ভাল ঘুমের জন্য পঙ্‌ক্তি

 এতটা ভালো বেসো না আমায়!
তখন দেখবে, তুমি আমার অভ্যেস হয়ে গেছ।
এতটা সুখে বাঁচতে আমি অভ্যস্ত নই।
এতটা তুমিময় জীবন কখনও হয়নি আমার।
ওসব আমায় দেয়নি তো কেউ ভুলে করেও!
 
যখন কণ্ঠে খুব আদর মেখে ভালোবাসি বল,
আমার খুব ইচ্ছে হয়…ইসস, জীবনটা যদি এখানেই থেমে যেত!
মরার আগে খুব বিশ্রী কোনও কথা না শুনে মরার এক ধরনের মজা আছে!
তুমি ভালোবাসি বলে দিলে মনে হয়, অনেকখানি বাঁচলামই তো…আর কত!
তোমার এক মুহূর্তের ভালোবাসাও আমার লক্ষ-কোটি কষ্ট ভুলিয়ে দিতে পারে!
তখন না-পাওয়া নিয়ে আর ভাবি না, আঘাত পেলেও আর কাঁদি না!
অমন করেই বাঁচার যদি অভ্যেসই হয়, তখন আমি থাকব বেঁচে কেমন করে?
দোহাই লাগে, অতটা কাছে এসো না আমার!
 
যখন কেউ একটু দয়া দেখায় আর বলে…মেয়ে, তোমার মনে এত কষ্ট কীসের?
চোখ দুটি বন্ধ করে আনন্দের কোনও ঘটনা ভাবো…কিংবা কোনও মুখ, খুব প্রিয় মুখ…
জানো, তখনও আমার চোখের সামনে তুমিই থাকো!
কিছু মানুষ কষ্ট পেয়ে কান্না করে, ওরা বাদে এমনও কিছু মানুষ থাকে,
যাদের চোখে জল এসে যায় সুখের ঝড়ে!
আমার কখনও সুখ আসে না, কষ্ট আসে না…আমার শুধুই কান্না আসে!
এইসব যখন মাথায় আসে, নিজেকে খুবই একা লাগে…
আর মনে হয়, পুরো পৃথিবী সরিয়ে ওপাশে, আহা, যদি লুকিয়ে যেতাম তোমার বুকে!
 
এই এক জীবনে---
আমি কখনও ভালোবাসা পাইনি।
আমি কখনও বেদনা পাইনি।
আমি কখনও অশ্রু পাইনি।
আমি কেবলই তোমাকে পেয়েছি!
…এই এক পাওয়াতেই আমি যেন পৃথিবী পেয়েছি হাতের মুঠোয়!
তোমাকে পাবার পর ইদানীং এমন করেই ভাবতে ইচ্ছে করে!
 
তোমাকে যখনই খুব পেয়ে যাই, নিজের মতো,
তখন ভয় এসে যায়! এই এতটা ‘তুমি’ রাখবটা কই?
পায়ে পড়ি তোমার, এতটা ভালো আর বেসো না!
আমি যদি পুড়েই মরি তোমার প্রেমে, আমার ছাই যদি উড়তে থাকে তোমারই হাওয়ায়,
তবে সে প্রেমের আর ঠাঁই কী, বলো?
 
ওরা জেনেছে, মানুষ নাকি কেবল আঘাত পেলেই কাঁদে! কখনওবা, পুড়েও যায়!
আচ্ছা, যদি কারও সুখের সীমা আকাশ ছাড়ায়, সে কাঁদে না?
এই আমাকেই দেখ! তোমায় ভালোবেসে যে রাখব কোথাও যত্ন করে,
ওইটুকুরও সুযোগই নেই! এতটা দহন, এতটা সহন…চারিদিকে শুধু সুখের মাতম!
এদিকে আমার ঘরে…শুধুই তুমি! এসব দেখে মাথায় আসে,
অনেক দিনই তো বাঁচা হল, এবার নাহয় বিদায় বলি!
 
যখনই তুমি আমার সামনে দাঁড়াও এসে, ঠিক বুঝে পাই না, কোনদিকে যাই!
তোমার চোখের দিকে তাকিয়ে কখনও কিছুই আমি বলতে পারিনি।
তখন বুঝি, পৃথিবীতে যত শক্তি আছে, তার সমস্তটা জড়ো করলেও
তোমার সামনে সহজ হওয়ার শক্তি মেলে না!
আমি ভয় পেয়ে তোমায় দিয়েছি ফিরিয়ে, তবে তুমি…আবার কেন?
 
এই যে এত ভালোবাসি, কখনও যদি টের পেয়ে যাও,
সেদিন খুবই লজ্জা পাব! আচ্ছা, বলো তো আমায়,
এই মনকে তুমি কীভাবে পড়? ঠিক অবিকল মনটা যেমন, তেমনই তো বল!
যখন তুমি বলেই ফেল…একটা কিছু…এমন কিছু, যা খুব ছুঁয়ে দেয় হৃদয়টাকে,
তখন কোত্থেকে এক ঝড় আসে…এসে গ্রাস করে ফেলে সবই যেন!
অমন একটা সময় এলে, নিজেকে কোথায় লুকাব ভেবে…তোমার বুকটাই আগে দেখি!
 
আমায় যখন বুকে টেনে নাও, জড়িয়ে ধর শক্ত করে,
তোমার হৃৎপিণ্ডটা শুধুই বলে…এখানেই সব! পুরোটা জীবন…এরকমই হয়!
এর আগে কোনও অতীত ছিল না, ভবিষ্যতও থাকবে না আর! এই…এখানেই সব!
আচ্ছা, আমাকেই কেন থমকে দাও অমন করে?
আর কাউকে ভাল লাগে না? সত্যি নাকি?
মনের মধ্যে ওসব এলে, বলি নিজেকেই,
বাঁচা তো এবেলা ভালই হল, তোমাকে পেলাম,
এ যে পরম পাওয়া…কিছুরই আর সাধ নেই তো!
 
এই যে এমন একটা বাজে অভ্যেস তৈরি করে দিচ্ছ,
এত ভালোবাসা দিয়ে দিচ্ছ নিঃশর্তেই,
এর চাইতে কম পেলে তো…বুঝি মরেই যাব!
আর কখনও কিছুই না পাই…অমন কিছু ঘটেও যদি,
তখন তো বুঝি পথের ধুলোয় নামতেই হবে ভিখিরিবেশে!
 
যার বুকপকেটে এক টুকরো ভালোবাসা থাকে না, সে সত্যিই অভাবী!
আর কারও দরোজায় ঠেকাব না মাথা, জীবন তো একটা পাওয়াই হল,
আমার এখন ভাবনা কীসের?
এক জীবনে একটা জীবন…যথেষ্ট তো! এক জন্মেই ভালোবাসা এত…মানুষ কি পায়?
 
এই যে তুমি দুম্‌ করে বলেই ফেল, ভালোবাসি…খুব মায়া হয়, জানো?
ভালোবাসো কেন, সেটা না বুঝেই নিজেকে দিই ঋণের বোঝা!
এত ঋণ কেন? এত-এত ঋণের শোধটা হবে কেমন করে?
এই ঋণ তো আর এক জনমে নয় ফুরবোর
এত-এত ঋণ, আমি শোধ করবই-বা তা কেমন করে?
 
যদি এমন জায়গা থাকে…আমার দেওয়ার মতো, বোলো নিঃসংকোচে!
ভালোবাসা---সে এখনই আমি ঢের পেয়েছি,
সামনের দিন ভালোবাসাটা বাড়ুক আরও!
ওরা তো মরে বেঁচেছে…আমি নাহয় বেঁচেই মরি!
একটা জন্ম কাটবে নাহয় ব্যর্থ হয়েই,
হেসেখেলে কাটিয়েই দেব তাচ্ছিল্যটা গায়ে না মেখে!
বাঁচতে পারলে বোনাস হিসেবে আর কিছু হোক না হোক, ভাল ঘুম তো হবে!