ভুলই জীবন

আমাদের একটা আকাশ…
হঠাৎ করেই কেমন যেন দুভাগ হয়ে গেল!
হয়তো তুমি চেয়েছিলে কেবলই ওই নীলটুকুনই,
আর এদিকে, আমি চেয়েছিলেম রংধনু, সাথে একটুকরো বসন্তমেঘ।
সত্যি করে বলো তো, ঠিক কতটা তুমি আমার ছিলে?
যতটা তুমি বলেছিলে? না কি যতটা আমি নিয়েছিলেম ভেবে?
তুমি আদৌ কি কিছু ছিলে আমার?




আমি পেরেছিলেম তোমার হতে ঠিক কতটা,
সে নাহয় থাক অজানাই!
পেরেছিলে তুমি ঠিক কতটা আমার হতে,
সে প্রশ্নটুকু রয়েই গেল…




জানলেম, রৌদ্রেরও কিছু থাকে উত্তাপ---খুব একান্ত!
জানলেম, মেঘেদেরও কিছু থাকে জলকণা---লুকানো ওরাও!
সেইসব মেঘেদের রাস্তা থেকে কুড়িয়ে নিয়ে সুখ কিছুটা,
আমিও নাহয় আলতো করে ছেড়ে দিলেম যত্ন করে!




পারো যদি, ওই মেঘেদের আড়ালে-থাকা জলের থেকে
গায়ে কিছুটা জল তুমিও মেখো!
দেখো, সেখানে হয়তো আমার ঘ্রাণ পাবে না,
তবু ঠিকই পাবে একান্ত কিছু অশ্রুকণা,
যা আমি রেখেছিলেম আড়াল করে মেঘের কোলে।




নাহয় এ জীবনে না-ইবা তুমি থাকলে আমার,
নাহয় একটুকরো আকাশ ছেড়ে দুপ্রান্তে দুজন ছুটে
ছিটিয়ে দিলেম, ছড়িয়ে নিলেম আমাদের না-বলা সবটা কথা,
নাহয় হলো না এবার হাতে হাত রেখে হাঁটতে যাওয়া,
নাহয় ভালোবাসাটা আড়ালে রেখে বুকের কোণটা ভারীই হলো!




দিয়েছ যা-কিছু,
থেকেছ যতটা আমার এই অস্তিত্বের পুরোটা জুড়ে---অসীম যে সে-ও!
কৃতজ্ঞতাটুক এবেলা বলো জানাই কী করে!
যা পেয়েছি, তার ভুল ছিল না কোনও কিছুই,
যা দিয়েছি, সবটুকুই তার ছিল নিজেরই,
পারতেম যদি হয়ে উঠতে এই প্রাপ্তিটুকুর যোগ্য আমি,
পথ চলতে পারতেম যদি করে এইটুকুকেই এ জীবনের শেষসম্বল,
তবে জয়টা সত্যিই আমার হতো!




জানি, জয়টা তবু আমারই হবে,
যার মূলে রয়েছে লেখা
একটি অলিখিত পরাজয়ের অখণ্ড আখর…
হয়তোবা অন্য কোনও বেলায়,
অন্য কোনও পথে...আবার হাঁটব দুজন।
সেদিন আবারও আমাদের ব্যক্তিগত একটি আকাশ হবে,
হবে হাসি-কান্না শুধু একটিই ছাদের নিচে,
হয়তো হবে অলিখিত চুক্তি কোনও!




হোক না হলে! জীবন যখন…
তখন আর ভুলটা কীসে?
ভুলই জীবন, সত্য ভুলই!