ভালোবাসা ও অবহেলা


১. ভালোবাসার যেমন কোনও ব্যাখ্যা হয় না, অবহেলারও সেরকম তেমন একটা ব্যাখ্যা হয় না। কাউকে কেন ভালোবেসেই যাচ্ছি, এটার যেমন কোনও উত্তর হয় না, তেমনি কাউকে কেন অবহেলা করেই যাচ্ছি, সেটারও খুব যুক্তিসঙ্গত কোনও উত্তর থাকে না।


২. অবহেলা করা এবং অবহেলা পাওয়া দুটোই নেশার মতন। যে করে, সে করতেই থাকে; যে পায়, সে পেতেই থাকে। দেখবেন, আমরা যেই মানুষটিকে খুব করে পেতে চাই, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, সেই মানুষটিই আমাদের সবচেয়ে বেশি অবহেলা করে; আবার যে মানুষটি আমাকেই সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয়, আমিও সকালবেলা উঠেই সবার আগে তাকে প্রত্যাখ্যানটা করি।


৩. দুনিয়ায় সবচেয়ে সফল আর খ্যাতিসম্পন্ন অধিকাংশ মানুষ জীবনের যে-কোনও এক বা একাধিক পর্যায়ে যে পরিমাণ অবহেলা পান, আমরা তার সিকিভাগেরও খোঁজ জানি না। যদি জানতে পারি, তাহলে হয়তো দেখব, আমরা যতটা অবহেলা পাই, সেটা তাদের পাওয়া অবহেলার তুলনায় সত্যিই কিছুই না!


৪. আপনি যেই মানুষটিকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেন, যার কাছ থেকে একমিনিট সময় পেলেও নিজেকে আপনি ধন্য মনে করেন, নিশ্চিত থাকতে পারেন, এমন মানুষটিকেও কেউ-না-কেউ অবহেলা করেই। যে অবহেলা করে, সেও অবহেলা পায়; অবশ্য না করলেও পায়। জীবিতাবস্থায় মানুষ অবহেলা পাবেই পাবে! অবহেলাটা সহ্য করে তা থেকে কে কতটা শিখতে পারল কি পারল না, সেটা দিয়েই মানুষের ভাগ্য নির্ধারিত হয়।


৫. অনেকেই অবহেলা পেতে পেতে একসময় হারিয়ে যায়, আর অন্যদিকে, কিছু মানুষের সফলতার পথে হাঁটার প্রথম ধাপটিই হচ্ছে কারও-না-কারও কাছ থেকে পাওয়া অবহেলা। অবহেলা পেয়ে কেউ কেউ হারিয়ে যায়, কেউ কেউবা নিজেকে হারিয়ে যাওয়া থেকে বাঁচাতে পারে।


৬. যদি আপনি একবার আপনার প্রতি প্রিয় কারুর করা অবহেলার বিপরীতে জিতে যান, তবে আপনাকে অন্তত অনুভূতির দিক থেকে জীবনেও আর কেউ কষ্ট দিতে পারবে না। যে মানুষটা অবহেলা সইতে আর হজম করতে জানে, তাকে কষ্ট দেওয়ার তো কোনও রাস্তাই থাকে না আর।