মনে করে মিস কোরো

 
ঘুম ভেঙেছে অনেক আগে।
বাইরে কয়েকটি পাখি ডাকছে ওদের নিজস্ব ভাষায়---
পৃথিবীটা এখন ওদের! আজ ওরা নিজেদের সমস্ত খুশি উদ্‌যাপন করছে।


বিছানা ছেড়ে জানালার ধারে যেতে আমার ইচ্ছে করছে না।
ঘুমভাঙা চোখেও আমার সমস্ত মনোযোগ তোমার দিকে!


রাতটি ছিল পবিত্র শবেবরাতের রাত।
ছোটবেলা থেকে জেনেছি, এটি বরকতময় রহমতের রাত।
রাতভর মা নামাজ পড়েছেন, মায়ের সাথে জায়নামাজে আমিও ছিলাম।


জায়নামাজের এক কোনায় মোবাইলটিও রেখেছি খুব যত্নে,
যদি তুমি কল করো আর আমি রিসিভ করতে না‌ পারি,
তা হলে তোমার কষ্ট হবে, টেনশন হবে…এসব মনে করে!


সারারাত পার হয়ে গেছে, মায়ের বকুনি খেয়েও…
আমি কতবার উঠে গিয়েছি মোবাইলের কাছে,…
তবু, একটিবারের জন্যেও তোমার কল আসেনি!
অথচ রাতভরই, আমার শুভকামনায়, আমার ইবাদতে…শুধুই তুমিই ছিলে!


আল্লাহ্‌কে বলেছি, তিনি যেন তোমাকে সুস্থ রাখেন, নিরাপদে রাখেন, বাঁচিয়ে রাখেন।
তোমার যা-কিছু মনের ইচ্ছে, সেসবের সাথে যেন তিনি থাকেন।


প্রতিবারই, আমার নিজের জন্যেও কিছু না কিছু চাওয়ার থাকে,
কিন্তু এইবার কিছুই চাইনি! ছেলেমানুষের মতো ভাবছিলাম,
আমার জন্যে চাইলে যদি আবার তোমাকে না দিয়ে থাকেন, তাই!
আমি সত্যি সত্যিই পাগল হয়ে যাচ্ছি!


জানি, তুমি এখনও ঘুমাচ্ছ,
রাতজেগে পেইন্টিং করে ভোরে তুমি ঘুমাতে যাও, এইটুকু জানি।


আমি আমার খুব কাছে তোমায় অনুভব করছি।
গাঢ় করে, গভীর করে কপালে চুমু এঁকে দিচ্ছি।
বুকে জড়িয়ে আছি শক্ত করে।
তোমাকে দেখতে, আমার নিষ্পাপ শিশুর মতো লাগছে।


আর হ্যাঁ, তোমার পাঠানো গান শুনতে শুনতে...
অভিমান কমেছে কিছুটা ঠিকই,
তবে পুরোটা না। এখনও বুক ভার হয়ে আছে,
এখনও তোমাকে বকতে ইচ্ছে করছে, আবার আদরও করতে মন চাইছে।


তুমি আবার বোলো না যেন, এসো, আদর করো!
বললে, এবার আমি কিন্তু ‘না’ বলব।
আদর করতে হলে আমার কাছে যেতে হয়,
এত দূর থেকে আমি আদর করতে পারি না।


আমি তোমাকে মিস করছি না, আমি তোমাকে মিস করবই না!
এখন আমার ঘুম পাচ্ছে, আমি আবার ঘুমিয়ে পড়ব।
আর শুনো, তুমি কিন্তু আমাকে মিস করবে,
মিস করতে একদমই ভুলে যেয়ো না, কেমন?