ড; আর ভণ্ডদের কাছে যারা ভণ্ড নয়, তারা ভণ্ড। আপনার কাছে কারা ভণ্ড? (উত্তর দেবেন না, উত্তর পাওয়ার আশায় প্রশ্নটি করিনি। আপনার সত্যকথন আমার শুনতে ভাল লাগবে না।)

এই যে স্যার, প্রোফাইল পিকচারটা সরান প্লিজ! মেয়েদের মতো লাগছে কিন্তু! একটা থ্রি-ইয়ে-টু ইয়ে গিফট করে দিবনে!

স্বার্থের টান থাকলে, কারও বিড়ালকে তো বটেই, বিড়ালের ছবিকেও কুশল জানানোর সময় মিলে। আর স্বার্থ না থাকলে, যদি তুমি ডেথবেডেও শুয়ে থাক, তোমার আকুল মনের “Pray for me” কথাটা একটুখানি মানবে, সে সামান্য সময়ও কেউ তোমাকে দিবে না। এটাই বাস্তবতা, মেনে নিতে হবে। মেনে নিতে না পারলে নিজের মনে যতো খুশি কষ্ট পুষো, কারও কিচ্ছু এসে যাবে না। জীবন সত্যিই প্রতি মুহূর্তে শেখায়।

মৃত কাউকে দেখতে যাওয়ার চেয়েও যদি কারও কাছে চিকার হাগুমুত পরিষ্কার করা বেশি ইম্পরট্যান্ট মনে হয়, তবে সে সেটাই করবে। এটা তার রাইট, তাই না? এক পৃথিবী সমান কষ্ট তুমি পেতেই পার, কিন্তু সাথে এটাও তোমাকে মানতেই হবে, তোমার ওই অসীম কষ্টের দায় নিশ্চয়ই তার নয়।

প্রশ্ন: মোরাল অব্‌ দ্য স্টোরি কী?

উত্তর: হুমায়ূন আহমেদের ‘প্যাকেজ সংবাদ’ নাটকের “মারো চিকা মারো চিকা মারো রে…….” গানটি অতি উপাদেয় একটি গান।

শালার ভালোবাসা! কী করলে ভালোবাসা কমবে? মাথা ন্যাড়া করে এই এক জীবন কাটিয়ে দিলে ভালোবাসা কমে যাবে? নাকি, আরও বেশি কিছু করতে হবে?

আমার সোনার বাংলা…….(আসলে এর পরের লাইনটা লিখেছি, নিজ দায়িত্বে পড়ে নিন।)

চুমু খেতে ইচ্ছে করছে। এখন আমি কী করব?

ভুল ভেবো না গো, তোমার ঠোঁটে, চোখে, কপালে চুমু খাব; ‘অন্য কোথাও’ না।

আচ্ছা, ‘অপমান গাছ’ পাওয়া যায়? কিনে আমাকে একটা গিফ্‌ট করে দিন। রোজ সে গাছে ‘অপমান ফুল’, ‘অপমান ফল’ ধরবে। আমি অপমান ফুল খোঁপায় গুঁজে টোটো কোম্পানির ম্যানেজার হয়ে ঘুরে বেড়াব, অপমান ফলের জুস বানিয়ে ওতে বিটলবণ আর মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে এক ঢোঁকে গিলে ফেলব। অপমানে-অপমানে আমি সবসময় একদম অপমান-বিভোর হয়ে থাকব। আপনাকে আর কষ্ট করে আমায় অপমান করতে হবে না।

আপনার উপর আমার আমার ৫ কেজি রাগ, ১০ কেজি অভিমান, আর ১৫ কেজি কষ্ট হয়েছে। আপনার বাম কানটা আমার লাগবে! ওটা দিয়ে কী করব আমি জানি না, কিন্তু লাগবে। (দোহাই লাগে, ‘লাস্ট ফর লাইফ’এর ভ্যান গঘের কথা মাথায় ঘোরাবেন না যেন আবার!)

: হায় মৈত্রী! তোর আজকাল কী হল রে? এমন অশান্ত হয়ে উঠলি কেন হঠাৎ?

: কী করব বল! সবই যে হতচ্ছাড়া হরমোনের খেলা! আমার কী দোষ?

একটা সেলফির জন্য ওয়েট করতে-করতে আমার হাড়ে দূর্বা গজায়, সাথে বে-গুণের খেত—বোনাস হিসেবে।

ইসসসস্‌ ললনাদের লম্বা সিরিয়াল আর শেষ হয় না। ওকে, আমি যাই। আপনি পুদিনার রসে ভেজানো টিকটিকি-ফ্রাই খান। শুভ অর্ধেক রাত অর্ধেক সকাল!

রেখাংশের দুই প্রান্তের পারস্পরিক গুরুত্ব একই হবে—এই অংক কষলে, জীবনের অনেক গল্প যে শুরুর আগেই শেষ হয়ে যেত। হায়, জীবনের রেখাংশ রেখায় অশেষ হয়, জীবনের রেখা রেখাংশে শেষ হয়ে যায়।

বলবেন, এত জ্বর কীভাবে এল? ঠাণ্ডা বাধিয়েছেন কেন? একটা সেলফি দিন না, আপনার কী অবস্থা একটু দেখব। দিতে ইচ্ছে না করলে দিতে হবে না। অনিচ্ছায় কিছু করার কোনও মানে নেই, যদিও জীবন চলে মূলত…….অনিচ্ছায়।

এত জ্বর কীভাবে হল? আপনি অনেক অনেক অনেক খারাপ, প্রিয়। অসুস্থতায় ডাক্তার দেখান না। আপনি তো ভাবেন, আপনি শুধু আপনার। আপনি আমার নাহয় না-ই হলেন, কিন্তু যারা আপনাকে ভালোবাসে, যাদের খোঁজ আপনি জানেন না, কখনও জানবেনও না, তাদের মন ভাল রাখতেও তো আপনি ভাল থাকতে পারেন। যা ইচ্ছা তা-ই করেন, যান! প্রার্থনা করি, জ্বরটা তাড়াতাড়ি সেরে যাক।

শোন না জ্বর! তোকে আইসক্রিম খাওয়াব, চকলেট দিব, অনেকগুলো বেলুন কিনে দিব; প্লিজ তুই চলে যা।

আপনাকে অনলাইনে দেখতে অসহ্য লাগছে। আপনি প্লিজ প্লিজ প্লিজ চলে যান এখান থেকে। রেস্ট নিন। ঘুমানোর চেষ্টা করুন। আর…….আপনাকে ধন্যবাদ। (কোনও কিছুর জন্য না)

যান নাআআআআ…….সৃষ্টিকর্তা সবার মঙ্গল করুক।

জ্বরের জন্য নিজে-নিজে ডাক্তারি না করে ডাক্তারের কাছে যান প্লিজ। সবসময়-সবসময়ই কেন পণ্ডিতি করা লাগবে আপনার? আপনি অসুস্থ হয়ে থাকলে আপনার মায়ের যে অনেক কষ্ট হয় জানেন না? মা-বাবা না জানলেও উনাদের কষ্ট হয়, কারণ উনারা বুঝতে পারেন, তাদের সন্তান ভাল নেই। এক মা-বাবাই অনেক বেশি কষ্ট পান, আমার কিংবা অন্য কারও কষ্ট সে তুলনায় কিছুই না। ওদের জন্য হলেও যান, প্লিজ ডাক্তারের কাছে যান। ডাক্তার দেখান। এজন্য অফিস থেকে ছুটি নিতে হবে না। অফিস থেকে বের হয়ে সোজা হাঁটা দেন। পরে বলবেন, জ্বরের ঘোর আপনাকে কোথায় যেন নিয়ে গেছে—আপনি এর কিছুই জানেন না। বুদ্ধিটা কিন্তু খারাপ না। ওরকম করেই দেখুন না, কিচ্ছু হবে না।

হায়, জীবনের সব রোগ তো আর প্যারাসিটেমলে সারে না। এটা যদি রোগীরা বুঝত!

যে বোঝে না, তাকে বোঝানো যায়।

যে বোঝে, তাকে বোঝানো দায়।

আপনি দ্বিতীয় টাইপের। সব দায় আমার—এ দায় সম্পূর্ণই স্বেচ্ছারোপিত। (জ্বর কমেছে? একটু করে বলেন না, এখন কেমন আছেন!)

প্রিয় বিকিনিটা দিয়ে দিব তোকে…….জ্বর তবু তুই যা না দূরে, প্রিয়কে আমার দে না ছেড়ে!