ভি-বাদ

 কী এসে যায়?
কত্তো আসে, কত্তো পালায়!
আসাযাওয়ার অংক জীবন,
সে অংকে শান্তি খোঁজে শরীরী মন।
শরীরভাঁজে মন হেঁয়ালি যখন যেমন...
এক জীবনে আর কত চাই?
 
ভালোবাসা ভাগ হয়ে যায়,
প্রেমযাপন আর মোহ ভোলায়,
বদলায় হাত জোড়ায়-জোড়ায়।
এক ভাঙে আর দুইটা গড়ে--শরীর টানে, মনটা সরে।
এই যে ‘এসে চলে যাওয়া’,
এই যে ‘সয়ে রয়ে যাওয়া’,
ঘটেই ঘটে, পরে আগে।
যেজন যাবার, যাবেই যাবে।
যেজন থাকার, রবেই রবে।
এর মাঝেতেই,
কী ফাঁকিতে,
আনন্দরা হাসায় কাঁদায়
কষ্ট কিছু কাঁদায় হাসায়
দুঃখরা সব কেবল হাসায়
এই দেখে সুখ শুধুই কাঁদায়।
 
হয়নি দেখা এ জীবনে।
মনের ঘরে কী আদরে
রাখছি ধরে।
কখনো যদি পথের বাঁকে,
মনের ঝোঁকে, বিধির ফাঁকে,
সামনে পড়ি, হাতটা ধরি, গল্প জুড়ি,
চিনবে তো সে?
নাকি বলবে হেসে আগের মতোই,
“এ মন ধরে হবেটা কী?
এসে কাছে শরীর ধরো।
ওই ধরাতেই সবটুকু সুখ!”
 
সব হারিয়ে এখন বুঝি,
বিবাদ আর ভি-বাদ মিলেই পুরুষমানুষ।
পেশী নাচায়, বিবাদ সাজায়--যুক্তি ভেঁতো। পুরুষ সেতো!
ভোগ ভণিতা ভণ্ডামি ভাব--এটুকুতেই হুঁশ, এইতো পুরুষ!
ভিক্ট্রি আর ভ্যাজাইনা--পুরুষজাতির আয়না। এমনই সে!
জেতার খেলায় জীবনটাকে দেয় বিকিয়ে কড়ির দামে।
জীবন যদি রইলো না তো জিতটা তবে আসলো কোথায়?
মধ্যমা আর তর্জনীতে আপনহাতের,
অন্যপায়ের ডান ও বামের উল্টো ধাতের,
এ দুফাঁকে--পুরুষ বাঁচে। এ নাহলে হয় না!
এমনি করে হৃদয় ভুলে ভেড়ার দলে সামনে চলে ভি-ময় জীবন।
 
যেজন শুধুই শরীরী টানে শরীর টানে,
শরীরী স্বাদ সে কী জানে?
হায় রে শরীর!
সুখ শরীরের শরীরফাঁদে শরীর পালায়!
মনের শরীর খুন হয়ে রয় শরীর-মনে।
আত্মা শুধু সাথে করে
ঘোড়ায় চড়ে
হাওয়ায় উড়ে
যাই পালিয়ে
কোথাও দূরে
আজ কখনো ইচ্ছে করে।
গেলে আত্মা লাশটা রবে,
যে যার মতো খেলুক সবে,
ভালোবাসাটা যে বোঝে না,
আত্মাহীনের দেহেই মজাক।
যে আমাকে চায় না পেতে,
সে শুধু থাক--
মৃত শরীরের নেশায় মেতে।
 
শরীর তবে ভুলছি আমি,
শরীর আমায় আর টানে না--
এইতো ভাবো?
বলছি শোনো, টান তো আছেই, আমি যে মানুষ!
সে টান ভীষণ!
তোমায় টানে, আমায় টানে।
তফাতটা কই?
টানটা আমার এ মন ঘুরে ওই শরীরে,
তোমারটা যায় এই শরীরে, ওই শরীরে।
তাইতো তোমায়
সে দূর থেকে
চোখটা বেঁধে
ছুঁইও যদি,
শরীর কাঁপে
প্রেমে মাতে
নেশায় জাগে
হৃদয় ছোটে।
হলে তুমি আমার মতন
ভালোবাসাটা রাখলে যতন
ছুঁলে প্রেমটা করে এমন
হাওয়ায় সুখের ভেসে বইতাম হংসমিথুন ভাসে যেমন।
 
এই যে তোমার মিথ্যে বলার
এই যে আমার মিথ্যে নেয়ার
এই ক্ষমতা--
আজো আমায় বাঁচিয়ে রাখে!
মনের শবে তোমার দেহ এমনি রবে।
তোমার বাঁচা আমার মরা,
আমার যাওয়া তোমার থাকা--এই নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা?